বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রস্তাব প্রত্যাহার করেছে টাটা
৩১ জুলাই ২০০৮টাটা সার, বিদ্যুত, কয়লা ও ইস্পাত খাতের চারটি প্রকল্পে টাটার প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে চেয়েছিল৷ ২০০৪ সালে দেয়া এই বিনিয়োগ প্রস্তাব বিষয়ে সরকার কোন সিদ্ধান্ত না দেওয়ায় হতাশ ছিল টাটা৷ তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ প্রস্তাব নিয়ে আবার আলোচনা হলেও কোন সিদ্ধান্ত আসেনি৷ ফলে বাংলাদেশে সর্বকালের বৃহত এ প্রকল্পে বিনিয়োগের আর কোন সম্ভাবনা রইলো না৷
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়গুলো নিয়ে নিজস্ব পর্যবেক্ষনের ভিত্তিতে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে টাটা গ্রুপ৷ চাহিদা অনুযায়ী প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবন্থান স্পষ্ট নয়৷ ফলশ্রুতিতে ভবিষ্যতে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ণের কোন সম্ভাবনা নেই৷ এজন্য টাটা গ্রুপ বাংলাদেশে সব বিনিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে৷
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবারই টাটার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি দিয়েছে৷ টাটা অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী যা নিয়ে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে৷
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের অক্টোবরে টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান রতন টাটা সার, বিদ্যুত্ ও ইস্পাত খাতে ২০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ইচ্ছা প্রকাশ করে সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন৷ এরপর সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার পর সম্ভাব্যতা যাচাই করে ২০০৬ সালের এপ্রিলে বিনিয়োগের পরিমাণ ৩০০ কোটি ডলারে উন্নীত করা হয়৷ কিন্তু তত্কালীন সরকারের সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় একই বছরের আগষ্টে বিনিয়োগের পরিকল্পনা স্থগিত করে দেয় টাটা কর্তৃপক্ষ৷ গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা নিয়ে দুইপক্ষ তখন একমত হতে পারেনি৷ তখনই টাটার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল নির্বাচনের পর নতুন সরকারের সাথে বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা হবে৷ পরবর্তীতে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে পুনরায় আলোচনা শুরু করে টাটা গ্রুপ৷
বিনিয়োগ নিয়ে চার বছর ধরে বাংলাদেশ সরকার এবং টাটার সঙ্গে আলোচনা চলেছে৷ গ্যাস সরবরাহ নিয়ে দেনদরবারে বনিবনা না হওয়ায় প্রায় দুই বছর আলোচনা বন্ধ রেখেছিল তারা৷ এরপর গত মে মাসে টাটা সন্সের পরিচালক এলান রোজলিনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সর্বশেষ বিনিয়োগ বোর্ডের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল৷