1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে ৯০ দিনে নির্বাচন নিশ্চিত করবে ভারত, আশা জয়ের

১৪ আগস্ট ২০২৪

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন যে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন সামলানোর ক্ষেত্রে ভুল হয়েছে৷

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়
৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন ও আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠন ও প্রচারের সুযোগ দেয়া হলে আওয়ামী লীগই জিতবে বলে মনে করেন সজীব ওয়াজেদ জয়ছবি: DW

একটি ভিডিও সাক্ষাত্কারে জয় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, সরকারের প্রথম থেকেই কোটার বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত ছিল৷

বুধবার প্রকাশিত এই সাক্ষাৎকারে জয় বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সরকারের উচিত ছিল কোটার বিরুদ্ধে কথা বলা এবং বিষয়টি আদালতের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে শুরু থেকেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলা৷ আমাদের সরকার কোটা কমানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে৷ আদালত ভুল করেছে এবং আমরা কোটা চাই না বলে সবাইকে আশ্বস্ত করার সুপারিশ করেছিলাম৷ কিন্তু আমাদের সরকার সেটা শোনেনি এবং বিচার ব্যবস্থার ওপরই বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছে৷

শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠার পেছনে একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার হাত ছিল বলে দাবি করেছেন শেখ হাসিনার উপদেষ্টা জয়৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা এর পেছনে জড়িত ছিল৷ কারণ, ১৫ জুলাই থেকে অনেক আন্দোলনকারীর কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল৷ গত ১৫ বছরে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আমাদের সফলতার কারণে বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া খুবই কঠিন৷ একমাত্র কোনো বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাই বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র পাচার ও আন্দোলনকারীদের কাছে সরবরাহ করতে পারে৷''

৫ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে তার মায়ের চলে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার ঘটনা বর্ণনা করে জয় বলেন, একদিন আগেও তিনি বা শেখ হাসিনা কেউই ভাবেননি যে পরিস্থিতি এত দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে৷ জয় বলেন, ‘‘মায়ের দেশ ছাড়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না৷ তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছিলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন এবং জনগণের উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তায় এই ঘোষণা দেবেন৷ তিনি বিবৃতির খসড়া তৈরি করেছিলেন এবং সেটি রেকর্ড করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন৷ সবকিছু পরিকল্পিত ছিল৷ তিনি যখন রেকর্ডিং শুরু করতে যান, তখন বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বলেন, ‘‘ম্যাম, সময় নেই৷ আমাদের এখন যেতে হবে৷''

হাসিনা দেশ না ছাড়ার ব্যাপারে অনড় ছিলেন এবং তিনি তাকে রাজি করিয়েছেন দাবি করে জয় বলেন, ‘‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী তাকে সামরিক বিমানঘাঁটির মধ্যে একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়৷ সেখানে একটি হেলিকপ্টার প্রস্তুত ছিল৷ কিন্তু তিনি যেতে চাননি৷ তখনই আমার খালা (শেখ রেহানা) আমাকে ফোন করলেন৷ আমি মাকে বোঝালাম যে তোমার নিরাপত্তার জন্য তোমাকে চলে যেতে হবে৷ যদি এই জনতা তোমাকে খুঁজে পায়, কোথাও ধরে ফেলে এবং সেখানে গুলি চলে, তাহলে অনেক মানুষ মারা যাবে৷ হয় তোমাকে এই হত্যার জন্য দায় দেবে কিংবা যদি তোমাকে ধরে ফেলে তাহলে মেরে ফেলবে৷ তাই সবচেয়ে ভালো হবে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া এবং আমিই তাকে চলে যেতে রাজি করিয়েছি৷''

ভারতের প্রতি তার বার্তা কী হবে জানতে চাইলে জয় নয়াদিল্লিকে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশের সংবিধান সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি আশা করব, ভারত নিশ্চিত করবে যে ৯০ দিনের সাংবিধানিক সময়সীমার মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, অরাজকতা বন্ধ হবে এবং আওয়ামী লীগকে প্রচারণা ও পুনর্গঠনের অনুমতি দেওয়া হবে৷ যদি সেটা নিশ্চিত করা হয়, আমি এখনও নিশ্চিত যে আমরা নির্বাচনে জয়ী হবো৷ আমরা এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয় দল৷''

এদিকে, দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের সহায়তায় শান্ত অবস্থা ফেরানো ও নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস৷ মঙ্গলবার একটি বিবৃতিতে বিশ্ব সংস্থার মহাসচিবের মুখপাত্রের কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে৷

অন্যদিকে, বাংলাদেশে গণবিক্ষোভের নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এমন দাবিকে ‘হাস্যকর' বলে নাকচ করেছে ওয়াশিংটন৷ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল গণমাধ্যমকে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘এটা হাস্যকর৷ যুক্তরাষ্ট্র কোনো ভাবেই শেখ হাসিনার পদত্যাগের সঙ্গে জড়িত নয়, এটি মিথ্যে অভিযোগ৷''

আন্দোলনে গণহত্যা ও গুলিবর্ষণের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে: আসিফ নজরুল

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় বিচারের জন্য ইতোমধ্যে কিছু মামলা হয়েছে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব ঘটনার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল৷ বুধবার সকালে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি৷

তিনি বলেন, ‘‘১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন আছে, সেটা পরে ২০০৯ ও ২০১৩ সালে সংশোধনী হয়েছে৷ সেই আইনে আমরা জুলাই গণহত্যা; আগস্টের প্রথম পাঁচদিনের গণহত্যাও বোঝাচ্ছি৷ এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য ইতোমধ্যে ছোটখাটো গবেষণা করেছি৷ আমরা দেখেছি, এই আইনের অধীনে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি ও যারা আদেশ দিয়েছেন এবং যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব৷ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি ইনভেস্টিগেশন টিম আছে, প্রসিকিউশন টিম আছে৷ এগুলোকে আমরা রিঅর্গানাইজড করার চেষ্টা করছি, আদালতটা একটু পরে করব৷ ইনভেস্টিগেশন আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার চেষ্টা করছি৷ জাতিসংঘ থেকে বারবার আমাদের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে৷ বিচারের সত্যিকারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘের সর্বাত্মক তত্ত্বাবধানে আমাদের ইনভেস্টিগেশন টিম কাজ করবে৷ সেটার লক্ষ্যে সব উদ্যোগ গ্রহণ করব৷ ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গে মিটিং করার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তারিখ চূড়ান্ত হয়নি, সহযোগিতা চাইবো৷ এ ছাড়া, আমাদের আরও উচ্চ পর্যায় থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট সংস্থা আছে, উনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে৷''

গণআন্দোলনে অংশ নেওয়ার ঘটনায় দায়ের মামলা প্রত্যাহার করা হবে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের পাসপোর্ট ইতোমধ্যে ফেরত দেওয়া হয়েছে৷ রোজিনা ইসলাম ও মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে দায়ের মামলা আগামীকালই প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ এই দুটি আলোচিত মিথ্যা মামলা ছিল জন্য উল্লেখ করলাম, আরও অনেক মামলাই প্রত্যাহার করা হবে৷'' সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে বলেও এ সময় আশ্বাস দেন তিনি৷ এছাড়া আরও কিছু পরিকল্পনার কথা জানান:

* আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে বিচার বিভাগের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের দেশে-বিদেশে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব জমার নির্দেশ৷

* ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন সংক্রান্ত মামলা ঢাকায় বৃহস্পতিবারের মধ্যে এবং সারা দেশে ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহার৷

* আয়নাঘরে গুমের শিকার ব্যক্তি বা তাদের পরিবারের আইসিটিতে আসার সুযোগ রয়েছে, সরকার সহযোগিতা করবে৷

* বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বিশেষ আইন দ্রুত বাতিল করা হবে৷

* নিবর্তনমূলক সব আইনের ধারা বাতিল বা সংশোধন করা হবে৷

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত বুধবার

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার বিষয়ে বুধবারই আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম৷ আজ বুধবার সকাল সোয়া ১০টায় সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন৷

এপিবি/এসিবি (ডেইলি স্টার বাংলা)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ