বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে তৃতীয় দিনে ২২১ রানে অল আউট হয়ে গেছে টাইগাররা৷ দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬৪ রানের লিড বাংলাদেশের৷ অন্যদিকে, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দুই উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া৷
বিজ্ঞাপন
তৃতীয় দিনের শুরুতে ৬১ রানে তাইজুলের উইকেট হারায় বাংলাদেশ৷ তিনি মাত্র ৪ রান করে আউট হন৷ এরপর ইমরুল কায়েসও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি৷ প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে ফেরা ইমরুল কায়েস দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন মাত্র ২ রান৷ এরপর তামিম ইকবালের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম৷
সোমবার বাংলাদেশ মাঠে নামে যতটা সম্ভব বড় লিড নেয়ার লক্ষ্য নিয়ে৷ যত দ্রুত সম্ভব অস্ট্রেলিয়ার শেষ ৭ উইকেট তুলে নেয়াই ছিল টাইগারদের লক্ষ্য৷ দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই সবচেয়ে বড় বাধা উপড়ে ফেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ৷ বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ব্যাটসম্যান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে৷ এরপর অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে নেন ম্যাট রেনশ ও পিটার হ্যান্ডসকম্ব৷
যেসব টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ
সেই ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৪৩ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা৷ তার মধ্যে জয় এসেছে ২১টিতে৷ চলুন জেনে নিই সেই টেস্টগুলোর কথা৷
ছবি: Anjum Naveed/AP/picture alliance
আগস্ট ৩০-সেপ্টেম্বর ০৩, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী
পরপর ২ টেস্ট পাকিস্তানকে নিজেদের মাটিতে হোয়াইট ওয়াশ করেছে বাংলাদেশ৷ রাওয়ালপিন্ডিতে বাবর আজমদের দুই ইনিংসে ২৭৪ ও ১৭২ রানে অলআউট করে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেন শান্তরা৷ লিটনের সেঞ্চুরি, মিরাজের অর্ধশতক ও ৫ উইকেট, হাসান মাহমুদের ৫ উইকেট এই জয়ে বড় ভূমিকা রাখে৷ এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মধ্য সিরিজ জয় পায় বাংলাদেশ৷
ছবি: Anjum Naveed/AP Photo/picture alliance
আগস্ট ২১-২৫, ২০২৪, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান
টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ১০ উইকেটের জয়। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ১৪তম টেস্টে ঐতিহাসিক জয়। টেস্টে নবম দল হিসেবে পাকিস্তানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। বাকি থাকলো শুধু ভারত ও সাউথ আফ্রিকা। দেশের বাইরে বাংলাদেশের এটা সপ্তম জয়। ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। জবাবে বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ৫৬৫ রানের বড় সংগ্রহ তোলে। পাকিস্তানের ২য় ইনিংস গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানে।
ছবি: Farooq Naeem/AFP/Getty Images
২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর, ২০২৩, প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫০ রানের বিশাল এক জয় পায় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দল। বাংলাদেশের হয়ে ৬ উইকেট নেন তাইজুল। নিউজিল্যান্ড : ৩১৭ ও ১৮১, বাংলাদেশ:৩১০ ও ৩৩৮৷
ছবি: Munir uz Zaman/AFP
জুন ১৪-১৮ (২০২৩), প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান
মিরপুরে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ৷ ৫৪৬ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ, যা টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে জয়ের তিন নম্বরে আছে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৩৮২ রানে অল-আউট হয়। পালটা ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান ১৪৬ রান তুলেছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তুলে ব্যাটিং ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ। শেষ ইনিংসে আফগানিস্তান অল-আউট হয় ১১৫ রানে।
ছবি: Munir uz Zaman/AFP
এপ্রিল ৩-৭ (২০২৩), প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ৭ উইকেটের জয় পায় টাইগাররা৷ আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংসে ২১৪ এবং ২য় ইনিংসে ২৯২ করে৷ বাংলাদেশ ১ম ইনিংসে ৩৬৯ এবং ২য় ইনিংসে ৩ উইকেটে ১৩৮ রান করে ৭ উইকেটের জয় পায়৷
ছবি: Farooq Naeem/AFP/Getty Images
জানুয়ারি ১-৫ (২০২২), প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডকে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে টেস্টে ঐতিহাসিক এক জয় পায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে যেকোনো ফরম্যাটেই এটি বাংলাদেশের প্রথম জয়। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে প্রথম টেস্টের শেষ দিনে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে মুমিনুলবাহিনী।
ছবি: Marty Melville/Photospor/AP/picture alliance
জুলাই ৭-১১ (২০২০) প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে
হারারের একমাত্র টেস্ট ২২০ রানে জিতেছে সফরকারীরা। বাংলাদেশের দেওয়া ৪৭৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে পঞ্চম দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবোয়ে অলআউট হয় ২৫৬ রানে। এই জয়ের অন্যতম রূপকার মেহেদী হাসান মিরাজ।
মুশফিকুর রহিমের দ্বিশতক (২০৩) আর মুমিনুলের শতকে (১৩২) ভর করে বাংলাদেশ জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে এক ইনিংস ও ১০৬ রানের জয় পায়৷ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবোয়ে ২৬৫ রান করেছিল৷ এরপর বাংলাদেশ খেলতে নেমে ছয় উইকেটে ৫৬০ রান তোলে৷ পরের ইনিংসে জিম্বাবোয়ে ১৮৯ রান করে অলআউট হয়ে যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
নভেম্বর ৩০-ডিসেম্বর ২, ২০১৮ প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ
মিরপুর টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ও ১৮৪ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ৷ এই প্রথম প্রতিপক্ষকে ফলো অন করানো ও ইনিংস ব্যবধানে জয়ের অনির্বচনীয় দুটি স্বাদ দল পেল একদিনেই৷ দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০তে জয়৷ ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ৷ ১১৭ রানে ১২ উইকেট, বাংলাদেশের হয়ে এক ম্যাচে সেরা বোলিংয়ের কীর্তি৷ ম্যান অব দা ম্যাচ মেহেদী হাসান মিরাজ৷ ম্যান অব দা সিরিজ সাকিব আল হাসান৷
ছবি: Picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad
নভেম্বর ২২-২৪, ২০১৮ প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ
প্রতিপক্ষকে দুই ইনিংস মিলিয়ে সবচেয়ে কম বলে দুবার অলআউট করে জেতা ম্যাচের নতুন রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ৷ আড়াই দিনে টেস্ট জিতেছিল টাইগাররা৷ সাড়ে সাত সেশনের মতো খেলা হয়েছে এই টেস্টে৷ এটিই টেস্টে বাংলাদেশের দ্রুততম জয়৷ নাঈম হাসান প্রথম ইনিংসে পেয়েছেন ৫ উইকেট৷ দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুল পেয়েছেন ৬ উইকেট৷ মুমিনুল হক পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
নভেম্বর ১১-১৫, ২০১৮ প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে
জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ২১৮ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ৷ সিরিজ ১-১ ড্র৷ ৪৪৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় সেশনে জিম্বাবুয়ে থামে ২২৪ রানে৷ ৩৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সফলতম বোলার মেহেদী হাসান মিরাজ৷ দ্বিশত হাঁকিয়ে ম্যাচ সেরা মুশফিকুর রহিম৷ সিরিজ সেরা হয়েছেন তাইজুল ইসলাম৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
জানুয়ারি ৬-১০, ২০০৫, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ২২৬ রানে জয়ী
টাইগাররা প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় চট্টগ্রামে৷ ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৪৮৮ রান তোলে স্বাগতিকরা৷ আর দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৯ উইকেটে ২০৪ রান করে৷ প্রথম ইনিংসে জিম্বাবোয়ের স্কোর ছিল ৩১২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৪ রান৷
ছবি: Getty Images/AFP
জুলাই ৯-১৩, ২০০৯, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ: বাংলাদেশ ৯৫ রানে জয়ী
দেশের বাইরে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট জয়ের দেখা পায় ২০০৯ সালের ১৩ জুলাই৷ কিংসটাউনে সেই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৯৫ রানে হারায় টাইগাররা৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Samad
জুলাই ১৭-২০, ২০০৯, প্রতিপক্ষ ওয়েস্টইন্ডিজ: বাংলাদেশ চার উইকেটে জয়ী
সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ছিল সাফল্যে ঠাসা৷ দ্বিতীয় টেস্টে সেন্ট জর্জেসে স্বাগতিকদের হারায় টাইগাররা, সেবার জিতেছিল চার উইকেটে৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Brooks
এপ্রিল ২৫-২৯, ২০১৩, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ১৪৩ রানে জয়ী
জিম্বাবোয়ের হারারেতে স্বাগতিকদের আবার ‘বধ’ করে টাইগাররা৷ প্রথম ইনিংসে ৩৯১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৯১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ৷ জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৮২ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৭ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবোয়ে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Njikizana
অক্টোবর ২৫-২৭, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ তিন উইকেটে জয়ী
ঢাকায় বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়৷ তিন দিনে শেষ হওয়া সেই টেস্টে শুরুতে ব্যাট করতে গিয়ে প্রথম ইনিংসে ২৪০ রান করে জিম্বাবোয়ে৷ আর দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ছিল ১১৪৷ অন্যদিকে, প্রথম ইনিংসে ২৫৪ আর দ্বিতীয় ইনংসে ৭ উইকেটে ১০৭ রান তুলে জিতে যায় স্বাগতিকরা৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
নভেম্বর ৩-৭, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ১৬২ রানে জয়ী
খুলনায় জিম্বাবোয়েকে হারায় বাংলাদেশ৷ সেই টেস্ট পাঁচ দিন পর্যন্ত গড়ালেও শেষমেশ তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি জিম্বাবোয়ে৷ ফলাফল স্বাগতিকদের ১৬২ রানের জয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
নভেম্বর ১২-১৬, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ১৮৬ রানে জয়ী
আবারো চট্টগ্রামে জিম্বাবোয়েকে হারায় টাইগাররা৷ সেবার ব্যবধান ছিল ১৮৬ রানের৷
ছবি: Getty Images/AFP/Strdel
অক্টোবর ২৮-৩০, ২০১৬, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড: বাংলাদেশ ১০৮ রানে জয়ী
এখন পর্যন্ত বড় কোনো ক্রিকেট শক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একমাত্র টেস্ট জয় এটি৷ ঢাকায় ইংল্যান্ডকে নাস্তানাবুদ করে টাইগাররা৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
মার্চ ১৫-১৯, ২০১৭, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী
একদিকে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের শততম ম্যাচে জয়, অন্যদিকে প্রথমবারের মত শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয়-দুই দিক দিয়েই ঐতিহাসিক বাংলাদেশের এই টেস্ট ম্যাচটি৷ পঞ্চম দিনে ৪ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা৷ ম্যাচ সেরা হয়েছেন তামিম ইকবাল৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
আগস্ট ২৭-৩০, ২০১৭, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া: বাংলাদেশ ২০ রানে জয়ী
প্রথমবারের মত অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বাংলাদেশ ইতিহাস গড়ে৷ এটা ছিল সাকিব ও তামিমের ৫০তম টেস্ট। সাকিব মোট ১০ উইকেট নিয়ে এবং তামিম দুই ইনিংসেই অর্ধশত করে স্মরণীয় করে রাখলেন এই টেস্টকে৷ ম্যাচ সেরা সাকিব আল হাসান৷ দ্রষ্টব্য: ইএসপিএন ক্রিকইনফো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ছবিঘরটি তৈরি করা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
21 ছবি1 | 21
বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙার সুযোগ করে দিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান৷ তাঁর বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েছিলেন রেনশ৷ কিন্তু বল ঊরুতে লাগলেও ক্যাচ ধরতে পারেননি ইমরুল কায়েস৷ তখন ৩৮ রানে ব্যাট করছিলেন রেনশ৷
এরপর তাইজুলের বলেও সুযোগ এসেছিল রেনশকে আউট করার৷ সেবারও ব্যর্থ হন ইমরুল কায়েস৷ তবে তাইজুলের বলেই ৩৩ রানে হ্যান্ডসকম্ব এলবিডব্লিউ হওয়ায় ভেঙ্গে যায় পঞ্চম উইকেট জুটি৷ অস্ট্রেলিয়ার স্কোর তখন ১০২/৫৷
এরপর বোলিংয়ে ফিরেই রেনশকে আউট করেন সাকিব আল হাসান, ক্যাচ ধরেন সৌম্য সরকার৷ ৪৫ রান করে রেনশ ফেরার সময় অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ১১৭/৬৷ প্রথম সেশন শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ১২৩ রান৷ মধ্যাহ্ন বিরতির পর প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন মিরাজ৷ এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ম্যাথু ওয়েডকে৷ তারপর ২৩ রান করা ম্যাক্সওয়েলকে ফেরান সাকিব৷ ৮ উইকেটে ১৪৪ রান হারানোর পর আবার শুরু হয় ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই৷ দ্বিতীয় সেশনের পানি বিরতির আগে শেষ বলে প্যাট কামিন্সকে ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ৷
সাকিব আল হাসানের বলে আকাশে উঠে যাওয়া সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেছেন শফিউল ইসলাম৷ চা বিরতি পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ৮ উইকেটে ১৯৩ রান৷ তৃতীয় সেশনের দ্বিতীয় ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হয়ে যান প্যাট কামিন্স (১৯৩/৯)৷ এরপর শেষ আঘাতটিও সাকিবের৷ তাঁর বলে হ্যাজলউডের ক্যাচটি ধরেন ইমরুল কায়েস৷ ২১৭ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস৷
তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা করেছিলেন সতর্কভাবে৷ কিন্তু ১৫ রান করে সৌম্যর বিদায়ের ফলে ৪৩ রানে ভাঙে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি৷ অহেতুক ঝুঁকি নিয়ে আউট হয়েছেন সৌম্য সরকার৷ দিনের আর একটি ওভার বাকি ছিল তখন৷ অ্যাশটন অ্যাগারের বলে সৌম্য ছক্কা হাঁকাতে না গেলে হয়ত কোনো উইকেট না হারিয়েই দ্বিতীয় দিন শেষ করত বাংলাদেশ৷ প্রথম উইকেট পতনের পর ‘নাইট ওয়াচম্যান’ হিসেবে নেমেছেন তাইজুল ইসলাম৷মঙ্গলবার হাতে ৯ উইকেট আর ৮৮ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবে বাংলাদেশ৷
এই টেস্টে ইতিমধ্যে অসাধারণ এক রেকর্ডে নিজের নাম লিখিয়েছেন সাকিব আল হাসান৷ ৯টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষেই ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছেন তিনি৷ এ ধরনের কৃতিত্ব আর আছে কেবল মুত্তিয়া মুরালিধরন, ডেল স্টেইন ও রঙ্গনা হেরাথের৷ গত জুনে টেস্ট মর্যাদা পাওয়া আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে অবশ্য এখনো টেস্ট খেলারই সুযোগ পাননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার৷সেই সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই সব টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষেই এই কৃতিত্ব অর্জনের সুযোগ ছাড়বেন না সাকিব৷
রবিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন সাকিব আল হাসান, ৭১ রান করেন তামিম ইকবাল আর নাসিরের ব্যাট থেকে আসে ২৩ রান৷ তাঁদের স্কোরে ভর করে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২৬০ রান সংগ্রহ করে৷ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন কামিন্স, লায়ন এবং অ্যাগার৷ প্রথম দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ১৮ রান৷