বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিয়াদের মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটলো শুক্রবার গভীর রাতে৷ তার আগে খুন হয়েছেন দুই বিদেশি, চার ব্লগার৷ সবই চলতি বছরের ঘটনা৷ প্রশ্ন হচ্ছে, কী ঘটছে দেশে?
বিজ্ঞাপন
ব্লগার হত্যার মধ্য দিয়ে চলতি বছর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনায় আসে বাংলাদেশ৷ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ রায় খুন হন ফেব্রুয়ারিতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে৷ এরপর একে একে চারজন ব্লগার খুন হলেন যাদের অবস্থান ছিল মৌলবাদের বিরুদ্ধে৷ তাঁরা নাস্তিক এটাও সত্য৷ তবে নাস্তিকদের ‘জবাই’ করতে হবে এমন কোনো ঘোষিত নিয়ম সংবিধান অনুযায়ী ‘সেক্যুলার’ বাংলাদেশে নেই৷
ব্লগারদের হত্যাকাণ্ডের পরে পীরের মুরিদদের জবাই করার ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার৷ ব্লগার হত্যার মতো তা ব্যাপক আলোচনায় আসেনি বটে, তবে ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের মোটিভ কিছুটা পরিষ্কার করে দিয়েছে৷ হিন্দুদের উপর হামলাও চলছে বিরতিহীনভাবে৷ এরইমধ্যে খুন হয়েছেন দুই বিদেশি নাগরিক৷
সর্বশেষ গত শুক্রবার পুরোনো ঢাকার হোসেনি দালানে তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা চালানো হয়৷ এতে প্রাণ হারায় এক কিশোর, আহত বেশ কয়েকজন৷ বাংলাদেশে শিয়াদের মিছিলে এই হামলা গত চারশ’ বছরের মধ্যে এই প্রথম, জানিয়েছে বিবিসি৷
হত্যার হুমকি পাওয়া এক ব্লগার
তাঁর বাবা হুমায়ুন আজাদের ওপরও হামলা হয়েছিল৷ বাবা তাঁর ছেলে অনন্যকে বলেছিলেন, ‘এরপর তুমি...’৷ হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুর কয়েক বছরের মধ্যেই ব্লগার অনন্য আজাদকে হত্যার হুমকি দিয়েছে জঙ্গিরা৷ তাঁকে নিয়েই আজকের ছবিঘর...
ছবি: DW/Gönna Ketels
লিখে যেতে চান অনন্য
ঢাকায় জন্ম৷ ঢাকা শহরকে তাই খুব ভালোবাসেন অনন্য আজাদ৷ এই শহর ছেড়ে কোথাও যেতে চাননি, তবে হত্যার হুমকি দেয়ার পর থেকে জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল৷ তারপরও লেখলেখি থামাননি৷
ছবি: DW/Gönna Ketels
চিন্তা মুক্ত, মতামত নয়
২৪ বছর বয়সি ব্লগার অনন্য নিজেকে ‘মুক্তচিন্তক’ মনে করেন৷ তিনি মনে করেন, ধর্ম বা যে কোনো কিছুকে বিশ্বাস করা বা না করার অধিকার সবারই থাকা উচিত৷ এই ভাবনা নিয়েই লেখালেখি করেন৷ এ কারণে ইসলামি জঙ্গিরা তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়েছে৷
ছবি: DW/Gönna Ketels
আত্মরক্ষার চেষ্টা
২০১৩ সালে ৮৪ জন ব্লগারের নামের তালিকা প্রকাশ করে তাঁদের হত্যার হুমকি দেয়া হয়৷ পরের ৩ বছরে মোট ৯ জন ব্লগারকে হত্যা করা হয়েছে৷ হালে দিনের আলোয়, জনাকীর্ণ স্থানে ব্লগার হত্যার ঘটনার পর তাঁকেও হত্যার হুমকি দেয়ায় অনন্য সাবধানে চলাফেরা শুরু করেন৷ ঢাকায় তো হেলমেট না পরে বেরই হতেন না তিনি৷
ছবি: DW/Gönna Ketels
চিন্তার জগতে এক
ইসলামি জঙ্গি এবং তাদের ভাবধারায় বিশ্বাসীরা ব্লগারদের ঢালাওভাবে ‘নাস্তিক’ বলছে৷ কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশের খুব কম ব্লগারই ধর্মের সমালোচনা করে লেখালেখি করেন৷ সরকার শুধু ব্লগারদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থই নয়, উল্টো ব্লগারদের ওপরই বিধিনিষেধ আরোপ করতে সচেষ্ট৷ অনেক ক্ষেত্রে ব্লগারদেই বরং বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে৷
ছবি: DW/Gönna Ketels
ঐতিহাসিক বিরোধ
একাত্তরে নয় মাসের যুদ্ধ শেষে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ৷ যুদ্ধে জামায়াতে ইসলামিসহ কয়েকটি দল পাকিস্তানকে সমর্থন করেছে, তাদের অনেক কর্মী হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগে অংশ নিয়েছে৷ ২০১৩ সালে জামায়াত নেতা, যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে ব্লগাররা আন্দোলন শুরু করে৷ শাহবাগে সমবেত হয় লাখো মানুষ৷ আন্দোলনের এক পর্যায়ে ৮৪ জন ব্লগারের তালিকা প্রকাশ করে হত্যার হুমকি দেয়া হয়৷
ছবি: DW/M. Mamun
এরপর তুমি...
বাবা হুমায়ুন আজাদ ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং লেখক৷ তাঁর ওপরও হামলা হয়েছিল৷ হুমায়ুন আজাদ তার কিছুদিন পরই মারা যান৷ একদিন হুমায়ুন অনন্যকে বলেছিলেন, ‘‘এরপর তুমি...৷’’ হুমায়ুন তাঁর লেখায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদরদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করতেন৷ তাই হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়৷ অনন্যকেও হত্যার হুমকি দিয়েছে জঙ্গিরা৷
ছবি: DW/Gönna Ketels
‘গৃহবন্দিত্ব’ থেকে মুক্তি
হত্যার হুমকির পরও লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন অনন্য৷ লিখছেন মৌলবাদের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান ধরে রেখে৷ কয়েকদিন হলো বৃত্তি নিয়ে জার্মানিতে এসেছেন অনন্য আজাদ৷ প্রিয় শহর ঢাকায় নিজের বাড়িতেই প্রায় বন্দি থাকার যন্ত্রণা থেকে আপাতত মুক্তি!
ছবি: DW/Gönna Ketels
7 ছবি1 | 7
গত সপ্তাহে কথা হচ্ছিল এক ব্লগারের সঙ্গে৷ তিনি আমাকে বুঝিয়েছিলেন, গোড়া ইসলাম, অর্থাৎ যা ‘ওহাবিজম’ বলে পরিচিত, বাংলাদেশে তা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে মৌলবাদীরা৷ এরা কার্যত আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’-এর মতাদর্শে বিশ্বাসী৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কিছু দেশ ইতোমধ্যে বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডসহ শিয়াদের উপর হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘ইসলামিক স্টেট’, এমন দাবি করেছে জিহাদিদের অনলাইন কার্যক্রমের উপর নজর রাখা একাধিক সংস্থা৷
বাংলাদেশ সরকার এবং পুলিশ অবশ্য বাংলাদেশে ‘ইসলামিক স্টেট’-এর উপস্থিতি অস্বীকার করছে৷ যদিও এই পুলিশই অতীতে জঙ্গি গোষ্ঠীটির সমর্থকদের ধরার খবর ফলাও করে জানিয়েছিল৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর ছেলে ও অন্যতম উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদও বিদেশি পত্রিকায় বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে কথা বলেছেন৷ ইংল্যান্ডকে সতর্ক করেছেন৷
বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যক্রম কতটা বিদেশিদের ছত্রছায়ায় হচ্ছে তা এখনি বলা মুশকিল৷ তবে এটির রাজনৈতিক ব্যবহার বেশ পরিষ্কার৷ বিদেশি হত্যাকাণ্ডের দায় সরাসরি বাংলাদেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং তার মিত্র জামায়াতের উপর চাপিয়েছে সরকার৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুতই তাদের কথা বলেছেন৷ যদিও এক্ষেত্রে তিনি কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি, কিংবা এত দ্রুত কিভাবে তাঁর গোয়েন্দা বাহিনী বিএনপি-জামায়াতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেল তারও ব্যখ্যা দেননি৷
সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর রাজনৈতিক বিশ্লেষণ তিন রকম হতে পারে৷ প্রথমত, সরকারকে বেকায়দায় ফেলা৷ বিএনপি এই মুহূর্তে বেশ নিরব আছে৷ দলটির প্রধান খালেদা জিয়া এখন ইংল্যান্ডে৷ তিনি যখন চিকিৎসা নিচ্ছেন, সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন সেসময় একের পর এক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে বাংলাদেশে৷ এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছে সরকার, যা পরোক্ষভাবে বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির জন্য লাভজনক৷ বিএনপি এর সঙ্গে সম্পৃক্ত না ধরে নিলেও কিছুটা লাভ তাদের হচ্ছে৷
দ্বিতীয়ত, এসব ঘটনার অযুহাতে আরো বেশি বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের সুযোগ পাচ্ছে পুলিশ৷ সরকার তাদের উপর দায় চাপাচ্ছে, ফলে পুলিশ দেদারছে গ্রেপ্তার করছে বিরোধী দলের সাবেক এমপি, কর্মীদের৷ এই দিকটা চিন্তা করলে লাভ হচ্ছে সরকারের৷ ঘটনা যারাই ঘটাক, বিরোধী দলকে দমনে তা বেশ কাজে আসছে৷
তৃতীয়ত, রাজনীতির এই খেলায় তৃতীয় কোনো পক্ষ লাভবান হচ্ছে কিনা সেটাও দেখার বিষয়৷ বাংলাদেশে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট৷ ফলে কার্যত একতরফা নির্বাচন জয় করে বর্তমানে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ৷ এরকম এক নির্বাচন জয়ের পর ক্ষমতায় টিকে থাকতে অনেকক্ষেত্রেই ছাড় দিচ্ছে দলটি৷ বিশেষ করে উগ্র ইসলামপন্থি গোষ্ঠী হেফাজতে ইসলাম, যারা নাস্তিক ব্লগারদের ফাঁসি দাবি করেছে ২০১৩ সালে এবং ‘ইসলামিক স্টেট’-এর কর্মকাণ্ডে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছে, তাদেরকে রেলের জমি বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে৷ এমন সমর্থনের সুযোগে বাংলাদেশে ‘ওহাবিজম’ ডানা মেলছে কিনা ভাববার বিষয়৷
বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার শিকার যারা
চলতি বছর ইসলামপন্থিরা একের পর এক হামলা চালিয়ে বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছে৷ এতে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন৷ চলুন জানা যাক ২০১৫ সালের কবে, কারা হামলার শিকার হয়েছেন...৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্লগার খুন
একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে খুন হন ব্লগার এবং লেখক অভিজিৎ রায়৷ কমপক্ষে দুই দুর্বৃত্ত তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে৷ এসময় তাঁর স্ত্রী বন্যা আহমেদও গুরুতর আহত হন৷ বাংলাদেশি মার্কিন এই দুই নাগরিককে হত্যার দায় স্বীকার করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’৷ পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
বাড়ির সামনে খুন
ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে হত্যা করা হয় ঢাকায়, গত ৩০ মার্চ৷ তিন দুর্বৃত্ত মাংস কাটার চাপাতি দিতে তাঁকে কোপায়৷ সেসেময় কয়েকজন হিজরে সন্দেহভাজন দুই খুনিকে ধরে ফেলে, তৃতীয়জন পালিয়ে যায়৷ আটকরা জানায়, তারা মাদ্রাসার ছাত্র ছিল এবং বাবুকে হত্যার নির্দেশ পেয়েছিল৷ কে বা কারা এই হত্যার নির্দেশ দিয়েছে জানা যায়নি৷ বাবু ফেসবুকে ধর্মীয় উগ্রপন্থিদের বিরুদ্ধে লিখতেন৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
সিলেটে আক্রান্ত মুক্তমনা ব্লগার
শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে ব্লগার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে৷ গত ১২ মে সিলেটে নিজের বাসার কাছে খুন হন নাস্তিক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এবং ব্লগার অনন্ত বিজয় দাস৷ ভারত উপমহাদেশের আল-কায়েদা, যাদের সঙ্গে ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’-এর সম্পর্ক আছে ধারণা করা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷ দাস ডয়চে ভেলের দ্য বব্স জয়ী মুক্তমনা ব্লগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/EPA/Str
বাড়ির মধ্যে জবাই
ব্লগার নিলয় চট্টোপাধ্যায়কে, যিনি নিলয় নীল নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন, হত্যা করা হয় ঢাকায় তাঁর বাড়ির মধ্যে৷ একদল যুবক বাড়ি ভাড়ার আগ্রহ প্রকাশ করে ৮ আগস্ট তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করে এবং তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে৷ নিজের উপর হামলা হতে পারে, এমন আশঙ্কায় পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলেন নিলয়৷ কিন্তু পুলিশ তাঁকে সহায়তা করেনি৷ ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে, তবে তার সত্যতা যাচাই করা যায়নি৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
জগিংয়ের সময় গুলিতে খুন বিদেশি
গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে জগিং করার সময় ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় খুন হন ইটালীয় এনজিও কর্মী সিজার তাবেলা৷ তাঁকে পেছন থেকে পরপর তিনবার গুলি করে দুর্বৃত্তরা৷ জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে বলে দাবি করেছে জিহাদিদের অনলাইন কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখা একটি সংস্থা৷ তবে বাংলাদেশে সরকার এই দাবি অস্বীকার করে বলেছে ‘এক বড় ভাইয়ের’ তাঁকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/ A.M. Ahad)
রংপুরে নিহত এক জাপানি
গত ৩ অক্টোবর রংপুরে খুন হন জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও৷ মুখোশধারী খুনিরা তাঁকে গুলি করার পর মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়৷ ইসলামিক স্টেট এই হত্যাকাণ্ডেরও দায় স্বীকার করেছে, তবে সরকার তা অস্বীকার করেছে৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন না যে তাঁর দেশে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীটির উপস্থিতি রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
হোসনি দালানে বিস্ফোরণ, নিহত ১
গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার ঐতিহ্যবাহী হোসনি দালানে শিয়া মুসলমানদের আশুরার প্রস্তুতির সময় বিস্ফোরণে এক কিশোর নিহত এবং শতাধিক ব্যক্তি আহত হন৷ বাংলাদেশে এর আগে কখনো শিয়াদের উপর এরকম হামলায় হয়নি৷ এই হামলারও দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট, তবে সরকার সে দাবি নাকোচ করে দিয়ে হামলাকারীরা সম্ভবত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি গোষ্ঠী জেএমবি-র সদস্য৷ সন্দেহভাজনদের একজন ইতোমধ্যে ক্রসফায়ারে মারা গেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Zaman
ঢাকায় প্রকাশক খুন
গত ৩১ অক্টোবর ঢাকায় দু’টি স্থানে কাছাকাছি সময়ে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়৷ এতে খুন হন এক ‘সেক্যুলার’ প্রকাশক এবং গুরুতর আহত হন আরেক প্রকাশক ও দুই ব্লগার৷ নিহত প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনের সঙ্গে ঢাকায় খুন হওয়া ব্লগার অভিজিৎ রায়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল৷ জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনসার-আল-ইসলাম’ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
প্রার্থনারত শিয়াদের গুলি, নিহত ১
গত ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশের বগুড়ায় অবস্থিত একটি শিয়া মসজিদের ভেতরে ঢুকে প্রার্থনারতদের উপর গুলি চালায় কমপক্ষে পাঁচ দুর্বৃত্ত৷ এতে মসজিদের মুয়াজ্জিন নিহত হন এবং অপর তিন ব্যক্তি আহত হন৷ তথকথিত ইসলামিক স্টেট-এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা দাবি করা স্থানীয় একটি গোষ্ঠী হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷