রেলপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণের খরচ কম৷ তাছাড়া অন্য সব পরিবহণের তুলনায় ট্রেন অনেক নিরাপদ এবং পরিবেশবান্ধব৷ তারপরও বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রীবান্ধব হচ্ছে না, হচ্ছে না লাভজনক৷
বিজ্ঞাপন
৬০টি ওয়াগনের মালবাহী ট্টেন এক গ্যালন জ্বালানি তেলে এক কিলোমিটার চলতে পারে৷ একই ওজনের পণ্য পরিবহণে লাগে ২১০টি ট্টাক৷ ট্টাকগুলোয় এক কিলোমিটার পথ চলাচলে লাগে ২১ গ্যালন জ্বালানি৷ ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে যাত্রীপিছু জ্বালানি খরচ পড়ে ০.৯৫ থেকে ১.০৬ লিটার৷ একই পথে বাসে একজন যাত্রী পরিবহণে ৪.০০ থেকে ৬.২২ লিটার জ্বালানি লাগে৷ তার মানে, রেলপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে খরচ কম৷ কার্বন ডাই-অক্সাইড বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে বিষের মাত্রা বাড়ে৷ বাংলাদেশে বাতাসে নির্গত ২০ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড পরিবহণ থেকে আসে৷ সড়কযান থেকেই নির্গত হয় ৯০ শতাংশ৷ ট্টেনে জ্বালানি খরচ যেমন কম, তেমনি পরিবেশ দূষণষও কম৷ ট্টেনের চেয়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে ৮.৩ গুণ ও ট্টাকে ৩০ গুণ বেশি দূষণ হয়৷ সড়কে বছরে যেখানে গড়ে ১২ হাজার দুর্ঘটনা ঘটে, সেখানে রেলপথে তা অনেক কম৷ ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর দর্শনা-জগতি অংশে ৫৩ দশমিক ১১ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপনের মধ্য দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে৷ দেড়শ বছরে রেলপথ বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৯০০ কি.মি.৷ তবে ৬৪টি জেলার মধ্যে ২০টিতে রেল যোগাযোগ নেই৷ এখনো দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের কিছু জেলা রেল যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন৷ তাই বাংলাদেশ রেলওয়েকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য অনেক কাজ বাকি৷ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেল-সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্তও রেলপথ হবে৷ স্বাধীনতার পর অবহেলিত বাংলাদেশ রেলপথে অবকাঠামো উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য কাজ শুরু হয় ২০০৯ সাল থেকে৷ এখন বছরে প্রায় ১০ কোটি যাত্রী পরিবহণের সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে৷ নিরাপদ যাতায়াতের জন্য যাত্রীরা রেলের দিকেই ঝুঁকছে৷ কারণ, সড়ক ও মহাসড়কে বিশৃঙ্খলায় প্রাণহানি বাড়ছে৷ দিনে গড়ে অন্তত ১০ ব্যক্তির প্রানহানি ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনায়৷
এক নজরে বাংলাদেশের রেল
ন্যারোগেজ রেলপথ অনেক আগেই বাংলাদেশ থেকে উঠে গেছে, এখন মেট্রোরেল উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ঢাকাবাসী৷ বাংলাদেশের রেল যোগাযোগের আদ্যোপান্ত দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: DW/M. Rahman
ব্রিটিশ আমলে শুরু
বাংলাদেশে রেলওয়ের কার্যক্রম শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনামলে৷ ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর দর্শনা-জগতি রেললাইন স্থাপনের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় রেল যুগের৷
ছবি: DW/M. Rahman
এখন যা আছে
বাংলাদেশ রেলওয়ের ২৭৮টি লোকোমোটিভ, এক হাজার ৬৫৬টি মিটারগেজ ও ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ এবং আট হাজার ৬৮০টি পণ্যবাহী ওয়াগন আছে৷ তবে সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় অধিকাংশের অবস্থাই জরাজীর্ন৷
ছবি: DW/M. Rahman
দুই ধরনের পথ
বাংলাদেশে বর্তমানে ‘ব্রডগেজ’ এবং ‘মিটারগেজ’ এই দুই ধরনের রেলপথ চালু রয়েছে৷ দেশের পূর্বাঞ্চলে রয়েছে মিটার ও ব্রডগেজ রেলপথ৷ পূর্বাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব স্টেশন থেকে ঢাকা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ রয়েছে৷ আগে ন্যারোগেজ রেলপথ চালু থাকলেও এখন আর তার ব্যবহার নেই৷
ছবি: DW/M. Rahman
রেলপথ
বাংলাদেশে দুই হাজার ৮৭৭ কিলোমিটার রেলপথ আছে৷ তবে অনেকটাই ব্যবহারের উপযোগী নয়৷ দেশের ৪৪ টি জেলার সঙ্গে রেললাইন নেটওয়ার্ক সংযুক্ত৷
ছবি: Samdani Haque Najum
বোর্ড
১৯৮২ সালের ২ জুন পর্যন্ত একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য নিয়ে রেলওয়ে বোর্ডের মাধ্যমে রেলপথের ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো৷
ছবি: DW/M. Rahman
রেলওয়ে বিভাগ
১৯৮২ সালের ৩ জুন রেলওয়ে বোর্ড বিলুপ্ত করে এর কার্যক্রম যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের রেলওয়ে বিভাগের আওতায় নেয়া হয়৷ তখন থেকে এই বিভাগের সচিব রেলওয়ের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করতেন৷ পরে রেলওয়েকে পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলে ভাগ করা হয়৷
ছবি: DW/M. Rahman
মহাপরিচালকের হাতে রেল
১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট রেলপথের দৈনন্দিন কার্যক্রম যোগাোযাগ মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে মহাপরিচালকের হাতে ন্যস্ত করা হয়৷ তবে নীতি নির্ধারণের জন্য যোগাযোগমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে গঠন করা হয় নয় সদস্যের বাংলাদেশ রেলওয়ে অথরিটি৷
ছবি: DW/M. Rahman
রেলপথ মন্ত্রণালয়
২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করে আদেশ জারি করে৷ বর্তমানে সচিবালয় সংলগ্ন রেলভবনে এই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে৷
ছবি: Reuters/M. Ponir
দীর্ঘ রুট
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড় স্টেশন পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব প্রায় ৫০৫ কিলোমিটার, এটিই দেশের সবচেয়ে বেশি দীর্ঘ রেলরুট৷ এই রুটে ‘দ্রুতযান’ ও ‘একতা এক্সপ্রেস’ চলাচল করে৷
ছবি: bdnews24.com
ই-টিকেটিং
বাংলাদেশ রেলওয়ে কয়ক বছর আগে ই-টিকেটিং চালু করেছে৷ যাত্রীরা অনলাইনে তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন৷
ছবি: Sony World Photography Awards/Md Enamul Kabir
সেরা পথ
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলের রেলপথকে সব থেকে সুন্দর রেললাইন হিসেবে অভিহিত করেছে টেলিগ্রাফ৷ শ্রীমঙ্গলের সবুজে ঘেরা পথটুকু আসলেই দৃষ্টিনন্দন৷
ছবি: bdnews24.com/Mustafiz Mamun
জনবল
বাংলাদেশ রেলওয়েতে ২৫ হাজার ৮৩ জন নিয়মিত কর্মচারী রয়েছে৷ এর বাইরে বিভিন্ন কারিগরি পদে চুক্তিতে কয়েক হাজার মানুষ কাজ করেন৷
ছবি: Samdani Haque Najum
মেট্রোরেল
মেট্রেরেল চালুর জন্য কয়েক বছর আগে কাজ শুরু হলেও ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রথমবারের মতো এই রেল সার্ভিস চালু হতে পারে৷ মেট্রেরেল চালু করতে রেলপথ স্থাপনের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে৷
ছবি: Samdani Haque Najum
লোকসান
রেলে ভ্রমণকারীর সংখ্যা বাড়লেও এর সেবার মানে উন্নতি না হওয়ায় লোকসানের মুখ থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না রেলওয়ে৷ ২০১৭ সালের থেকে ২০১৮ সালে রেলের যাত্রী বেড়েছে এক কোটিরও বেশি, কিন্তু ২০১৭ সালে রেলে এক হাজার ২০০ কোটি এবং ২০১৮ সালে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে৷
ছবি: Samdani Haque Najum
১০ খাতে দুর্নীতি
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিকিট বিক্রিতে কালোবাজারি, যাত্রীবাহী ট্রেন ইজারা দেয়া এবং ট্রেনে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনসহ বাংলাদেশের রেলখাতের ১০টি দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নিতে সরকারকে প্রতিবেদন দিয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com
15 ছবি1 | 15
তবে বাংলাদেশ রেলওয়েতে বিপুল বিনিয়োগে হলেও সে তুলনায় যাত্রীসেবা কম৷ যাত্রীসেবা কাঙ্খিত মাত্রায় উন্নীত না হলে রেলপথ বাড়িয়ে, ট্টেন বাড়িয়ে কোনো সুফল মিলবে না৷
রেলপথ ও রেলসেতু নির্মাণ ছাড়াও যাত্রীসেবা বাড়িয়ে রেলকে বদলে দিতে হবে, কারণ, রেল বদলে গেলে দেশের অর্থনীতি আরো ইতিবাচকভাবে বদলে যাবে৷ গত ১০ বছরে ৮১টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল৷ এখন সোয়া লাখ কোটি টাকার ৪৮টি প্রকল্পের কাজ চলছে৷ বিপুল বিনিয়োগ হলেও গতি আসেনি ট্রেনে৷ কারণ, ঢাকায় ব্রডগেজ ও মিটার গেজের ৩৫ কি.মি. রেলপথে ট্টেন চলে গড়ে ২০ কি.মি. গতিতে৷ কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর রেলস্টেশন পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার পেরোতেই লাগে প্রায় আধ ঘণ্টা৷
সরকার দেশের সব রেলপথ ডুয়াল গেজ ডাবল লাইন করার নীতি গ্রহন করেছে৷ তবে তাতেও গতি বাড়ছে না৷
তার ওপর এখন ৬৮ শতাংশ রেল ইঞ্জিনের আয়ুও নেই৷ ট্টেন চলার সময় লাইন থেকে পড়ে যায় ইঞ্জিন৷ ইঞ্জিন বিকল হয়ে বা রেলপথে ত্রুটির ফলে ট্টেনের চাকা পড়ে যায়৷ ৭৩ শতাংশ ট্টেন দুর্ঘটনার বড় কারণ লাইন থেকে চাকা পড়ে যাওয়া৷ রেলসেবা বাড়াতে হলে ট্টেন বাড়াতে হবে৷ তবে তা বাড়ানোর আগে খতিয়ে দেখতে হবে তা লাভজনক হবে কিনা৷ বিনা টিকিটে যাত্রী পরিবহণ বন্ধ করতে হবে৷ ঢাকা থেকে পঞ্চগড় রুটে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস চালুর পর তাতে লাভ হচ্ছে না৷ ঢাকা-রাজশাহী রুটের নতুন ট্রেন চালুর পরও তাতে লাভ হচ্ছে না৷ আবার ঢাকা কুড়িগ্রাম রেলপথে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর প্রস্ততি চলছে৷ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে, এ ট্টেন চালুর আগে কোনো ধরনের সমীক্ষা করা হয়নি৷ ঢাকা-সিলেট রুটে যাত্রী বেশি থাকলেও ট্টেন বাড়ানো হচ্ছে না৷ বিরতিহীন ট্টেনও এ রুটে নেই৷ সিলেট থেকে ঢাকার কমলাপুরে ঢোকার আগে পারাবত ট্রেন রাতে প্রায়ই আটকে থাকে টঙ্গীতে৷ রেলপথে বিরতিহীন ছাড়া অন্য সব ট্রেনের বিরতি স্থান বেশি৷ রাজনৈতিক কারণেও বিরতির স্থান বাড়াতে হচ্ছে বিভিন্ন রেলপথে৷ ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে ট্রেনের গতি বাড়ানোর কথা বলা হলেও তা বাড়ানো যাচ্ছে না৷ অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে৷ এজন্য দরকার রেলে সুশাসন ও জবাবদিহিতা৷ ঢাকা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত দুটো বাড়তি লাইন নির্মানের কাজ সাত বছর পর শুরু হয়েছে৷ রেলমন্ত্রী মো: নুরুল ইসলাম সুজন দিন কয়েক আগে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে বলেছেন, কাজ কোনো প্রক্রিয়ার অজুহাতে ফেলে রাখা যাবে না৷ তাঁর এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য যুথবদ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারী রেলে কম৷ এজন্য তদারকি জোরদার করতে হবে৷
জাপান ও ভারতসহ বিশ্বের ৫৫টি দেশের দেড়শ' নগরীর যোগাযোগব্যবস্থা রেলনির্ভর৷ বিশ্বব্যাপী রেলের রূপালি যুগ চলছে৷ চাহিদা থাকায় বাংলাদেশে রেল সম্ভাবনা উজ্জ্বল৷ বাংলাদেশ রেলে সোনালি যুগের সূচনা করার সময় বয়ে চলেছে৷ দেশের ভেতরে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে রেল৷ এছাড়া ভারত, নেপাল, মিয়ানমারের সঙ্গে আঞ্চলিক সংযোগ, এমনকি ইরান পর্যন্ত সংযোগ তৈরিরও সুযোগ রয়েছে৷ ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছ থেকে ভারত সেবা কিনে নিতে পারে৷ তা সামনে রেখে আখাউড়া-আগরতলার মধ্যে ১৫ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়্ হয়েছে৷
রেল নিয়ে নতুন মন্ত্রণালয় হয়েছে ২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর৷ আগামী সাত বছরে কমপক্ষে পাঁচ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করলে রেলের অবকাঠামো উপযোগী হয়ে উঠতে পারে৷
আমলাতন্ত্রের বৃত্ত থেকে বের হয়ে রেলওয়ে কর্মকর্তাদেরই মূল ক্ষমতা দিয়ে প্রশাসনিক সংস্কারও দরকার৷ সড়ক পরিবহনের মালিকদের চাপ শক্ত হাতে দমন করে রেলসেবার বিস্তৃতি বাড়াতে হবে৷
ঢাকায় রেলনির্ভর যোগাযোগ ব্যবস্থা যানজট নিরসন করতে পারে৷ ৮০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের জন্য অবশ্য একটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে৷ এটি হবে বৃত্তাকার রেলপথ৷
ভারতের রেল বোর্ডের মতো বাংলাদেশেও রেলওয়ের আলাদা বোর্ড হতে পারে৷ রেলের মহাপরিচালক থাকবেন সিদ্ধন্ত গ্রহণের মূল ব্যক্তি৷ তাতে আমলাতন্ত্রের দাপট কমবে৷ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অসংখ্য রেল সংযোগ আগে সচল ছিল৷ এগুলোও চালু করা দরকার৷
বাংলাদেশে ট্টেন চলাচলের গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার৷ ভারত ২০২০ সালের মধ্যে তাদের ট্টেন চলাচলের গতি ৩৫০ কিলোমিটারে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে৷ বাংলাদেশে গতি ১৫০ কিলোমিটারে উন্নীত করা সম্ভব৷ ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের অধিকাংশ অংশ ডাবল লাইন করার পরও গতি বড়েনি৷ অবৈধ দখলবাজি ও কারিগরি দুর্বলতাসহ বিভিন্ন কারনে গতিশীলতা অর্জন করতে পারছে না বাংলাদেশ রেলওয়ে৷
সৈয়দপুর ও পাহাড়তলী রেল কারখানায় আছেন দক্ষ কারিগররা৷ তাঁরা বানাতে পারেন ট্রেনের বগি৷ একটি বগি মেরামতে বেসরকারি খাতে খরচ হয় ২৯ লাখ টাকা৷ কিন্তু দেশের কারখানায় বগি তৈরিতে এই খরচ ১৪ লাখ টাকা৷ এক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ে আমদানিনির্ভরতা কমাতে পারে৷
প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷
যেসব দেশে ট্রেন চলে না
একুশ শতকে রেল ছাড়া পৃথিবীর কোনো দেশের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন৷ এমনই মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা৷ কিন্তু এখনো বিশ্বের বহু দেশে রেল লাইন নেই৷ দেখে নেওয়া যাক একনজরে৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Sahib
কুয়েত
জলপথ এবং সড়কপথে যাতায়াতের দারুণ ব্যবস্থা থাকলেও কুয়েতে রেল যোগাযোগের কোনো ব্যবস্থা নেই৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/G. Hellier
ওমান
মরুভূমি শহর ওমানেও রেললাইনের কোনো চিহ্ন নেই, যদিও পৃথিবীর অনেক দেশেই মরুভূমির উপর দিয়ে রেললাইন বসানো হয়েছে৷
ছবি: imago/Anka Agency Internationa
ভুটান
হিমালয়ের কোলে ছোট্ট দেশ ভুটান৷ পাহাড় কেটে সেখানেও রেললাইন বসানো হয়নি৷ সমস্ত যোগাযোগের ব্যবস্থাই সড়ক পথে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
ইয়েমেন
ইয়েমেনেও ট্রেন চলে না৷ সেখানেও পরিবহণ ব্যবস্থা দাঁড়িয়ে আছে সড়কের ওপর নির্ভর করে৷
ছবি: DW/Saeed Alsoofi
লিবিয়া
আফ্রিকার শক্তিশালী দেশ লিবিয়াতেও ট্রেন চলে না৷ অদূর ভবিষ্যতে রেললাইন বসানোর কোনো পরিকল্পনাও তাদের নেই৷
ছবি: Reuters/H. Amara
কাতার
কাতারেও এত বছরে রেল লাইন তৈরি হয়নি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রুয়ান্ডা
গৃহ যুদ্ধে বিধ্বস্ত রুয়ান্ডায় অনেক কিছুই নতুন করে তৈরি করতে হয়েছে বর্তমান সরকারকে৷ তবে রেলপথ সেখানে আগে ছিল না, এখনো নেই৷
ছবি: Imago/Xinhua/Lyu Tianran
আইসল্যান্ড
বরফঢাকা আইসল্যান্ডে পরিবহণ ব্যবস্থা খুবই উন্নত৷ কিন্তু সেখানেও রেলপথের কোনো চিহ্ন নেই৷
ছবি: AP
পাপুয়া নিউ গিনি
পাপুয়া নিউ গিনি সমুদ্রের মাঝে ছোট্ট একটা দ্বীপ৷ এতই ছোট তার আয়তন যে রেলপথের প্রয়োজনও হয় না৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/J. Morgan
ম্যাকাও
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আরো একটি ছোট দেশের নাম ম্যাকাও৷ সেখানেও রেলপথের কোনো ব্যবস্থা কোনোদিন ছিল না৷
ছবি: picture alliance/dpa/Blanches/Imaginechina
মাল্টা
ওপরে ইটালির সিসিলি এবং দক্ষিণে দক্ষিণে আফ্রিকার বালুচর৷ তারই মাঝখানে ছোট্ট দেশ মাল্টা৷ দ্বীপরাষ্ট্রটিতে রেললাইনের কোনো প্রয়োজনই হয় না৷
ছবি: Nilufar Keivan
হাইতি
ক্যারেবিয়ান এই দেশটিও আয়তনে নেহাতই ছোট৷ রেললাইনের প্রয়োজন হয়নি কখনো৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Robind
সোমালিয়া
পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশগুলির অন্যতম সোমালিয়া৷ নিত্যদিন লেগে রয়েছে সমস্যা৷ সে দেশেও কোনোদিন রেললাইন তৈরি হয়নি৷
ছবি: DW
সুরিনাম
দক্ষিণ অ্যামেরিকার উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত ছোট দেশ সুরিনাম৷ রেল চলে না সেখানে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নাইজার
আফ্রিকার এই দেশটিও খুবই গরিব৷ রেলপথ বসানোর চেষ্টাও কখনো হয়নি সেখানে৷
ছবি: Reuters/Akintunde Akinleye
চাদ
মরুভূমির দেশ চাড৷ একাধারে গরিবও৷ কখনো রেললাইন পাতা হয়নি সেই দেশে৷
ছবি: imago/CHROMORANGE
সাইপ্রাস
সাইপ্রাস পর্যটনের জন্য খুবই সমৃদ্ধ৷ তবে সেখানেওকোনোদিন রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা হয়নি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
পূর্ব তিমুর
তিমুর দ্বীপের অর্ধেকটা জুড়ে তৈরি রাষ্ট্র পূর্ব তিমুর৷ আয়তনে এতই ছোট সেই দেশ যে, রেল যোগাযোগের কোনো প্রয়োজনই হয় না৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গিনি বিসাও
দক্ষিণ আফ্রিকার ছোট্ট একটি রাষ্ট্র গিনি বিসাও৷ সেখানেও কোনোদিন ট্রেন চলেনি৷
ছবি: DW/Braima Darame
মার্শাল আইল্যান্ড
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের ছোট্ট দেশ মার্শাল আইল্যান্ড৷ সেখানেও কোনোদিন রেলপথ তৈরি হয়নি৷ ট্রেনের প্রয়োজনও হয়নি৷
ছবি: Imago/robertharding
মরিশাস
বিশ্বের পর্যটন মানচিত্রে অন্যতম মরিশাস৷ প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক যান ওই দ্বীপপুঞ্জে৷ তবে দেশটির আয়তন এতই ছোট যে, কোনোদিন রেলপথ তৈরির প্রয়োজন পড়েনি সেখানে৷
ছবি: Imago
ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোব্যাগো
ক্যারেবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোব্যাগোতেও কোনোদিন রেল যোগাযোগ তৈরি হয়নি৷
ছবি: DW/B. Sezen
মাইক্রোনেশিয়া
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র মাইক্রোনেশিয়া৷ কোনোদিনই সেখানে রেলপথ তৈরি হয়নি৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/M. Runkel
সান মারিনো
ইতালির উত্তরে পাহাড়ঘেরা সান মারিনো একটি ছোট্ট দেশ৷ বাইক রেসিংয়ের জন্য বিখ্যাত সেই দেশে কোনোদিন রেলপথ তৈরি হয়নি৷
ছবি: Reuters/M. Rossi
সলোমন আইল্যান্ড
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে শতাধিক দ্বীপ নিয়ে তৈরি সলোমন আইল্যান্ড৷ দ্বীপরাষ্ট্রটিতে কখনো রেলপথ তৈরি করা সম্ভবই হয়নি জলের কারণে৷
ছবি: Beni Knight
টোঙ্গা
আয়তনে একেবারেই ছোট প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ টোঙ্গা৷ সেখানেও কোনোদিন রেলপথ তৈরি হয়নি৷
ছবি: E. Pickles/Fairfax Media/Getty Images
তুবালু
দক্ষিণ প্রশান্তমহাসাগরের আরেক দ্বীপরাষ্ট্র তুবালু৷ স্বাভাবিক কারণেই সেখানে কোনোদিন রেলপথ তৈরি হয়নি৷
ছবি: picture-alliance/Kyodo
বনুআতু
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের আরেক দেশ বনুআতু৷ আর সমস্ত প্রতিবেশীর মতো সেখানেও কোনোদিন রেলপথ তৈরি হয়নি৷