1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশ থেকে বাঘেরা ভারতে চলে যাচ্ছে?

পায়েল সামন্ত কলকাতা
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে ক্রমশ বাড়ছে বাঘের সংখ্যা, এমনই দাবি পশ্চিমবঙ্গের বনমন্ত্রীর৷ তার বক্তব্য, বাংলাদেশ থেকে বাঘ ভারতে চলে আসায় সংখ্যা বাড়ছে৷ সত্যিই কি রয়েল বেঙ্গল টাইগার ‘দেশান্তরী' হচ্ছে?

Bangladesch l Tiger in Sundarbans
ছবি: Jahangir Alam Onuchcha /imago images

সুজলা-সুফলা বাংলায় বাঘের উপস্থিতি অনেকটা কোহিনুরের মতো৷ ভারত ও বাংলাদেশের সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে রক্ষা করতে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ পশ্চিমবঙ্গের অংশে বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ায় উদ্বেগে ছিলেন প্রকৃতিপ্রেমীরা৷

বাঘ বাঁচাতে বেসরকারি উদ্যোগে সুন্দরবনে শুরু হয় ‘সেভ টাইগার, সেভ বেঙ্গল' শীর্ষক সচেতনতামূলক প্রচার৷ এখন বাঘের সংখ্যা বাড়ছে সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে৷ বাংলাদেশ থেকে আসা বাঘও জুড়ছে, এমনটাই দাবি পশ্চিমবঙ্গের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের৷

সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা

সরকারি হিসেব অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বরে শুমারিতে সন্দরবনের ভারতীয় অংশে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছিল ৯৬টি৷ চলতি বছরের শুমারির চূড়ান্ত ফলাফল যদিও এখনো আসেনি তবে পশ্চিমবঙ্গের বনমন্ত্রী বলছেন, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে৷

বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন ‘‘গত বছরের শুমারি অনুযায়ী, এ রাজ্যের সুন্দরবনে বাঘের সংখ‌্যা ছিল ৯৬৷ চলতি বছরের শুমারির তথ‌্য ও ছবি হায়দরাবাদে পাঠানো হয়েছে৷ তার রিপোর্ট এখনো আসেনি৷ তবে বাঘের সংখ‌্যা বাড়ার ঈঙ্গিত মিলেছে৷ নতুন ২৭টি রয়েল বেঙ্গলের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে৷’’

নতুন ২৭টি বাঘ বিবেচনায় নিলে সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে বাঘের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২৩-এ৷  

ছবি: Prabhakar

নতুন দ্বীপে বাঘ

দুই দেশ মিলিয়ে সুন্দরবনের মোট আয়তন ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার৷ এর সিংহভাগ বাংলাদেশের অন্তর্গত৷ ছয় হাজার কিলোমিটার বাংলাদেশের অন্তর্গত৷ বাকি চার হাজার কিলোমিটার ভারতে৷

মন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, ভারতের আরো কয়েকটি দ্বীপের বাঘের উপস্থিতি খুঁজে পেয়েছেন আধিকারিকরা৷

জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘সুমারি করার সময় রামগঙ্গা ও অন‌্যান‌্য অঞ্চলের পাঁচটি দ্বীপে বাঘের সন্ধান মিলেছে৷ এই দ্বীপগুলিকে বাঘ সংরক্ষণ এলাকার অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে৷ এখানকার বাঘের সংখ‌্যাটাও যোগ হবে৷’’

খাবারের খোঁজে?

পশ্চিমবঙ্গে বন দপ্তর সূত্রের খবর, বাংলাদেশে বাঘের খাবার পর্যাপ্ত নেই৷ খাবারের টানে রয়্যাল বেঙ্গল ভারতীয় অংশে চলে আসছে৷ রাজ্য সরকারের উদ্যোগে অরণ্যে বাঘের জন্য পর্যাপ্ত খাবারের জোগান রাখা হয়েছে যাতে চতুষ্পদরা গ্রামে ঢুকতে না পারে৷

বনমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘বাদাবনে বাঘের খাদ্যের যাতে টান না পড়ে, সেই লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ গভীর জঙ্গলে হরিণ ও শূকর নিয়মিত ছাড়া হয়৷ বাংলাদেশের অংশে এই খাবারের অভাব রয়েছে৷ তাই বাঘ এদেশে (ভারতে) চলে আসছে৷’’

বাঘ এলে, চলেও যেতে পারে: শিবাজী ভট্টাচার্য

This browser does not support the audio element.

বিশেষজ্ঞদের ভিন্নমত

রাজ্যের প্রাক্তন পরিবেশ আধিকারিক প্রণবেশ সান্যাল সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘কোভিডের জেরে বছর দুয়েক অরণ্যে মানুষের যাতায়াত কম ছিল৷ সেই সুযোগে বাঘের ছানা নিশ্চিন্তে বেড়েছে৷ তাই ঘন ঘন বাঘ দেখা যাচ্ছে৷ প্রাপ্তবয়স্ক বাঘের সংখ্যা সুন্দরবনে বেড়েছে৷ তার মানে বাংলাদেশের বাঘ চলে এসেছে, এটা ভ্রান্ত ধারণা৷’’

সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরাও একই সুরে কথা বলেছেন৷ প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রায়মঙ্গল নদী দুই দেশের সীমান্তে রয়েছে৷ সেটা পার হয়ে বাঘ ভারতের দিকে চলে আসছে, এটা বলার মতো প্রমাণ আমাদের হাতে নেই৷ তবে বাঘ বাড়ছে, সেটা স্বাভাবিক নিয়মে যেমন বাড়ে৷’’

এদিকে ডবব্লিওডবব্লিওএফ-এর সুন্দরবন প্রোগ্রাম অধিকর্তা অনামিত্র অনুরাগ দণ্ড ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ভারতীয় সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা স্থিতিশীল৷ ৯৬টির ছবি উঠেছে৷ আরো কয়েকটা বেশি থাকতে পারে৷ কিন্তু বাংলাদেশে খাবার অভাব বা সেজন্য বাঘের ভারতে চলে আসা, এটা ঠিক বলে মনে হয় না৷’’

পশ্চিমবঙ্গের প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্তা শিবাজী ভট্টাচার্য বাঘের দেশান্তরের বিতর্ককে বিজ্ঞানের চোখে দেখছেন৷ তাঁর মতে, ‘‘বাঘ সীমান্ত বোঝে না৷ ওরা খাবার বা নিরাপত্তার খোঁজে অন্যত্র চলে যায়৷ প্রজননের সময় বাঘিনী অনেক দূরে গিয়ে পুরুষ সঙ্গীকে খুঁজে নেয়৷ এসব উদ্দেশ্যে যদি বাঘ এক জায়গা থেকে অন্যত্র চলেও যায়, সেটাকে আমাদের মতো করে ভাবলে চলবে না৷ ওরা এলে, চলেও যেতে পারে৷ এতে বাংলাদেশের কোনো চিরস্থায়ী ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে কি না, তা আমার জানা নেই৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ