বাংলাদেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সতর্কতা
২৪ মে ২০২১![Indien Patient mit Corona-Infektion und zusätzlicher Pilzinfektion "Black Fungus"](https://static.dw.com/image/57602205_800.webp)
করোনা সংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটিকে এই গাইডলাইন তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, করোনায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপস্থিতি এখনো বাংলাদেশে পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ডা. নাজমুল ইসলাম রোববার প্রেস ব্রিফিং-এ জানিয়েছেন, ভারতের ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বাংলাদেশের জন্য নতুন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যে এই ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হলে করনীয় কী হবে, চিকিৎসা ব্যবস্থা কী হবে তার বিস্তারিত গাইডলাইন তৈরিতে। আর সারাদেশে সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ডা. মো. শহিদুল্লাহ বলেন," ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উৎপত্তিস্থল নিয়ে নানা কথা আছে। তবে এটা এখন প্রায় নিশ্চিত যে মাটি এবং গাছপালা থেকে ছাড়ায়। তবে কেউ কেউ বলছেন করোনা চিকিৎসায় যে স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয় সেখান থেকে ছাড়ায়। তাহলে ভারতে কীভাবে এলো? সংকটের কারণে ভারতে যে ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল অক্সিজেন ব্যবহার করা হয়েছে সেখান থেকে এটা ছাড়াতে পারে।”
তার মতে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সুস্থ সবল মানুষের ক্ষতি করতে পারে না। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের ক্ষতি করে। ডা. শহিদুল্লাহ বলেন," গাইড লাইন তৈরির জন্য স্বাস্থ্য অধিপ্তরের একটি কমিটি আছে। করোনা শুরুর পর থেকে তারা এ পর্যন্ত আটটি বিভিন্ন ধরনের গাইড লাইন তৈরি করেছেন। টেকনিক্যাল কমিটি তাদের কাজের তদারকি করে। আমরা তাদের সঙ্গে এনিয়ে বসব।”
টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য ও বিএসএমইউ'র সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন," গাইডলাইন হবে সবার জন্য। সাধারণ মানুষ, রোগী এবং চিকিৎসক সবার জন্য। যাতে কীভাবে সতর্ক থাকা যায়, আক্রান্ত হলে কী করতে হবে, চিকিৎসা কেমন হবে সবকিছু তাতে থাকবে।”
কিন্তু গাইডলাইন তৈরি হওয়ার আগে করনীয় কী? এর জবাবে ডা. শহিদুল্লাহ বলেন," এখন মূল কাজটি চিকিৎসকদের। তারা করোনা রোগীর চিকিৎসায় পানি থেকে যা কিছু ব্যবহার করবেন তা যেন জীবানুমুক্ত থাকে। আমাদের আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হতে হবে।”
আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফরহাদ হোসেন বলেন," করোনা চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যাপকভাবে ব্যবহার হচ্ছে ভারতে। আমাদের এখানেও হচ্ছে। স্টেরয়েড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হন।”
তিনি বলেন, " বাংলাদেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সনাক্ত করার ব্যবস্থা আছে। আর কিছু উপসর্গ দেখেও এটা চিহ্নিত করা যায়। করোনা রোগির নাক দিয়ে যদি রক্ত পড়ে, নাকে ঘা হয়ে যায়, চোখে অস্পষ্ট দেখে, ফুসফুসে একবার ইনফেকশন হয়ে কমে যাওয়ার পর যদি আবার বাড়ে তাহলে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সন্দেহ করা যায়। আমরা চিকিৎসকেরা এখন এদিকে খেয়াল রাখছি।”
তার মতে, এটা নিয়ে আতঙ্ক ছাড়নোর কোনো কারণ নাই। এখনো ক্লিনিক্যালি বাংলাদেশে কোনো রোগীর শরীরে এই ছত্রাক পাওয়া যায়নি। তবে সতর্কতা জরুরি।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সারাদেশে সতর্কতা জারির কথা বললেও কোনো কোনো জেলার সিভিল সার্জনেরা বিষয়টি এখনো জানেন না। পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. হাসনাত ইউসুফ জাকি বলেন," আমি এখনো বিষয়টি সম্পর্কে জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।