‘‘বাংলাদেশ : জল যেখানে জীবন মৃত্যুর সাথী ’’
১২ ডিসেম্বর ২০১০বাংলাদেশে পানি একই সাথে জীবন আর মৃত্যুর সঙ্গী, লিখেছে মিউনিখ থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্যুদডয়চে সাইটুং৷ পদ্মা, মেঘনা, যমুনা - এই তিনটি বিশাল আকারের নদী বয়ে গেছে বিশ্বের বৃহত্তম এই বদ্বীপের ওপর দিয়ে৷ পানি ভালবাসে সেখানকার মানুষ৷ আবার ঘৃণাও করে৷ কেননা পানি বয়ে আনে মৃত্যু৷ স্যুদ ডয়চে সাইটুং লিখছে:
পৃথিবীর ক্রমশ উষ্ণ হয়ে ওঠা, বায়ুমণ্ডলে পানির ভাগ বৃদ্ধি, আবহাওয়ার ক্রমবর্ধমান তীব্রতা - এই সব কিছুর এত অসহায় শিকার খুব কম দেশই হয়েছে বাংলাদেশের মত৷ ১৫ কোটিরও বেশি মানুষের বাস বাংলাদেশে - আয়তনে যেদেশ ইটালির প্রায় অর্ধেক৷ হিমালয়ের হিমবাহ গলছে৷ বাড়ছে সমুদ্রতল৷ এরই মাঝে স্পৃষ্ট বাংলাদেশ৷ দক্ষিণে আছড়ে পড়ছে সমুদ্র, মাঝপথ দিয়ে বয়ে চলা নদনদী বর্ষার সময় চর এলাকার গ্রামকে গ্রাম ভাসিয়ে নিয়ে যায়, উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে প্রায়ই হানা দেয় খরা৷ গঙ্গা নদীর ওপর ভারত বাঁধ তোলার পর থেকে এই বদ্বীপে ঢুকে পড়ছে নোনা পানি৷ বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসে প্রলয়ংকরী ঝড়৷ জলবায়ু পরিবর্তন কথাটা যদি কাউকে চিনে নিতে হয়ে থাকে তাহলে তা বাংলাদেশের মানুষকেই৷
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে ২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ ভবনের সামনে সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশ এনভায়র্নমেন্ট নেটওয়ার্ক৷ তার উল্লেখ করে জার্মান দৈনিক স্যুদডয়চে সাইটুং আরো লিখছে:
জাতিসংঘকে একটি স্মারকলিপি দেয়া হয়৷ নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রয়োগে বিকাশমুখী দেশগুলোকে প্রযুক্তি সাহায্য দান, বাজারে প্রবেশের ন্যায্য অধিকার, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং অভিবাসন অধিকারের দাবি জানানো হয়৷ বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ জানিয়েছেন তারা - জাপানে, অস্ট্রেলিয়ায় এবং বাংলাদেশে৷ তাঁরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদগুলোর মুখে এই দেশকে রক্ষা করা দেশপ্রেমসুলভ দায়িত্ব৷ তারপর সেই প্রতিবাদকারী মানুষগুলো দেশে ফিরে যান ঢাকায়৷ দেশটি তাঁদের এখনও আছে৷ জলবায়ু পরিবর্তন কথাটা বাংলাদেশের মানুষকেই জানতে হবে বইকি৷
ভাষান্তর: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ