1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে করোনার প্রকৃত চিত্র কি উঠে আসছে?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৯ মার্চ ২০২০

বাংলাদেশে নতুন কোনো করোনা রোগী শনাক্ত না হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রকৃত চিত্র উঠে আসছে না৷ এজন্য পরীক্ষার আওতা বাড়ানো হবে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও৷ 

ফাইল ছবিছবি: DW/M. Rashed

বাংলাদেশে পরপর দুইদিন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোন রোগী শনাক্ত হয়নি৷ জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) তাদের রোববারের নিয়মিত ব্রিফিং-এ জানিয়েছে, ২৪ ঘন্টায় নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি৷ তার আগের ২৪ ঘন্টায়ও কেউ আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হননি৷ এর আগে ২৫ মার্চের পূর্ববর্তী ৪৮ ঘন্টায়ও কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি৷

রোববারের ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক অনলাইনে যুক্ত হয়ে বলেন, ‘‘নতুন করে রোগী শনাক্ত হয়নি এটা খুবই আনন্দের সংবাদ৷ যখন চীনে প্রথম এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে, তখন থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি বিধায় বাংলাদেশ ভালো আছে৷ আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত আপডেট করে যাচ্ছি৷ পৃথিবীর সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশ ভালো আছে৷’’

আইইডিসিআরের হটলাইনে করোনা নিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় কল এসেছে দুই হাজার ৭২৬টি৷ আর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে মাত্র ১০৯টি৷ সব মিলিয়ে ২১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত পরীক্ষার আওতায় এসেছেন এক হাজার ১৮৫ জন৷

ডা. লেলিন চৌধুরী

This browser does not support the audio element.

প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী মনে করেন, রোগী শনাক্ত না হওয়ায় সরকারের আত্মতৃপ্তির কোনো সুযোগ নেই৷ কারণ করোনার যে পরীক্ষা করা হচ্ছে তা সীমিত৷ বিস্তৃতভাবে করা হলেই আসল অবস্থা বোঝা যেতে পারে৷

বর্তমানে কোয়ারান্টিনে বা ঘরে আলাদা রয়েছেন ২৮ হাজার ৪৮৩ জন৷ আইসোলেশন বা বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে ৪৭ জনকে৷ এমন সব তথ্যের প্রেক্ষিতে ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘‘কোয়ারান্টিনে এবং আইসোলেশনে অনেক লোককে রাখা হয়েছে৷ তার বিপরীতে করোনার এক হাজারের কিছু বেশি নমুনা টেস্ট করা হয়েছে৷ ইটালি, ফ্রান্স, স্পেন এইসব দেশ থেকে যারা এসেছের তাদের অনেকেরই টেস্ট হয়নি৷ ফলে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা কম৷ কিন্তু অচিরেই দেখা যাবে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে৷’’

বাংলাদেশে করোনা কোয়ারান্টিনে থাকা কয়েকজন মারা গেছেন যাদের নমুনা পরীক্ষা হয়নি৷ আবার লক্ষণ নিয়ে মারা যাওয়ার পরও নমুনা পরীক্ষা না করার ঘটনা ঘটছে৷ নাম প্রকাশ করার না শর্তে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, ‘‘এখন যে পিসিআর পদ্ধতিতে পরীক্ষা হচ্ছে তাতে আক্রান্ত হওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে পরীক্ষা না করলে রেজাল্ট নেগিটিভ (সংক্রমণ নেই) আসতে পারে৷ তার জন্য আরো উন্নত টেস্টের দরকার, যা বাংলাদেশে নেই৷ আর প্রয়োজনীয় টেস্টও হচ্ছে না৷ ফলে বাংলাদেশে এখন করোনা পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে রয়েছে তা বলা যাচ্ছে না৷ সন্দেহজনক সবাইকে যদি টেস্টের আওতায় আনা যেত তাহলে প্রকৃত পরিস্থিতি বোঝা যেত৷’’ 

ডা. আবুল কালাম আজাদ

This browser does not support the audio element.

প্রতিবেশী দেশ ভারতেও দ্রুত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে৷ সংক্রমণের পর থেকে করোনার প্রকোপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ইউরোপের অনেক দেশ৷ কিন্ত বাংলাদেশে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম কেন এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘‘সাধারণ ছুটিসহ নানা রকম ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে৷ তাপমাত্রা বাড়ছে, হিউমিডিটি হচ্ছে এ সবের কারণে হয়তো আক্রান্তের সংখ্যা কম৷ তবে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না৷ আমাদের আরো কয়েকদিন দেখতে হবে৷’’

তিনি বলেন, ‘‘টেস্ট কম করাও রোগী কম হওয়ার কারণ কিনা তাও আমরা দেখবো৷ এজন্য টেস্ট বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছি৷’’

শনিবার জাতিসংঘ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে তারা বাংলাদেশের সরকারসহ বিভিন্ন পক্ষকে সাথে নিয়ে একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে৷ কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া না হলে মহামারি পরিস্থিতির কতটা বিস্তার ঘটার আশঙ্কা রয়েছে সেসব চিত্রও তারা বিশ্লেষণ করেছে৷ তবে ডা. আবুল কালাম আজাদ মনে করেন বাংলাদেশ এরইমধ্যে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছে৷ যার কারণে সেই পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না৷

তবে ডা. লেলিন চৌধুরী মনে করেন, ‘‘বাংলাদেশে এরইমধ্যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে৷ স্থানীয় পর্যায়ে কেউ কেউ চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন না৷ আবার হাসপাতালগুলোও করোনার লক্ষণ দেখলে রোগী ভর্তি নিচ্ছে না৷ অনেক লোক ঢাকা থেকে গ্রামে গেছে৷ যারা মনিটিরিং এর আওতায় নেই৷’’ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ