বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে ফোন হ্যাকিং-এর যন্ত্রপাতি বিক্রি বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেলেব্রাইট৷ তবে ঢাকা বলছে, ইসরায়েলের কাছ থেকে এমন কিছু আমদানিই করা হয়নি৷
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (ব়্যাব) ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান সেলেব্রাইট-এর তৈরি ফোনে আড়িপাতার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিনা এ নিয়ে বিতর্ক চলছে দীর্ঘদিন ধরে৷ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে- এমন অভিযোগ করে ইসরায়েলের আদালতে পিটিশনও করা হয়েছে, যাতে সেলেব্রাইট দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে নজরদারি প্রযুক্তি রপ্তানি বন্ধ করে৷
র্যাব – বিতর্কিত এক বিশেষ বাহিনী
শুরুটা হয়েছিল ২০০৪ সালে৷ সেসময় বাঘা বাঘা জঙ্গিদের কুপোকাত করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায় ব়্যাব৷ কিন্তু অসংখ্য ক্রসফায়ার, অপহরণ, হত্যার দায়ে এখন সমালোচিত এই ‘এলিট ফোর্স’৷ র্যাব নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Getty Images/AFP
‘এলিট ফোর্স’
বাংলাদেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব নামক ‘এলিট ফোর্স’-এর যাত্রা শুরু হয় ২০০৪ সালে৷ এই বাহিনীর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ‘‘পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে সরকার একটি এলিট ফোর্স গঠনের পরিকল্পনা করে৷’’ তবে এই বাহিনী এখন তুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন মহল৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
সমন্বিত বাহিনী
বাংলাদেশ পুলিশ, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে র্যাব গঠন করা হয়৷ এই বাহিনীর উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাস প্রতিরোধ, মাদক চোরাচালান রোধ, দ্রুত অভিযান পরিচালনা এবং জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কার্যক্রমে নিরাপত্তা প্রদান৷
ছবি: Getty Images/AFP
জঙ্গি তৎপরতা দমন
শুরুর দিকের ব়্যাবের কার্যক্রম অবশ্য বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল৷ বিশেষ করে ২০০৫ এবং ২০০৬ সালে বাংলাদেশে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা উগ্র ইসলামি জঙ্গি তৎপরতা দমনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে র্যাব৷
ছবি: AP
জেএমবির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার
বাংলাদেশের ৬৩ জেলায় ২০০৫ সালে একসঙ্গে বোমা ফাটিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করা জেএমবির শীর্ষ নেতাদের আটক ব়্যাবের উল্লেখযোগ্য সাফল্য৷ ২০০৬ সালের ২ মার্চ শায়খ আব্দুর রহমান (ছবিতে) এবং ৬ মার্চ সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হয় ব়্যাব৷ একাজে অবশ্য পুলিশ বাহিনীও তাদের সহায়তা করেছে৷
ছবি: DW
ভুক্তভোগী লিমন
২০১১ সালে লিমন হোসেন নামক এক ১৬ বছর বয়সি কিশোরের পায়ে গুলি করে এক ব়্যাব সদস্য৷ গুলিতে গুরুতর আহত লিমনের বাম পা উরুর নীচ থেকে কেটে ফেলতে হয়৷ এই ঘটনায় ব়্যাবের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷ তবে এখনো সুবিচার পায়নি লিমন৷ উল্টো বেশ কিছুদিন কারাভোগ করেছেন তিনি৷
ছবি: DW
‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’
জঙ্গিবাদ দমনে সাফল্য দেখালেও ক্রসফায়ারের নামে অসংখ্য ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব়্যাবের বিরুদ্ধে সমালোচনা ক্রমশ বাড়তে থাকে৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ব়্যাবের বিলুপ্তি দাবি করে জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই বাহিনী ‘সিসটেমেটিক’ উপায়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে৷
ছবি: DW
‘ক্রসফায়ার’
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পর্যালোচনা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে ব়্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ২৪ জন৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি অনুযায়ী, ২০০৪ থেকে ২০১১ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে কমপক্ষে সাতশো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ব়্যাব জড়িত ছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আলোচিত সাত খুন
২০১৪ সালের মে মাসে ব়্যাবের বিরুদ্ধে ৬ কোটি টাকা ঘুসের বিনিময়ে সাত ব্যক্তিকে অপহরণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে৷ নারায়ণগঞ্জে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিন ব়্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ৷ এই ঘটনার পর ব়্যাবের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আবারো বিতর্ক শুরু হয়েছে৷
ছবি: DW
প্রতিষ্ঠাতাই করছেন বিলুপ্তির দাবি
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, ব়্যাবের বিলুপ্তি দাবি করেছেন৷ অথচ তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই ‘এলিট ফোর্স’৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিলুপ্তির দাবি নাকচ
বাংলাদেশে এবং আন্তর্জাতিক স্তর থেকে ব়্যাবকে বিলুপ্তির দাবি উঠলেও বর্তমান সরকার সেধরনের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না৷ বরং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ব়্যাব বিলুপ্তির দাবি নাকচ করে দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘র্যাবের কোনো সদস্য আইন ভঙ্গ করলে তাদের চিহ্নিত করে বিচারিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়৷’’
ছবি: Getty Images/AFP
10 ছবি1 | 10
সেলেব্রাইটের এক মুখপাত্র বুধবার জানিয়েছেন যে, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং তথ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকায় বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে ব্যবসা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি৷ ডয়চে ভেলেকে ইমেলে তিনি বলেন, ‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য বা ইসরায়েল নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, কিংবা ‘ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’-এর কালো তালিকায় আছে এমন কোনো দেশে কিছু বিক্রি করে না সেলেব্রাইট৷ আমরা এমন ক্রেতাদের সাথে ব্যবসা করি, যারা আমরা বিশ্বাস আইন মেনে কাজ করে এবং গোপনীয়তার অধিকার বা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না৷’’
তিনি বলেন, ‘‘উদাহরণস্বরপ বলতে পারি, আমরা বাংলাদেশ, বেলারুশ, চীন, হংকং, ম্যাকাও, রাশিয়া এবং ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ব্যবসা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যার আংশিক কারণ হচ্ছে, দেশগুলোর মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং সেখানে তথ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে৷’’
যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত হতে দেশটির সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)-কে বেশ কিছু তথ্য প্রদান করেছে ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানটি৷ এসইসি'র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সেসব তথ্যের মাঝে সেলেব্রাইট এটাও উল্লেখ করেছে যে, রাশিয়া এবং বাংলাদেশসহ কিছু দেশে পণ্য বিক্রি বন্ধের দাবিতে ইসরায়েলি আদালতে পিটিশন এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের কারণে প্রতিষ্ঠানটির ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়ে থাকতে পারে৷
‘‘খদ্দেররা আমাদের পণ্যের অন্যান্য অপব্যবহার করেছে- এমন অভিযোগ ভবিষ্যতেও আমাদের সুনাম ক্ষুন্ন করতে পারে, এমনকি যদি আমরা সেই অপব্যবহারের কোনোরকম অংশীদার না-ও হই বা তাদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদে দ্রুত পদক্ষেপ নেই, তারপরও...,’’ জানিয়েছে সেলেব্রাইট৷
ফোন হ্যাকিং-এর আধুনিক প্রযুক্তি তৈরি করে সেলেব্রাইট
গত ১৭ মে এসইসি ওয়েবসাইটে এসব তথ্য প্রকাশিত হলেও সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রভাবশালী হারেৎস পত্রিকা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করলে বিষয়টি অনেকের নজরে আসে৷
হারেৎস লিখেছে, ‘‘সেলেব্রাইট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে ‘ডিজিটাল ফরেনসিক' সমাধান বিক্রি করে৷ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পণ্যের নাম হচ্ছে ‘ইউনিভার্সেল ফরেনসিক এক্সট্রাকশন' ডিভাইস৷ এই ডিভাইস ব্যবহার করে ‘লকড' থাকা মোবাইল ফোনের বিভিন্ন তথ্য এবং সেটির অবস্থান ফোনটির মালিকের অনুমতি ছাড়াই সংগ্রহ করা যায়৷''
পত্রিকাটি আরো লিখেছে, ‘‘সেলেব্রাইটের মূল খদ্দের পশ্চিমা বিভিন্ন পুলিশ বাহিনী হলেও এটি অন্যত্রও এই ডিভাইস বিক্রি করে, যার মধ্যে এখনো পর্যন্ত অন্তত বাংলাদেশও রয়েছে৷''
বাংলাদেশের আধাসামরিক বাহিনী ব়্যাব, যেটির বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন এবং সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিকের গুম করার অভিযোগ রয়েছে, সেলেব্রাইটের ফোন হ্যাকিং যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বলেও লিখেছে হারেৎস৷
বাংলাদেশের অস্বীকার
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল অবশ্য ইসরায়েলের কাছ থেকে ফোনে আড়িপাতার যন্ত্র কেনার খবর অস্বীকার করেছেন৷
ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের তো এমন কোনো সম্পর্ক নেই যে, তাদের কাছ থেকে আমরা আড়িপাতার যন্ত্র আমদানি করবো৷’’
তিনি বলেন, ‘‘আড়িপাতার যন্ত্রের কথা আমরা জানি না৷ ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’-এর যন্ত্রপাতি আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করি৷’’
স্বৈরাচারী সরকারের ১০ লক্ষণ
গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে ‘গণতান্ত্রিক’ ও স্বৈরাচারী’ সরকারের মধ্যে তফাত করাটা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়৷ ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের তথ্য অনুসারে এই ছবিঘরে থাকছে স্বৈরাচারী সরকারের ১০টি লক্ষণ৷
ছবি: DW/S. Elkin
গণমাধ্যমকে ভয় দেখানো
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোতে গণমাধ্যম বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকে৷ সরকারের সমালোচনা ও ভুল ধরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনেক৷ ফলে সমালোচনার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সাংবাদিকদের দূরে রাখতে স্বৈরাচারী শাসকরা পত্রিকা, টেলিভিশনকে ভয় দেখিয়ে কোণঠাসা করতে চান৷
ছবি: DW/S. Elkin
সরকারপন্থি গণমাধ্যম সৃষ্টি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে৷ ফলে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা সবক্ষেত্রে সম্ভব হয় না৷ পালটা ব্যবস্থা হিসেবে স্বৈরশাসকরা সরকারপন্থি গণমাধ্যম নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন৷ এর ফলে ব্যাপক হারে সরকারের নানা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো সহজ হয়৷
ছবি: picture alliance/dpa/J. Büttner
রাষ্ট্রীয় সংস্থার দলীয়করণ
রাষ্ট্রের সকল স্তরে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে স্বৈরাচারী শাসকরা পুলিশ, সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে সরকারি আমলাদের মধ্যেও দলীয়করণ প্রতিষ্ঠা করে থাকেন৷ এর ফলে রাষ্ট্রের ভেতর থেকে ক্ষোভ দেখা দিলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে সুবিধা হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP
বিরোধীদের ওপর রাষ্ট্রীয় নজরদারি
রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থাকে সরকারের রাজনৈতিক বিরোধীতাকারীদের ওপর নজরদারির কাজে লাগানো হয়৷ গোয়েন্দা মারফত পাওয়া তথ্য কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে নানাভাবে হেয় করা ও কোণঠাসা করতে অপব্যবহার করা হয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা৷
ছবি: picture alliance/dpa/Chromorange
বিশেষ সুবিধা ও দমনপীড়ণ
স্বৈরাচারী সরকার বা সরকারপ্রধানকে যেসব কর্পোরেট সংস্থা বা ব্যক্তি নানাভাবে সহায়তা করে থাকেন, তাদের বিশেষ রাষ্ট্রীয় সুবিধা দেয়া হয়৷ বেআইনি উপায়ে কাজ পাইয়ে দেয়া থেকে শুরু করে নানাভাবে সহায়তা করা হয়৷ অন্যদিকে, যেসব সংস্থা সহায়তা করে না, তাদের ক্ষেত্রে চলে যে-কোনো উপায়ে দেউলিয়া বানানোর প্রক্রিয়া৷
ছবি: Imago/blickwinkel
বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ
আদালত স্বাধীন থাকলে স্বৈরাচারী শাসকদের নানা সময়ে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়৷ ফলে শুরু থেকেই স্বৈরাচারী শাসকরা সুপ্রিম কোর্টকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করেন৷ অনুগত বিচারক নিয়োগ দেয়া, বিরোধীদের ছাঁটাই করা থেকে শুরু করে, নানাভাবে চেষ্টা চলে এ নিয়ন্ত্রণের৷
ছবি: Fotolia/Sebastian Duda
একপাক্ষিক আইন প্রয়োগ
স্বৈরাচারী শাসকদের শাসনামলে ‘আইন সবার জন্য সমান’ বাক্যটি থাকে শুধু কাগজে-কলমে৷ বাস্তবে প্রতিপক্ষকে দমনের জন্য পাস করা হয় নতুন নতুন আইন৷ বিরোধীদের নানা উছিলায় গ্রেপ্তার নির্যাতন করা হলেও, নিজের সমর্থকদের রাখা হয় আইনের আওতার বাইরে৷
ছবি: Fotolia/axentevlad
‘জুজুর ভয়’ দেখানো
বিরোধীরা ক্ষমতায় এলে ভয়াবহ অবস্থা হবে, দেশ রসাতলে যাবে, বিরোধীরা কত খারাপ, ক্রমাগত সে প্রচার চালানো হয়৷ এর ফলে এমন অবস্থা তৈরির চেষ্টা হয় যাতে জনগণের মনে প্রতিপক্ষ সম্পর্কে একটা নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করা যায়৷
ছবি: picture alliance/dpa/P. Pleul
দৃষ্টি সরাতে ভীতি সৃষ্টি
ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন ধরনের ভীতি তৈরি করে থাকেন স্বৈরাচারী শাসকরা৷ অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, গণতন্ত্রহীনতা ও দুঃখ-দুর্দশা থেকে জনগণের দৃষ্টি সরিয়ে রাখতে কোথাও জঙ্গি সংকট, কোথাও মাদকবিরোধী যুদ্ধ, কোথাও অন্য দেশের সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করা হয়৷
ছবি: Fotolia/lassedesignen
নির্বাচনে কারচুপি
আগে জোর করে ক্ষমতায় থাকার উদাহরণ থাকলেও, এখন স্বৈরাচারী শাসকরাও নিয়মিত বিরতিতে নির্বাচন দিয়ে থাকেন৷ ‘গণতন্ত্র আছে’ জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলে এমন ধারণা দেয়ার জন্য তারা নির্বাচন দেন৷ কিন্তু সে নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের আয়োজন আগে থেকেই করা থাকে৷
ছবি: DW/A. Islam
10 ছবি1 | 10
সেলেব্রাইটের তৈরি নজরদারি প্রযুক্তি ব়্যাব ব্যবহার করে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘ব়্যাব যা ব্যবহার করে, তা আমরা ওদের (ইসরায়েল) কাছ থেকে কোনোদিনই আমদানি করিনি৷’’
ইসরায়েলি আদালতে পিটিশন, গণমাধ্যমের চাপ
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনী ইসরায়েলের তৈরি নজরদারি উপকরণ ব্যবহার করছে – এরকম প্রতিবেদন ইসরায়েলি এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে একাধিকবার প্রকাশিত হয়েছে৷
ইসরায়েলের মানবাধিকার আইনজীবী এইটেই ম্যাক এবং ৮৪ জন সাধারণ ইসরায়েলি চলতি বছরের শুরুর দিকে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশে ইসরায়েলি নজরদারি প্রযুক্তি রপ্তানি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে পিটিশন দাখিল করে৷
জেরুসালেম শহরের বাসিন্দা এইটেই ম্যাক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গোটা বিশ্বে পরিচিতি রয়েছে৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শেখ হাসিনা সরকার বাকস্বাধীনতা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও বিরোধী দলের কর্মকাণ্ড সীমিত করতে বিভিন্ন আইন পাস করেছে৷’’
‘‘আমি মনে করি, ইসরায়েলি ফোন হ্যাকিং যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সরকারের সমালোচনা করা অ্যাক্টিভিস্ট, সংগঠন, লিঙ্গ ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ যারা দুর্নীতি বন্ধে কাজ করছেন তাদের কাজকর্মকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হতে পারে,’’ বলেন তিনি৷
ইসরায়েলের আদালত অবশ্য সেলেব্রাইটকে বাংলাদেশে প্রযুক্তি পণ্য রপ্তানি বন্ধে কোনো নির্দেশনা দেয়নি৷ তবে আদালতে পিটিশন দাখিলের ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানটি নিজ উদ্যোগেই বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে ব্যবসা না করার ঘোষণা দেয়৷
এইটেই ম্যাক এই বিষয়ে বলেন, ‘‘জনগণ এবং গণমাধ্যমের চাপের কারণে সেলেব্রাইট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷’’