বাংলাদেশে পাবলিক পরীক্ষা একটা দীর্ঘ সময় অতিক্রম করছে৷ আর এ সময়ে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি৷ প্রশ্ন উঠেছে, এই পদ্ধতি আদতেই ভালো কোনো ফল বয়ে আনবে কি? মেধা যাচাইয়ের এটাই কি সঠিক পদ্ধতি?
বিজ্ঞাপন
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী বোর্ডে বাংলা প্রথম পত্রের বহুনির্বাচনি অভীক্ষায় ‘ক' সেটের প্রশ্নে বলা আছে, ‘আশিটা বছর কেটে গেল, আমি ডাকিনি তোমায় প্রভু, আমার ক্ষুধার অন্ন তা বলে বন্ধ করনি তবু৷' অথচ প্রকৃতপক্ষে ‘প্রভু' শব্দের বদলে হবে ‘কভু' এবং ‘তবু' শব্দের বদলে হবে ‘প্রভু'৷
এইভাবে যশোর বোর্ডে গণিতের প্রশ্নে ছিল ১১টি ভুল৷ ঢাকা বোর্ডের পদার্থবিজ্ঞানের প্রশ্নেও ভুল পাওয়া গেছে পাঁচটি৷ এছাড়া রাজশাহী বোর্ডে বাংলা প্রথম পত্রে তিনটি এবং দ্বিতীয় পত্রে চারটি ভুল ছিল৷ ১১টি ভুল ধরা পড়েছিল চট্টগ্রাম বোর্ডের গণিতের প্রশ্নে, বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম মিলিয়ে৷
চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয় ১ ফেব্রুয়ারি আর শেষ হয় ৮ মার্চ৷ আর এরই মধ্যে পরীক্ষার ফলও প্রকাশ করা হয়েছে৷ জানা গেছে, বরিশাল বোর্ডে এসএসসি-তে ‘হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা' বিষয়ের উত্তরপত্র ভুলভাবে মূল্যায়নের কারণে ৮,৫০৯ জন পরীক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ পরে অবশ্য তাদের ফল পুনর্মূল্যায়ন করে দায়ীদের শাস্তি দেয়া হয়েছিল৷
‘আলোকিত মানুষ’ গড়ছে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র
‘আলোকিত মানুষ চাই’ – এ স্লোগান নিয়ে ১৯৭৮ সালে যাত্রা শুরু করেছিল বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র৷ ঢাকা কলেজের পেছনে এক ছোট্ট মিলনায়তনে মাত্র ১৫ জন্য সভ্য নিয়ে শুরু করা সেদিনের সেই ছোট্ট প্রতিষ্ঠানটি আজ বিশাল মহীরূহে রূপ নিয়েছে৷
ছবি: DW
বাংলামোটরে নতুন ভবন
ঢাকার বাংলা মোটরে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের নতুন ভবন৷ নয় তলা বিশিষ্ট এ ভবনের প্রায় ৫৭,০০০ বর্গফুট জুড়ে আছে সমৃদ্ধ পাঠাগার, চিত্রশালা, মিলনায়তন, সংগীত ও চলচ্চিত্র আর্কাইভ, অতিথি কক্ষ, বই বিক্রয় কেন্দ্র ইত্যাদি৷
ছবি: DW
প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ৷ গত প্রায় ৩৫ বছর ধরে যিনি নিরন্তর কাজ করে চলছেন আলোকিত মানুষ গড়ার লক্ষ্যে৷
ছবি: DW
যেখানে আছে দুই লাখ বই
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ভবনের ‘কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি’৷ এর সমৃদ্ধ সংগ্রহশালায় আছে প্রায় দুই লাখ বই৷ বছরে দশ হাজারের মতো পাঠক-পাঠিকা এই গ্রন্থাগার থেকে বই পড়ার সুযোগ পান৷ শুধু পাঠাগারেই নয়, এখান থেকে বই বাড়িতে নিয়ে পড়ারও সুযোগ আছে৷
ছবি: DW
প্রকাশনায় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের নানান কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম প্রকাশনা কার্যক্রম৷ এই কর্মসূচির আওতায় বাংলা ভাষাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও ভাষার শ্রেষ্ঠ বইগুলো প্রকাশ করে থাকে৷
ছবি: DW
ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার
বাংলাদেশে ভালো গ্রান্থাগার ব্যবস্থার অভাববোধ থেকেই বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র চালু করে ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার ব্যবস্থা৷ এই ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার প্রতি সপ্তাহের নির্ধারিত সময়ে শহর ও গ্রাম মিলিয়ে গড়ে ৪০টি এলাকায় গিয়ে আধঘণ্টা থেকে দু’ঘণ্টা পর্যন্ত সদস্যদের মধ্যে বই দেওয়া-নেওয়া করে৷ ১৯৯৯ সালে চালু হওয়া এই কার্যক্রম বর্তমানে বাংলাদেশের ৫৮টি জেলার ২৫০টি উপজেলার ১৯০০ লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে৷
ছবি: DW
আছেন গ্রন্থাগরিক
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিগুলোর প্রতিটিতে কজ করেন একজন করে গ্রন্থাগারিক বা লাইব্রেরিয়ান৷ পাঠকদের কাছে বই বিতরণ, পাঠ শেষে বই বুঝে নেয়সহ ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির তদারকি করেন তাঁরা৷
ছবি: DW
সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারে সাধারণ সসদ্য ও বিশেষ সদস্য হয়ে বই পড়ার সুযোগ আছে সমাজের সব শ্রেণির, সব বয়সের মানুষের৷ সদস্যরা সপ্তাহের নির্ধারিত সময়ে এলাকায় আসা লাইব্রেরি থেকে পছন্দের বইটি বাড়িতে নিয়ে পড়ার সুযোগ পান৷
ছবি: DW
গাড়িতে পছন্দের বই পড়ার সুযোগ
সপ্তাহের নির্ধারিত সময়ে বিভিন্ন এলাকায় যাওয়া বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারে বসেও বই পড়ার সুযোগ আছে পাঠকদের৷ এছাড়াও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে আছে দেশভিত্তিক উৎকর্ষ কার্যক্রম, আলোর স্কুল, আলোর পাঠশালা, শ্রবণ দর্শন, প্রাথমিক শিক্ষকদের বই পড়ার কর্মসূচি ইত্যাদি৷
ছবি: DW
8 ছবি1 | 8
একইভাবে পরীক্ষার সৃজনশীল প্রশ্নে ভুল থাকার কারণে ঢাকাস্থ নামি-দামি কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাম্প্রতিক সময়ে ক্ষমাও চেয়েছে৷
সাধারণভাবে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য মোট ৩২ সেট প্রশ্ন করা হয়৷ প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে এ সব প্রশ্ন থেকে লটারি করে প্রতি বোর্ডের জন্য চার সেট প্রশ্ন দেয়া হয়৷ কিন্তু তারপরও পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস একটি নিয়মিত ঘটনায় প্ররিণত হয়েছে বাংলাদেশে৷
প্রতিটি প্রশ্ন তৈরি ও পরিমার্জনে জড়িত থাকেন চারজন অভিজ্ঞ শিক্ষক, যাঁরা এ কাজের জন্য সম্মানী পান৷ যদিও এ সব শিক্ষক নির্বাচন করা নিয়ে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে৷
বাংলাদেশে পাবলিক পরীক্ষাগুলো এখন নেয়া হয় সৃজনশীল পদ্ধতিতে৷ ২০১০ সাল থেকে এসএসসি এবং তারও আগে প্রাথমিকে পরীক্ষার ক্ষেত্রে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু হয়৷ আর গত বছর থেকে এইচএসসি-তেও চালু হয়েছে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি৷ এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, মানে মুখস্থ বিদ্যার পরিবর্তে চিন্তা এবং সৃষ্টিশীলতার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়৷ অবশ্য এ পদ্ধতি নিয়ে বিতর্কও কিছু কম নেই৷
সৃজনশীল পদ্ধতিতে পুরো বই পড়া থাকলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ভালো করার কথা৷ কারণ এখানে প্রশ্নে বইয়ের একটি ‘প্যারা' বা অনুচ্ছেদ তুলে দিয়ে তা থেকেই প্রশ্ন করা হয়৷ কিছু সমস্যা দিয়ে বলা হয় তার সমাধান করতে৷
এছাড়া বাংলাদেশে এখন অতীতের মতো আর প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ বা তৃতীয় বিভাগ নেই৷ ২০০১ সাল থেকে চালু হয়ছে ‘গ্রেডিং' পদ্ধতি৷ বর্তমানে ৮০ শতাংশ বা তদুর্ধ্ব নম্বর পেলে জিপিএ-৫, ৭০ থেকে ৭৯ শতাংশ নম্বর পেলে জিপিএ-৪, ৬০ থেকে ৬৯ শতাংশ নম্বর পেলে জিপিএ-৩.৫, ৫০ থেকে ৫৯ শতাংশ নম্বর পেলে জিপিএ-৩, ৪০ থেকে ৪৯ শতাংশ নম্বর পেলে জিপিএ-২ এবং ৩৩ থেকে ৩৯ শতাংশ নম্বর পেলে জিপিএ-১ প্রাপ্তির সনদ দেয়া হয়৷
মজিবুর রহমান
এরপরেও সৃজনশীল পদ্ধতিতে এসএসসি পরীক্ষায় জিপি-৫ পাওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা হয়েছে৷ তাতে জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থীই সাধারণ জ্ঞানের এমন সব প্রশ্নের জবাব দিতে পারেনি, যা তাদের পারা উচিত ছিল বলে মনে করা হচ্ছে৷
তাই প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশের পরীক্ষা পদ্ধতি মেধা যাচাইয়ের জন্য সঠিক কিনা৷ অথবা এই সৃজনশীল পদ্ধতি মেধা যাচাইয়ে কি আদৌ কার্যকর?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা এবং গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতির দু'টি দিক আছে৷ পরীক্ষা এবং মূল্যায়ন৷ কারা প্রশ্ন করছেন, কী প্রশ্ন করছেন এবং কারা মূল্যায়ন করছেন – সেই বিষয়গুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ এর সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কারা পড়াচ্ছেন, কীভাবে পড়াচ্ছেন – তাও বিবেচ্য৷''
তিনি বলেন, ‘‘ব্যতিক্রম বাদ দিয়ে এই পদ্ধতির জন্য শিক্ষকরা উপযুক্ত নন৷ তাঁরা উপযুক্ত হলে শিক্ষার্থীদের উপকৃত হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু সেটা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না৷ এখানে মুখস্থবিদ্যা তেমন কাজে আসে না৷ আর গতানুগতিক প্রশ্নও নেই৷ তাই প্রশ্ন করাই একটি বড় যোগ্যতার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷''
তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের গবেষণায় আমরা দেখেছি যে, সাধারণভাবে শিক্ষার্থীদের মান ভালো৷ কিন্তু তাদের সৃজনশীলের উপযোগী করতে পারছেন না শিক্ষকরা৷''
অধ্যাপক মজিবর রহমান বলেন, ‘‘প্রচলিত যে কোনো পরীক্ষা ব্যবস্থায় মেধা যাচাইয়ের সুযোগ নেই৷ আসলে আমরা পরীক্ষার্থী তৈরি করি, শিক্ষার্থী নয়৷ এই যেমন, কেউ ছবি আঁকায় ভালো, কেউ ভালো গণিতে৷ কেউ আবার কথা বলে ভালো বোঝাতে পারে, কেউ পারে লিখতে৷ অথচ সবার বিচার করা হচ্ছে একইভাবে৷ তাহলে মেধা যাচাই কীভাবে হবে!''
দেশে দেশে, ক্লাসে ক্লাসে
স্কুলের ক্লাসরুম বলতে সব কিছু বোঝায়৷ এক কথায়, ছাত্রছাত্রীরা যেখানে বসে পড়াশুনো করে, শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের দেখাশুনো করেন, সেটাই হলো ক্লাসরুম৷
ছবি: Reuters/I. Alvarado
আফগানিস্তান: প্রগতি
মহাজেরা আর্মানি উত্তর আফগানিস্তানের জালালবাদের কাছে একটি মেয়েদের ক্লাসের শিক্ষিকা৷ ২০০১ সালে তালেবান জঙ্গিরা বিতাড়িত হওয়ার আগে এই অঞ্চলে মেয়েদের স্কুলে যাওয়াই বারণ ছিল৷ আজ মেয়েদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ নিয়মিতভাবে স্কুলে যায়৷
ছবি: Reuters/Parwiz
জাপান: ডিসিপ্লিন
টোকিও-র তাকিনাগাওয়া প্রাইমারি স্কুলের পড়ুয়ারা দুপুরে খেতে বসেছে৷ জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বসেরাদের মধ্যে গণ্য৷ পিসা-র জরিপে জাপান নিয়মিতভাবে প্রথম দশটি দেশের মধ্যে পড়ে৷ অবশ্য বলা হয় যে, স্কুলে ভালো করার জন্য ছেলে-মেয়েদের ওপর বড় বেশি চাপ দেওয়া হয়ে থাকে৷
ছবি: Reuters/T. Hanai
ব্রাজিল: ভাসন্ত স্কুল
মানাউস-এর ‘দ্বিতীয় সাও জোসে’ স্কুলটি বস্তুত নদীবক্ষে৷ তা-ও আবার যে কোনো নদী নয়: খোদ অ্যামাজোন! অবশ্য ব্রাজিলেও সরকারি স্কুলগুলোর বিশেষ সুনাম নেই৷ ওদিকে বেসরকারি স্কুলগুলোর মান ভালো হলেও, তাদের ফি বেশি৷
ছবি: Reuters/B. Kelly
যুক্তরাষ্ট্র: সমৃদ্ধির দেশে অসাম্য
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শিল্পোন্নত দেশগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে৷ অথচ এখানকার শিক্ষাব্যবস্থায় ধনি-দরিদ্রের ফারাক আছে, বলে অভিযোগ৷ শ্বেতাঙ্গ ছেলে-মেয়েরা কৃষ্ণাঙ্গ কিংবা ল্যাটিন অ্যামেরিকান ছেলে-মেয়েদের চেয়ে ভালো ফলাফল করে থাকে৷ চিকাগোর এই প্রাইমারি স্কুলটিতে অবশ্য এখনও ফলাফল নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই৷
ছবি: Reuters/J. Young
ভিয়েতনাম: অন্ধকারে দেহ আলো
আলো নেই, বই নেই, তা সত্ত্বেও ভিয়েতনামে এই তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়ারা পড়া করে চলেছে৷ মনে রাখতে হবে: বিশ্বব্যাপী পিসা জরিপে কিন্তু ভিয়েতনাম জার্মানির চেয়ে ভালো ফলাফল করেছে৷
ছবি: Reuters/Kham
ব্রিটেন: পরিপাটি
ইংল্যান্ডে স্কুলের ইউনিফর্ম চালু হয়েছে বহু যুগ আগে৷ মিডলসেক্স-এর ‘হ্যারো’ স্কুলে হ্যাট পর্যন্ত পরতে হয়৷ মজার কথা, সুদীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলটিতে কিন্তু ইউনিফর্ম সংক্রান্ত কোনো লিখিত নিয়মাবলী নেই৷
ছবি: Reuters/S. Plunkett
পাকিস্তান: পথে বসে
অথবা পার্কে বসে পড়াশোনা৷ লক্ষণীয় যে, মেয়েরা আর ছেলেরা একসঙ্গে বসেই পড়াশোনা করছে, পাকিস্তানের সর্বত্র যেটা সম্ভব নয়৷
ছবি: Reuters/C. Firouz
মরক্কো: বেগুনি রঙের ক্লাসরুম
রাবাত-এর উদাইয়া প্রাইমারি স্কুলের ক্লাসরুমটি সুন্দর করে রং করা৷ মুশকিল এই যে, গোড়ায় ৯২ শতাংশ ছেলে-মেয়ে স্কুলে গেলেও, পনেরোয় পা দেবার আগেই তাদের অর্ধেক স্কুল ছেড়ে দেয়৷ ১৫ বছরের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ লিখতে-পড়তে জানে না৷
ছবি: Reuters/Y. Boudlal
কেনিয়া: বস্তির স্কুল
কেনিয়ায় ২০০৩ সাল থেকে প্রাইমারি স্কুলে যেতে ফি লাগে না৷ তবে শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বিশেষ বাড়ানো হয়নি৷ ক্লাসে ছাত্রসংখ্যা বেশি৷ নাইরোবির দক্ষিণে কিবেরা বস্তি এলাকার এই স্কুলটিতে বেঞ্চের চেয়ে পড়ুয়া বেশি৷
ছবি: Reuters/N. Khamis
মালয়েশিয়া: সুখি ছাত্রছাত্রী
পিসা জরিপে মালয়েশিয়ার ছাত্রছাত্রীরা বলেছে, তারা সুখি৷ নুরুল ইমান মাদ্রাসার পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য৷
ছবি: Reuters/O. Harris
ইউক্রেন: নানা ভাষা
ইউক্রেনে ছেলে-মেয়েরা ক্লাস ওয়ান থেকেই যে কোনো একটা বিদেশি ভাষা শিখতে শুরু করে৷ কিয়েভ-এর এই লাইসিয়াম বা হাই স্কুলটিতে পঞ্চম শ্রেণি থেকে একটি দ্বিতীয় বিদেশি ভাষা শিখতে হয়৷ ছাত্রছাত্রীদের অনেকে ইউক্রেনীয় ও রুশ ভাষা ছাড়া ইংরেজি, ফরাসি অথবা জার্মান বলতে পারে৷
ছবি: Reuters/G. Garanich
চিলি: পড়ার কি কোনো শেষ আছে?
সান্তিয়াগোর ‘লাউরা ভিকুনা’ সান্ধ্য স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বয়স হয়েছে বটে, তবুও তারা এককালে যে স্কুলের পড়া শেষ করতে পারেননি – সম্ভবত আর্থিক সামর্থ্য ছিল না বলে – আজ সেটাই সমাপ্ত করতে বদ্ধপরিকর৷
ছবি: Reuters/I. Alvarado
12 ছবি1 | 12
সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি আগে থেকে ধারণা করা প্রশ্নের ভিত্তিতে হয় না৷ এতে প্রশ্ন সাধারণ নিয়মের মধ্যে পড়েও না৷ কিন্তু তারপরও এর জন্য বাজারে গাইড বইয়ের ছড়াছড়ি৷ এমনকি এক্ষেত্রেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনা ঘটে৷
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক রাশেদা কে চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে এ বিষয়ে বলেন, ‘‘সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে সবার আগে প্রয়োজন শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ৷ আমাদের এখানে সেটাই হয়নি৷ না, প্রশিক্ষণ হয়েছে, কিন্তু কার্যকর প্রশিক্ষণ হয়নি৷ যদি হতো তাহলে বাজারে গাইড বই থাকত না৷ প্রশ্নপত্র ফাঁস হলেও তা কোনো কাজে দিত না৷''
তাই তাঁর বক্তব্য, ‘‘গাইড বই এখন শিক্ষকরাও ‘ফলো' করছেন৷ তাঁরা গাইড বই থেকেই প্রশ্ন করছেন৷ ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে৷ একটা ভালো পদ্ধতি উল্টো ফল দিচ্ছে৷''
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার ইন্সটিটিউট ফর কারিকুলাম অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের (কেআইসিই) পরীক্ষা প্রধান কিম সাং-হুন পদত্যাগ করেন৷ তার পরপরই দেশটির শিক্ষামন্ত্রী হাওয়াং উ-ইয়াং জাতির কাছে ক্ষমা চান৷ কারণ, সেখানকার কলেজ স্কলাস্টিক অ্যাবিলিটি টেস্ট (সিএসএটি)-এ ইংরেজি ও জীববিজ্ঞান অংশের দু'টি প্রশ্নে ভুল ছিল৷ এ রকম দায় নিয়ে বাংলাদেশে কেউ পদত্যাগ বা ক্ষমা চেয়েছেন বলে এখনো শোনা যায়নি৷ অথচ আজও এ দেশে প্রশ্নপত্রে ভুলের ছড়াছড়ি৷ আর প্রশ্নপত্র ফাঁস? সে তো এক নিয়মিত ঘটনা...৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷