1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারীরাও আইএস-এর দিকে ঝুঁকছে!

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২ জুন ২০১৫

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রবাসী নারীদের জঙ্গি সংগঠন আইএস-এ যোগ দেয়ার খবর এর আগে পাওয়া গেলেও এবার বাংলাদেশ থেকে নারীদের আইএস-এ যোগদানের খবর জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম৷

Propagandabild IS-Kämpfer ARCHIV
ছবি: picture-alliance/abaca/Yaghobzadeh Rafael

তিনি বলেন, ‘‘অল্প কিছু সংখ্যক বাংলাদেশি তরুণের আইএস-এ যোগদানের খবর আমাদের কাছে আছে৷ তাদের মধ্যে কয়েকজন নারীও রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে৷’’ তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানাননি পুলিশের এই কর্মকর্তা৷

তুরস্ক থেকে তরুণী ফেরত
পুলিশ জানায়, বাংলাদেশি এক তরুণী মাইরুনা ফারহিন (১৯) আইএস-এ যোগ দিতে ঢাকা ত্যাগের পর তাকে আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে৷ সে আইএস-এ যোগ দিতে গত মাসে তুরস্কের উদ্দেশ্যে টার্কিশ এয়ারলাইনস যোগে ঢাকা ত্যাগ করেছিল৷ এরপর বাংলাদেশ দূতাবাস অতি জরুরি ভিত্তিতে একটি কূটনৈতিক নোট ভারবালের মাধ্যমে বিষয়টি তুরস্ক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায়৷ তুরস্কের ন্যাশনাল পুলিশের ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্ট মাইরুনা ফারহিনকে দ্রুত শনাক্ত করে তাকে তুরস্কে প্রবেশের অনুমতি দানে বিরত থাকে৷ কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দর থেকেই ৫ই মে’র ফিরতি ফ্লাইটে তাকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়৷

দুজনের পর আরও একজন গ্রেপ্তার

চলতি মাসেই পুলিশ আমিনুল ইসলাম বেগ (৩৫) ও সাকিব বিন কামাল (৩০) নামে দু’জন আইএস সদস্যকে আটক করে৷ তাদের মধ্যে আমিনুল বরিশাল ক্যাডেট কলেজের ছাত্র ছিলেন৷ পরে মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশুনা করেছেন৷ দেশে কয়েকটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করার পর সর্বশেষ কোকাকোলায় আইটি বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দেন৷ আর সাকিব ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে লেখাপড়া শেষ করে লালমাটিয়ার একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন৷

ডিএমপি’র যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমিনুল আইএসের নির্দেশিত খিলাফত প্রতিষ্ঠায় কাজ করছিল৷ এজন্য তিনি বিভিন্নভাবে প্রচার, গোপনে অর্থ ও কর্মী সংগ্রহ, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যার পরিকল্পনাসহ বিভিন্নভাবে আইএসের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিলেন৷’’

তিনি জানান, ‘‘অন্তত ২০ জনের একটি গ্রুপ করে আমিনুল আইএসের আদর্শ প্রচার করছিলেন৷ তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া সাকিব ওই ২০ জনের একজন৷’’ পুলিশের এই কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, ‘‘ওই দুজনের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে পরে আরো একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ তারা জানিয়েছে তাদের গ্রুপের ৫/৬ জন আইএস-এ যোগ দিতে বাংলাদেশ ছেড়েছে৷ তাদের মধ্যে নারী সদস্যও রয়েছে বলে তারা স্বীকার করেছে৷ আর যারা জিহাদে যেতে প্রস্তুত তাদের মধ্যেও বাংলাদেশি নারী আছেন৷ তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে৷’’
প্রথম তথ্য
বাংলাদেশে আইএস এর অস্তিত্ব সম্পর্কে প্রথম জানা যায় ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সামিয়ূন নামে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিককে ঢাকায় গ্রেপ্তারের পর৷ সামিয়ূন আইএস এর জন্য কর্মী সংগ্রহের উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশে এসেছিল বলে তখন দাবি করেছিল গোয়েন্দা কর্মকর্তারা৷

আর গত মাসে ঢাকার মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র আশেকুর রহমানের সিরিয়ায় আইএস-এ যোগদানের খবর নিয়ে তোলপাড় হয় বাংলাদেশে৷ তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হলেও ফিরিয়ে আনা যায়নি৷

এর আগে গত আগস্টে ইউটিউবে প্রকশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, পাঁচজন ‘বাংলাদেশি’ যুবক ইসলামিক স্টেট (আইএস) প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির কাছে জিহাদের শপথ নিচ্ছেন৷ তারা শপথ নেন বাংলায়৷

গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশে আইএস-এর জন্য ছোট ছোট গ্রুপে কাজ করছে জঙ্গিরা৷ আর তাদের প্রতিটি গ্রুপেই নারী সদস্য আছে৷

গত আট মাসে এপর্যন্ত কমবেশি ২৫ জনকে আইএস এর সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে৷ তারা সিরিয়া অথবা ইরাকে গিয়ে আইএস-এ যুক্ত হয়ে ‘জিহাদ’এ অংশ নিতে ব্যাকুল ছিলেন৷ আর তাদের কাছ থেকেই বাংলাদেশি তরুণ এবং তরুণীদের আইএস-এ যোগদানের খবর পাওয়া যায়৷

বাংলাদেশে যেসব নারী-পুরুষ আইএস-এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন তাদের প্রায় সবাই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত৷ আর যারা ছাত্র তারা নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করেন৷ তাদের পরিবারও বিত্তশালী৷

বিশেষজ্ঞ মত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক এবং অপরাধ বিজ্ঞানী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘প্রথমত একটি অংশ হিরোইজম থেকে আইএস-এর দিকে ঝুঁকছে৷ এছাড়া বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গিরা রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় এখানে সক্রিয়৷ সমাজের সংস্কৃতির মধ্যে একধরণের মৌলবাদের উপাদান আছে, যা এদের বিপথগামী করছে৷ আর উচ্চবিত্তদের সন্তানরা যেহেতু প্রযুক্তি সুবিধা বেশি পায় তাই তারা নানা মাধ্যমে আইএস-এর সঙ্গে সহজে যুক্ত হচ্ছে৷’’

তিনি মনে করেন, ‘‘আইনগত ব্যবস্থার পাশাপাশি এখন প্রয়োজন জঙ্গিবিরোধী সামাজিক সচেতনতা এবং আন্দোলন৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ