1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘বাংলা অভিধানে ‘মীরজাফর'-এর পাশাপাশি গোলাম আযম!'

২৪ অক্টোবর ২০১৪

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযম মারা গেছেন৷ ৯০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাজা ভোগের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান৷

Bangladesch Ghulam Azam Urteil 15.07.2013
ছবি: Nashirul Islam/AFP/Getty Images

১৯৬৯ সালে গোলাম আযম যখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমির হন, বাংলার মানুষের স্বাধিকারের আন্দোলন তখন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে৷ একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে শান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠনে নেতৃত্ব দেন গোলাম আযম৷ এসব আধা সামরিক বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে পাকিস্তানি সেনারা বাংলাদেশে ব্যাপক হত্যা ও নির্যাতন চালায়৷

গোলাম আযমের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই অনেক মন্তব্য করেছেন৷ টুইটারে সেলিম সামাদ দৈনিক পত্রিকা ডেইলি স্টারের সংবাদটি শেয়ার করেছেন৷

আন্তর্জাতিক বেশিরভাগ গণমাধ্যমেই সংবাদটি স্থান পেয়েছে৷ গার্ডিয়ানেও গুরুত্ব নিয়ে ছাপা হয়েছে খবরটি৷

সামহয়্যার ইন ব্লগে মঞ্জুর চৌধুরী লিখেছেন ২৩ শে অক্টোবর যাতে বাংলাদেশিরা পরাজয় দিবস হিসেবে পালন করেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘

যেখানে একটি সামান্য পিঁপড়া মারার অপরাধে একজন নবীকেও আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হয়, সেখানে তিরিশ লক্ষ মানুষ মারা হয়েছে! তিরিশ লক্ষ! নারী ধর্ষণ এবং লুটপাটের হিসেবতো আছেই৷ এই লোকটা কী ভাবে স্বাধীনতার তেতাল্লিশ বছর পর সবাইকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রাকৃতিক নিয়মে মরার সৌভাগ্য লাভ করে?

আমি নিশ্চিত এই ঘটনায় পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাগণ, শহীদ জননী-বীরাঙ্গনাগণ সবাই অভিমানে চোখের জল ফেলছেন৷ বুকের ভিতর আর্তনাদ চেপে রাখার চেষ্টা করছেন৷ ষোলই ডিসেম্বর যদি আমাদের বিজয় দিবস হয়ে থাকে, তবে এখন থেকে তেইশে অক্টোবরকে আমাদের ‘পরাজয় দিবস' হিসেবে পালন করা উচিত৷ মাননীয় স্পিকার, আমরা আমাদের সবচেয়ে বড় যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে পারিনি৷ আমরা খুবই অক্ষম জাতি! জনাব গোলাম আযমের স্বাভাবিক মৃত্যুতে আমরা ভীষণভাবে শোকাভিভূত৷''

সেতু আশরাফুল হক একই ব্লগে লিখেছেন, ‘‘

ফসকে গেল রাজাকারের পালের গোদা৷ আমাদের আনন্দিত হবার কিছু নেই, বরং আফসোস হচ্ছে যে শেষ পর্যন্ত বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফাঁসির রায় কার্যকর করা গেল না৷ ‘মীরজাফর'-এর পাশাপাশি ‘গোলাম আযম' একই অর্থ বহন করবে বাংলা অভিধানে৷

ব্লগার রেজা ঘটক লিখেছেন রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধায় বেশ আরাম আয়েসেই ছিলেন গোলাম আযম৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘

মৃত্যুর আগে জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় এই নরজীবাণুকে রাষ্ট্রীয় লোকবল দিয়ে খাবার, চিকিৎসা, বিশ্রামের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ শেষ ইচ্ছা নিয়েও এই কুখ্যাত শকুনের একটা আবদার৷ সুতরাং গোলাম আযমের লাশ কোথায় দাফন করা হবে, সেই প্রশ্নে বরং জাতি এখন একটা মোক্ষম গণভোটে যেতে পারে৷ আমি শতভাগ নিশ্চিত গণভোটের রায়ে এই কুখ্যাত নরঘাতকের লাশ কেউ বাংলার মাটিতে কবর দেওয়ার পক্ষে যাবে না৷ এই লাশ পাকিস্তানে পাঠানো হোক৷ ''

অপু তানভীর অনেকগুলো দৈনিক পত্রিকার গোলাম আযমের মৃত্যু সংবাদ তুলে দিয়ে লিখেছেন,

‘‘আফসোস যে রাজাকারের নামের আগে রাজাকার শব্দ টা লিখতে এযুগের নির্ভীক সাংবাদিকদের লজ্জা লাগে৷''

ইপন শামসুল ফেসবুকে গোলাম আযমের কিছু উক্তি তুলে ধরেছেন৷ এখানে কয়েকটি উক্তি দেয়া হলো৷

১. ‘‘পাকিস্তান যদি না থাকে তাহলে জামাত কর্মীদের দুনিয়ায় বেঁচে থেকে লাভ নেই'' - গোলাম আযম - দৈনিক সংগ্রাম, ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

২. ‘‘কালেমার ঝাণ্ডা উঁচু রাখার জন্য রাজাকারদের কাজ করে যেতে হবে৷''- গোলাম আযম -দৈনিক সংগ্রাম, ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

৩. ‘‘তথাকথিত বাংলাদেশের আন্দোলনের ভুয়া স্লোগানে কান না দিয়ে পাকিস্তানকে নতুনভাবে গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি৷'' - গোলাম আযম -দৈনিক পাকিস্তান, ১৭ অক্টোবর ১৯৭১

৪. কোনো ভালো মুসলমানই তথাকথিত বাংলাদেশের আন্দোলনের সমর্থক হতে পারে না৷ রাজাকাররা খুব ভালো কাজ করছে৷ – গোলাম আযম -দৈনিক সংগ্রাম, ২ অক্টোবর ১৯৭১

অভিনু কিবরিয়া ইসলাম ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘‘

ক্ষমা করুন বীর শহীদেরা৷ আপনাদের উত্তরসুরি, এদেশের সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা আজো নেই, অথচ, রাজাকার শিরোমণি গোলাম আযম দেশ স্বাধীন হবার পর বেঁচে রইলো ৪৩ বছর, তার স্বাভাবিক মৃত্যু নিশ্চিত হলো৷ আমাদের ট্যাক্সের টাকায় শেষ দু'বছরে তার খাওয়া-দাওয়া, চিকিৎসা হলো, এতটাই মানবতাবাদী, সহনশীল আমরা৷''

রাগিব হাসান লিখেছেন, ‘‘

পুরো একটি জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতার দায়ে মাত্র এক বছর হাসপাতালের নরম বেডে আরামে কাটাতে হয়েছে তাকে, কুকীর্তির তুলনায় এ এক হালকা শাস্তি মাত্র৷ বাঙালি জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে ইতিহাসে দুইজন তাদের মৃত্যুর পরেও হয়ে থাকবে চিরঘৃণিত ... মীর জাফর আলী খান, আর গোলাম আযম৷''

সংকলন: অমৃতা পারভেজ

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ