1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘বাংলা একাডেমির এই সিদ্ধান্ত বেআইনি’

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৭ ডিসেম্বর ২০১৬

শ্রাবণ প্রকাশনী নামে একটি প্রকাশনা সংস্থাকে দু'বছরের জন্য বইমেলায় নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে অটল বাংলা একাডেমি৷ একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘‘এই প্রকাশনীকে বইমেলায় স্টল দেয়ায় সুযোগ দিলে বইমেলা চালানো যাবে না৷''

শ্রাবণ প্রকাশনীর লোগো
ছবি: Shrabon Prokashani

শামসুজ্জামান খানের কথায়, ‘‘শ্রাবণ প্রকাশনীর মালিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন৷ গত বইমেলায় আমরা ব-দ্বীপ প্রকাশন নামে একটি প্রকাশনা সংস্থার বই নিষিদ্ধ করি এবং স্টল বন্ধ করে দিই৷ তাদের একটি বইয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) জীবন নিয়ে অশ্লীল এবং আপত্তিকর লেখা ছিল৷ বাংলা একডেমির সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শ্রাবণ প্রকাশনীর মালিক আন্দোলন করেন, বক্তব্যও দেন৷ কলো কাপড় মুখে বেধে প্রতিবাদ করেন তিনি৷ তাই বইমেলায় এই প্রকাশনীর স্টল থাকলে বইমেলা চালানো যাবে না৷ আমরা তাই একাডেমির পরিচালনা পর্ষদে আগামী দু'বছরের জন্য শ্রাবণ প্রকাশনীকে নিষিদ্ধ করেছি৷''

রবিন আহসান

This browser does not support the audio element.

শ্রাবণ প্রকাশনীর কর্ণধার রবিন আহসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলা একাডেমির এই সিদ্ধান্ত জঙ্গিবাদকে উসকে দেবে৷ এটা করে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বইমেলায় ৪০টিরও বেশি নতুন বই এবং চার শতাধিক লেখককে রুদ্ধ করে দিলেন৷ এটা বাকস্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা এবং লেখকের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান৷ মহাপরিচালক যা করেছেন তাতে জঙ্গিরা উৎসাহিত হবে৷''

রবিন আহসান বলেন, ‘‘ব-দ্বীপ প্রকাশনের বই নিষিদ্ধ ও তাদের স্টল বন্ধ করা ছিল অন্যায়৷ আমি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি৷ মালিকসহ যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের মুক্তি দাবি করেছি৷ শাহবাগে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছি৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ক্যাম্পেইন করেছি৷ কিন্তু আমি কোনো অন্যায় করিনি৷ অথচ এই অপরাধেই সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মিলে বইমেলায় আমার শ্রাবণ প্রকাশনীকে নিষিদ্ধ করেছেন৷ এটা করে তাঁরা বিষয়টিকে উসকে দিয়েছেন৷''

শামসুজ্জামান খান

This browser does not support the audio element.

তিনি আরো বলেন, ‘‘বই নিষিদ্ধ হতে পারে৷ এর পক্ষে-বিপক্ষে কথাও হতে পারে৷ কিন্তু নিষিদ্ধ বইয়ের পক্ষে কথা বলা যাবে না, এটা হয় না৷ এটা বাকস্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তার হরণ৷''

বাকস্বাধীনতা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চার প্রতি আঘাতের ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ডয়চে ভেলের কাছে টেলিফোনে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে চাননি৷ তাঁর দাবি, ‘‘তারা এমন কিছু করেছে যা টেলিফোনে বলা সম্ভব নয়৷ আপনি এসে দেখে যান৷''

এদিকে পরিচালনা পর্ষদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে শ্রাবণ প্রকাশনীকে দু'বছরের জন্য নিষিদ্ধের কথা বলা হলেও, সাবাই তা জানেন না৷ পরিচালানা পর্ষদের সদস্য লেখিকা সেলিনা হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি পরিচালনা পর্ষদের সভার সময় দেশের বাইরে ছিলাম৷ কেউ আমাকে পরে বিষয়টি জানায়নি৷ বৈঠকের কার্যবিবরণী দেখলে আসলে বলতে পারব কী কারণে ওদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷''

এ ব্যাপারে জানতে সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি৷

সেলিনা হোসেন

This browser does not support the audio element.

মঙ্গলবার বিকেলে শ্রাবণ প্রকাশনীর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে লেখক-শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মী ও নাগরিকবৃন্দের ব্যানারে বাংলা একাডেমির সামনে মানববন্ধন হয়৷ মানববন্ধনে বক্তারা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান৷ তাঁদের কথায়, ‘‘বাংলা একাডেমির এই সিদ্ধান্ত বেআইনি এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চার ওপর আঘাত৷''

প্রসঙ্গত, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার মতো লেখা আছে, এই অভিযোগে অমর একুশে বইমেলা চলাকালে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ব-দ্বীপ প্রকাশনের স্টল থেকে ‘ইসলাম বিতর্ক' নামের বইটির সব কপি জব্দ করে পুলিশ৷ আটক করে বইয়ের লেখক ও ব-দ্বীপ প্রকাশনের মালিক শামসুজ্জোহা মানিক, ছাপাখানা শব্দকলি প্রিন্টার্সের মালিক তসলিম উদ্দিন কাজল ও ব-দ্বীপ প্রকাশনের বিপণন শাখার প্রধান শামসুল আলমকে৷ তাঁদের বিরুদ্ধে তখন তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭(২) ধারায় মামলা করা হয়৷ শামসুজ্জোহা মানিক এখনো কারাগারে আছেন৷ মামলায় চার্জশিট দেয়া হয়েছে, অর্থাৎ বিচার শুরু হবে যে কোনো সময়৷ এঁদের আটকের পর থেকে ব-দ্বীপ প্রকাশন বন্ধ আছে৷ শ্রাবণ প্রকাশনীর মালিক রবিন আহসান প্রকাশনা সংস্থাটি খুলে দেয়া এবং শামসুজ্জোহা মানিকের মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছিলেন৷

আপনি কী মনে করেন? শ্রবণ প্রকাশনীকে নিষিদ্ধ করা কি সত্যিই বাকস্বাধীনতা হরণ করা? লিখুন মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ