বাংলাদেশে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে টেলিমেডিসিন সেবা চালু রয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার এই বিষয়ের দিকে তাঁর মনোযোগের কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
টেলিমেডিসিনের অন্যতম সুবিধা হচ্ছে, একেবারে চিকিৎসকের সামনে না থেকেও চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন রোগী৷ এ জন্য অবশ্য কারিগরি কিছু সুযোগ সুবিধার প্রয়োজন হয়৷ যেমন ইন্টারনেট সংযোগযুক্ত কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এবং ভিডিও চ্যাটের জন্য ওয়েবক্যাম৷ এছাড়া আনুষাঙ্গিক কিছু চিকিৎসা সরজ্ঞাম একাজে সহায়ক৷
বলাবাহুল্য, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এখন রয়েছে মোবাইল এবং ইন্টারনেট সুবিধা৷ আর এসব সুবিধা কাজে লাগিয়ে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে টেলেমেডিসিন সেবাও বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৯ সেপ্টেম্বর এই বিষয়ে বলেন, ‘‘গ্রামাঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় বর্তমানে ১৩ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে৷ এসব ক্লিনিকে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে৷ তাদের ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হয়েছে৷''
বাংলাদেশে ই-হেলথ ও ই-স্বাস্থ্য সেবাসমূহ
বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য মোবাইল ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণের কিছু সুযোগ তৈরি করেছে সরকার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মোবাইল ফোনে স্বাস্থ্য সেবা
প্রতিটি জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে সরকার একটি করে মোবাইল ফোন দিয়েছে৷ রোগীরা সেখানে দিনের যে-কোনো সময় ফোন করে সরকারি চিকিৎসকের কাছ থেকে সেবা ও পরামর্শ নিতে পারবেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে৷ আপনার এলাকার ফোন নম্বর পাবেন এই লিংকে... http://app.dghs.gov.bd/inst_info/mobile_search.php
ছবি: TAUSEEF MUSTAFA/AFP/Getty Images
এসএমএস-এর মাধ্যমে প্রসূতি পরামর্শ
একজন মা গর্ভধারণ করলে তিনি এসএমএস-এর মাধ্যমে প্রসূতি পরামর্শ নিতে পারেন৷ এজন্য তাঁকে আগে নিবন্ধিত হতে হবে৷ তাহলে তিনি নিয়মতিভাবে প্রসূতি বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ পেতে থাকবেন৷ নিবন্ধনের নিয়মের জন্য যেতে হবে এই লিংকে.. http://www.dghs.gov.bd/index.php/bd/e-health/2013-06-18-09-06-38/279-pregnancy-care-advice-by-sms
ছবি: Getty Images
‘আপনজন’
সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়েও প্রসূতি মায়েদের মোবাইলের মাধ্যমে পরামর্শ ও সেবা দেয়ার ব্যবস্থা চালু আছে৷ এমন একটি সেবার নাম ‘আপনজন’৷ এর মাধ্যমে গ্রাহকরা বার্তা পাওয়ার পাশাপাশি কম খরচে টেলিফোনে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারেন৷ এই লিংকে (http://aponjon.com.bd/Content.php?MId=36&SubMId=25) গেলে গ্রাহক হওয়ার নিয়ম জানা যাবে৷
ছবি: Noah Seelam/AFP/Getty Images
টেলিমেডিসিন
টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দূর থেকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়া ও পাওয়ার নাম টেলিমেডিসিন৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট বলছে, দেশের ১৮টি হাসপাতালে টেলিমেডিসিন সেবা চালু আছে৷ শিগগিরই আরও ১০টি হাসপাতালে এই সেবা শুরু হবে বলেও জানানো হয়েছে৷
ছবি: Bay Ismoyo/AFP/Getty Images
বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রতিটি উপজেলা ও জেলা হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ ও ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ওয়েব ক্যামেরা প্রদান করা হয়েছে৷ ফলে নিম্ন পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রোগীদের জন্য উচ্চ পর্যায়ের হাসপাতালসমূহে কর্মরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে৷
ছবি: Bay Ismoyo/AFP/Getty Images
কমিউনিটি ক্লিনিকে টেলিমেডিসিন
কমিউনিটি ক্লিনিকে টেলিমেডিসিন সেবা চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ ইতিমধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ওয়েব ক্যামেরাযুক্ত মিনি ল্যাপটপ কম্পিউটার সরবরাহ করা শুরু হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্রে টেলিমেডিসিন
দেশের ২২টি ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্রেও স্কাইপে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবহার করে টেলিমেডিসিন সেবা দেয়া হচ্ছে৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বসে চিকিৎসকগণ বিনামূল্যে প্রতি কর্মদিবসে এই সেবা দিচ্ছেন বলে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
7 ছবি1 | 7
ঢাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের এক বৈঠকে একথা বলেন তিনি৷ এসময় তিনি ই-হেলথ ও টেলিমেডিসিন সেবার কথাও উল্লেখ করেন৷ বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন রয়েছে৷
অনলাইন পত্রিকাটিতে চলতি বছরের চার মে প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনে টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য রয়েছে৷ সেসময় বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস-এর ১২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘টেলিমেডিসিন ব্যবস্থার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠী গ্রামে থেকেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সেবা পাচ্ছেন৷ উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সব হাসপাতালে ওয়েব ক্যামেরা ও ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হয়েছে৷''
শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ডিজিটাল নেটওয়ার্কে যুক্ত করার উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি৷ এর কার্যক্রম চলছে৷''
প্রসঙ্গত, টেলেমিডিসিন সেবা সাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে রয়েছে মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ফোন৷ গত বছরের দুই জুন এসংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে৷ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দেশের গ্রামাঞ্চলে উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা দিতে মূলত টেলিমেডিসিন সেবা সম্প্রসারণ করেছে গ্রামীণফোন৷