1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধর্ষণ বাড়ছে

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৭ জুলাই ২০১৪

ধর্ষণ বাড়ছে বাংলাদেশে৷ বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিবেদন এবং পুলিশের তথ্যে তার প্রমাণ মিলছে৷ বিশ্লেষকরা বলছেন এর জন্য আইনের প্রয়োগে ঢিলেমি এবং সামাজিক অবস্থা কাজ করছে৷

Symbolbild Missbrauch Opfer
প্রতীকী ছবিছবি: Fotolia/DW

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) সারা দেশ থেকে গড়ে প্রতিদিনই গড়ে চার-পাঁচজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিত্‍সা নিতে আসছেন৷ আর প্রতিমাসে দেড় থেকে দুই শতাধিক ধর্ষিতাকে চিকিত্‍সা দিচ্ছেন তারা৷ এই হিসাব হচ্ছে যারা ওসিসিতে চিকিত্‍সা নিতে আসেন তাদের৷ এছাড়া দেশের অন্যান্য হাসপাতাল এবং চিকিত্‍সা কেন্দ্রে যারা চিকিত্‍সা নেন তাদের হিসাব নেই ওসিসি'র কাছে৷ চিকিত্‍সার বাইরে যারা থাকেন, ‘সামাজিক লজ্জায়' যারা ঘটনা প্রকাশ করেন না তাদের হিসাব পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই৷ ওসিসি'র মতে সাধারণত এর শিকার ১৮-১৯ বছর বয়সি মেয়েরা৷

আর খোদ রাজধানী ঢাকার চিত্রটি কিছুটা হলেও পাওয়া যায় পুলিশের হিসাব থেকে৷ ঢাকা মহানগর পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত নারী-শিশু নির্যাতনের ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৫৫৪টি মামলা হয়েছে৷ এর মধ্যে রাস্তা থেকে অপহরণ করে গাড়ির মধ্যে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের মামলা রয়েছে অন্তত ৫০ ভাগ৷

জাতীয় মহিলা পরিষদ সম্প্রতি একটি হিসাব প্রকাশ করেছে৷ তাদের হিসাব অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ছ'মাসে সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৪৩১টি এবং এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮২ জন৷ এ সময়কালে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৪৫ জনকে৷ এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছেন আরও ৫১ জন৷

আর জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির হিসাব অনুযায়ী ২০১১ সালে সারা দেশে ৬২০ জন, ২০১২ সালে ৮৩৬ জন, ২০১৩ সালে ৭১৯ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়৷ তবে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা সামপ্রতিক সময়ে অনেক বেড়েছে৷

সমিতির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, রাজধানীসহ সারা দেশেই নারী নির্যাতনের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে৷ অপহরণের পর নারীদের ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আইন প্রয়োগ যেমন ঠিকমত হচ্ছে না তেমনি সামাজিকভাবেও ধর্ষকদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক প্রতিরোধ গড়ে উঠছে না৷ আর মামলা হলেও শেষ পর্যন্ত বিচার হয় না অনেক মামলারই৷ কারণ শেষ পর্যন্ত নানা উপায়ে ভিকটিমকে বিরত রাখা হয়৷ সাক্ষীদের সাক্ষ্য দিতে দেয়া হয় না ৷ আর এজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘ভিকটিম অ্যান্ড উইটনেস প্রটেকশন অ্যাক্ট' নামে নতুন একটি আইন করার কথা বললেও তা এখনো হয়নি৷

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি ইমান আলী ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের এক রায়ে, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ দেশের প্রতিটি থানায় আলাদা সেল গঠন করার নির্দেশ দেয়৷ কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি৷

আর জাতীয় মহিলা সমিতির সভানেত্রী আয়েশা খানম মনে করেন, প্রথম কাজ হল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সক্রিয় করা৷ তাঁর মতে, ধর্ষণ বিষয়ে আইনও সংশোধন করা প্রয়োজন৷ কারন ডিএনএ পরীক্ষা এবং অপরাধ প্রমাণের বোঝা এখনো ধর্ষণের শিকার নারীর ওপরই রয়ে গেছে৷

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার মাসুদুর রহমান এই বিষয়ে বলেন, ‘‘তারা অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিতে দেরি করেন না৷ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পর আইনি প্রক্রিয়ায় যা করতে হয় তা তারা দ্রুততার সঙ্গেই করেন৷ তাদের জন্য ঢাকা মহানগর এলাকায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারও আছে৷ এই সেন্টারটি পুলিশের নারী সদস্যদের দিয়েই পরিচালিত হয়৷ তদন্ত কর্মকর্তারাও নারী৷ আর থানাগুলোতে নারী ও শিশু বিষয়ক মামলা দেখার জন্য আলাদা নারী পুলিশ কর্মকর্তা আছেন৷''

তিনি বলেন, ‘‘তবে নারীদের আরো সাহসী হয়ে এগিয়ে আসতে হবে৷ অভিযোগ করতে হবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ