নারীরা হিজাবের দিকে ঝুঁকছেন৷ এমন নয় যে কোনো বিশেষ শ্রেণির নারী হিজাব পরছেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস – সবখানেই চোখে পড়ে হিজাব পরা নারী৷ প্রশ্ন উঠছে, এটা কি ধার করা কোনো ‘সংস্কৃতি’?
বিজ্ঞাপন
গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি হিজাব পরে ঢাকায় সাইকেল রেস দেন তিন মুসলিম তরুণী৷ তাঁদের ওভাবে সাইকেল চালানোর বিষয়টি তখন সংবাদমাধ্যমে খবর হয়, মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে৷ সেই তিন তরুণীর একজন লালবাগ সাইক্লিং ক্লাবের প্রধান সিফাত-ই কানিজ৷ তিনি তখন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘হিজাব পরে যে সবকিছু করা যায়, সেটাই আমরা দেখাতে চাই৷ ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে হিজাব পরলেও এ কারণে অনেক জায়গায় কাজ করা যায় না৷ আমি কয়েকটা চ্যানেলে কাজ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু হিজাব পরি বলে পারিনি৷ তাই আমি সাইকেল চালিয়ে প্রমাণ করতে চাই যে হিজাব পরেও সব করা সম্ভব৷''
১ ফেব্রুয়ারি ‘হিজাব দিবস' পালনের যে রীতি শুরু হয়েছে, তার উদ্যোক্তা বাংলাদেশি নারী নাজমা খান৷ তিনি ১১ বছর বয়সে বাংলাদেশ ছাড়েন৷ নিউ ইয়র্কে বসবাসরত নাজমা খানের দাবি, মূলত বৈষম্যের অবসান ঘটাতেই তিনি হিজাব দিবস পালনের ডাক দেন৷ হিজাব পরার কারণে তিনি স্কুলে বৈষম্যের শিকার হতেন৷ ৯/১১-র পর নাকি তাঁকে ‘ওসামা বিন লাদেন' বলে ডাকা হতো৷
আয়েশা খানম
কিন্তু বাংলাদেশে হিজাবের ব্যবহার বাড়ার পেছনে এ ধরনের কোনো কারণ নেই৷ ঢাকায় বসবাসরত এক নারী ফেরদৌস আরা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি হিজাব পরি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে৷ আমার কাছে বোরকা অনেক ঝামেলার মনে হয়৷ তাই হিজাবের মাধ্যমে আমি ইসলামের পর্দা প্রথা মানার চেষ্টা করি৷ এটা পরে আমার বাইরে কাজকর্ম এবং চলাফেরায় সুবিধা৷''
তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি, হিজাবের সঙ্গে আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির কোনো বিরোধ নেই৷ এটা চাপিয়ে দেয়া কোনো বিষয় নয়৷ আমার পছন্দ, আমি পরি৷ কেউ না পরলে সেটা তার ব্যাপার৷ পর্দার মূল কথা হলো শালীনতা৷ সেটা যেভোবে পারেন বজায় রাখতে পারেন৷''
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘হিজাব কারো কাছে ফ্যাশনও হতে পারে৷ নানা রঙের, নানা ডিজাইনের হিজাব কারো কাছে ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হলেও হতে পারে৷ আসলে এটা যার যার চিন্তা এবং পছন্দের বিষয়৷''
ঢাকার একটি সংবাদমাধ্যমে কাজ করেন উম্মে রায়হানা৷ তিনি হিজাব পরেন না৷ এর কারণ একান্তই ব্যক্তিগত৷ তিনি মনে করেন, ‘‘পোশাক নির্বাচনে স্বাধীনতা থাকা উচিত৷ তবে তা যদি চাপিয়ে দেয়া হয়, তাতে আমার আপত্তি আছে৷''
পোশাক নিয়ে ইরানি মহিলাদের চোর-পুলিশ খেলা
ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরানের মহিলাদের পোশাক-আশাকের ব্যাপারে কড়া বিধিনিয়ম মেনে চলতে হয়৷ তবে প্রতিরোধ দানা বাঁধছে, তরুণীরা ক্রমেই আরো বেশি করে রঙিন সাজপোশাকের দিকে ঝুঁকছেন৷
ছবি: IRNA
মাথার চুল দেখানো চলবে না
১৯৭৯ সালের পর থেকে ইরানের শাসকবর্গ মহিলাদের ‘শালীন’ পোশাক-আশাক পরিধানের নির্দেশ দিয়েছেন৷ এই ‘ড্রেস কোড’ অনুযায়ী মহিলাদের মাথার চুল পুরোপুরি ঢাকা থাকতে হবে; লম্বা ঢোলা পাতলুন আর ওভারকোট পড়তে হবে; সেগুলো যতদূর সম্ভব কালো বা ছাই রঙের হলেই ভালো৷
ছবি: Isna
নীরব প্রতিরোধ
প্রায় চার দশকের নিপীড়ন সত্ত্বেও মহিলাদের সাহস অটুট৷ বহু ইরানি মহিলা কড়া ড্রেস কোডের নিজস্ব ব্যাখ্যা করে নিয়েছেন৷ তারা হিজাব আর বোরখা পরেন বটে, তবে নিজেদের মতো করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Kenare
সর্বত্র নিয়ন্ত্রণ
রঙচঙে আর খোলামেলা ফ্যাশন কাম্য নয়৷ প্রতিবছর গরমে পথেঘাটে নৈতিকতার প্রহরীদের নজরদারি বাড়ে৷ বিধিনিয়ম মেনে না চললে, পুলিশ পথ আটকায়, শুরু হয় লম্বা তর্ক-বিতর্ক, বাগবিতণ্ডা...
ছবি: ISNA
ফলশ্রুতি
‘মরাল পুলিশ’-কে সন্তোষজনক কারণ না দেখাতে পারলে অর্থদণ্ড, এমনকি কারাদণ্ডও হতে পারে৷ আটক মহিলাদের মুচলেকা দিতে হয় যে, তারা ভবিষ্যতে নিয়ম মেনে চলবেন৷ জেলহাজতে থাকাকালীন মহিলাদের জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলে নোংরা কালো ‘চাদর’ পরিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়৷
ছবি: FARS
রঙচঙে, আঁটোসাটো আর ছোট...
অনেক তরুণী শাস্তির ভয়েও সাজ ছাড়তে রাজি নন৷ নৈতিকতার প্রহরীদের দৌরাত্ম্য সত্ত্বেও কমবয়সি মহিলারা ক্রমেই আরো বেশি করে আধুনিক সাজপোশাকের দিকে ঝুঁকছেন৷ বহু মডেল সোশ্যাল মিডিয়ায় এই হালফ্যাশন পরিবেশন করে থাকেন৷
ছবি: Hasan Koleini
নিপীড়ন সত্ত্বেও ফ্যাশন
ইরানি মডেল শবনম মোলাভি এমনকি মার্কিন ফ্যাশন ম্যাগাজিন ‘এফএসএইচএন’-এর প্রচ্ছদও অলঙ্কৃত করেছেন৷ গত মে মাসে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়, ‘ইসলাম পরিপন্থি সংস্কৃতি’ প্রচারের দায়ে৷ কয়েকদিন পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান৷
ছবি: fshnmagazine.com
রোহানির আমলেও বোরখা বাধ্যতামূলক
তবে ফ্যাশন সচেতনতাকে অত সহজে নিষিদ্ধ করা যায় না৷ নৈতিকতার প্রহরীদের যাবতীয় উৎপাত ইরানি মহিলাদের ফ্যাশনেবল জামাকাপড় পরার শখ রোধ করতে পারেনি৷
ছবি: Isna
নিষ্ফল প্রতিশ্রুতি
প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি ২০১২ সালের নির্বাচনি প্রচার অভিযানে ‘খোলা রাস্তায় হয়রানি’ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ কিন্তু যে বিশটির বেশি সংস্থা মহিলাদের পোশাক-আশাকের উপর নজর রাখার দায়িত্বে, তাদের একটি বড় অংশ রোহানির নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত৷
ছবি: FARS
নৈতিক গোয়েন্দা পুলিশ
২০১৬ সালের এপ্রিল মাস থেকে সরকার নিজেই আরো প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ তেহরানের পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন যে, মোট সাত হাজার পুরুষ ও মহিলা সাদাপোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ হিসেবে মহিলাদের সাজপোশাক ও আচার-ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করেছেন৷
ছবি: cdn
ইন্টারনেটে সংহতি
গত জুলাই মাসের শেষে ইরানি পুরুষরা #মাইনহিজাব (অর্থাৎ আমার হিজাব) হ্যাশট্যাগ দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি অভিযান শুরু করেন৷ তারা ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম নিজেদের হিজাব পরা অবস্থায় ছবি পোস্ট করে ইরানি মহিলাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছেন৷
ছবি: facebook/my stealthy freedom
10 ছবি1 | 10
তিনি বলেন, ‘‘হিজাবের বিষয়টি আফগানিস্তানে এক সময় চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল৷ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ চাইতো নারীরা হিজাব পরুক৷ আবার আইএস হিজাব চাপিয়ে দিলেও এখন তারাই আবার ইরাকে তা নিষিদ্ধ করছে, কারণ, হিজাব পরা কুর্দি নারী তাদের জন্য হুমকির কারণ হয়েছে৷ তাহলে বিবষয়টি দাঁড়াচ্ছে কারো সুবিধা-অসুবিধার কারণে নারীকে হিজাব পরা – না পরার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হচ্ছে৷''
উম্মে রায়হানা আরো বলেন, ‘‘তবে এখন কোথাও কোথাও হিজাব প্রতিবাদের ভাষায় পরিণত হচ্ছে৷ আমি মনে করি, হিজাব পরার কারণে কেউ বৈষম্য বা অবহেলার শিকার হবেন, এটা গ্রহণযোগ্য নয়৷''
বাংলাদেশের ‘হিজাব কালচার' সম্পর্কে তিনি মনে করেন, ‘‘রাষ্ট্র নিরাপত্তা না দেয়ায় নারীদের কেউ কেউ হিজাবকে একটা নিরাপত্তার বিষয় হিসেবে নিয়েছেন৷ তাঁরা হয়ত মনে করছেন হিজাব পরলে ‘ইভ টিজিং' বা অন্য কোনো ধরনের হয়ারানি থেকে বাঁচা যাবে৷ তবে তনু হত্যার পর সে ধারণা পালটে গেছে৷ হিজাব পরা নারী বা তরুণীরাও এখন ইভ টিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন৷''
উম্মে রায়হানার মতে, ‘‘হিজাব কেন, যে কোনো ধরনের পোশাকই যদি চাপিয়ে দেয়া হয়, তাহলে আমি তার বিরোধী৷ তবে কেউ যদি স্বাধীনভাবে হিজাব পরেন বা পরতে চান, সেটা তাঁর ব্যাপার৷''
বাংলাদেশে কতভাগ নারী বা তরুণী হিজাব পরছেন এর কোনো পরিসংখ্যান নেই৷ তবে মহিলা পরিষদের সাভানেত্রী আয়েশা খানম মনে করেন, তরুণীদের এখন শতকরা ৪০ ভাগই হিজাব পরেন৷ তাঁর মতে, হিজাব এখন সব শ্রেণি এবং পেশার নারীরাই পরেন৷
ফেরদৌস আরা
ঢাকায় এখন প্রচুর হিজাবের দেকান রয়েছে৷ বসুন্ধরা সিটির মতো আধুনিক শপিংমল থেকে চকবাজার পর্যন্ত, বলতে গেলে সবখানেই হিজাবের শো-রুম আছে৷ বিক্রিও বেশ ভালো৷ এমনকি অনলাইনেও হিজাব বিক্রি হয়৷ আর এই হিজাব নানা রঙের, নানা ডিজাইনের৷ অনলাইন শপ ‘আজকের ডিল ডট কম'-এর মূল্য তালিকা অনুযায়ী, হিজাবের দাম ৬০০ থেকে ৩৫০০ টাকা৷ এছাড়া হিজাবের নানা নামও আছে৷ যেমন ক্যাপ হিজাব, ম্যাক্সি হিজাব, এমব্রয়ডারি হিজাব, গ্লিটার হিজাব, জিগজ্যাগ গ্লিটার হিজাব৷ ঢাকার কাঁটাবন এলাকার একজন হিজাব বিক্রেতা ডয়চে ভেলেকে জানান, হিজাব কেনার ব্যাপারে তরুণীরা বেশ ফ্যাশন সচেতন৷ তাই এখন ফ্যাশনেবল হিজাবের চাহিদা বেশ৷ আর বোরকার পরিবর্তে এখন অনেকেই হিজাব পরছেন৷''
ঢাকায় বেশ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল তাদের লাইফ স্টাইল বিভাগে নিয়মিত হিজাবের খোঁজ-খবর দেয়৷ জানায় দাম৷ কোথায় কোন ধরনের হিজাব পাওয়া যাবে, সে খবরও দেয় তারা৷ আবার হিজাব পরার বিষয়ে টিপসও দেয়া হয়৷ সঙ্গে থাকে ভিডিও৷ এ সবের পাঠক এবং দর্শকও বেশ৷ আর হিজাবের সঙ্গে যে শুধু শাড়ি পড়া হচ্ছে তা নয়, সালোয়ার-কামিজ, প্যান্ট, কুর্তাও পরছেন তরুণীরা৷
মুসলিম নারীরা যেসব উপায়ে ‘পর্দা’ করে
হিজাব, বোরকা বা নিকাবের মতো নারীদের জন্য বিভিন্ন ইসলামি পোশাক নিয়ে ইউরোপে এখন তুমুল বিতর্ক চলছে৷ কোনো কোনো দেশ এ সব পোশাক নিষিদ্ধের পক্ষে৷ মুসলমান নারীদের শরীর ঢাকার পোশাকগুলি কী কী – চলুন জেনে নেই৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
হিজাব
দেশ এবং সংস্কৃতিভেদে অনেক মুসলমান নারী হিজাব পরিধান করেন৷ মূলত মাথা, চুল এবং গলা এবং ঘাড়ের খোলা অংশ ঢাকা হয় এই পোশাক দিয়ে৷ বিভিন্ন ডিজাইনের এবং রঙের হিজাব পাওয়া যায় যেগুলো পরলে চেহারা পুরোটাই দেখা যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/Seyllou
নিকাব
নিকাব পরলে নারীর পুরো শরীর ঢেকে যায়, শুধু চোখ দু’টো খোলা থাকে৷ সাধারণত পুরোপুরি রক্ষণশীল মুসলমান নারীরা নিকাব পরেন৷ নিকাব মূলত কালো রঙের হলেও অন্যান্য রঙের নিকাবও ইদানীং দেখা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler
দোপাট্টা
দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম নারীদের মধ্যে জনপ্রিয় দোপাট্টা বা ওড়না৷ নিকাব বা বোরকার মতো না হলেও এই পোশাকেও নারীর শরীর অনেকটা ঢাকা থাকে৷ তবে চুলের কিছুটা, চেহারা এবং গলা দেখা যায়৷ দক্ষিণ এশিয়ায় অন্যান্য ধর্মের মেয়েরাও দোপাট্টা পরেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/S.Jaiswal
আল-আমিরা
মূলত দুই টুকরো কাপড় দিয়ে আল-আমিরা তৈরি করা হয়৷ একটি টুকরো দিয়ে চুল পুরোপুরি ঢেকে দেয়া হয় আর অন্য টুকরোটা হিজাবের মতো জড়িয়ে দেয়া হয়৷ কম বয়সি মুসলিম নারীদের মধ্যে এই আল-আমিরা বেশ জনপ্রিয়৷
শায়লা
শায়লা হচ্ছে লম্বা, চারকোনা এক ধরনের স্কার্ফ, যা গল্ফ অঞ্চলের মুসলিম নারীদের মধ্যে জনপ্রিয়৷ এটি সাধারণত কালো রঙের হয় এবং কাঁধের কাছে পিন দিয়ে আটকাতে হয় এটিকে৷ তবে হিজাবের মতো সবকিছু ঢেকে রাখে না শায়লা৷
ছবি: Getty Images/AFP/A.Rochman
এশার্প
অনেকটা হিজাবের মতো হলেই এসার্প তৈরি হয় সিল্ক দিয়ে এবং বেশ উজ্জ্বল রঙের হয়৷ মূলত তুরস্কের মুসলিম নারীরা এটা পরিধান করেন৷ এটি বিভিন্ন রং এবং ডিজাইনে পাওয়া যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Altan
কেরুডুং আর টুডুং
ইন্দোনেশিয়ার আধুনিক মেয়েরা আজকাল যে হিজাব ব্যবহার করছে, তার নাম কেরুডুং৷ আর প্রতিবেশী দেশ মালয়েশিয়ায় নারীদের মধ্যে জনপ্রিয় টুডুং৷ এই দু’টি অনেকটা চাদরের মতো হলেও, একটি অংশে সুন্দর প্যার্টার্ন থাকে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে থাকে বিভিন্ন রঙের শেডও৷ হিজাবের মতো টুডুং বা কেরুডুং-ও চুল, গলা এবং কাঁধ পুরোপুরি ঢেকে ফেলে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S.Khan
চাদর
ইরানের মেয়েদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় চাদর৷ বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সাধারণত সে দেশের নারীরা চাদর পরে নেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Mehri
বোরকা
মুসলিম নারীরা সারা চেহারা এবং সারা শরীর পুরোপুরি ঢেকে ফেলে বোরকা পরিধান করেন৷ ক্ষেত্রবিশেষে বোরকার চোখের অংশে জাল দেয়া থাকে, যাতে তারা দেখতে পারেন৷ কালো ছাড়াও বিভিন্ন রংঙের বোরকা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Arshad Arbab
জিলবুবস
সারা শরীর ঢেকে রেখেও নারীর স্তন এবং পশ্চাতদেশের আকার ফুটিয়ে তোলা যায় এই পোশাকে৷ এ জন্যই একে জিলবুবস বলা হয়৷ ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই পোশাকের ব্যবহার দেখা যায়৷ তবে এই পোশাক নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷ দ্রষ্টব্য: মুসলিম নারীদের পোশাক সংক্রান্ত বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ছবিঘরটি তৈরি করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Indahono
10 ছবি1 | 10
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়েশা খানম জানান, ‘‘এখন শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে হিজাবের ব্যবহার বাড়ছে৷ বাইরে থেকে ব্যারিস্টারি পরে আসা নারীও হিজাব করছেন৷ এক সময় বেগম রোকেয়া সাখাওয়াৎ নারী স্বাধীনতার জন্য পর্দা প্রথার বিরোধিতা করেছেন৷ বোরকার বিরোধিতা করেছেন৷ তবে এখন সময় বদলে গেছে৷ আমি যদি এখন মানবাধিকারের কথা বলি, তাহলে সেটা ‘ফ্রি চয়েস'৷ যার যা পছন্দ৷ তবে তাঁরা কী ধরনের কাজে জড়িত, তা দেখা যেতে পারে৷ এটা শুধু হিজাব করা নারীর জন্য নয়, সবার জন্যই প্রযোজ্য৷''
তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় এটা ‘রিভাইভালিজম'৷ এখন হিজাব পরে ফুটবল খেলছে, সাইকেল চালাচ্ছে নারীরা৷ ব্যক্তিগতভাবে বোরকা বা হিজাব আমার কাছে অস্বস্তিকর লাগে৷ কিন্তু এর মানে এই নয় যে, বোরকা বা হিজাব পরলেই ‘ফান্ডামেন্টালিস্ট' হয়ে যাবে৷ এটা পরেও হতে পারে, না পরেও হতে পারে৷ ইউরোপ, অ্যামেরিকায় তো হিজাব এখন আইডেন্টিটির প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে৷''
আয়েশা খানম বলেন, ‘‘তবে কেউ যদি হিজাবকেই সবকিছু মনে করেন, তাহলে আমার আপত্তি আছে৷ এটা একটা ঢেউয়ের মতো৷ কোনো এক পরিস্থিতির কারণে এটা হয়েছে৷ এক সময় দেখা যাবে এটা আর থাকবে না৷''