পহেলা জুন ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর দ্য প্রটেকশন অফ চিলড্রেন’ উপলক্ষ্যে প্রথমবারের মতো এই প্রতিবেদন তৈরি করে শিশু বিষয়ক ঐ সংস্থাটি৷ এতে ১৭২টি দেশের একটি তালিকাও প্রকাশ করা হয়৷ সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৪ নম্বরে৷
প্রতিবেদনে বলা হয়, শৈশব মানে হচ্ছে শিশুরা খেলবে, শিখবে, নিরাপদ বোধ করবে এবং এভাবেই বেড়ে উঠবে৷ কিন্তু বিশ্বের প্রতি চার জনের মধ্যে একজন শিশুর শৈশব হারিয়ে গেছে৷ ‘‘৭০০ মিলিয়নেরও বেশি শিশু এমন সমাজে বাস করে, ‘যেখানে তারা অন্য শিশুদের মতো স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি’ সুবিধা পায় না,’’ বলছে সেভ দ্য চিলড্রেন৷ রোগ, অপুষ্টি, বোমা, বুলেট – এসব বিষয় শিশুদের শৈশব কেড়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি৷
প্রতিবেদন বলছে, বিভিন্ন দেশে মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের মধ্যে খর্বাকৃতির হার বেশি৷ তবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য, যেমন, দক্ষিণ এশিয়ায় ছেলেকে অগ্রাধিকার দেয়া - এসব কারণে ঐ অঞ্চলের কিশোরীদের শারীরিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়৷ ফলে দেখা যায়, কয়েকটি দেশের প্রায় অর্ধেক কিশোরী আকারে ছোটখাটো৷ যেমন ভারতে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সি মেয়েদের এক-তৃতীয়াংশ খর্বাকৃতির৷ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সংখ্যাটি ৪৪ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক৷
সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিবেদন বলছে, শিশু যদি পর্যাপ্ত খাবার ও পুষ্টি না পায়, তাহলে তাদের শারীরিক বৃদ্ধি যথেষ্ট না-ও হতে পারে৷ সংস্থাটি ১০টি দেশের একটি তালিকা তৈরি করেছে, যেখানে বিশ্বের মোট খর্বাকৃতি শিশুর (৫ বছরের কমবয়সি) দুই-তৃতীয়াংশ বাস করে৷ এর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান আছে আট নম্বরে৷ বাংলাদেশের প্রায় ৫৫ লক্ষ শিশুর দৈহিক আকার এমন বলে জানানো হয়েছে৷
‘এন্ড অফ চাইল্ডহুড’ সূচক অনুযায়ী, পশ্চিম ও সেন্ট্রাল আফ্রিকার শিশুদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ৷ তালিকার একেবারে শেষ দশটি দেশের সাতটিই ঐ এলাকার৷ তালিকার শীর্ষে যৌথভাবে আছে নরওয়ে ও স্লোভেনিয়া৷
জেডএইচ/এসিবি (সেভ দ্য চিলড্রেন, রয়টার্স, ডিপিএ)
গরবিনি, আবেগী এবং স্বাধীনচেতা – বাঙালি নারীর সঙ্গে এই তিনটি বিশেষণই মানানসই৷ নারীর গুণ সম্পর্কে জানিয়েছেন ডয়চে ভেলের পাঠকরা৷ তাঁদের মতামত এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি বাঙালি নারীর দশগুণ নিয়ে ছবিঘর৷
ছবি: Zaman/AFP/GettyImagesগরবিনি, আবেগী এবং স্বাধীনচেতা – বাঙালি নারীর সঙ্গে এই তিনটি বিশেষণই মানানসই৷ আবেগ যেমন তাঁদের দ্রুত স্পর্শ করে, তেমনি স্বাধীনতার প্রশ্নে কিন্তু তাঁরা সত্যিকার অর্থে অনড়৷ নিজের সত্ত্বা নিয়ে অহংকার তাঁদের আছে বটে, তবে তার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের মধ্যে রয়েছে অসীম ধৈর্য্য৷
ছবি: Zaman/AFP/GettyImagesবাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে শাড়ি৷ সেই শাড়ি বাঙালি নারীর সৌন্দর্য্য ফুটিয়ে তোলে চমৎকারভাবে৷ বিভিন্নভাবে শাড়ি পরতে জানেনও তাঁরা৷ আর ‘উপহার হিসেবে শাড়ি’? – কোন বাঙালি মেয়ে না চায় বলুন?
ছবি: DW/A. Islamবাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন৷ নববর্ষ, ঈদ কিংবা দুর্গা পূজা – সব উৎসবই যেন বাঙালি নারীর জন্য তৈরি৷ প্রতিটি উৎসবের সঙ্গে মানানসই পোশাক পরতে এবং সেই উৎসবের উপযুক্ত রান্নায় পারদর্শী তাঁরা৷ ডয়চে ভেলের পাঠক সুজন খানের কথায়, ‘‘বঙ্গের নারী লাজুক প্রকৃতির, কিন্তু যে কোনো উপলক্ষ্যেই প্রাণ খোলা হাসি উপচে পড়ে তাঁদের৷’’
ছবি: Zaman/AFP/GettyImagesবাঙালি নারী ‘ডায়েট’ করছেন, এমনটা বেশ বিরল৷ তাই খাওয়ার ব্যাপারে তাঁরা বেশ উদার৷ কথায় বলে না, মাছে-ভাতে বাঙালি? অবশ্য মাছ-ভাতের পাশাপাশি ফুসকা কিংবা চটপটি পেলে তো আর কথাই নেই৷ আসলে টক, ঝাল, নোনতা, মিষ্টি, এমনকি তেতোও পছন্দ এই নারীদের৷
ছবি: Debarati Mukherjiবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথাই ধরুন৷ দেশ সামলানোর কঠিন দায়িত্ব পালনের মাঝেও রান্না ঘরে যেতে ভোলেন না তিনি৷ গত বছর ছেলের জন্য রান্না করার সময় তোলা তাঁর এই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন তুলেছিল৷ বাঙালি মেয়েরা রাঁধতে যে ভীষণ ভালোবাসেন!
ছবি: Sajeeb Wazedবাঙালি মেয়েদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলা কি খুব কঠিন? না৷ সকলেই জানেন যে, কাজটা সহজই৷ একটি লাল গোলাপ পেলে কিংবা প্রিয় রেস্তোরাঁয় নিয়ে গেলেই তাঁরা সন্তুষ্ট৷ ডয়চে ভেলের পাঠক রন্জু খালেদের মতে, বাঙালি নারীর মধ্যে ‘একইসাথে দৃঢ়তা ও নমনীয়তা এবং প্রজাপতির চপলতা’ রয়েছে৷
ছবি: DW/A. Islamজীবনানন্দ দাসের ‘বনলতা সেন’ কিংবা রবি ঠাকুরের ‘কৃষ্ণকলি’ – বাঙালি নারীর কাজল কালো চোখের প্রশংসা পাবেন অনেক কবির কবিতাতেই৷ সত্যি বলতে কি, বাঙালি নারীর চোখ পুরুষকে টানে সবচেয়ে বেশি৷
ছবি: N.Seelam/AFP/GettyImagesবাংলাদেশের কিংবা ভারতের মেয়েরা চুপ করে বসে আছেন – এমন দৃশ্য কল্পনা করাও কঠিন৷ তাঁরা কথা বলতে ভালোবাসেন৷ রান্না থেকে রাজনীতি – সব বিষয়েই একটা মতামত আছে তাঁদের৷ ডয়চে ভেলের পাঠক জিএনএস নয়নের কথায়, ‘‘নারী পুরুষের যে কোনো কষ্ট অতি সহজে ভুলিয়ে দিতে পারে৷ এই গুণই আমাকে মুগ্ধ করে, আবার সাথে অবাকও করে৷’’
ছবি: DW/A. Islamবাঙালি মেয়েরা নারীবাদী৷ বিতর্কিত বাঙালি লেখিকা তসলিমা নাসরিন তাঁদের অনেকেরই প্রিয়৷ নাসরিনের ‘আমার মেয়েবেলা’ পড়েনি এমন নারী পাওয়া মুশকিল৷
ছবি: AFP/Getty Imagesবাংলাদেশি কিংবা ভারতীয় বাঙালি নারীর গুণ কি আর অল্পতে জানানো যায়, বলুন? কিছু গুণ না হয় অজানাই থাক৷ তবে একটির কথা বলে শেষ করি, বাঙালি মেয়েরা কিন্তু ঘুরতে খুব ভালোবাসেন৷ তথ্য সহায়তা: ডয়চে ভেলে ফেসবুক পাতা, ইন্ডিয়াওপাইন্স, স্কুপহুপ
ছবি: DW/A. Islam