1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘ভিসা যুদ্ধ'?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২১ মে ২০১৯

গত এক সপ্তাহ ধরে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা দেয় হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশের পাকিস্তান দূতাবাস৷ তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা দেয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ হয়নি৷’’

Tunesien Libyen Flüchtlinge aus Bangladesch an der Grenze Reisepass
ছবি: dapd

 পাকিস্তানে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন সোমবার বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে৷ গত সোমবার থেকে ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভিসা কাউন্টার বন্ধ৷'' তিনি আরো জানান, ‘‘বাংলাদেশি কর্মকর্তাকে ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে পাকিস্তান সরকারের গড়িমসির কারণে গত সাত মাস ধরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে কোনো ভিসা কর্মকর্তা নেই৷ বিষয়টি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া উইংসকে জানানো হয়েছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ওই কর্মকর্তা ইসলামাবাদ না আসা পর্যন্ত আমরা কোনো ভিসা দিতে পারছি না৷''

এই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন,  ‘‘পাকিস্তানি নাগরিকদের  ভিসা দেয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়নি৷ উল্টো পাকিস্তান  আমাদের নাগরিকদের ভিসা দিচ্ছে না৷''

তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদ বা অন্য কোনো কারণে ব্যক্তি বিশেষকে বাংলাদেশ ভিসা না-ও দিতে পারে৷'' এ সময় তিনি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত ‘ভুল তথ্য' ছাপা হওয়ায় প্রতিবাদ পাঠানোর পরিকল্পনার কথাও বলেন৷

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘‘পাকিস্তানে বাংলাদেশি  দূতাবাসে নিযুক্ত কিছু অফিসারকে ভিসা দিচ্ছে না পাকিস্তান৷  বিশেষ করে কনস্যুলার সেকশনে যারা ভিসা দেয়, তারা ভিসা পাচ্ছেন না৷ ফলে ওখানে কাজ করবে কে?'' তবে তিনি আশা করেন এই বিষয়গুলো দ্রুত মিটে যাবে৷

আমি প্রেস কাউন্সিলর, আমিও ভিসা পেয়েছি এক মাস পর: আওরঙ্গজেব হারাল

This browser does not support the audio element.

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই প্রেস ব্রিফিংয়ের পর ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাসে যোগাযোগ করা হলে প্রেস কাউন্সিলর আওরঙ্গজেব হারাল খোঁজ নিয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তাতে গত এক সপ্তাহ ধরে পাকিস্তানের নাগরিকরা বাংলাদেশের ভিসা পাচ্ছেন না৷ আমাদের নাগরিকরাও আমাদের বিষয়টি জানচ্ছেন৷ বাংলাদেরশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিসা দেয়া বন্ধ করা হয়নি বলে জানালেও আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তাতে আমাদের নাগরিকরা  ভিসা পাচেছন না৷ আর বংলাদেশ দূতাবাসেরই এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমও এই খবর প্রকাশ করেছে৷''

তিনি আরো দাবি করেন, ‘‘২০১৬ সাল থেকে পাকিস্তানি নাগরিকরা বাংলাদেশের ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতার শিকার হচ্ছেন৷ এমনকি ডিপ্লোম্যাটিক ভিসার ক্ষেত্রেওে এমন হচ্ছে৷ আমি প্রেস কাউন্সিলর৷ আমিও ভিসা পেয়েছি এক মাস পর৷''

গত বছরের মার্চে সাকলাইন সায়েদাকে ঢাকায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্তির প্রস্তাব দেয় পাকিস্তান৷ তবে বাংলাদেশ ওই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি৷ রাষ্ট্রদূত হিসেবে অন্য কাউকে নিযুক্ত করতে পাকিস্তানকে অনুরোধ করা হয়৷ তবে বাংলাদেশের ওই প্রস্তাবে এখনো সাড়া দেয়নি পাকিস্তান৷

এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘তারা ক্যান্ডিডেট হিসেবে একজনকে পাঠিয়েছিলেন৷ সেটি কোনো কারণে গ্রহণ করা হয়নি৷ তখন তারা একজন নতুন কাউকে দেবে এটাই সাধারণ নিয়ম৷ কিন্তু তারপর তারা কোনো লোক পাঠায়নি৷ তারা লোক পাঠালে আমরা অবশ্যই কনসিডার করবো৷''

এদিকে পাকিস্তানে অবস্থানের জন্য বাংলাদেশের প্রেস কাউন্সিলর ইকবাল হোসেনের ভিসার মেয়াদ গত ৩০ মার্চ শেষ হয়েছে৷ কিন্তু তাঁর ভিসা নবায়নের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পাকিস্তান সরকার৷ তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদেরও গত ছয় মাস ধরে ভিসা দেয়া হয়নি৷ সে কারণে তারাও পাকিস্তানে যেতে পারছেন না বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান ইকবাল হোসেন৷

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ভিসা নিয়ে জটিলতা আগেই ছিল:শেখ শাহরিয়ার জামান

This browser does not support the audio element.

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ইসলামাবাদে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহসানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি টেক্সট মেসেজে জানান, ‘‘গত নভেম্বর থেকে ইসলামাবাদে বাংলাদেশ মিশনে কোনো ভিসা অফিসার নেই৷ প্রেস কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন সাময়িকভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ভিসা অফিসারের কাজ করে আসছিলেন৷ তাঁকে ঢাকায় বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে৷ ফলে ভিসা অফিসার না থাকায় ভিসা ইস্যু করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে৷ তারপরও বাংলাদেশ দূতাবাসের করাচি মিশন অফিস থেকে ভিসা দেয়া হচ্ছে৷'' 

এদিকে বাংলাদেশের সাবেক কুটনীতিকরা বিষটি সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করলেও তাঁদের কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করা হলে পরিস্থিতি নিয়ে এই মূহুর্তে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি৷ তবে সিনিয়র ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট ও বাংলা ট্রিবিউনের বিশেষ প্রতিনিধি শেখ শাহরিয়ার জামান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ভিসা নিয়ে জটিলতা আগে থেকেই ছিল৷ এই জটিলতা দুই দিক থেকেই৷  বিষয়টা এমন যে, ওরাও দেয় না, আমরাও দেই না৷ ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে একটা কূটনৈতিক নর্ম আছে৷ যেমন, তুমি ৫টি দিলে আমিও ৫টি দেবো৷  আর এখন যেটা হয়েছে ইসলামাবাদে ভিসা অফিসার নেই নভেম্বর থেকে৷ যিনি বাড়তি দায়িত্ব পালন করছিলেন, তিনিও বদলি হয়েছেন৷ লোকজন না থাকলে ভিসা দেবেন কে?আর বিশেষ করে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর সন্ত্রাসবাদসহ নিরপত্তা ইস্যুতে সম্পর্ক আরো শীতল হয়৷ ফলে দুই দেশ থেকেই ভিসা দেয়ার হার আরো কমেছে৷ কিন্তু কখনোই দুই দেশের কেউই ভিসা দেয়া পুরোপুরি বন্ধ করেনি৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ