যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সীমান্ত কর্মকর্তাকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দিয়েছে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ৷
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রে দেড়শ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঘটলো এমন ঘটনা৷
বাইডেন প্রশাসনের সীমান্ত কর্মকর্তা আলেজান্দ্রো মায়োরকাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে তিনি যথাযথ পদক্ষেপ নেননি৷
গত কয়েক বছর ধরে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা অভিবাসীদের সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণে বাড়ছে৷ এই পরিস্থিতির জন্য সীমান্ত কর্মকর্তাকে দায়ি করছেন রিপাবলিকানরা৷
মঙ্গলবার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে ২১৪-২১৩ ভোটে রিপাবলিকানদের অভিশংসন প্রস্তাব পাশ হয়৷ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে রিপাবলিকনাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় অভিশংসনের প্রস্তাব পাশ হবে এমনটি আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল৷
অবশ্য এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বাইডেনের এই কর্মকর্তাকে সরানোর চেষ্টা হলো৷ গত সপ্তাহে একই চেষ্টা করেছিল রিপাবরিকানরা৷ কিন্তু রিপবলিকানরদের নেতা স্টিভ স্ক্যালিজের অনুপস্থিতির কারণে সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়৷
তবে রিপাবলিকানদের এই চেষ্টা দেশটির সেনেট ঠেকিয়ে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ কারণ, সেনেটে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে ৷
কী অভিযোগ?
রিপাবলিকানরা বলছেন, আলেজান্দ্রো মায়োরকাস যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিষয়ক আইন প্রয়োগে ব্যর্থ হয়েছেন৷ তার এই ব্যর্থতার কারণেই মেক্সিকো সীমান্তে রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসীর আগমন ঘটছে বলে দাবি তাদের৷
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অনিয়মিত পথে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের আগমন বাড়ছে৷ এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে চলতি বছরের নভেম্বরে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যেপ্রচারণা শুরু করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড টাম্প৷
এদিকে যার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সেই আলেজান্দ্রো মায়োরকাস পরিস্থিতির জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করছেন৷
তিনি বলছেন, ‘‘এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন নেই যে, আমরা সীমান্তে চ্যালেঞ্জ এবং একটি সংকট মোকাবিলা করছি৷ এই সমস্যার সমাধান কংগ্রেসকেই করতে হবে৷’’
আরআর/এসিবি (রয়টার্স)
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ‘রাজনীতির গুটি’ করা হচ্ছে?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিবাসন নীতি পছন্দ না হওয়ায় টেক্সাসের রিপাবলিকান গভর্নর অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ডেমোক্র্যাটশাসিত বিভিন্ন শহর ও রাজ্যে পাঠিয়ে দিচ্ছেন৷
ছবি: Luiz C. Ribeiro/New York Daily News/TNS/Newscom/picture alliance
বাসে করে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের শিকাগো যাত্রা
সীমান্ত পাড়ি দিয়ে মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বাসে উঠতে দেখা যাচ্ছে৷ প্রায় ২,২৫০ কিলোমিটার দূরের শিকাগো যেতে তাদের টাকা দিতে হয় না৷
ছবি: Carlos Barria/REUTERS
বাইডেনের অভিবাসন নীতির বিরোধিতা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিবাসন নীতির বিরোধিতা করে আসছেন রিপাবলিকান নেতারা৷ মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে অবস্থিত মার্কিন রাজ্য টেক্সাসের রিপাবলিকান গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট অভিবাসনপ্রত্যাশীদের তার রাজ্যে থাকতে দিতে চান না৷ তাই তিনি রাজ্যের খরচে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ডেমোক্র্যাট নেতাদের শাসনে থাকা বিভিন্ন শহরে পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন৷
ছবি: Eric Gay/AP/picture alliance
খরচ ১০০ মিলিয়ন ডলার
২০২২ সালের এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় এক লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে টেক্সাস থেকে শিকাগো, নিউইয়র্ক ও ডেনভারের মতো ডেমোক্র্যাটদের শাসনে থাকা বিভিন্ন শহরে পাঠানো হয়েছে৷ এতে ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ হয়েছে৷ ছবিতে টেক্সাসের ব্রাউনসভিলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য তৈরি একটি প্রোসেসিং সেন্টার দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Carlos Barria/REUTERS
ডেমোক্র্যাটরাও খুশি নন
বাইডেনের নীতির কারণে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল নামায় বিভিন্ন শহরের ডেমোক্র্যাট গভর্নর ও মেয়ররাও খুশি নন৷ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সামলাতে তারা সরকারের কাছে আরো বেশি তহবিল দাবি করছেন৷
ছবি: Carlos Barria/REUTERS
রাজনীতির গুটি?
হোয়াইট হাউসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা টম পেরেজ বলছেন, বাইডেন প্রশাসন ডেমোক্র্যাট গভর্নর ও মেয়রদের হতাশা বুঝতে পারছে৷ বাইডেন অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আশ্রয় দেওয়া শহরগুলোর জন্য আরও বেশি তহবিল জোগাড়ের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি৷ পেরেজ বলেন, টেক্সাসের গভর্নর অ্যাবটের মতো কট্টরপন্থি রিপাবলিকানরা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ‘রাজনীতির গুটি’ হিসেবে ব্য়বহারের চেষ্টা করছেন৷
ছবি: Luiz C. Ribeiro/New York Daily News/ZUMA/picture alliance
পুলিশ স্টেশনের বাইরে রাত কাটানো
বর্তমানে শিকাগোতে ১৫ হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন৷ এছাড়া কিছু অভিবাসনপ্রত্যাশীকে পুরো শরৎকালটা পুলিশ স্টেশনের বাইরে ঘুমিয়ে কাটাতে হয়েছে৷
ছবি: TNS/ABACA/picture alliance
নিউইয়র্কে আশ্রয় নিয়েছেন ৬৯ হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী
গৃহহীনদের আশ্রয় দিতে আইনগতভাবে বাধ্য নিউইয়র্ক৷ তাই সেখানে বর্তমানে ৬৯ হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী বিভিন্ন হোটেল, সরকারি ভবন ও তাঁবুতে আশ্রয় নিয়ে আছেন৷
ছবি: Luiz C. Ribeiro/New York Daily News/TNS/Newscom/picture alliance