সব পোশাক কারখানায় ধর্মঘট
৭ আগস্ট ২০১৪ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে পুলিশ বাড্ডার তুবা গ্রুপের সাত তলায় অভিযান চালায়৷ তারা সেখানে আন্দোলনরত শ্রমিকদের লাঠি পেটা করে ও টিয়ারগ্যাস ছুড়ে বের করে দেয়৷ সেখানে অবস্থানরত শ্রমিক নেতাদেরও লাঠি পেটা করে বের করে দেয় হয় বলে খবর৷
বাইরে বের হয়ে তুবা গ্রুপ শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির সমন্বয়ক ও শ্রমিক নেত্রী মোশরেফা মিশু বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই সারা দেশের পোশাক কারখানায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের কর্মসূচি ঘোষণা করেন৷ এই ঘোষণার পর মোশারেফা মিশুসহ শ্রমিক নেতা এবং শ্রমিকরা পায়ে হেঁটে জাতীয় প্রেসক্লাবের দিকে রওয়ানা হলে, মোশারেফা মিশু এবং শ্রমিক নেত্রী জলি তালুকদারকে আটক করে পুলিশ৷ তাঁদের আটকের পর টেনে পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়৷ বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ জলিল জানান, তাঁদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ আটকের সময় ধস্তাধস্তিতে একজন নারী পুলিশ ভ্যান থেকে পড়ে গিয়ে আহতও হন৷ এছাড়া সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের পিটুনির শিকার হন কয়েকজন ফটো সাংবাদিক৷
আগের দিনের মতো বৃহস্পতিবার সকালেও তুবা গ্রুপের সামনে জলকামান ও এপিসি নিয়ে কড়া পাহারায় ছিল পুলিশ৷ বেলা সোয়া একটার দিকে রাজধানীর বাড্ডায় তুবা কারখানার ভেতরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ প্রবেশ করে সব শ্রমিককে পিটিয়ে বের করে দেয়৷ এর আগে পৌনে একটার দিকে তুবা গ্রুপের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভসহ সড়ক অবরোধ করতে চাইলে পুলিশ তাঁদের ওপরও লাঠিচার্জ করে৷ এ সময় শ্রমিকরা গাড়ি ভাঙচুর করলে পুলিশ রাবার বুলেট ও জলকামান নিক্ষেপ করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়৷ এতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হন৷ পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের কয়েকদফা সংঘর্ষও হয়৷
এদিকে বিজিএমইএ বৃহস্পতিবারও শ্রমিকদের দুই মাসের বকেয়া বেতন দিচ্ছে বলে জানা গেছে৷ দুই দিনে মোট ৫৮৩ জন শ্রমিক বকেয়া বেতন নিয়েছেন বলে বিজিএমইএ-র সভাপতি আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন৷ আন্দোলনরত শ্রমিকরা অবশ্য তিন মাসের বকেয়া বেতন, ভাতা এবং ওভারটাইমের টাকা একসঙ্গে দাবি করেছেন৷
ঈদের আগে প্রতিশ্রুত তিন মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা না পেয়ে ২৮শে জুলাই থেকে তুবা গ্রুপের পাঁচটি গার্মেন্টস-এর ১,৬০০ শ্রমিক অনশন শুরু করেন৷ এরইমধ্যে মঙ্গলবার এই গ্রুপের মালিক দেলোয়ার হোসেন শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের মুচলেকা দিয়ে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন৷ তাঁর আরেকটি পোশাক কারখানা তাজরীন ফ্যাশানস-এ ২০১২ সালের নভেম্বরে আগুন লাগলে ১১৩ জন শ্রমিক নিহত হন৷ সেই মামলার কারণেই তিনি জেলে ছিলেন৷