1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

একমাত্র কাজ ‘শোষণ করা’

আরাফাতুল ইসলাম২৬ জুন ২০১৩

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা এবং তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দৃকের প্রতিষ্ঠাতা ড. শহিদুল আলম৷ গত সপ্তাহে জার্মানি সফরকালে ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর একমাত্র কাজ ‘শোষণ করা’৷

„The borders of the Global Village“ („Die Grenzen des globalen Dorfs“) lautet das Thema eines Vortrags des bengalischen Professors Shahidul Alam am Donnerstag, 3. Mai, auf der re:publica in Berlin. internationale Blogger-Konferenz re:publica in Berlin. Aufnahmedatum: 3. Mai 2012 Fotograf: DW/ Matthias Müller
ছবি: DW

ডয়চে ভেলের গ্লোবাল মিডিয়া ফোরাম সম্মেলনে অংশ নিতে জুন মাসের কিছুটা সময় বন শহরে অবস্থান করেন ড. শহিদুল আলম৷ এ সময় ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি কল্পনা চাকমা অপহরণ বিষয়ে সর্বশেষ অনুসন্ধানের কথা জানান৷ সম্প্রতি শহিদুল এবং সায়দিয়া গুলরুখ এই চাকমা তরুণীর খোঁজ করেছেন৷ এই সংক্রান্ত একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকার দৃক গ্যালারিতে৷

কল্পনা চাকমা অপহরণ

বাংলাদেশে অন্যতম আলোচিত এবং চাঞ্চল্যকর ঘটনা কল্পনা চাকমা অপহরণ৷ ১৯৯৬ সালের ১১ জুন মধ্যরাতে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে নিজ বাড়ি থেকে অপহৃত হন কল্পনা৷ এরপর থেকে আর তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি৷

কল্পনা চাকমার খোঁজে

This browser does not support the audio element.

কল্পনার অপহরণের বিষয়ে শহিদুল তাঁর গবেষণার ভিত্তিতে বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি অপহরণ করেছে তাকে চিহ্নিত করা সত্ত্বেও এই ১৭ বছরে পুলিশ কিন্তু তাকে একবারও জিজ্ঞাসাবাদ করেনি৷ আমরা এতবছর পর যে তিনজন ব্যক্তি (কল্পনা চাকমা অপহরণে) অভিযুক্ত তাদের মধ্যে দু'জনকে খুঁজে পেয়েছি৷ তবে ল্যাফটেনেন্ট ফেরদৌসের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি৷''

শহিদুল জানান, কল্পনা চাকমা অপহরণের জন্য প্রধান অভিযুক্ত লেফটেনেন্ট ফেরদৌস৷ অথচ তাঁর সম্পর্কে কোনো তথ্য সামরিক বাহিনীর কাছে নেই বা তারা তা প্রকাশ করতে চায় না৷ শহিদুল বলেন, ‘‘একটা স্বাধীন দেশে এরকম একটি ঘটনা ঘটে যাবার পরে সাধারণ নাগরিকের জানার যে অধিকার, সেটা থেকে তাঁরা আজও বঞ্চিত হচ্ছে, এটা আমাকে অবাক করে৷''

কল্পনা কি বেঁচে আছেন?

কল্পনা চাকমাকে এখনো অপহৃত হিসেবেই বিবেচনা করছে তাঁর পরিবারের সদস্যরা৷ তাই তাঁকে ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন কিছুটা হলেও দেখছেন কেউ কেউ৷ ১৭ বছর আগের এই অপহরণের প্রত্যক্ষ সাক্ষী কল্পনা চাকমার বড় ভাই কালিন্দী কুমার চাকমার সঙ্গে কথা বলে সেটাই মনে হয়েছে শহিদুলের৷ তবে বাস্তবতা তেমন নয়৷ শহিদুল বলেন, ‘‘আমরা যদি ঠান্ডা বাস্তবতার কথা ভাবি, তাহলে আমাদের সকলের কাছেই বিষয়টি পরিষ্কার৷ শুধু যে তাঁকে ১৭ বছর ধরে পাওয়া যায়নি, তা নয়৷ তাঁর শেষ যে আর্তনাদ ‘দাদা মোরে বাঁচা' ঐ জায়গা থেকে শোনা যায়৷ তারপর কিন্তু গুলির শব্দ শোনা যায়৷ এবং তারপরের দিন গ্রামবাসী সেই জলাশয়ে (যেখান থেকে আর্তনাদ এবং গুলির শব্দ শোনা গেছে) লাশ খুঁজে বেড়ায়, কিন্তু পায়নি৷''

ড. শহিদুল আলমছবি: DW/Tobias Kleinod

শহিদুল বলেন, ‘‘সামরিক বাহিনীর স্বভাবও আমাদের জানা আছে, বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে, যেখানে এত রকমের হত্যাকাণ্ড হয়েছে, অত্যাচার হয়েছে, সেই নিপীড়নের ইতিহাসের মধ্যে যখন এরকম একজন শক্তিশালী, বিপ্লবী নেতাকে অপহরণ করা হয়, তারপরে তাঁকে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম৷''

‘একমাত্র কাজ শোষণ করা'

কল্পনা চাকমাকে অপহরণের পর পেরিয়ে গেছে ১৭ বছর৷ এই সময়ে একাধিকবার সরকার বদল হয়েছে৷ কিন্তু কোনো সরকারই অপহরণের বিষয়টি সুরাহায় কার্যত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি৷ তার মানে কি কোনো সরকারই সামরিক বাহিনীর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী নয়? এ ধরনের প্রশ্নের জবাবে শহিদুল বলেন, ‘‘আমাদের সামরিক বাহিনীর প্রয়োজন আছে কিনা সেটাই আমি প্রথমে প্রশ্ন করি৷ ৪৩ বছর ধরে আমরা যে সামরিক বাহিনীকে লালন করছি, তারা কিন্তু দেশরক্ষায় একবারও নিয়োজিত হয়নি৷ আমাদের শান্তি আছে, সেটা ভালো৷ তবে বিশাল অংক এদের পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে৷ যেটা শিক্ষায় যেতে পারতো, স্বাস্থ্যে যেতে পারতো, অন্যান্য খাতে যেতে পারতো৷''

শহিদুল বলেন, ‘‘এমনকি যে জায়গায় তাদের কাছ থেকে আমরা কিছু আশা করতে পারি, আমাদের সীমান্তে বাঙালিদের যে পাখির মতো গুলি করা হচ্ছে, বিএসএফ-রা গুলি করছে, সেখানে প্রতিবাদ করা, সেখানে অন্তত বাঙালিদের, বাংলাদেশিদের বাঁচানো, সেই কাজেও তারা (সেনাবাহিনী) কোনো কিছু করেনি৷ তাদের একমাত্র কাজ শোষণ করা৷''

উল্লেখ্য, গত ১২ থেকে ২১ জুন ঢাকার দৃক গ্যালারিতে ‘কল্পনা চাকমার খোঁজে' শীর্ষক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ এর আগে দৃকে দু'টি প্রদর্শনী সরকার বন্ধ করে দিলেও এবার সেরকম কিছু হয়নি বলে জানান শহিদুল৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ