1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে টিকা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৮ এপ্রিল ২০২১

বাংলাদেশের করোনা ভাইরাস টিকা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বাধার মুখে পড়েছে৷ ভারত সরকার টিকা রপ্তানি আপাতত বন্ধ করে দেওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে৷

ছবি: Mortuza Rashed/DW

বিকল্প কোনো উৎস থেকে টিকা আমদানির জন্য চেষ্টা চললেও এখনও তেমন কোনো অগ্রগতির খবর পাওয়া যায়নি৷ তাই এই মুহূর্তে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের অক্সফোর্ড-আস্ট্রাজেনেকার টিকা ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো বিকল্প সোর্স নেই৷

এদিকে, টিকাদানে ধীরগতি আসতে পারে মনে করলেও এ বিষয়ে কোনো আশঙ্কা দেখছে না স্বাস্থ্য অধিদপ্তর৷ কিন্তু সেরামের ইনস্টিটিউটের টিকার বাংলাদেশি এজেন্ট বেক্সিমকো ফার্মা বলছে, চুক্তিমত টিকা কবে পাওয়া যাবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই৷

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মত, শুরুতে বিকল্প উৎস থেকেও টিকা নেয়ার চেষ্টা করা উচিত ছিলো বাংলাদেশের৷

করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কার হওয়ার পর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশ বেক্সিমকোর ফার্মাসিউটিক্যালের মাধ্যমে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি করে৷ চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম চালানের ৫০ লাখ টিকা আসে গত জানুয়ারি মাসে৷ ফেব্রুয়ারি মাসে আসে ২০ লাখ৷ এরপর সেরাম আর কোনো টিকা পাঠায়নি৷ কথা ছিলো প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাঠাবে তারা৷ এপ্রিল মাসের অর্ধেক পার হয়ে গেলেও ফেব্রুয়ারি ও মার্চের ৮০ লাখ ডোজ টিকা এখনো  হাতে পায়নি বাংলাদেশ৷
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের মোট ৭০ লাখ ডোজ টিকার বাইরে, ভারত সরকারের কাছ থেকে ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পায় বাংলাদেশ৷ এছাড়া ঢাকা সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশকে আরো ১২ লাখ টিকা উপহার দেন৷ আর ভারতের সেনাপ্রধান বাংলাদেশের সেনাপ্রধানকে উপহার দিয়েছেন এক লাখ ডোজ টিকা৷ সব মিলিয়ে বাংলাদেশ পেয়েছে মোট এক কোটি তিন লাখ ডোজ টিকা৷ দুই ডোজ করে এই টিকা ৫১ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে দেওয়া সম্ভব৷

‘বিকল্প অনেক উৎসের সঙ্গেই টিকার জন্য যোগাযোগ করছি’

This browser does not support the audio element.

দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকা দেয়া শুরু হয় গত ৭ ফেব্রুয়ারি৷ এরপর দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া শুর হয় ৮ এপ্রিল থেকে৷ প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে মোট টিকা দেয়া হয়েছে ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ৮৪৯ জনকে৷ এর মধ্যে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ৫৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪২ জনকে এবং দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ১১ লাখ ৫১ হাজার ৭৬৭ জনকে৷ সেই হিসেবে এখন বাংলদেশে করোনার টিকা মজুদ আছে ৩৫ লাখ ডোজ৷

বর্তমানে প্রতিদিন  প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে গড়ে দুই লাখ ৫০ হাজার মানুষ টিকা নিচ্ছেন৷ ১৭ এপ্রিল প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ১২ হাজার ১৫৭ জন৷ আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন দুই লাখ ২১ হাজার ৬১৬ জন৷ টিকার জন্য প্রচুর আবেদন থাকার পরও প্রথম ডোজের টিকা প্রদান ব্যাপকভাবে কমিয়ে দেয়া হয়েছে৷ যে পরিমাণ টিকা মজুদ আছে তা এইভাবে চললে আগামী ১৫ দিনে শেষ হয়ে যাবে৷ এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বাংলাদেশের যে এক কোটি টিকা পাওয়ার কথা ছিলো তাও এখন অনিশ্চিত৷

বাংলাদেশে প্রথম ধাপে এক কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল সরকার৷

তবে টিকা পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর৷ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও টিকাবিষয়ক কমিটির প্রধান মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি সেরাম থেকে টিকা পাব৷ পরিমাণে হয়তো কম হবে৷ ধীরে ধীরে পাব৷ যেভাবে কথা ছিলো সেভাবে হয়তো হবে না৷ তাই আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন একটু ধীর গতিতে হবে৷ তবে টিকা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার কোনো আশঙ্কা নাই৷’’

‘এখনো কোনো তারিখ বলতে পারব না’

This browser does not support the audio element.

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সেরামের টিকার ব্যাপারে আশাবাদী হলেও এ টিকার বাংলাদেশি এজেন্ট বেক্সিমকো ফার্মা এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নয়৷ প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজা বলেন, ‘‘আমরা এখনো কোনো তারিখ বলতে পারব না যে কবে ভ্যাকসিন আসবে৷ আমরা কোনো ডেট পাইনি৷ ওখানকার সরকার এখনো রপ্তানির অনুমতি দিচ্ছে না৷’’

নতুন টিকা দেয়া তো কমিয়ে দেয়া হয়েছেই৷ এখন আশঙ্কা হচ্ছে যারা প্রথম ডোজ নিয়েছেন তাদের নির্ধারিত সময়ে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যাবে কী না৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখন সেটাকেই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে৷

চলমান পরিস্থিতে সরকার বিকল্প উৎস থেকে টিকা পাওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে৷ তবে টিকা পাওয়ার ব্যপারে কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, টিকা পেতে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করছে সরকার৷ যোগাযোগ করা হচেছ ফাইজার ও মডার্নার সঙ্গে৷ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘‘আমরা বিকল্প অনেক উৎসের সঙ্গেই টিকার জন্য যোগাযোগ করছি৷ তবে এখানো সফল হইনি৷''
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘‘টিকা নিয়ে সারা বিশ্বেই একটা সংকট তৈরি হয়েছে৷ ভারত ৫ কোটি লোককে টিকা দিতে পেরেছে৷ কিন্তু তাদের যে জনসংখ্যা সেই তুলনায় তা অনেক কম৷’’
তবে তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের প্রথম থেকেই একক কোনো সোর্সের ওপর নির্ভর করা ঠিক হয়নি৷ উচিত ছিলো চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশেই টিকা উৎপাদন করা৷ যে সুযোগ চীনের সঙ্গে ছিলো৷

এদিকে, প্রতিদিনই বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হচ্ছে৷ গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১০২ জন মারা গেছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ