1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
ব্যবসা-বাণিজ্যবাংলাদেশ

বাংলাদেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি কেন বাগে আসছে না?

জাকির হোসেন
৯ ডিসেম্বর ২০২৪

খাদ্যপণ্যের উচ্চ দামে দরিদ্র, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও সীমিত আয়ের মানুষের জীবনযাপন আরো কঠিন হয়ে উঠেছে৷ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ মূল্যস্ফীতিকে বাগে আনতে পারছে না৷ সবশেষ পরিসংখ্যান বলছে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রায় ১৪ শতাংশে পৌঁছেছে৷

চাল, পেঁয়াজ, আলু, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু পন্য ও দুইটি ব্যাংক নোট
দুই বছরের বেশি সময় ধরে টানা উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে বিপাকে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ছবি: Mohammad Rakibul Hasan/Zumapress/imago images

কয়েকদিন ধরে ঢাকার মুদি দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে৷ কোথাও পাওয়া গেলেও ‘বাড়তি দাম' এর শর্তে লুকানো স্থান থেকে বের হচ্ছ এক, দুই বা পাঁচ লিটারের বোতল৷  রান্নায় অত্যাবশ্যকীয়, তাই  বাধ্য হয়ে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি দরে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের৷ অথচ সরকার সম্প্রতি অপরিশোধিত  ভোজ্যতেল আমদানিতে প্রতি লিটারে অন্তত ১০ টাকা শুল্ক-কর কমিয়েছে৷

ভোজ্যতেলের সরবরাহ সংকট ও দাম বৃদ্ধির এই উদ্বেগের মাঝে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো গত বৃহস্পতিবার মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে, খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি প্রায় ১৪ শতাংশ৷ আর শহরাঞ্চলে তা প্রায় ১৫ শতাংশ৷ ভোজ্যতেলের বাজারের এমন পরিস্থিতি বাংলাদশে দীর্ঘদিনের উচ্চ মূল্যস্ফীতির বিভিন্ন কারণের একটি৷ এক্ষেত্রে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে যে, ক্রেতাকে বাধ্য হয়ে নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দরে কিনতে হচ্ছে৷ আন্তর্জাতিক বাজার এবং ডলারের দর বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে স্থানীয় ভোজ্যতেল পরিশোধন কোম্পানিগুলো দাম সমন্বয়ের জন্য সরকারের সাথে দেনদরবার করছে৷ এর ফলে যে যার মতো ‘পজিশন' নিয়ে ফেলেছেন৷ খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পরিবেশকরা দিচ্ছেন না৷ পরিবেশকরা বলছেন, মিল মালিকরা দিচ্ছেন না৷ মিল মালিকরা বলছেন, তাদের সরবরাহ অব্যাহত আছে৷ অথচ বাজারে পর্যাপ্ত পণ্য নেই, পাওয়া গেলেও দাম বেশি৷ যার পরিণতিতে ক্রেতার অসহায়ত্ব৷  

ভোজ্যতেলের পাশাপাশি সম্প্রতি আরও কয়েকটি পণ্য আমদানিতে শুল্ক-কর কমানো হয়েছে৷ মুদ্রানীতি সংকোচন করে কমানো হয়েছে মুদ্রা সরবরাহ৷ এলসি মার্জিন কমানোসহ আমদানিতে সহায়তার কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু এসব পদক্ষেপে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি ঠেকানো যাচ্ছে না৷ খাদ্যপণ্যের উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ‘চিড়েচ্যাপ্টা' হচ্ছেন ভোক্তারা৷ বিশেষত দরিদ্র, নিম্ন-মধ্যবিত্ত এবং নির্ধারিত আয়ের মানুষের জীবনযাপন দিন দিন আরও কঠিন হয়ে উঠছে৷ দেশের অন্তত তিন কোটি মানুষকে তাদের আয়ের বেশিরভাগই নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু খাদ্য কিনতে ব্যয় করতে হয়৷ তাদের কষ্ট সবচেয়ে বেশি এবং তাদের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার সরকারি পরিসংখ্যানের চেয়েও বেশি৷

শুধু সয়াবিন তেল নয়, বাংলাদশে গত কয়েক মাসে আলু, পেঁয়াজ, ডিম ইত্যাদি পণ্য নিয়ে বাজারে এই ধরণের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷  সরবরাহ ব্যবস্থায় থাকা পক্ষগুলো যার যার পক্ষে যুক্তি দিচ্ছে ৷ নীতি নির্ধারকরা আশার কথা শোনাচ্ছেন, কিছু উদ্যোগও নিয়েছেন৷ কিন্তু বাজার শান্ত হচ্ছে না ৷ শুধু দরিদ্র শ্রেণী নয়, মধ্যবিত্তদের অনেকেই এখন ‘বাজার তালিকা' ছেটে ফেলছেন ৷ অনেকেই পরিবারের সদস্যদের পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য কিনতে পারছেন না৷ উচ্চ মূল্যস্ফীতি সার্বিকভাবে জনসংখ্যার পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

বাংলাদেশে দুই বছরের বেশি সময় ধরে টানা উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে ৷ ছাত্র-জনতার অভুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তা কমে যাবার অন্যতম কারণ ছিল, বাজারে পণ্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ করতে না পারা৷ কারণ ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়৷ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমাতে পেরেছে৷ কিন্তু বাংলাদেশ অন্যতম ব্যতিক্রম৷

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিকে বড় দুটি অগ্রাধিকার ঘোষণা করে৷ কিন্তু দুটি ক্ষেত্রেই এখনও পর্যন্ত দৃশ্যমান উন্নতি হয়নি৷ সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যায় গত সরকারের আমলে অর্থনীতির অবস্থা অনেক খারাপ হওয়ার প্রভাব, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে ঋণ দেওয়া, সাম্প্রতিক বন্যা ইত্যাদিকে কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে৷ সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা অর্থনীতি বহির্ভূত কারণ যেমন- পণ্য পরিবহণে চাঁদাবাজি কিংবা সিন্ডিকেটের কথাও বলছেন৷ 

পরিসংখ্যানের তুলনায় প্রকৃত মূল্যস্ফীতি বেশি  

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গত ৫ ডিসেম্বর মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে৷ এতে দেখা যায়, গেল নভেম্বর মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১১ দশমিক তিন-আট শতাংশ৷ এর মধ্যে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৩ দশমিক আট শতাংশ৷ আর শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বেশি, যা ১৪ দশমিক ছয়-তিন শতাংশ৷ এত উচ্চহারে মূল্যস্ফীতি এই মুহুর্তে খুব কম দেশেই আছে৷ সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি গত জুলাই মাসে ১৪ দশমিক এক শতাংশ হয়, যা অন্তত গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বাধিক৷ ২০০৭-০৮ অর্থবছরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়৷ এরপর ২০১১ সালের মার্চ মাসে এটি ১৩ দশমিক আট শতাংশে পৌছায়৷

অর্থনীতিবিদদের অনেকেই আগে থেকে বলে আসছেন, বাস্তবে মূল্যস্ফীতির হার আরও বেশি হবে৷ অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত অর্থনীতির ওপর শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনেও একই কথা বলা হয়েছে৷ গত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে বিবিএসের প্রকাশিত মূল্যস্ফীতির হার নয় থেকে ১১ শতাংশ হলেও শ্বেতপত্রের অনুসন্ধানমূলক প্রাক্কলন হলো, এ সময়ে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি ১৫ থেকে ১৭ শতাংশ৷

বর্তমান সরকারের নীতি-নির্ধারকরাও প্রায়ই বলছেন, গত সরকারের আমলে বিবিএস স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে নি৷ অনেক সময় মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যান কম করে দেখানো হয়েছে৷ বিবিএস এখন স্বাধীনভাবে কাজ করছে৷ তবে শ্বেতপত্রে উল্লেখিত প্রাক্কলনের মধ্যে বর্তমান সরকারের দুই মাসও ( আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর ) রয়েছে৷ কমিটির প্রতিবেদনে অবশ্য বিবিএসের উপাত্তের উৎস এবং গণনা পদ্ধতির দুর্বলতার উল্লেখ রয়েছে৷ এর আগে সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা গবেষণা সংস্থা বিআইডিএস এবং বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেমের জরিপে বিবিএসের পরিসংখ্যানের চেয়ে বাস্তবে মূল্যস্ফীতির হার বেশি পাওয়া গেছে৷ 

অন্যদিকে বিবিএসের পরিসংখ্যান সবার জন্য সমান অর্থ বহন করে না৷ হিসাবটা এমন, গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে গেল নভেম্বরে সাত শতাধিক পণ্য ও সেবার দর যতটুকু বেড়েছে বা কমেছে, তাকে গড় করলে বৃদ্ধি দাঁড়ায় ১১ দশমিক তিন-আট শতাংশ৷ বিবিএসের মূল্যস্ফীতি হিসাব করার ঝুঁড়িতে খাদ্যের মধ্যে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ যেমন রয়েছে, তেমনি অ্যালকোহল, সিগারেটের মতো পণ্যও রয়েছে৷ রয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিনোদন ব্যয়ের হিসাবও৷ ফলে যাদের খাদ্যদ্রব্য কিনতে আয়ের বেশিরভাগ টাকা খরচ করতে হয়, তাদের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক৷ বিবিএস-এর হিসাবেই একটি দরিদ্র পরিবারকে খাবার কেনার পেছনে গড়ে ৬৬ শতাংশ ব্যয় করতে হয়৷

সরকারের উদ্যোগ কতটুকু

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে৷ এর মধ্যে প্রধান উদ্যোগ মুদ্রানীতির মাধ্যমে চাহিদা নিয়ন্ত্রণ এবং কিছু নিত্যপণ্য আমদানিতে শুল্ক-কর কমানো৷ গত সরকারের শেষ সময়ের দিকে মূলত আইএমফ-এর কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার শর্ত হিসেবে মুদ্রানীতির সংকোচন শুরু হয়৷ অর্থনীতিবিদ এবং আইএমএফ-এর সাবেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আহসান এইচ মনসুর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিন দফা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে৷ এখন এই হার ১০ শতাংশ৷

গত কয়েকমাসে চাল, ভোজ্যতেল চিনি, আলু, পেঁয়াজ, ডিম এবং খেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর কমানো হয়েছে৷ কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে৷  নিত্যপণ্য আমদানিতে আমদানি ঋণপত্র ( এলসি) খুলতে কম মার্জিন রাখতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক৷ বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আমদানির জন্য ডলারের যোগান পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে৷

উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে দরিদ্র মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকার টিসিবির মাধ্যমে প্রায় এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীদের জন্য কম মূল্যে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল ও আলু কেনার ব্যবস্থা রয়েছে৷ এর বাইরে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে সারাদেশে প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে ৩০ টাকা দরে চাল দেওয়ার কর্মসূচি আছে৷ টিসিবিরি ট্রাকের সামনে মানুষের দীর্ঘ সারি দেখে বোঝা যায়, বাজারে উচ্চ পণ্যমূল্য মানুষকে কতটা বিপাকে ফেলেছে৷

ঘাটতি কোথায় এবং পরামর্শ কী

বিভিন্ন উদ্যোগ স্বত্ত্বেও উচ্চ মূল্যস্ফীতি কেন বাগে আসছে না তা নিয়ে সরকারের মধ্যেই অস্বস্তি রয়েছে৷ অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ (যিনি কিছুদিন আগে বাণিজ্য উপদেষ্টার দায়িত্বেও ছিলেন) প্রায়ই বলছেন, পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় চাঁদাবাজি বন্ধ করা যায় নি৷ দাম বাড়ানোর সিন্ডিকেট ভাঙা যায় নি৷ তিনি গত ৫ ডিসেম্বরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘‘ রাজনৈতিক সমঝোতা খুব কঠিন, চাঁদাবাজির সমঝোতা খুব সহজ৷''

গত ৩০ নভেম্বর ঢাকা চেম্বার আয়োজিত বাণিজ্য সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি হয় নি৷ এর সঙ্গে মূল্যস্ফীতি কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির প্রভাবে ঋণের সুদহার অনেক বেড়েছে৷ অন্যদিকে ডলারের দাম বৃদ্ধি, জ্বালানি সংকট এবং ঘুষ-দুর্নীতির মতো সমস্যা রয়ে গেছে৷ সব মিলিয়ে কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, যা সরবরাহ শৃঙ্খলে সংকট তৈরি করছে৷ সম্প্রতি বিভিন্ন ফোরামে ব্যবসায়ী নেতাদের কেউ কেউ দাবি করছেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদহার বাড়ানোর নীতি উল্টো উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতিকেই উসকে দিচ্ছে৷

বর্তমান সরকার গত সরকারের আমলে টাকা ছাপিয়ে ঋন দেওয়া মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেছিল৷ কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল ছয়টি ব্যাংকের আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় সাড়ে ২২ হাজার টাকা বিশেষ ধার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরাসরি এভাবে ধার দেওয়া নতুন মুদ্রা সরবরাহের মতো৷ এ প্রক্রিয়ায় মূল্যস্ফীতি বাড়ে৷ অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে দ্রুত একই পরিমাণ টাকা সবল ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ধার হিসেবে নেওয়া উচিত৷ এ পদ্ধতিকে অর্থনীতির ভাষায় বলে ‘ষ্ট্যারালাইজেশন'৷

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশে একটি কাঠামোগত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ শুধু সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি দিয়ে এর সমাধান হবে না৷ বাজারে পণ্যের প্রকৃত চাহিদা নিরুপন করে পর্যাপ্ত সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে৷ মুদ্রানীতি, রাজস্বনীতি এবং বাজার ব্যবস্থাপনা- এই তিনের যথাযথ সমন্বয় ঘটাতে হবে৷ বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, ট্যারিফ কমিশন, প্রতিযোগিতা কমিশন, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বাজারের সাথে সম্পৃক্ত সরকারি সংস্থাগুলোকে এক যোগে কাজ করতে হবে৷ টাকা-ডলার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে হবে৷ শুল্ক কমানোর পরও কেন বাজারে তার প্রভাব পড়ছে না, তার কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে৷ যেকোনো মূল্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে৷ পণ্য পরিবহণে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে৷ এরকম আরও কিছু পরামর্শ তারা দিচ্ছেন৷ সরকার উচ্চ মূল্যস্ফীতির যাঁতাকল থেকে মানুষকে কতটুকু স্বস্তি দিতে পারে, তা  ভবিষ্যতই বলে দেবে৷

ঋণখেলাপি যে দলেরই হোক না কেন, আমরা ছাড়বো না: গভর্নর

26:34

This browser does not support the video element.

জাকির হোসেন বাংলাদেশের অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিক৷ একটি প্রিন্ট মিডিয়ায় কর্মরত তিনি৷
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ