বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতার ক্ষেত্রে ‘সুশীল সমাজের দুরবস্থার জন্য সুশীলরাও দায়ী'৷ ডয়চে ভেলের কর্মী জাহিদুল হকের এই কথার সাথে ফেসবুক পাতায় অনেক পাঠকই একমত৷ তবে কেউ কেউ আবার ভিন্নমতও প্রকাশ করেছেন৷
বিজ্ঞাপন
‘বাংলাদেশে আজ সুশীল সমাজের সদস্যরা নিস্ক্রিয়৷ কোনো কিছুর প্রতিবাদ করার ক্ষমতা তাঁদের নেই৷ সরকারই সেটা করতে দিচ্ছে না৷ তবে এর জন্য দায়ী সুশীলরাও৷' লেখকের এই বক্তব্যের সাথে শতকরা ১০০ ভাগ একমত পাঠক মাহমুদ হাসান৷
‘‘সুশীল সমাজের কেউ না কেউ একটা দলের সাথে জড়িত আছে৷ কেউ রাতকানা, কেউ দিনকানা৷ টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে সরকার নির্দেশ দিয়েছে নিরপেক্ষভাবে সরকারের বিপক্ষে যারা কথা বলবে, তাদের কাউকে টকশো'তে না আনতে৷ অন্যথায় টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেবে৷ সরকার কারো কথা সহ্য করতে রাজি নয়৷'' এই মন্তব্য মুহাম্মদ আরিফুল হুদা আরিফের৷
প্রতিহিংসা আর ধ্বংসের নির্মম রাজনীতি আর কতকাল
বাংলাদেশে হরতাল, অবরোধ নতুন কিছু নয়৷ বড় দুটো দলতো বটেই, অনেক ছোট দলও অতীতে এমন কর্মসূচি দিয়েছে৷ জনদুর্ভোগ বেড়েছে, সম্পদ বিনষ্ট এবং প্রাণহানিও হয়েছে৷ তবে সাম্প্রতিক হরতাল, অবরোধগুলো দুঃস্বপ্নকেও হার মানিয়েছে৷
ছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images
হামলার শিকার সাংবাদিক
বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন এবং হত্যার ঘটনা আগেও ঘটেছে৷ এখনো সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি৷ তবে বিরোধী দলের কর্মসূচিতে সাংবাদিকের আহত হওয়ার ঘটনা চলমান আন্দোলনেই প্রথম ঘটছে৷ এ বছর হেফাজত-এ-ইসলামের সমাবেশে প্রহৃত হন সাংবাদিক নাদিয়া শারমিন৷ গত দুই সপ্তাহে হরতাল এবং অবরোধের সময় ককটেল হামলায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক৷ ছবিতে নাদিয়া শারমিনের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাতেচ্ছেন নারী সংগঠন কর্মীরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
যানবাহনে আগুন, রেললাইন উপড়ানো
হরতাল-অবরোধ মানেই রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ৷ কর্মসূচির এ লক্ষ্য পূরণের পথে বাধা হলে গাড়ি ভাঙচুর এবং আগুন লাগানো বাংলাদেশে অনেক দিন ধরেই স্বাভাবিক ঘটনা৷ তবে গত এক বছরে জ্বালাও-পোড়াওয়ের এই ধ্বংসলীলা অন্য মাত্রা পেয়েছে৷ হরতালের আগের রাতেই শুরু হয়ে যায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ৷ তাই বিরোধী দল ঘোষণা অনুযায়ী কর্মসূচি পালন শুরুর আগেই জনমনে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক৷ ছবিতে মোটর সাইকেলে পেট্রোল ঢালছেন জামায়াত কর্মীরা৷
ছবি: Reuters/Andrew Biraj
শিশুরাও অসহায়, নিরাপত্তাহীন
যানবাহনে ঘুমন্ত চালক, হেল্পার বা চালকের সন্তানের আগুনে ঝলসে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে৷ ঢাকা শহর দেখতে এসে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে কাভার্ডভ্যান চালকের সন্তান মুনির৷ এমন হতভাগ্যদের তালিকায় আরো নাম যোগ হয়েছে৷ স্কুলে, রাস্তায়, এমনকি বাড়িতেও শিশুদের জীবন সংকটাপন্ন দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ৷ছবিতে সর্বশেষ অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে স্লোগানরত জামায়াত কর্মীরা৷
ছবি: Reuters/Andrew Biraj
নিরাপত্তা কর্মীদেরও নিরাপত্তার অভাব
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের কারণে রায় ঘোষণার পর নেতাদের শাস্তির আদেশ প্রত্যাহার এবং মুক্তির দাবিতে জামায়াত-ই-ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবির পুলিশের ওপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে৷ হামলায় নিহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী৷ রাজশাহীতে দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সদস্যের মাথা ইটের আঘাতে থেতলে দেয়া হয়৷ বিরোধী দলের সর্বশেষ অবরোধ কর্মসূচিতেও কর্মরত পুলিশ ও বিজিবি সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন দায়িত্বরত অবস্থায়৷
ছবি: Getty Images/Afp/Munir uz ZAMAN
সংখ্যালঘুদের বাড়ি-মন্দিরে আগুন
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে অনেক সময়৷ তবে শীর্ষ নেতাদের শাস্তি ঘোষণার পর জামায়াত ও শিবিরের কর্মীরা সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর-মন্দির-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক হামলা চালায়৷ ছবিতে নিজের শিশুসন্তান কোলে সাতক্ষিরার অমিয় দাশ৷ ঘরবাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগের সময় শিশুটিকে আগুনে ছুড়ে মারতে চেয়েছিল শিবির কর্মীরা৷
ছবি: Shayantani Twisha
কবে হবে অবসান!
প্রধান বিরোধীদল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিকে অগ্রাহ্য করে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টি ও মহাজোটের শরিক কয়েকটি দল নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করেছে৷ ফলে রাজনীতির মাঠে উত্তেজনা বেড়েছে৷ ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে তফশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন৷ তারপর থেকে বিরোধী দলের হরতাল, অবরোধ চলছে প্রায় বিরামহীনভাবে৷
ছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images
6 ছবি1 | 6
জাহিদুল হক লিখেছেন, ‘‘সুশীলদের এই দুই অংশের বাইরেও একটি অংশ আছে, যার সদস্য সংখ্যা খুবই নগণ্য৷ বর্তমান সরকার এই অংশকে বিভিন্ন উপায়ে চাপে রেখেছে৷ তাঁদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে৷ কেউ আবার দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নিজে থেকেই স্বনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছেন৷ তাঁরা ভাবছেন, মত প্রকাশ করতে গিয়ে যদি জীবনটাই চলে যায় তাহলে চুপ থাকাই ভালো৷'' লেখকের এই বক্তব্যের সাথে কিছুটা মিল রয়েছে পাঠক আইয়ার মুহাম্মদের৷ তিনি বলছেন, কেউ দলপ্রীতি আবার কেউ কেউ আদর্শপ্রীতি আবার কেউ বা সরকারজোটের রিঅ্যাকশনের ভয়ে রয়েছেন৷
ডয়চে ভেলের পাঠক মোস্তাফিজুর রহমানও লেখকের মতো সুশীল সমাজকেই দায়ী করছেন৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘একলা চলোরে নীতিতে আর যাই হোক সামাজিক হওয়া যায় না৷ সুশীল হওয়ার প্রথম কাজ হলো নিজের সমাজ ও মানুষের সাথে মিশে যাওয়া৷ বই পড়ে সুশীল হওয়ার ফলাফল যে কী তা ভালোই টের পাচ্ছেন বর্তমান সময়ের সুশীলরা৷''
আমাদের ফেসবুক বন্ধু আমানুল হকও সুশীলদেরই দায়ী করছেন৷ তিনি বলছেন, ‘‘আপনি সমাজে বসবাস করতে গেলে অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা করতে হবে৷ গঠনমূলক সমালোচনা করা যায়, তবে তার একটি নিদৃষ্ট মাত্রা থাকা উচিত৷ কিন্তু বর্তমানে তথাকথিত সুশীল সমাজ সেই মাত্রা অতিক্রম করে সাধারণ মানুষের যুগ যুগ ধরে চলে আসা ধর্মবিশ্বাস আচার-আচরণ নিয়ে খেলা করছে৷ আধুনিকতার নাম করে অপসংস্কৃতি অনুপ্রবেশ করাচ্ছে৷ তাই তাদের এই দূরাবস্থা৷''
‘‘আল্লাহ’র নামে আর কোনো হত্যাকাণ্ড নয়’’
বাংলাদেশে মুক্তমনাদের উপর হামলা নিয়ে বার্লিনে মানববন্ধনে প্রদর্শন করা প্ল্যাকার্ডের ছিল বিশেষ কিছু বার্তা৷ চলুন সেগুলো দেখে নেয়া যাক৷
ছবি: DW/A. Islam
‘‘জাতিগত ও ধর্মীয় সহিংসতাকে ‘না’ বলুন’’
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতিগত ও ধর্মীয় সহিংসতার কারণে প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ৷ তাই এই বার্তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ৷ আরেকটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘ধর্মীয় সন্ত্রাসকে আপনার মুখ বন্ধ করতে দেবেন না৷’’
ছবি: DW/A. Islam
‘‘আল্লাহ’র নামে কোনো হত্যাকাণ্ড নয়’’
এই বার্তাটাও পরিষ্কার৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ধর্মীয় মৌলবাদীদের হামলার শিকার আহমেদুর রশীদ চৌধুরী (টুটুল) বলেছিলেন, ‘‘আল্লাহু আকবর’’ বলে তাঁকে কোপানো হয়েছিল৷ বার্লিনে মানববন্ধনে আরেকটি প্ল্যাকার্ডে আল্লাহ’র জায়গায় সৃষ্টিকর্তার কথা উল্লেখ করা হয়৷
ছবি: DW/A. Islam
‘‘ধর্মভিত্তিক সহিংসতা বন্ধ কর’’
ধর্মভিত্তিক সহিংসতা বন্ধের দাবি জানান মানববন্ধনে অংশ নেয়া এক প্রবাসী বাঙালি৷ ধর্মভিত্তিক রাজনীতিরও বিপক্ষে অবস্থান তাঁর৷
ছবি: DW/A. Islam
‘‘ধর্মীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরব হোন’’
ধর্মের নামে যারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছেন তাদের বিরুদ্দে সরব হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে এই প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে৷
ছবি: DW/A. Islam
বাংলা প্ল্যাকার্ড
বাংলা ভাষায় লেখা প্ল্যাকার্ডও প্রদর্শন করা হয়েছে মানববন্ধনে৷
ছবি: DW/A. Islam
‘‘নাস্তিকতার জন্য মৃত্যু নয়’’
নাস্তিকতা কারো মৃত্যু বা কারাভোগের কারণ হতে পারে না, এমন প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েছেন একাধিক ব্যক্তি৷ মানবন্ধনে অংশ নেয়াদের সবাই নাস্তিক নন, তবে তাঁরা বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী৷
ছবি: DW/A. Islam
‘‘শব্দ হত্যা করে না, মানুষ করে’’
গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় খুন হওয়া ব্লগার, লেখক অভিজিৎ রায়ের ছবির সঙ্গে এই বাক্যটি লেখা প্ল্যাকার্ডও ছিল বার্লিনের ব্রান্ডেনবুর্গ গেটের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে৷ চলতি বছর বাংলাদেশে খুন হয়েছেন চারজন ব্লগার এবং একজন প্রকাশক৷
ছবি: DW/A. Islam
7 ছবি1 | 7
‘‘সুশীল সমাজ যতদিন পর্যন্ত না দলীয় লেজুড়বৃত্তি ছাড়বে, ততদিন পর্যন্ত অবস্থার কোনোই পরিবর্তন হবে না৷'' এই মন্তব্য পাঠক মাসুমের৷
দেরিতে হলেও বাস্তবতাকে বুঝতে পেরেছেন বলে পাঠক মাসুদ সুশীল সমাজকে ধন্যবাদ দিয়েছেন৷
অন্যদিকে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ পুরোপুরি শেখ হাসিনাকেই দায়ী করেছেন৷ আমিনুল ইসলাম শাহীন, স্বপন কান্তি দাস, সুমন, শেখ মোহাম্মদ শামীম, রূপা – এরা সকলেই মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর সাথে একমত৷
বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার শিকার যারা
চলতি বছর ইসলামপন্থিরা একের পর এক হামলা চালিয়ে বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছে৷ এতে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন৷ চলুন জানা যাক ২০১৫ সালের কবে, কারা হামলার শিকার হয়েছেন...৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্লগার খুন
একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে খুন হন ব্লগার এবং লেখক অভিজিৎ রায়৷ কমপক্ষে দুই দুর্বৃত্ত তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে৷ এসময় তাঁর স্ত্রী বন্যা আহমেদও গুরুতর আহত হন৷ বাংলাদেশি মার্কিন এই দুই নাগরিককে হত্যার দায় স্বীকার করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’৷ পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
বাড়ির সামনে খুন
ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে হত্যা করা হয় ঢাকায়, গত ৩০ মার্চ৷ তিন দুর্বৃত্ত মাংস কাটার চাপাতি দিতে তাঁকে কোপায়৷ সেসেময় কয়েকজন হিজরে সন্দেহভাজন দুই খুনিকে ধরে ফেলে, তৃতীয়জন পালিয়ে যায়৷ আটকরা জানায়, তারা মাদ্রাসার ছাত্র ছিল এবং বাবুকে হত্যার নির্দেশ পেয়েছিল৷ কে বা কারা এই হত্যার নির্দেশ দিয়েছে জানা যায়নি৷ বাবু ফেসবুকে ধর্মীয় উগ্রপন্থিদের বিরুদ্ধে লিখতেন৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
সিলেটে আক্রান্ত মুক্তমনা ব্লগার
শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে ব্লগার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে৷ গত ১২ মে সিলেটে নিজের বাসার কাছে খুন হন নাস্তিক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এবং ব্লগার অনন্ত বিজয় দাস৷ ভারত উপমহাদেশের আল-কায়েদা, যাদের সঙ্গে ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’-এর সম্পর্ক আছে ধারণা করা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷ দাস ডয়চে ভেলের দ্য বব্স জয়ী মুক্তমনা ব্লগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/EPA/Str
বাড়ির মধ্যে জবাই
ব্লগার নিলয় চট্টোপাধ্যায়কে, যিনি নিলয় নীল নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন, হত্যা করা হয় ঢাকায় তাঁর বাড়ির মধ্যে৷ একদল যুবক বাড়ি ভাড়ার আগ্রহ প্রকাশ করে ৮ আগস্ট তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করে এবং তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে৷ নিজের উপর হামলা হতে পারে, এমন আশঙ্কায় পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলেন নিলয়৷ কিন্তু পুলিশ তাঁকে সহায়তা করেনি৷ ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে, তবে তার সত্যতা যাচাই করা যায়নি৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
জগিংয়ের সময় গুলিতে খুন বিদেশি
গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে জগিং করার সময় ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় খুন হন ইটালীয় এনজিও কর্মী সিজার তাবেলা৷ তাঁকে পেছন থেকে পরপর তিনবার গুলি করে দুর্বৃত্তরা৷ জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে বলে দাবি করেছে জিহাদিদের অনলাইন কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখা একটি সংস্থা৷ তবে বাংলাদেশে সরকার এই দাবি অস্বীকার করে বলেছে ‘এক বড় ভাইয়ের’ তাঁকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/ A.M. Ahad)
রংপুরে নিহত এক জাপানি
গত ৩ অক্টোবর রংপুরে খুন হন জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও৷ মুখোশধারী খুনিরা তাঁকে গুলি করার পর মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়৷ ইসলামিক স্টেট এই হত্যাকাণ্ডেরও দায় স্বীকার করেছে, তবে সরকার তা অস্বীকার করেছে৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন না যে তাঁর দেশে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীটির উপস্থিতি রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
হোসনি দালানে বিস্ফোরণ, নিহত ১
গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার ঐতিহ্যবাহী হোসনি দালানে শিয়া মুসলমানদের আশুরার প্রস্তুতির সময় বিস্ফোরণে এক কিশোর নিহত এবং শতাধিক ব্যক্তি আহত হন৷ বাংলাদেশে এর আগে কখনো শিয়াদের উপর এরকম হামলায় হয়নি৷ এই হামলারও দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট, তবে সরকার সে দাবি নাকোচ করে দিয়ে হামলাকারীরা সম্ভবত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি গোষ্ঠী জেএমবি-র সদস্য৷ সন্দেহভাজনদের একজন ইতোমধ্যে ক্রসফায়ারে মারা গেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Zaman
ঢাকায় প্রকাশক খুন
গত ৩১ অক্টোবর ঢাকায় দু’টি স্থানে কাছাকাছি সময়ে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়৷ এতে খুন হন এক ‘সেক্যুলার’ প্রকাশক এবং গুরুতর আহত হন আরেক প্রকাশক ও দুই ব্লগার৷ নিহত প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনের সঙ্গে ঢাকায় খুন হওয়া ব্লগার অভিজিৎ রায়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল৷ জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনসার-আল-ইসলাম’ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
প্রার্থনারত শিয়াদের গুলি, নিহত ১
গত ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশের বগুড়ায় অবস্থিত একটি শিয়া মসজিদের ভেতরে ঢুকে প্রার্থনারতদের উপর গুলি চালায় কমপক্ষে পাঁচ দুর্বৃত্ত৷ এতে মসজিদের মুয়াজ্জিন নিহত হন এবং অপর তিন ব্যক্তি আহত হন৷ তথকথিত ইসলামিক স্টেট-এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা দাবি করা স্থানীয় একটি গোষ্ঠী হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷