বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলরত ভারতীয় বিমানে নিজস্ব সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করতে চায় ভারত৷ এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য বৈঠক ডাকা হয়েছে৷ তবে কেন ভারত এরকম চাইছে, তা স্পষ্ট করে বলছেন না কেউ৷
বিজ্ঞাপন
ভারতীয় দূতাবাস গত ১০ মার্চ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে উড়োজাহাজের ভেতরে সশস্ত্র স্কাই মার্শাল নিয়োগের ইচ্ছার কথা জানায়৷ তারা বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকেও (বেবিচক) চিঠির একটি অনুলিপি দিয়েছে৷
বেবিচক ডয়চে ভেলেকে এই চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়েছে৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক হবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি৷ তবে এটা কোনো বিশেষ ঘটনা নয় বলে দাবি করেছেন বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাঈম হাসান৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘এয়ারলাইন্সগুলো চাইলে তাদের উড়োজাহাজে আলাদা সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী রাখতে পারে৷ এটা নিয়মের মধ্যেই আছে৷ শুধু প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিতে হয়৷ আমরা ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে চিঠি পেয়েছি৷ বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে৷ তারপরই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে যে, অনুমোদন দেয়া হবে কিনা৷''
‘ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে চিঠি পেয়েছি’: নাঈম
বাংলাদেশে গত মাসে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ ছিনতায়ের চেষ্টা হয়েছিল৷ এর পর তিন দফায় নিরাপত্তা তল্লাশির মধ্য দিয়ে চোখ এড়িয়ে বৈধ অস্ত্রসহ বিমানবন্দরে প্রবেশের ঘটনা ঘটেছে৷ এখন প্রধান বিচারপতি'র মতো পদমর্যাদার ব্যক্তিদের নিরাপত্তা তল্লাশি করা হয়৷ এই সব মিলিয়ে বিশেষ কোনো কারণে ভারতের উড়োজাহাজে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের প্রশ্নটি এসেছে কিনা, জানতে চাইলে এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাঈম হাসান বলেন, ‘‘না, বিশেষ কোনো কারণ নেই৷ বিশেষ কোনো কারণের কথা বলাও হয়নি৷ আমাদের সব কিছুতেই একটু বেশি টেনশন, এটা স্বাভাবিক ঘটনা৷ যে-কোনো এয়ারলাইন্স চাইলে তাদের যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য অনুমোদন নিয়ে তাদের উড়োজাহাজে নিজস্বরক্ষী রাখতে পারে৷''
এই বিষয়ে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের কাছে জানতে চাইলে কোনো বিস্তারিত তথ্য পায়নি ডয়চে ভেলে৷ শুধু বলা হয়েছে, এই কাজের জন্য দায়িত্বরত কর্মকর্তা ছুটিতে আছেন৷ তিনি ফিরলে জানা যাবে৷
তবে ভারতীয় দূতাবাসের চিঠিতে স্কাই মার্শাল নিয়োগের আগে ভারতীয় ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি)-এর একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসে আলোচনার আগ্রহের কথা বলা হয়েছে৷
বাংলাদেশে ২৯টি বিদেশি এয়ারলাইন্স তাদের উড়োজাহাজ পরিচালনা করে৷ এরমধ্যে সৌদি আরবের এয়ারলাইন্স সাউদিয়া তাদের উড়োজাহাজে যাত্রীদের নিরাপত্তায় নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী ব্যবহার করে বলে ডয়চে ভেলেকে জানান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফরুক৷ তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় উড়োজাহাজে স্কাই মার্শালের ব্যাপারে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি সিদ্ধান্ত নেবে৷ এটি এয়ারপোর্ট পরিচালকের বিষয় নয়৷ আমার কাছে যখন অনুমোদনের কাগজ আসবে তখন আমি সেটা পালন করব৷''
‘অনুমোদনের কাগজ এলে পালন করব’: ফারুক
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এটা এয়ালাইন্সগুলোর নিজস্ব সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্টের বিষয়৷ কোন এয়ারলাইন্স উড়োজাহাজের ভেতর তার যাত্রীদের কীভাবে নিরাপত্তা দেবে সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার৷ এটা কোনো বিশেষ ঘটনা নয়৷ এটা একটি স্বাভাবিক ঘটনা৷''
জানেন না মন্ত্রী
এদিকে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ভারতীয় দূতাবাস তাদের উড়োজাহাজে সশস্ত্র স্কাই মার্শাল নিয়োগের কোনো প্রস্তাব দিয়েছে কিনা, তা আমার জানা নেই৷ তবে আমাদের বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ ভালো৷ এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই৷''
প্রসঙ্গত, ভারতীয় ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড-এর বাছাই করা কমান্ডো দিয়ে স্কাই মার্শাল গঠন করা হয়৷ তারা উড়োজাহাজ ছিনতাই এবং জিম্মি পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত৷
বিমান যাত্রায় যে ১০টি কাজ করবেন না
বিমানে চড়া আজকাল আর খুব বড় কোনো ব্যাপার নয়৷ কাজের প্রয়োজনে, বেড়াতে কিংবা চিকিৎসার প্রয়োজনে অনেকেই যাচ্ছেন অন্য দেশে, বিমানে৷ আর এই যাত্রায় যে দশটি জিনিস করা উচিত নয়, তা থাকছে এখানে৷
ছবি: Fotolia/Andres Rodriguez
বিমানে উঠতে তাড়াহুড়া নয়
একটি বিমানে একসঙ্গে কয়েকশত যাত্রী আরোহণ করেন৷ যাত্রীদের ঠিকভাবে তুলতে তাই বিমান সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন গ্রুপ নম্বরে যাত্রীদের ভাগ করে ফেলেন৷ এরপর সেই নম্বর অনুযায়ী যাত্রীদের বিমানে উঠতে বলা হয়৷ সমস্যা হয়, যখন নম্বরের তোয়াক্কা না করেই অনেকে বিমানে উঠতে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন৷ এটা খুবই বিরক্তিকর ব্যাপার৷ অনেক সময় শুধুমাত্র এ জন্য বিমান ছাড়তে দেরি হয়৷
ছবি: Fotolia/Andres Rodriguez
বিমানে ওঠার আগে শেষ টান
বিমানের মধ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ৷ অনেকে তাই বিমানে ওঠার আগ মুহূর্তে সিগারেটে দু’টো টান দিয়ে নেন৷ সমস্যা হচ্ছে, বিমানের ভেতরটা আবদ্ধ৷ তাই সেখানে আপনার সিগারেটের গন্ধ অন্য আরোহীকে বিরক্ত করতে পারে৷ তাই সম্ভব হলে বিমান ওঠার আগ মুহূর্তে ধূমপান পরিহার করুন৷ আর বিমানে ধুমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সামনের সিটে ধাক্কা বা লাথি নয়
বিমানের সিটগুলো হয় হালকা ধরনের৷ মূলত তেল খরচ বাঁচাতেই এই ব্যবস্থা৷ তাই এসব সিটে পেছন দিক দিয়ে ধাক্কা দিলে, তা সিটে বসা আরোহীকে আঘাত করতে পারে৷ সুতরাং কোনো অবস্থাতেই সামনের সিটে ধাক্কা বা লাথি দেবেন না৷
ছবি: dapd
হাতল দখলের লড়াই
বিমানের সিটগুলোতে খুব বেশি জায়গা থাকে না৷ একটি সিটের সঙ্গে আরেকটি সিট লাগানো থাকে এবং হাতল থাকে একটা৷ কেউ কেউ তাই কনুই দিয়ে অপর যাত্রীকে গুতা দিয়ে কিংবা হাত শক্ত করে হাতলে রেখে সেটা দখলে রাখার চেষ্টা করে৷ এমনটা করা মোটেই উচিত নয়৷
ছবি: dapd
নগ্ন পায়ে ঘোরা নয়
অনেকেই বিমানে উঠে জুতা, এমনকি মোজাও খুলে ফেলেন৷ এটা অনেকের জন্যই বিরক্তিকর৷ আর খালি পায়ে বিমানের টয়লেট ব্যবহার করলে রোগজীবাণু আক্রান্তের আশঙ্কা বেড়ে যায়৷ সুতরাং বিমানে জুতা পরেই থাকুন৷
ছবি: Fotolia/Zeit4men
শব্দ বন্ধ না করেই গেম খেলা
আজকাল স্মার্টফোন, ট্যাবলেটে সহজেই ভিডিও গেম খেলা যায়৷ এতে অবশ্য খারাপ কিছু নেই৷ কিন্তু বিমানে বসে শব্দ বন্ধ না করে গেম খেললে তা অন্য আরোহীদের বিরক্ত করতে পারে৷ তাই শব্দ বন্ধ করে গেম খেলা ভদ্র ব্যাপার৷
ছবি: imago/Westend61
পেছনের লোকের আগে নামার লড়াই
বিমান ল্যান্ড করার পর তার দরজা খোলার আগেই অনেকে নামার জন্য তাড়াহুড়া শুরু করে৷ পারলে সামনের যাত্রীকে ডিঙিয়ে যাওয়ার চেষ্টা৷ এটা খুবই অশোভন আচরণ৷ বিমান যখন অবতরণ করেছে, তখন সব যাত্রীকেই নামাবে৷ তাই নিশ্চিন্তে বসে অপেক্ষা করুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘হ্যালো, রানওয়েতে আছি’
বিমান অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই অনেকে ফোন করতে শুরু করেন৷ এমনকি নেটওয়ার্ক না পাওয়া গেলে চলে নিরন্তন চিৎকার: হ্যালো, এইমাত্র ল্যান্ড করলাম, শুনতে পাচ্ছো? আসলে এভাবে তাড়াহুড়া করা ভালো নয়৷ বিমানবন্দরে অপেক্ষারতরা বিভিন্ন ডিসপ্লে ঘোষণার মাধ্যমে এমনিতেই বিমান অবতরণের খবর জানতে পারেন৷ তাই প্রিয়জনকে সেটা জানাতে তাড়াহুড়া না করলেও সমস্যা নেই৷
ছবি: picture alliance / Arco Images GmbH
ভ্রমণ করছেন, কিন্তু নড়ছেন না
বড় বিমানবন্দরগুলোতে বিশেষ ধরনের ‘মুভিং ওয়াকওয়ে’ থাকে৷ এটা অনবরত সামনের দিকে যেতে থাকে৷ ফলে কেউ ‘মুভিং ওয়াকওয়েতে’ দাঁড়ালে এমনিতেই সামনের দিকে যেতে পারবেন৷ তাই অনেকে এতে দাঁড়িয়ে থাকেন৷ এটা আসলে ঠিক নয়৷ বরং মুভিং ওয়াকওয়েতে আপনি স্বাভাবিকভাবে হাঁটলে অন্য যাত্রীদের সুবিধা হবে৷
ছবি: Reuters
লাগেজ নেয়ার তাড়া
বিশ্বের সব বিমানবন্দরেই লাগেজ নেয়ার জন্য বিশেষ জায়গা আছে৷ সেখানে বেল্টের উপরে লাগেজগুলো একের পর এক দেয়া হয়৷ সেই বেল্ট অনবরত ঘুরতে থাকে৷ অনেক সময় বিমান থেকে নেমেই মানুষ সেই বেল্ট ঘিরে বড় জটলা তৈরি করে ফেলেন৷ এটা অনর্থক৷ বরং একটু দূরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলে আপনার লাগেজ দেখা সহজ হবে৷ এরপর সময়মত সেটি বেল্ট থেকে সরিয়ে নিলেই হলো৷
ছবি: peshkova - Fotolia.com
10 ছবি1 | 10
ভারতের এই চাওয়াকে কীভাবে দেখছেন? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷