1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতা

আশীষ চক্রবর্ত্তী৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বাংলাদেশের সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা' আছে৷ কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্রে, নেতা-কর্মীর বক্তব্যেও আছে ধর্মনিরপেক্ষতা৷ তবে স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিতে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিনিয়ত হুমকির মুখোমুখি৷

Bangladesch Hindus Überfall Jessore
ছবি: DW

সম্প্রতি জাতিসংঘের ‘ধর্ম অথবা বিশ্বাসের স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষ দূত' হাইনার বিলেনফেল্ড বলেছেন, ‘‘ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্রবাদ বাড়ছে৷ তাছাড়া এ দেশের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ হলেও সকল আইন ধর্মনিরপেক্ষ নয়৷ তবে সংবিধানের ৩৯ ও ৪১ ধারা অনুযায়ী সকলেরই এখানে ধর্ম পালনের স্বাধীনতা রয়েছে৷''

২০১২ সালে রামুতে বৌদ্ধদের মন্দির ও বাড়িঘরে ব্যাপক হামলা চালানো হয়ছবি: AFP/Getty Images

সেপ্টেম্বর মাসে সফর করেছেন হাইনার বিলেনফেল্ড৷ ৯ দিনের সফরে দেশের বেশ কিছু অঞ্চল ঘুরে দেখেছেন তিনি৷ সফর শেষে হাইনার বিলেনফেল্ড সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এদেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ ছাড়াও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধর্মীয় জনগোষ্ঠীও রয়েছে৷ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মাঝেও রয়েছে আহমাদিয়ার মতো জনগোষ্ঠী৷ এমন ক্ষুদ্র ধর্মীয় জনগোষ্ঠীগুলোর ধর্মপালনের অধিকার নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব৷''

কিন্তু সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা' থাকলেও বাংলাদেশে প্রায়ই ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মপালন করতে পারেননা৷ হিন্দু এবং বৌদ্ধমন্দিরে হামলার ঘটনা মোটেই বিরল নয়৷ হিন্দুদের ঘর এবং মন্দিরে হামলার ঘটনা কোথাও-না-কোথাও নিয়মিত বিরতিতেই ঘটে৷ কোনো হামলারই সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তি হয়না৷ বৌদ্ধমন্দিরেও হামলা হয়৷ ২০১২ সালে এক বৌদ্ধ তরুণ ফেসবুকে ‘ইসলামের অবমাননা করেছেন'-এমন খবর ছড়িয়ে দিয়ে কক্সবাজার জেলার রামুতে বৌদ্ধদের মন্দির ও বাড়িঘরে ব্যাপক হামলা চালানো হয়৷ যাঁর বিরুদ্ধে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে হামলা চালানো হয়েছিল, সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী সেই তরুণ এখনো নিখোঁজ

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমছে৷ ১৯৭১ সালে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর ধর্মীয় সংখ্যালঘু মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশের মতো ছিল৷ এখন সে সংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশে নেমে এসেছে৷

সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগ স্বাধীনতার আগে থেকেই চলছে৷ ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংবিধানের মূলনীতি রেখে পথ চলা শুরু করা একটি দেশে চার দশকেরও বেশি সময়ে এই প্রবণতা না কমায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিভিন্ন সময়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরই বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনাবিরোধীতা প্রকাশ্যে ব্যাপক মাত্রা পায়৷ পরবর্তীতে সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা' বাদ দেয়া হয়৷ প্রস্তাবনার পূর্বে ‘বিসমিল্লাহির-রাহমানির রাহিম' রেখে ‘ইসলাম'-কে রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা দেয়া হয়৷ ২১ বছর পর ক্ষমতায় ফেরা বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে সংশোধনী এনে সংবিধানে আবার ‘ধর্মনিরপেক্ষতা'-কে ফিরিয়ে আনে৷ কিন্তু সংবিধানে সকল ধর্মের সমান অধিকারের কথা বলা হলেও ইসলামকেই রাষ্ট্র ধর্মের স্বীকৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবেন৷''

আপনিও কি কিছু বলতে চান? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ