1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লাপাত্তা পাকিস্তানি ‘জঙ্গি’ মুবাশ্বের

সমীর কুমার দে
১৭ ডিসেম্বর ২০১৬

পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সমন্বয়ক সন্দেহে ঢাকায় গ্রেপ্তার মুবাশ্বের শহীদ সবকটি মামলায় খালাস পাওয়ার পর এক মাস ধরে লাপাত্তা৷ ২০০৯ ও ২০১০ সালে ঢাকায় দুই দফায় গ্রেপ্তারের পর একাধিক মামলা হয় তার বিরুদ্ধে৷

Symbolbild islamistischer Kämpfer
ছবি: Fotolia/Oleg Zabielin

এর মধ্যে জাল টাকার দুই মামলায় ২০১৪ সালের ১ অক্টোবর তাকে খালাস দেন ঢাকার পাঁচ নম্বর মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের তত্‍কালীন বিচারক রুহুল আমীন৷ সবশেষ গত ১০ নভেম্বর বিস্ফোরক দ্রব্য ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের দুই মামলায় একই ট্রাইব্যুনালের বর্তমান বিচারক মো. জাহিদুল কবির পাকিস্তানি এই নাগরিককে খালাস দেন৷

মুবাশ্বেরের আইনজীবী সৈয়দা তাহমিনা হাসেমী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গত ১৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জ থেকে মুক্তি পেয়েছেন মুবাশ্বের৷ তবে সে কোথায় গেছে তা আমি জানি না৷ আইন অনুযায়ী কোন বিদেশি নাগরিককে মুক্তি দিতে হলে সে দেশের দূতাবাস বা সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর কাছে হস্তান্তর করতে হয়৷ কিন্তু এক্ষেত্রে কারা কর্তৃপক্ষ আমাকে কিছু জানায়নি৷''

তিনি বলেন, ‘‘এমনকি আমি জেনেছি, তাকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বিষয়টি জানতে পেরে পাকিস্তান দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার মো. জামিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন৷ তিনি কারা কর্তৃপক্ষকে বলেন, তাকে নিতে আমি আসছি৷ আমি না আসা পর্যন্ত তাকে যেন ছাড়া না হয়৷ এরপর তিনি কারাগারে গিয়ে জানতে পারেন আগেই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷ তাহলে কারা তাকে কি উদ্দেশ্যে ছাড়ল?''

Hashmi - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

মুক্তির পর মুবাশ্বের ঢাকায় আছেন, নাকি দেশে ফিরে গেছেন, সে ব্যাপারে কোনো তথ্য তিনি দিতে পারেননি তাহমিনা হাসেমী৷ নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই ধরনের অপরাধী ছাড়া পেয়ে গেলে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাতো হুমকিতে পড়ে৷ এদিকে আমাদের একটা দূর্বলতা তো আছেই৷''

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে জাল নোটসহ গ্রেপ্তারের পর মামলা হয় পাকিস্তানি নাগরিক মুবাশ্বেরের বিরুদ্ধে৷ মামলার এজাহারে তার স্থায়ী ঠিকানা করাচিতে লেখা হয়৷ এই মামলায় ২০১০ সালের ৬ এপ্রিল আইনজীবী সৈয়দা তাহমিনা হাসেমীর জিম্মায় হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্ত হন তিনি৷ পরদিন রাত ১১টায় রাজধানীর চানখাঁরপুল থেকে তাকে আবার গ্রেপ্তার করে ব়্যাব৷ তখন ব়্যাব-১০ এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ‘‘মুবাশ্বের পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন৷ কারাগার থেকে বের হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার একটি আবাসিক হোটেলে জঙ্গিদের নিয়ে বৈঠক করার সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ অল্পের জন্য তার সহযোগীদের ধরা যায়নি৷''

এরপর সূত্রাপুর থানা পুলিশ মুবাশ্বেরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, মুদ্রা জালিয়াতি এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তিনটি মামলা করে৷ মুবাশ্বের ‘পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার মূল সমন্বয়ক হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করছেন' বলে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়৷ তার খালাসের বিষয়টি নিয়ে অনেক পরে জানাজানি হলে আলোচনা শুরু হয়৷ জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার বিদেশি একজন নাগরিক কীভাবে খালাস পেয়ে অন্তরালে চলে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিশ্লেষকরা৷ বিদেশি নাগরিকদের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের কাছে হস্তান্তরের নিয়ম থাকলেও মুবাশ্বেরের ক্ষেত্রে কারা কর্তৃপক্ষ তা মানেনি৷ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবীর স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘কাগজপত্র পেয়ে নিয়ম মেনে আমরা তাকে মুক্তি দিয়েছি৷ তিনি কোথায় আছেন আমাদের জানা নাই৷'' তবে ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে তাঁর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি৷

Sakhawat - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই ভাবে এরা লাপাত্তা হয়ে গেলেতো সত্যিই নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়ে৷ এভাবেই তো আমাদের চলছে৷ কিভাবে জামিন হচ্ছে, কিভাবে ছাড়া পাচ্ছে আমরা কিছুই বুঝছি না৷ আদালত নিয়ে তো কিছু বলা যাবে না৷ তবে তদন্তকারীরা কিভাবে তদন্ত করছে সেটাও দেখা উচিত্‍৷ এত বড় একজন অপরাধী কিভাবে জামিন পেয়ে গেল, কাদের দুর্বলতার কারণে এটা হল সেটা খুঁজে বের করা দরকার৷''

অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটার আনোয়ারুল কবির বাবুল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আদালতে বিচার চলাকালে স্বাক্ষীদের হাজির হওয়া খুবই জরুরি৷ কিন্তু জঙ্গিদের মামলায় স্বাক্ষীরা আদালতে যেতে ভয় পান৷ কারণ এদের বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য দিলে কোথায় কি ঝামেলা হয়, সেই ভয়ে তারা অনেক সময় আদালতে আসতে চান না৷ সরকারের দায়িত্ব এসব নিরপেক্ষ স্বাক্ষীর নিরাপত্তা জোরদার করা৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ