ইন্দোর আর কলকাতা টেস্টে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ৷ ভারতের সঙ্গে দুস্তর পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে গেছে মাঠেই৷ বাংলাদেশের ভালোর জন্য এখন মাঠের বাইরের পার্থক্যটাও ভালো করে দেখা দরকার৷
বিজ্ঞাপন
ভারতে একটা টেস্ট সিরিজের জন্য অনেকদিন অপেক্ষা করেছে বাংলাদেশ৷ তা ১৯ বছর অপেক্ষার পর দুই টেস্টের সিরিজ পেয়ে কী লাভ হলো? কোন টেস্টেই তো তিন দিনও টিকতে পারেনি বাংলাদেশ! ভারতের মতো শক্তিশালী দলের মুখোমুখি হওয়ার উপযুক্ত প্রস্তুতি যে ছিল না তা কি অস্বীকার করা যাবে?
অস্বীকার করলে ক্ষতিই হবে বেশি৷ আজ ভারতে গিয়ে লজ্জাজনকভাবে হেরেছে, কাল হারবে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে, পরশু ইংল্যান্ডে, তারপর হয়তো সাউথ আফ্রিকায়- গোহারা হারার এই ধারা চলতেই থাকবে৷
ভারতের অবস্থাও কিন্তু এমনই ছিল৷ কিছুদিন আগেও তারা বাংলাদেশের মতোই নিজেদের সুবিধামতো উইকেট তৈরি করে দেশের মাটিতে বড় বড় জয় পেতো আর দেশের বাইরে গিয়ে ভালো দলের বিপক্ষে নাস্তানাবুদ হতো৷
তবে দেশের বাইরে জয়ের ধারা শুরুর প্রক্রিয়াটা তারা শুরু করেছিল ৪৮ বছর আগে৷ একাত্তরে আমাদের মুক্তিসেনারা যখন স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্য লড়ছেন, ভারতের ক্রিকেট বোর্ড তখন দেশের ক্রিকেটে বড় পরিবর্তন আনার জন্য খুব বড় একটা পদক্ষেপ নিয়েছিল৷
টেস্টে যা করেছে টাইগাররা
২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে এখন অবধি ১১৬টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, জিতেছে মাত্র ১৩টি৷ এক নজরে টাইগারদের টেস্ট রেকর্ড দেখে নিন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M.U. Zaman
আফগানদের বিরুদ্ধে বড় পরাজয়
বিশ্ব ক্রিকেটে নবীন দল আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টটিতে হেরেছে টাইগাররা৷ ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ২২৪ রানের ব্যবধানে হারে স্বাগতিকরা৷
ছবি: Getty Images/AFP/STR
অস্ট্রলিয়ার বিপক্ষে জয়
এখন পর্যন্ত বড় যে দলগুলোকে টেস্টে হারাতে পেরেছে টাইগাররা, তাদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া অন্যতম৷ ২০১৭ সালে ঘরের মাঠে একটি টেস্ট জিততে সক্ষম হয় টাইগাররা৷ তবে, অন্য ম্যাচে অসিরা জয় নিশ্চিত করায় সিরিজটি ড্র হয়৷ দু’দল এখন অবধি মোট ছয়বার মুখোমুখি হয়েছে৷ এরমধ্যে পাঁচবারই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া৷
ছবি: Getty Images/R. Cianflone
হেরেছে ইংল্যান্ডও
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মোট দশটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ৷ এরমধ্যে হরেছে নয়টিতে৷ ২০১৬ সালে ঢাকায় একটি টেস্টে ইংলিশদের ১০৮ রানে হারাতে সক্ষম হয় টাইগাররা৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
ভারতের বিপক্ষে বড় পাওয়া ড্র
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর বাংলাদেশ প্রথম টেস্টটি খেলে ভারতের বিপক্ষে৷ সে খেলায় প্রথম ইনিংসে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুললেও শেষ অবধি তা হয়নি৷ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর অবধি ১০টি টেস্ট খেলেছে টাইগাররা৷ এরমধ্যে হেরেছে আটটিতে, ড্র হয়েছে বাকি দু’টি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Rahi
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাকিবের রেকর্ড
কিউয়িদের বিরুদ্ধে ১৫টি টেস্ট খেললেও এখন অবধি জয়ের মুখ দেখেনি টাইগাররা৷ তবে, তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে৷ কিউয়িদের বিরুদ্ধে অবশ্য সাকিব আল হাসান একাধিক রেকর্ড গড়েছেন৷ ২০১৭ সালে ওয়েলিংটন টেস্টে এক ইনিংসে ২১৭ রান করেন তিনি৷ টেস্টে এটাই তাঁর সর্বোচ্চ রান৷ বোলিংয়ে এক ইনিংসে ৩৮ রানের বিনিময়ে সাত উইকেট নেয়ার রেকর্ডটিও তিনি গড়েছেন কিউয়িদের বিরুদ্ধেই৷
ছবি: Getty Images/H. Hopkins
পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিমের দ্বিশতক
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অংশ নেয়া দশটি টেস্ট ম্যাচের নয়টিতেই হেরেছে টাইগাররা৷ একটি ম্যাচ ড্র হয়েছে৷ দলটির বিরুদ্ধে তামিম ইকবালের একটি দ্বিশতক রয়েছে৷ ২০১৫ সালে খুলনা টেস্টে এক ইনিংসে ২০৬ রান করেন তিনি৷ টেস্টে এটাই তামিমের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
জয় মেলেনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১২টি টেস্ট খেলেছে টাইগাররা, হেরেছে ১০টিতে৷ তবে দু’টি ম্যাচ ড্র হয়েছে৷ দলটির বিপক্ষে শাহাদাত হোসেনের এক ইনিংসে ২৭ রানের বিনিময়ে ছয় উইকেট নেয়ার রেকর্ড রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
হেরেছে শুধু শ্রীলঙ্কা
দক্ষিণ এশিয়ার টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে একমাত্র শ্রীলঙ্কাই এখন অবধি বাংলাদেশের কাছে হেরেছে৷ দু’দলের মধ্যে আয়োজিত ২০টি টেস্টের ১৬টিতে হরেছে টাইগাররা, জিতেছে একটিতে, আর ড্র হয়েছে বাকি তিনটি৷ টেস্টে মুশফিকুর রহিমের দু’টি দ্বিশতকের একটি এসেছে এই দলের বিরুদ্ধে৷ ২০১৫ সালে গল টেস্টে এক ইনিংসে ২০০ রান করেন তিনি৷ সেই টেস্টে মোহাম্মদ আশরাফুল করেছিলেন ১৯০ রান৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়
এখন অবধি যেসব দলের বিরুদ্ধে টেস্টে জিতেছে বাংলাদেশ, তার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ দলটির বিরুদ্ধে ১৬ টেস্টের মধ্যে চারটিতে জিতেছে টাইগাররা, হেরেছে দশটিতে৷ মেহেদি হাসান মিরাজের টেস্টে সবচেয়ে ভালো বোলিংয়ের রেকর্ডও এই দলের বিরুদ্ধে৷ ২০১৮ সালে ঢাকায় ৫৮ রানের বিনিময়ে সাত উইকেট নেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Brooks
জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি জয়
জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে খেলা ১৬ টেস্টের মধ্যে ছয়টিতে জিতেছে টাইগাররা৷ হেরেছে সাতটিতে, আর ড্র তিনটি৷ টেস্টে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি হয়েছে এই দলের বিরুদ্ধে৷ ২০১৯ সালে ঢাকায় এক টেস্টে ২১৯ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিকুর রহিম৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
10 ছবি1 | 10
তখনকার দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাওয়ার আগে নির্বাচকরা ঠিক করেছিলেন ঘরোয়া ক্রিকেট না খেললে কাউকে জাতীয় দলে সুযোগ দেয়া হবে না৷ সেই নিয়মে ফারুক ইঞ্জিনিয়ার, রুসি সুর্তির মতো খেলোয়াড়রা বাদ পড়েছিলেন দল থেকে৷ এমনকি ফর্ম খারাপ থাকায় কিংবদন্তি ক্রিকেটার মনসুর আলী খান পতৌদি আর চান্দু বোর্দেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতেও ভয় পাননি নির্বাচকরা৷ সমালোচনা হয়েছে প্রচুর৷ সেই সমালোচনাকে পাত্তা দেয়নি বিসিসিআই৷ খুব লাভ হয়েছিল তাতে৷ ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গ্যারি সোবার্সের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ফিরেছিল ভারতীয় দল৷
তারপর থেকে ক্রিকেটে অনেক সাফল্য পেয়েছে ভারত৷ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছে দুবার৷ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও জিতেছে৷ তাই বলে টেস্ট ক্রিকেটের গুরুত্ব কমতে দেয়নি৷ ঘরোয়া ক্রিকেট একেবারেই আকর্ষণহীন হয়নি৷
টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে আকর্ষণীয় আসর আইপিএল হয় ভারতে৷ তার পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটে একদিন ও চারদিনের ম্যাচের প্রতিযোগিতাও হয় নিয়মিত৷ তাই ভারতের এখন কোনো ফরম্যাটের খেলোয়াড়েরই অভাব নেই৷
টি-টোয়েন্টির খেলোয়াড়দের নিয়ে তাদের টেস্ট দল গড়তে হয় না৷ বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা খেলোয়াড়দের মধ্যে তাই শুধু রোহিত শর্মা টেস্ট দলে ছিলেন, বাকিরা কিন্তু টি-টোয়েন্টি দলের বাইরের৷
আরেকটা দেখার মতো বিষয় হলো, বিরাট কোহলি টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রাম নিয়ে টেস্ট সিরিজ খুব গুরুত্ব দিয়ে খেলেছেন৷
এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কিন্তু একেবারে উল্টো অবস্থানে৷
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট ধীরে ধীরে দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে৷ ঘরোয়া ক্রিকেটে চারদিনের ম্যাচ হয় না বললেই চলে৷ যা হয় তাতে তারকা ক্রিকেটাররা অংশ নিতে চান না৷
বিরাট কোহলি যেখানে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রাম নিয়ে টেস্ট সিরিজ খেলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা ক্রিকেটার সেখানে সাউথ আফ্রিকা সফরে না গিয়ে বিশ্রাম নেন আর আইপিএলটা ঠিকমতো খেলেন৷
আসলে বাংলাদেশ ভারতের কাছে হারতেই পারে৷ কদিন আগে সাউথ আফ্রিকাও তো ভারত থেকে নাস্তানাবুদ হয়ে ফিরেছে!
কিন্তু সাউথ আফ্রিকা নিশ্চয়ই লজ্জাজনক হার থেকে শিক্ষা নেবে৷ বাংলাদেশ কি সেই শিক্ষাটা নেবে? ক্রিকেট বোর্ডের ভাবগতিক দেখে তা কি মনে হয়?
একটা কথা পরিষ্কার বুঝে নেয়া ভালো৷
জোড়াতালি দিয়ে, ফাঁকি দিয়ে প্রস্তুতি সেরে, গায়ের জোরে বল করে আর বলে বলে ছক্কা মারার চেষ্টা করে টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করা যায় না, যাবে না৷ টেস্ট ক্রিকেট অনেক বেশি ধৈর্য, বুদ্ধি আর কৌশলের সমষ্টিগত সামর্থের খেলা৷ এই খেলা ‘খেলতে হয় তাই খেলি' মানসিকতা নিয়ে খেলে যাওয়ার কোনো মানে নেই৷ এভাবে খেলার চেয়ে না খেলাও ভালো৷
যেসব টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ
সেই ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৪৩ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা৷ তার মধ্যে জয় এসেছে ২১টিতে৷ চলুন জেনে নিই সেই টেস্টগুলোর কথা৷
ছবি: Anjum Naveed/AP/picture alliance
আগস্ট ৩০-সেপ্টেম্বর ০৩, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী
পরপর ২ টেস্ট পাকিস্তানকে নিজেদের মাটিতে হোয়াইট ওয়াশ করেছে বাংলাদেশ৷ রাওয়ালপিন্ডিতে বাবর আজমদের দুই ইনিংসে ২৭৪ ও ১৭২ রানে অলআউট করে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেন শান্তরা৷ লিটনের সেঞ্চুরি, মিরাজের অর্ধশতক ও ৫ উইকেট, হাসান মাহমুদের ৫ উইকেট এই জয়ে বড় ভূমিকা রাখে৷ এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মধ্য সিরিজ জয় পায় বাংলাদেশ৷
ছবি: Anjum Naveed/AP Photo/picture alliance
আগস্ট ২১-২৫, ২০২৪, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান
টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ১০ উইকেটের জয়। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ১৪তম টেস্টে ঐতিহাসিক জয়। টেস্টে নবম দল হিসেবে পাকিস্তানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। বাকি থাকলো শুধু ভারত ও সাউথ আফ্রিকা। দেশের বাইরে বাংলাদেশের এটা সপ্তম জয়। ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। জবাবে বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ৫৬৫ রানের বড় সংগ্রহ তোলে। পাকিস্তানের ২য় ইনিংস গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানে।
ছবি: Farooq Naeem/AFP/Getty Images
২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর, ২০২৩, প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫০ রানের বিশাল এক জয় পায় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দল। বাংলাদেশের হয়ে ৬ উইকেট নেন তাইজুল। নিউজিল্যান্ড : ৩১৭ ও ১৮১, বাংলাদেশ:৩১০ ও ৩৩৮৷
ছবি: Munir uz Zaman/AFP
জুন ১৪-১৮ (২০২৩), প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান
মিরপুরে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ৷ ৫৪৬ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ, যা টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে জয়ের তিন নম্বরে আছে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৩৮২ রানে অল-আউট হয়। পালটা ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান ১৪৬ রান তুলেছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তুলে ব্যাটিং ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ। শেষ ইনিংসে আফগানিস্তান অল-আউট হয় ১১৫ রানে।
ছবি: Munir uz Zaman/AFP
এপ্রিল ৩-৭ (২০২৩), প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ৭ উইকেটের জয় পায় টাইগাররা৷ আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংসে ২১৪ এবং ২য় ইনিংসে ২৯২ করে৷ বাংলাদেশ ১ম ইনিংসে ৩৬৯ এবং ২য় ইনিংসে ৩ উইকেটে ১৩৮ রান করে ৭ উইকেটের জয় পায়৷
ছবি: Farooq Naeem/AFP/Getty Images
জানুয়ারি ১-৫ (২০২২), প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডকে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে টেস্টে ঐতিহাসিক এক জয় পায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে যেকোনো ফরম্যাটেই এটি বাংলাদেশের প্রথম জয়। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে প্রথম টেস্টের শেষ দিনে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে মুমিনুলবাহিনী।
ছবি: Marty Melville/Photospor/AP/picture alliance
জুলাই ৭-১১ (২০২০) প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে
হারারের একমাত্র টেস্ট ২২০ রানে জিতেছে সফরকারীরা। বাংলাদেশের দেওয়া ৪৭৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে পঞ্চম দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবোয়ে অলআউট হয় ২৫৬ রানে। এই জয়ের অন্যতম রূপকার মেহেদী হাসান মিরাজ।
মুশফিকুর রহিমের দ্বিশতক (২০৩) আর মুমিনুলের শতকে (১৩২) ভর করে বাংলাদেশ জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে এক ইনিংস ও ১০৬ রানের জয় পায়৷ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবোয়ে ২৬৫ রান করেছিল৷ এরপর বাংলাদেশ খেলতে নেমে ছয় উইকেটে ৫৬০ রান তোলে৷ পরের ইনিংসে জিম্বাবোয়ে ১৮৯ রান করে অলআউট হয়ে যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
নভেম্বর ৩০-ডিসেম্বর ২, ২০১৮ প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ
মিরপুর টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ও ১৮৪ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ৷ এই প্রথম প্রতিপক্ষকে ফলো অন করানো ও ইনিংস ব্যবধানে জয়ের অনির্বচনীয় দুটি স্বাদ দল পেল একদিনেই৷ দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০তে জয়৷ ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ৷ ১১৭ রানে ১২ উইকেট, বাংলাদেশের হয়ে এক ম্যাচে সেরা বোলিংয়ের কীর্তি৷ ম্যান অব দা ম্যাচ মেহেদী হাসান মিরাজ৷ ম্যান অব দা সিরিজ সাকিব আল হাসান৷
ছবি: Picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad
নভেম্বর ২২-২৪, ২০১৮ প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ
প্রতিপক্ষকে দুই ইনিংস মিলিয়ে সবচেয়ে কম বলে দুবার অলআউট করে জেতা ম্যাচের নতুন রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ৷ আড়াই দিনে টেস্ট জিতেছিল টাইগাররা৷ সাড়ে সাত সেশনের মতো খেলা হয়েছে এই টেস্টে৷ এটিই টেস্টে বাংলাদেশের দ্রুততম জয়৷ নাঈম হাসান প্রথম ইনিংসে পেয়েছেন ৫ উইকেট৷ দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুল পেয়েছেন ৬ উইকেট৷ মুমিনুল হক পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
নভেম্বর ১১-১৫, ২০১৮ প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে
জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ২১৮ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ৷ সিরিজ ১-১ ড্র৷ ৪৪৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় সেশনে জিম্বাবুয়ে থামে ২২৪ রানে৷ ৩৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সফলতম বোলার মেহেদী হাসান মিরাজ৷ দ্বিশত হাঁকিয়ে ম্যাচ সেরা মুশফিকুর রহিম৷ সিরিজ সেরা হয়েছেন তাইজুল ইসলাম৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
জানুয়ারি ৬-১০, ২০০৫, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ২২৬ রানে জয়ী
টাইগাররা প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় চট্টগ্রামে৷ ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৪৮৮ রান তোলে স্বাগতিকরা৷ আর দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৯ উইকেটে ২০৪ রান করে৷ প্রথম ইনিংসে জিম্বাবোয়ের স্কোর ছিল ৩১২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৪ রান৷
ছবি: Getty Images/AFP
জুলাই ৯-১৩, ২০০৯, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ: বাংলাদেশ ৯৫ রানে জয়ী
দেশের বাইরে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট জয়ের দেখা পায় ২০০৯ সালের ১৩ জুলাই৷ কিংসটাউনে সেই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৯৫ রানে হারায় টাইগাররা৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Samad
জুলাই ১৭-২০, ২০০৯, প্রতিপক্ষ ওয়েস্টইন্ডিজ: বাংলাদেশ চার উইকেটে জয়ী
সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ছিল সাফল্যে ঠাসা৷ দ্বিতীয় টেস্টে সেন্ট জর্জেসে স্বাগতিকদের হারায় টাইগাররা, সেবার জিতেছিল চার উইকেটে৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Brooks
এপ্রিল ২৫-২৯, ২০১৩, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ১৪৩ রানে জয়ী
জিম্বাবোয়ের হারারেতে স্বাগতিকদের আবার ‘বধ’ করে টাইগাররা৷ প্রথম ইনিংসে ৩৯১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৯১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ৷ জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৮২ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৭ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবোয়ে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Njikizana
অক্টোবর ২৫-২৭, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ তিন উইকেটে জয়ী
ঢাকায় বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়৷ তিন দিনে শেষ হওয়া সেই টেস্টে শুরুতে ব্যাট করতে গিয়ে প্রথম ইনিংসে ২৪০ রান করে জিম্বাবোয়ে৷ আর দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ছিল ১১৪৷ অন্যদিকে, প্রথম ইনিংসে ২৫৪ আর দ্বিতীয় ইনংসে ৭ উইকেটে ১০৭ রান তুলে জিতে যায় স্বাগতিকরা৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
নভেম্বর ৩-৭, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ১৬২ রানে জয়ী
খুলনায় জিম্বাবোয়েকে হারায় বাংলাদেশ৷ সেই টেস্ট পাঁচ দিন পর্যন্ত গড়ালেও শেষমেশ তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি জিম্বাবোয়ে৷ ফলাফল স্বাগতিকদের ১৬২ রানের জয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
নভেম্বর ১২-১৬, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ১৮৬ রানে জয়ী
আবারো চট্টগ্রামে জিম্বাবোয়েকে হারায় টাইগাররা৷ সেবার ব্যবধান ছিল ১৮৬ রানের৷
ছবি: Getty Images/AFP/Strdel
অক্টোবর ২৮-৩০, ২০১৬, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড: বাংলাদেশ ১০৮ রানে জয়ী
এখন পর্যন্ত বড় কোনো ক্রিকেট শক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একমাত্র টেস্ট জয় এটি৷ ঢাকায় ইংল্যান্ডকে নাস্তানাবুদ করে টাইগাররা৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
মার্চ ১৫-১৯, ২০১৭, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী
একদিকে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের শততম ম্যাচে জয়, অন্যদিকে প্রথমবারের মত শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয়-দুই দিক দিয়েই ঐতিহাসিক বাংলাদেশের এই টেস্ট ম্যাচটি৷ পঞ্চম দিনে ৪ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা৷ ম্যাচ সেরা হয়েছেন তামিম ইকবাল৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
আগস্ট ২৭-৩০, ২০১৭, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া: বাংলাদেশ ২০ রানে জয়ী
প্রথমবারের মত অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বাংলাদেশ ইতিহাস গড়ে৷ এটা ছিল সাকিব ও তামিমের ৫০তম টেস্ট। সাকিব মোট ১০ উইকেট নিয়ে এবং তামিম দুই ইনিংসেই অর্ধশত করে স্মরণীয় করে রাখলেন এই টেস্টকে৷ ম্যাচ সেরা সাকিব আল হাসান৷ দ্রষ্টব্য: ইএসপিএন ক্রিকইনফো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ছবিঘরটি তৈরি করা হয়েছে৷