বাংলাদেশের পোশাক কারখানা পরিবেশবান্ধব হচ্ছে
১২ মার্চ ২০২৩মার্কিন একটি প্রতিষ্ঠানের সেরা ১০ পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার নয়টিই বাংলাদেশের বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ৷
যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি হিসেবে ‘লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন' লিড সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে৷
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ১৮৬টি কারখানা এই সার্টিফিকেট পেয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)৷ এর মধ্যে ৬২টি কোম্পানি প্লাটিনাম রেটিং পেয়েছে, ১১০টি পেয়েছে গোল্ড ও ১০টি সিলভার রেটিং পেয়েছে৷
ময়মনসিংহে অবস্থিত গ্রিন টেক্সটাইল লিমিটেডকে গতমাসে সর্বোচ্চ রেটিং পাওয়া লিড সার্টিফায়েড কারখানার স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ৷
২০১৪ সালে লিড সার্টিফিকেট পাওয়া পোশাক কারখানার সংখ্যা ছিল মাত্র তিনটি৷ আর বর্তমানে পোশাক রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি পরিবেশবান্ধব কারখানা আছে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ৷
কার্বন নির্গমন, পানি ও জ্বালানির ব্যবহার কমানো, এবং পরিবহণ ও উপাদান আরও টেকসই করা- ইত্যাদি বিবেচনায় লিড সার্টিফিকেট দেয়া হয়৷ এছাড়া শ্রমিকদের স্বাস্থ্য উন্নয়ন ও কারখানার ভেতরে কাজের পরিবেশও বিবেচনায় নেয়া হয় বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ৷
ব্যবসা সংক্রান্ত বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ১,১৩০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর পর কারখানার পরিবেশ নিরাপদ করতে দেশে ও বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন কারখানার মালিকরা৷
এছাড়া বিদেশি ক্রেতারাও দিন দিন পরিবেশবান্ধব কারখানা থেকে পোশাক আমদানির ব্যাপারে আগ্রহ দেখানোয় বাংলাদেশের পোশাক কারখানার মালিকরা তাদের কারখানার পরিবেশ উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দেন৷
ব্যবহৃত জ্বালানির ৯৬ শতাংশ আসে সৌরশক্তি থেকে
ঢাকার ২৫ কিলোমিটার দূরে স্নোটেক্স গ্রুপের দুটি লিড-প্লাটিনাম সার্টিফায়েড পোশাক কারখানা রয়েছে৷ সেখানকার শ্রমিকরা দুপুরে বিনামূল্যে পুষ্টিবিদদের অনুমোদন পাওয়া খাবার পান, বেতন পান অনলাইনে৷ আর কারখানায় বাতাস চলাচলেরও ব্যবস্থা আছে৷
স্নোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম খালেদ জানান, শ্রমিকরা কোনো সমস্যায় পড়লে অ্যাপের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানাতে পারে৷
তিনি বলেন, তার পরিবেশবান্ধব দুটি কারখানায় জ্বালানি খরচ অন্যান্য কারখানার প্রায় অর্ধেক৷ এই কারখানা দুটিতে ব্যবহৃত মোট জ্বালানির মাত্র চার শতাংশ আসে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে৷ বাকি জ্বালানির উৎস সৌরশক্তি৷ এর মধ্যে কারখানার ছাদে বসানো সৌরপ্যানেল থেকে প্রায় ১০ শতাংশ জ্বালানি আসে৷
খালেদ জানান, সাধারণ কারখানা তৈরির চেয়ে পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরিতে ৩০-৩৫ শতাংশ খরচ বেশি লাগলেও প্রতিমাসে জ্বালানি খরচ কম লাগে৷ এছাড়া বিদেশি ক্রেতারা ইদানিং পরিবেশবান্ধব কারখানা থেকে পোশাক কিনতে আগ্রহী হওয়ায় অর্ডার পাওয়া সহজ হচ্ছে বলে জানান তিনি৷
স্নোটেক্স গ্রুপের কর্মীসংখ্যা প্রায় ১৯ হাজার৷ বার্ষিক টার্নওভার প্রায় দুই হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা৷
জেডএইচ/কেএম (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন)