বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার এবং ভারতে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ বন্ধ না হলে বাংলাদেশের ভূখণ্ড দখল করে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন বিজেপি নেতা সুব্রামনিয়াম স্বামী৷ ভারতের মিডিয়া অবশ্য তাঁর এমন মন্তব্যকে গুরুত্ব দিচ্ছে না৷
বিজ্ঞাপন
আগরতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলার সময় বাংলাদশ প্রসঙ্গে ওই মন্তব্য করেন সুব্রামনিয়াম স্বামী৷
এমনিতেই বিতর্কিত মন্তব্য করায় বিজেপি নেতা এবং রাজ্যসভা সাংসদ সুব্রামনিয়াম স্বামীর জুড়ি মেলা ভার৷ অতীতের ধারা বজায় রেখে প্রতিবেশী বাংলাদেশ সম্পর্কে এবার তাঁর বিস্ফোরক মন্তব্য, ‘‘বাংলাদেশে যদি হিন্দুদের উপর নির্যাতন বন্ধ না হয়, তাহলে ভারতের উচিত বাংলাদেশের ভূখণ্ড দখল করা৷'' তাঁর মতে, বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থন অব্যাহত থাকা উচিত৷পাশাপাশি সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাবধান ক দেওয়া দরকার, যাতে ভারত-বাংলাদেশ সুসস্পর্ক নষ্ট করে দিতে উদ্যত কিছু লোকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘তাঁরা হিন্দুদের মন্দির ভাংছে, মন্দির ভেঙ্গে মসজিদ করছে৷ হিন্দুদের জোর করে মুসলমান বানাচ্ছে৷ হালে বগুড়া জেলার একটি হিন্দু গ্রামে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি ভেঙ্গে বাইরে ফেলে দেওয়া হয়৷ ৩০ ঘর হিন্দুর বাস ঐ গ্রামে৷ তাঁরা দারুণভাবে মুষড়ে পড়েছে৷ হিন্দুদের উপর এই ধরনের অত্যাচার যদি হাসিনা সরকার দমন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে, আমার মতে, ভারতের উচিত হবে বাংলাদেশ ভূখণ্ড দখল করা৷''
সুব্রামনিয়াম স্বামী সাংস্কৃতিক গৌরব সংস্থার ত্রিপুরা শাখার এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে আগরতলায় গিয়েছিলেন৷ বাংলাদেশ সম্পর্কে আগেও এই ধরনের মন্তব্য করেছেন তিনি৷ ২০১২ সালে তিনি বলেছিলেন পৃথক বাংলাদেশ গঠিত হয় এই ধারনার ভিত্তিতে যে, হিন্দু ও মুসলিম একসঙ্গে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না৷ কিন্তু বাংলাদেশি মুসলিমদের ভারতে অনুপ্রবেশ চলতেই থাকে৷ ভারতে তাঁরা দিব্যি হিন্দুদের সঙ্গে বসবাস করছে৷ তাই যদি হয়, তাহলে তাঁর মতে, পৃথকভাবে মুসলিমদের বাংলাদেশে থাকার আর দরকারটা কী? তাই তাঁর মতে, যত সংখ্যক বাংলাদেশি মুসলিম ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে, সেই সংখ্যার অনুপাতে অর্থাৎ এক-তৃতীয়াংশ জমি ভারতকে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত বাংলাদেশের, না দিলে বাংলাদেশের ভূখণ্ড দখল করা উচিত ভারতের৷
‘আধ্যাত্মিকতা’: কোন দেশের কী অবস্থান
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা ওয়েফেয়ারার ট্র্যাভেল সবচেয়ে ‘আধ্যাত্মিক’ দেশগুলোর একটি তালিকা করেছে৷ ধর্মীয় বিশ্বাস, বৈচিত্র্য, স্বাধীনতা, জনকল্যাণ ও জীবনমান নিয়ে করা এই তালিকায় কোন দেশের কী অবস্থান তা জানতে দেখুন এই ছবিঘর...
ছবি: Imago/Westend61
ক্যানাডা
গ্লোবাল স্পিরিচুয়ালিটি ইনডেক্স-এ ধর্মীয় আচার মেনে চলা মানুষের সংখ্যার দিক দিয়ে খুব কম নম্বর (৭-এ ২) পেয়েছে ক্যানাডা৷ তবে ধর্মে বৈচিত্র্য ও জীবনযাপনের মানের বিচারে সর্বোচ্চ ৭ নম্বর এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা, সহনশীলতা, স্থাপনা ও জনকল্যাণে ৬ নম্বর করে নিয়ে ৪৯ এর মধ্যে ৪০ নম্বর পেয়ে তালিকায় প্রথম স্থানে এসেছে দেশটি৷
ছবি: Imago/StockTrek Images
ইটালি
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান ভ্যাটিকানের অবস্থান ইটালির রাজধানী রোমে৷ দেশটির অন্যান্য শহরজুড়েও রয়েছে নানা ধর্মীয় স্থাপনা৷ বিভিন্ন ধর্ম-মতের মানুষের সংখ্যা (৭ এ ৭ নম্বর), ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জীবনমানসহ (৬ নম্বর) অন্যান্য বিচারে পাওয়া নম্বরের সুবাদে তালিকায় দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে ইউরোপের এই দেশটি৷
ছবি: Getty Images/A.Solaro
ভারত
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ভারতই এই তালিকার সেরা পাঁচে স্থান পেয়েছে৷ প্রচলিত ধর্মমত ছাড়াও বিভিন্ন গুরুর ভক্তকুল রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশে৷ ধর্মমতের বৈচিত্র্য এবং উপাসনাস্থলের সংখ্যা বিচারে এগিয়ে ৩৪ নম্বর নিয়ে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আধ্যাত্মিক দেশগুলোর মধ্যে তিন নম্বরে এসেছে তারা৷
ছবি: picture alliance/dpa/Jagadeesh NV
জাপান
বৌদ্ধপ্রধান জাপানে অন্যান্য ধর্মমতের মানুষও রয়েছে৷ এশিয়ার অন্যতম সমৃদ্ধ দেশটিতে মানুষের জীবনমানও উন্নত৷ ধর্ম বিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা (১ নম্বর) ও ধর্মীয় স্থাপনার (২) দিকে খুব খারাপ হলেও জীবনমানে সর্বোচ্চ ৭ নম্বর নিয়ে তাদের মোট নম্বরও হয়েছে ভারতের সমান ৩৪৷ তালিকায় চার নম্বরে রয়েছে দেশটি৷
ছবি: AP
যুক্তরাজ্য
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পতন ঘটলেও বিশ্বের বহু ধর্ম-বর্ণের মানুষের সহাবস্থান রয়েছে যুক্তরাজ্যে৷ ধর্মীয় সহনশীলতার দিক থেকেও অনেক এগিয়ে দেশটি৷ সেখানে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মুসলিম-হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মের মানুষও তাঁদের আচার-অনুষ্ঠান পালন করছে৷ ধর্ম-বিশ্বাসীর সংখ্যার দিক দিয়ে সর্বনিম্ন ১ পেলেও উন্নত জীবনের কল্যাণে তালিকায় পাঁচ নম্বরে রয়েছে যুক্তরাজ্য৷
ছবি: Imago
যুক্তরাষ্ট্র
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ক্রমশ প্রভাবশালী হয়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রেও বহু দেশের নানা ধর্মমতের মানুষের সম্মিলন ঘটেছে৷ শিল্প, অর্থনীতি, গবেষণা ও প্রযুক্তিসহ নানা দিক দিয়ে এগিয়ে থাকা দেশটিতে ব্যক্তি স্বাধীনতা উপভোগের সুযোগও রয়েছে প্রশংসনীয় মাত্রায়৷ ধর্ম বিশ্বাসীর সংখ্যার বিচারে পিছিয়ে থাকলেও ধর্মীয় বৈচিত্র্য ও কল্যাণের ওপর ভর করে তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে তারা৷
ছবি: picture-alliance/AP/R. Bowmer
জার্মানি
এই তালিকায় যৌথভাবে দশম অবস্থানে রয়েছে ইউরোপের দুই দেশ জার্মানি ও সুইজারল্যান্ড, তাদের নম্বর ৩১৷ সংখ্যাগুরু খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মমতের মানুষও এখানে তাদের ধর্ম পালন করতে পারছে৷ দুই দেশেই ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যা কম হলেও জীবনমানের দিক দিয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে তারা৷ তালিকায় সপ্তম, অষ্টম ও নবম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিপাইন্স৷
ছবি: picture alliance/dpa/F. Gambarini
সৌদি আরব
মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র ভূমি মক্কা ও মদিনায় প্রতি বছর হজ করতে যান লাখ লাখ মানুষ৷ তারপরেও সৌদি আরবের নম্বর ২৭ এবং তালিকায় অবস্থান হয়েছে ২৩তম৷ ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জনকল্যাণের দিক দিয়ে সর্বনিম্ন ১ নম্বর পেয়েছে দেশটি৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Sahib
পাকিস্তান
দক্ষিণ এশিয়ার আরেক বড় দেশ পাকিস্তানের অবস্থান তালিকায় ৯১তম৷ মুসলিম প্রধান দেশটির মোট নম্বর হয়েছে ১৮৷ ধর্ম বিশ্বাসীদের দিক দিয়ে ৭ এর মধ্যে ৫ নম্বর পেয়েছে দেশটি, তবে ধর্মীয় স্বাধীনতার দিক দিয়ে জুটেছে সর্বনিম্ন ১ নম্বর৷ ধর্মীয় সহনশীলতায় মাত্র ২ পয়েন্ট পেয়েছে তারা৷ আর আধ্যাত্মিক স্থাপনা ও জনকল্যাণে সর্বনিম্ন ১ করে এবং জীবনমানের দিক দিয়ে ২ পেয়েছে তারা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/K. M. Chaudary
বাংলাদেশ
বিভিন্ন ধর্মমত ও ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যার দিক দিয়ে ভালো অবস্থানে থাকলেও (৬ নম্বর করে) ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহশীলতার দিক দিয়ে অবস্থা খুব একটা ভালো নয় (৭ এর মধ্যে ২)৷ আর জীবনমান, জনকল্যাণ ও ধর্মীয় স্থাপনার দিক দিয়ে সর্বনিম্ন ১ নম্বর করে নিয়ে ১৯ নম্বর পেয়েছে বাংলাদেশ৷ তাই তালিকায় অবস্থান ৮৩তম৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
সিরিয়া
তালিকায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে কয়েক বছর ধরে যুদ্ধকবলিত মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়া৷ তাদের সবচেয়ে বেশি নম্বর এসেছে ধর্মবিশ্বাসীর দিক দিয়ে ৭-এ ৫৷ এছাড়া ধর্মীয় বৈচিত্র্যের দিক দিয়ে পেয়েছে ২৷ জীবনমানসহ বাকি দিকগুলোতে সর্বনিম্ন ১ করে নিয়ে তাদের মোট নম্বর হয়েছে ১২৷
ছবি: picture-alliance/AA/E. Diyab
11 ছবি1 | 11
একই ধরনের কথা ২০১৪ সালেও বলেছিলেন তিনি৷ তখন বলেছিলেন, ঢাকা যদি অনুপ্রবেশকারীদের ফিরিয়ে নিতে রাজি না হয়, তাহলে আনুপাতিক হারে জমি ভারতকে ছেড়ে দিতে হবে৷
পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকেও রেয়াত করেননিবিজেপি নেতা সুব্রামনিয়াম স্বামী৷ সরকারি অফিসের চাপরাশি বা পিওনের সঙ্গে তুলনা করেছেন ইমরান খানকে৷ কারণ, তাঁর মতে, কার্যতঃ সরকার চালাচ্ছেন আইএসআই, সামরিক বাহিনী এবং জঙ্গি গোষ্ঠী৷ প্রধানমন্ত্রী খান স্রেফ পুতুলমাত্র৷ কাজেই পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা অর্থহীন৷ সময়ের অপচয়৷ পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশ বেড়েছে ইমরান খানের শাসনে৷ ভারতের উচিত হবে দেশের সামরিক বাহিনীকে তৈরি রাখা এবং সময়মতো একদিন পাকিস্তানকে চার টুকরো (বালুচ, সিন্ধ, পাশতুন এবং পশ্চিম পাঞ্জাবের অবশিষ্ট অংশ) করা৷ ভারতের পর্যবেক্ষক মহল অবশ্য বিজেপি নেতা সুব্রামনিয়াম স্বামীর এই উত্তেজক মন্তব্যকে আমল দিতে নারাজ৷ তাঁদের মতে, এর কোনো রাজনৈতিক গুরুত্ব নেই৷ ভারতের মিডিয়াও এই ধরনের মন্তব্য উপেক্ষা করেছে৷
অনেকেই মনে করছেন, আগামী বছর সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে এটা নিছক ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি৷ শুধু সুব্রামনিয়াম স্বামী কেন, বিজেপিতে আরো কিছু নেতা, মন্ত্রী আছেন, যাঁরা বলেন, মুসলিমরা আদতে রামচন্দ্রের বংশধর৷ কাজেই তাঁদের উচিত, অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ, মথুরায় শ্রীকৃষ্ণ মন্দির এবং বারানসিতে বিশ্বনাথ মন্দির নির্মাণে সহযোগিতা করা৷
তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারতীয়রা যা ভাবছেন
শেখ হাসিনা ভারতে এলেও তিস্তা চুক্তি আপাতত হচ্ছে না৷ তারপরেও তিস্তার দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে আছে বাংলাদেশ৷ আশা-আকাঙ্খায় দিন গুনছে বহু মানুষ৷ চলুন জেনে নেওয়া যাক ভারতের কয়েকজন সাধারণ মানুষ এ সম্পর্কে কী ভাবছেন৷
ছবি: DW/A. Chatterjee
সুস্মিতা সর্বাধিকারী, কবি ও সমাজসেবী
তিস্তা নদী ভারতের যে যে রাজ্যের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, বাংলাদেশের সঙ্গে জলবণ্টন চুক্তিতে সেই রাজ্যগুলির স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে আন্তর্জাতিক স্তরে চুক্তিবদ্ধ হওয়া আবশ্যক৷ তা না হলে অন্যান্য জলচুক্তির ক্ষেত্রে ভারত যে শিক্ষা পেয়েছে, এক্ষেত্রেও তা-ই হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির অবস্থান সাধুবাদের যোগ্য৷
ছবি: DW/R. Chakraborty
মলয় হালদার, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন প্রশাসনিক কর্তা
নদীর গতিপথ যখন প্রাকৃতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হতো, তখন কোনো দেশের একক সিদ্ধান্ত কার্যকর করা সহজ হতো না৷ এখন ভাটির দেশকে নির্ভর করতে হয় উজান দেশের মনোভাবের ওপর৷ তিস্তার জল যেমন ভারতের, তেমনি বাংলাদেশেরও৷ শুধু উত্তরবঙ্গের কথা বলে আন্তর্জাতিক বন্ধুত্বকে বলি দেওয়া সমীচীন নয়৷
ছবি: DW/R. Chakraborty
পাপন মালাকার, বেসরকারি সংস্থার কর্মী
বাংলাদেশের সঙ্গে কোথায় যেন আত্মার টান অনুভব করি৷ আমরা জল অপচয় করব আর প্রতিবেশী দেশের ভাই-বোনেরা জলের অভাবে কষ্ট পাবে এটা মন থেকে মেনে নিতে পারি না৷ তবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যে যুক্তি দেখিয়েছেন তা নিয়েও আলোচনা প্রয়োজন৷
ছবি: DW/R. Chakraborty
কমলিকা ভট্টাচার্য, চাকুরিজীবী
তিস্তা একটি আন্তর্জাতিক নদী৷ এই ধরনের নদীতে কোনো একটি দেশ বা রাজ্যের একছত্র অধিকার থাকে না৷ সিকিম থেকে গজলডোবা পর্যন্ত তিস্তার ওপর বেশ কয়েকটি বাঁধ নির্মাণের কারণে বাংলাদেশের রংপুর-রাজশাহী অঞ্চল মরুর চেহারা নিচ্ছে৷ সেক্ষেত্রে নদী বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে প্রতি বছর এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত শুখা মরশুমে দুই দেশের মধ্যে সমবন্টনের নীতি গ্রহন করা উটিত৷
ছবি: DW/R. Chakraborty
অসীম দাস, সমাজসেবী
নদীর জল আটকে রাখার চেষ্টা, নিজের অধিকারের এক্তিয়ার বলে মনে করা নেহাৎ মুর্খামি৷ ভারত বা বাংলাদেশ উভয়েই কৃষিপ্রধান দেশ৷ কৃষিকাজ না হলে দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে৷ বাংলাদেশকে তিস্তার জল না দিয়ে ভারত যদি শুধুমাত্র নিজের স্বার্থ দেখে, তাহলে ভবিষ্যতে নেপাল যদি ভারতকে ব্রহ্মপুত্র নদীর জল দিতে অস্বীকার করে, কী হবে তখন?
ছবি: DW/R. Chakraborty
বনশ্রী কোনার, হোম মেকার
দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন, তখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ‘ইগো’ নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন৷ এমনটা কখনওই কাম্য নয়৷ দেশ তথা সার্বিক স্বার্থকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত৷
ছবি: DW/R. Chakraborty
অভিজিৎ চ্যাটার্জি, প্রকাশনী সংস্থার কর্মী
তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি হোক বা না হোক, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে নিজের রাজ্যে রাজনীতি করতেই হবে৷ তাই তাঁকে রাজ্যবাসীর স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে কাজ করতে হয়৷ নদীর জলে কোনোরকম নিয়ন্ত্রণ না রেখে উত্তরবঙ্গকে বঞ্চিত করে বাংলাদেশকে জল দেওয়ার মধ্যে কোনও মহত্ব নেই৷ বরং সবার আগে রাজ্যবাসীর দিকে তাকানো উচিত৷
ছবি: DW/R. Chakraborty
মানবেন্দু সরকার, কলেজ শিক্ষক
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আসছেন৷ তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করে প্রাথমিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর এটাই উপযুক্ত সময়৷ হাসিনা চাইছেন, নরেন্দ্র মোদী চাইছেন৷ সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীও চাইছেন৷ বেঁকে বসেছেন মমতা ব্যানার্জি৷ এটা সৌহার্দ্যের ছবি নয়৷ ভুল বার্তা যাচ্ছে৷
ছবি: DW/R. Chakraborty
রাখী বিশ্বাস, কলেজ ছাত্রী
দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তাচুক্তি নিয়ে আলোচনা চললেও তা ফলপ্রসূ হয়নি৷ ফলে তিস্তার জলের দিকে তাকিয়ে আছে বাংলাদেশ৷ মমতা ব্যানার্জিকেই ঠিক করতে হবে, উনি রাজনীতি করবেন, নাকি দেশের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়াবেন৷