1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
ব্যবসা-বাণিজ্য

বিদ্যুৎখাতে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ জার্মানির

সমীর কুমার দে ঢাকা
২১ জুলাই ২০১৮

বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানে অর্থ দিচ্ছে জার্মান কোম্পানি সিমেন্স৷ বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, সিমেন্স বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী হতে যাচ্ছে৷

Siemens
ছবি: picture-alliance/dpa/L.Mirgeler

কারণ, তারা পটুয়াখালির পায়রায় আট হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সাত বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করবে, যা বাংলাদেশী টাকায় ৭০ হাজার কোটি টাকা৷ দুইদিন আগে জার্মান কোম্পানি ভেরিডোজকে ই-পাসপোর্টের কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়৷

গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ সফররত জার্মান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিয়েলস আনেন বৈঠক করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে৷ নিয়েলস বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন, যাতে বাংলাদেশে জার্মান কোম্পানিগুলোকে আরও বেশি সুযোগ দেয়া হয়৷ এর উত্তরে মাহমুদ আলী তাকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন৷ দুই মন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের উত্তরোত্তর উন্নতির জন্য সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন৷

পটুয়াখালির পায়রায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হাব করছে বাংলাদেশ সরকার৷ সেখানে পৃথক পৃথক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে৷ এর মধ্যে সিমেন্সের সহায়তায় তৈরি হবে ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র৷ গত বছরের ৪ নভেম্বর ঢাকায় বিদ্যুৎ ভবনে এক অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) স্বাক্ষর করেন নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (এনডব্লিউপিজিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএম খোরশেদুল আলম এবং সিমেন্স দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুনীল মাথুর৷

পিডিবি'র চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এমওইউ হওয়ার পর সমীক্ষার কাজটি দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে৷ এখন পর্যন্ত সবকিছু ইতিবাচক ভাবেই এগুচ্ছে৷ জার্মান কোম্পানি সিমেন্স শুধু এখানে বিনিয়োগই করছে না, তাদের যন্ত্রপাতি আমরা সব বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার করছি৷ তারা অত্যন্ত ভালো মানের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে৷ এর মধ্যে আমরা সৈয়দপুরের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্র আহবান করেছিলাম৷ সেখানে দরপত্রে যারা প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয়েছে তারা সবাই সিমেন্সের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবে বলে উল্লেখ করেছে৷''

এখন পর্যন্ত দেশে নির্মিতব্য বা নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সবগুলোই ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট থেকে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার৷ রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট৷ পায়রায় ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের এ কেন্দ্রটি নির্মিত হলে এটি দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রের মর্যাদা পাবে৷ এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) দিয়ে এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে৷

‘সমীক্ষার কাজ চলছে’

This browser does not support the audio element.

এমওইউতে উল্লেখ করা হয়, পটুয়াখালির ধানখালি এলাকায় ১০০ একর জমির উপর প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে৷ প্রাথমিকভাবে প্রকল্পের ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ২৮০ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ২৩ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা৷ এর মধ্যে ঋণ হিসেবে জার্মানি দিবে ২৪০ কোটি ডলার, যা মোট ব্যয়ের ৮০ শতাংশ৷

যৌথ মালিকানার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির অর্ধেক মালিকানা বাংলাদেশের এবং বাকি অর্ধেক জার্মান কোম্পানি সিমেন্সের৷ প্রকল্পের মূলধনী বিনিয়োগ ৪০ কোটি ডলারের অর্ধেক ২০ কোটি ডলার সংস্থান করবে এনডব্লিউপিজিসিএল৷

তিনটি পর্যায়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে৷ প্রতিটি পর্যায়ে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার পৃথক ইউনিট নির্মিত হবে৷ প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে ২০২০ সালের জুনে, দ্বিতীয় পর্যায়ের একই বছরের ডিসেম্বরে এবং তৃতীয় পর্যায়ের ২০২১ সালের ডিসেম্বরে৷ পিজিসিবির বাস্তবায়নাধীন ৪০০ কেভি'র একটি সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে গোপালগঞ্জ হয়ে ঢাকা পর্যন্ত ওই বিদ্যুৎ সঞ্চালিত হবে৷

এমওইউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, ‘‘এই প্রকল্পের অর্থায়ন ও ঋণ সহায়তা করবে জার্মানি৷ এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো ইউরোপীয় দেশের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ এটি৷''

একই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. থমাস প্রিনৎস বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অর্থনীতির দ্রুত বিকাশ ঘটেছে৷ এখন তারা মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতে চলেছে৷ বাংলাদেশের এই উন্নয়নে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বেশি প্রয়োজন৷ সেই প্রযুক্তি হতে হবে অত্যাধুনিক এবং টেকসই৷ সস্তা প্রযুক্তি দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন সম্ভব নয়৷ জার্মানি আধুনিক প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে সব সময় বাংলাদেশের পাশে আছে৷''জানা গেছে, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠন করার পরই কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হবে৷ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে গত বছরের আগস্টে একটি আগ্রহপত্র দেয় জার্মান দূতাবাস৷ সরকারের কাছে দেয়া আগ্রহপত্রটি যাচাই করে এনডব্লিউপিজিসিএল'র মাধ্যমে তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ এর আগে দেশের টেলিফোন শিল্পে বিনিয়োগ করেছিল জার্মান কোম্পানিটি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ