1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা বেড়েছে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৮ এপ্রিল ২০১৭

যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ) বলছে, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ব্লগার ও বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতা বেড়েছে৷ সংখ্যালঘুরা গুরুতর আক্রমণের শিকার হচ্ছেন৷

Bangladesch Hindus Überfall Jessore
ছবি: DW

যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘২০১৬ সালে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগার, বুদ্ধিজীবী ও বিদেশিদের ওপর জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলো এসব হামলা চালিয়েছে৷''

তারা বলছে, ‘‘বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার অবশ্য এসব বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে৷ হামলা পরিকল্পনায় জড়িত থাকার দায়ে অভিযুক্ত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে৷ তবে এরপরও সংখ্যালঘুদের প্রতি হুমকি এবং সহিংসতার বেড়েছে৷''

Noor Khan - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

সংস্থাটি বলছে, ভূমি দখলের ক্ষেত্রে হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা আক্রমনের শিকার হন৷ এছাড়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে৷ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বার বার আক্রমণের শিকার হয়েছেন৷ 

গত কয়েক বছরে হিন্দু পুরোহিতদের হত্যা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জন অধ্যাপক, এক জন ব্লগার এবং এক জন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীকে হত্যা ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে৷ গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে নাসির নগরে হামলা চালিয়ে ১৫ টি মন্দির ও ২০০ ঘরবাড়ি ভাংচুর করা হয়৷ এই ঘটনায় যখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা জড়িত বলে জানা গেছে৷

ইউএসসিআইআরএফ-এর এবারের প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে সুনির্দিষ্ট কোনো ক্যাটাগরিতে রাখা হয়নি৷ তবে সংস্থাটি সাতটি দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টি পর্যবেক্ষণের কথা বলেছে৷ এই সাত দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম রয়েছে৷

ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য ২০১৬ সালের মার্চে ইউএসসিআইআরএফ-এর একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে৷ ওই সফরের ভিত্তিতে সংস্থাটি মার্কিন সরকারের কাছে সুপারিশ তুলে ধরেছে৷ এতে মার্কিন সরকারকে বলা হয়েছে, তারা যেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি ধর্মীয় বিভেদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নিন্দা এবং কঠোর অবস্থান নেয়৷ ধর্মীয় কারণে সংঘটিত সহিংসতা এবং হয়রানির বিরুদ্ধে সরকারের শক্তিশালী অবস্থান কামনা আশা করছে (ইউএসসিআইআরএফ)৷

Rana Dasgupta - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

এ নিয়ে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা পাঁচ গুণ বেড়েছে৷ তবে চলতি বছরের শুরু থেকেই তা আবার কমে আসছে৷ সরকার জঙ্গিবাদের প্রতি জিরো টলারেন্স ঘোষণার পর পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে৷''

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার দু'টি দিক আছে৷ একটি গ্রুপ হলো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যারা সংখ্যালঘুদের এদেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে চায়৷ তারা ক্ষমতায় থাকাকালে এবং ক্ষমতার বাইরে থেকেও সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে৷ আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও একটি অংশ তাদের সঙ্গে আছে৷ তারা মূলত সংখ্যালঘুদের বাড়ি ঘর ও সম্পদ দখল এবং লুটপাটের জন্য এ কাজ করে৷''

৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করবে সরকার:

দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজদি ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন করবে সরকার৷ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে৷ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৬২ কোটি টাকা৷ এর মধ্যে সৌদি সরকারের অনুদান হিসেবে পাওয়া যাবে ৮ হাজার ১৭০কোটি টাকা৷

Sameem Mohammad Afzal - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘ইসলাম ধর্ম নিয়ে যত কার্যক্রম আছে সব কিছুই পরিচালিত হবে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে৷ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই মসজিদগুলো পরিচালনা করবে৷ আমরা আশা করছি, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হবে৷ মসজিদের সঙ্গে ইসলামিক ফাউন্ডেশনেরও অফিস থাকবে৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘জঙ্গিবাদ বৈশ্বিক সমস্যা, এটি দূরে হবে সঠিক ইসলামের আলো মানুষের মধ্যে পৌঁছাতে পারলে৷ আমরা সেই উদ্যোগই নেব৷''

তবে মানবাধিকার কর্মী নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নতুন মসজিদ স্থাপনের ঘোষণা যে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে দেয়া হয়েছে, তা এখনকার মসজিদগুলোকে কেন্দ্র করেই করা সম্ভব ছিল৷ আমার আশঙ্কা নতুন মসজিদ নতুন কোনো ধারার আবার জন্ম দেবে কিনা৷ আর তাই যদি হয় তাহলে নতুন করে সংকট সৃষ্টি হবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ