‘বাংলাদেশ চীন-পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকলে, তা ঝুঁকিপূর্ণ হবে'
৩১ জুলাই ২০২০
মো. হারুনুর রশীদ মনে করেন, পাকিস্তান ও চীনের দিকে বাংলাদেশের কূটনীতি কিছুটা ঝুঁকছে, যা বাংলাদেশ ও বিশেষ করে আওয়ামী লিগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ৷ ডয়চে ভেলে বাংলার ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়' অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন৷
বিজ্ঞাপন
পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কূটনীতিতে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে বিএনপিদলীয় সাংসদ মো. হারুনুর রশিদ বলেন, এই প্রবণতা বাংলাদেশের পাশাপাশি আওয়ামী লিগের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ হবে৷
ডয়চে ভেলের পাঠকদের একটি জরিপের অংশগ্রহণকারীদের অনেকে একই মত পোষণ করেন৷
তবে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত মনে করেন, ‘‘বাংলাদেশের রাজনীতি তার পররাষ্ট্রনীতি বদলায়নি৷ তারা নিজস্ব স্বার্থ মাথায় রেখেই সব দেশের সাথে তাদের কূটনীতি নির্ধারণ করছে৷'' রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে এর ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে তাঁর মত৷
একই প্রসঙ্গে হারুনুর রশিদ বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এতদিন ধরে ছিল বিশ্বাস-অবিশ্বাসের ব্র্যাকেটে বন্দি৷ বর্তমানে সেই সম্পর্ক হয়ে উঠেছে কেবল আওয়ামী লিগ ও ভারতের মধ্যের সম্পর্ক৷
ভারত-বাংলাদেশে কূটনৈতিক অসাম্যের বিষয়ে মোহাম্মদ আরাফাত বলেন, ‘‘ বাংলাদেশ সব দেশকে সমানের চোখে দেখে৷ ভারতের সাথে আমাদের ইতিহাস আছে, বিশেষ সখ্য আছে, তা সত্য, কিন্তু তার মানে এই না যে, আমরা স্বার্থ বিকিয়ে দিয়েছি৷ আর ভারতকে কেন, কোনো দেশকেই বাংলাদেশের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই৷ আর বাংলাদেশ ভয় পায়ও না৷''
আলোচনায় আরো উঠে আসে ভারতে বাড়ন্ত সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্ন, এবং সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান৷ পাশাপাশি উঠে আসে সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গও৷ মোহাম্মদ আরাফাতের বক্তব্য, ‘‘বিএনপি-জামাত আমলে সীমান্ত হত্যায় অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷ বছরে গড়ে একশরও অধিক৷ ভারতকে কখনো সরাসরি এ বিষয়ে প্রশ্ন করেনি, কোনো আলোচনায় যায়নি৷ এখন সেই সংখ্যা বছরে ২৫-৩০ এ নেমে গেছে৷''
সাংসদ মো. হারুনুর রশিদের কাছে জানতে চাওয়া হয় বর্তমান পরিস্থিতে বিএনপির রাজনীতির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রাজনীতি ভারতবিরোধিতা নয়৷ ভারতের সাথে আমাদের বিশাল সীমান্ত৷ দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ৷ কিন্তু এখন ভারতে যা হচ্ছে (সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান) তা কংগ্রেস আমলে ছিলননা, মোদী আমলে তা হচ্ছে৷ ভারতের সরকারের পদক্ষেপের কারণে ওই দেশের সংখ্যালঘুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন৷''
এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আরাফাত বলেন, ‘‘বিজেপি ক্ষমতায় আসায় ভারতে সাম্প্রদায়িক শক্তি যেভাবে বেড়েছে, বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশেও তা-ই হতো৷''
অনুষ্ঠানে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো জোরদার করার ওপর জোর দেন দুই আলোচক৷ তবে দুজনই মনে করেন, দু দেশের সম্পর্কে কূটনৈতিকও বাণিজ্যিক সমতা থাকা উচিত৷
এসএস/এসিবি
চীন-ভারত: সামরিক শক্তিতে কে কত এগিয়ে
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সেনাবাহিনীকে বলেছেন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে৷ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী ভারতও প্রস্তুত৷ যুদ্ধ কখনো কাম্য নয়৷ তবু দেখে নেয়া যাক সামরিক শক্তিতে চীন আর ভারতের বর্তমান অবস্থা৷
ছবি: picture-alliance/AP/A. Rahi
পিডাব্লিউআর ব়্যাঙ্কিং
সামরিক শক্তির এই ব়্যাঙ্কিংয়ে ভারতের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে আছে চীন৷ যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার ঠিক পরে, অর্থাৎ তিন নাম্বারে আছে চীন আর ভারত আছে চার নাম্বারে৷
ছবি: APTN
সক্রিয় সেনাসদস্য
১৩৮ টি দেশের মধ্যে পিআরডাব্লিউ ইনডেক্সে তৃতীয় স্থানে থাকা চীনের মোট ২১ লক্ষ ২৩ হাজার সেনাসদস্য রয়েছে, ভারতের রয়েছে ১৪ লক্ষ ৪৪ হাজার সেনাসদস্য৷ তবে রিজার্ভ সৈন্যর সংখ্যায় ভারত এগিয়ে৷ চীনের পাঁচ লাখ ১০ হাজারের বিপরীতে তাদের রয়েছে ২১ লাখ রিজার্ভ সৈন্য৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Asfouri
প্রতিরক্ষা বাজেট
প্রতিরক্ষা খাতে চীনের বাজেট ২৩৭০ কোটি ডলারের এবং ভারতের ৬১০ কোটি ডলারের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Goya
এয়ারক্রাফট
এখানেও চীন এগিয়ে৷ চীনের ৩২১০টির বিপরীতে ভারতের রয়েছে ২১২৩টি এয়ারক্রাফট৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Li Jianshu
যুদ্ধজাহাজ
চীনের ৭৭৭টি আর ভারতের রয়েছে ২৮৫টি যুদ্ধজাহাজ৷
ছবি: Getty Images/AFP
যুদ্ধবিমান
চীনের যুদ্ধবিমান ভারতের দ্বিগুণেরও বেশি৷ চীনের ১২৩২টি আর ভারতের ৫৩৮টি৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Imago-Images/StockTrek Images
হেলিকপ্টার
চীনের আছে ৯১১টি হেলিকপ্টার আর ভারতের ৭২২টি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/epa/J. Singh
ট্যাঙ্ক
ভারতের ট্যাঙ্ক চীনের চেয়ে অনেক বেশি৷ চীনের আছে ৩৫০০টি ট্যাঙ্ক আর ভারতের ৪২৯২টি৷ ওপরে চীন, রাশিয়া ও ইরানের যৌথ মহড়ার ছবি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Grits
সাঁজোয়া যান
চীনের সাঁজোয়া যানবাহনের সংখ্যা ৩৩ হাজার, ভারতের আট হাজার ৬৮৬৷
ছবি: picture-alliance/Xinhua/Z. Hesong
স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি
এখানে দু দেশের তুলনাই হয় না৷ চীনের আছে ৩৮০০, ভারতের মাত্র ২৩৫৷
ছবি: picture-alliance/AP/A. Rahi
ফিল্ড আর্টিলারি
এখানে ভারত কিছুটা এগিয়ে৷ চীনের ৩৮০০-র বিপরীতে তাদের রয়েছে ৪০৬০টি ফিল্ড আর্টিলারি৷
ছবি: picture-alliance/AP/A. Rahi
রকেট প্রজেক্টর
চীনের ২৬৫০, ভারতের ২৬৬৷ সুতরাং এখানে চীন প্রায় দশগুণ এগিয়ে৷
ছবি: Reuters/F. Mascarenhas
সাবমেরিন
সাবমেরিনের সংখ্যার দিক থেকেও ভারত অনেক পিছিয়ে৷ চীনের ৭৪টির বিপরীতে ভারতের আছে ১৬টি সাবমেরিন৷
ছবি: Reuters/S. Andrade
বিমানবাহী জাহাজ
চীনের ২টি, ভারতের ১টি৷
ছবি: picture-alliance/newscom/S. Shaver
ডেস্ট্রয়ার
চীনের ৩৬টি, অন্যদিকে ভারতের ১০টি৷
ছবি: picture-alliance/Imagechina
ফ্রিগেট
চীনের ৫২, ভারতের তার ঠিক চার ভাগের এক ভাগ, অর্থাৎ ১৩টি৷
ছবি: AFP/Iranian Army office
রণতরি
রণতরি চীনের ৫০টি, ভারতের ১৯টি৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Asfouri
উপকূলীয় টহল
চীনের ২২০, ভারতের ১৩৯৷
ছবি: picture-alliance/Imaginechina/Meng Zhongde
বিমানবন্দর
চীনের আছে মোট ৫০৭টি বিমানবন্দর আর ভারতের ৩৪৭টি৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Baker
নৌবন্দর এবং টার্মিনাল
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ চীন প্রায় সব জায়গার মতো এখানেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশের চেয়ে এগিয়ে৷ চীনের২২টির বিপরীতে তাদের রয়েছে মোট ১৩টি বন্দর ও টার্মিনাল৷
ছবি: picture-alliance/Costfoto/Yu Fangping
ভারতের বহরে রাফাল
২০১৬ সালে ফ্রান্সে গিয়ে রাফাল যুদ্ধ বিমান চুক্তিতে সই করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোট ৩৬টি বিমান ফ্রান্সের থেকে কেনার চুক্তি হয়েছিল। এরমধ্যে বুধবার ভারতে পৌঁছেছে নতুন পাঁচটি যুদ্ধ বিমান। সেগুলোকে লাদাখে পাঠানোর কথা রয়েছে৷ চীন-ভারত সংঘাতের কারণে আপাতত সেখানেই রাখা হবে বিমানগুলিকে। এরপর আসবে হ্যামার মিসাইলও।