প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথমবার হোয়াইট হাউসে গিয়ে বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করলেন ঋষি সুনাক। আর্থিক সহযোগিতার ঘোষণা।
বিজ্ঞাপন
বাইডেন ও সুনাকের মধ্যে আলোচনার পর অ্যাটলান্টিক ঘোষণাপত্র জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে. দুই দেশ বিনিয়োগ বাড়াবে।
সুনাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই নিয়ে চারবার বাইডেনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসলেন। তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথমবার তিনি হোয়াইট হাউসে গিয়ে বৈঠক করলেন।
কী নিয়ে কথা হলো?
বাইডেন ও সুনাক আর্থিক সহযোগিতা, আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স, উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। বাইডেন জানিয়েছেন, তারা ইউক্রেনকে নিঃশর্ত সমর্থন জানিয়ে যাওয়া নিয়ে কথা বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য-সহ ৫০টিরও বেশি দেশ ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য করছে।
বৈঠকের পর দুই নেতা সাংবাদিক সম্মেলনও করেছেন।
কেন মাঝপথে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে চলে গেলেন বাইডেন?
সোমবার ক্যালিফোর্নিয়া যাওয়ার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চলে গেলেন জো বাইডেন। কেন?
ছবি: Leah Millis/REUTERS
ব্যাংক বন্ধ নিয়ে প্রশ্ন এড়াতে
অ্যামেরিকায় সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক(এসভিবি) ও সিগনেচার ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আলোড়ন পড়ে গেছে। সোমবার বাইডেন এই ব্যাংক বন্ধ নিয়ে বিবৃতি মিনিট পাঁচেক ধরে পড়ে শোনান। তারপরই তিনি কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে চলে যান। তারপরই বাইডেনের এই আচরণ নিয়ে সমাজ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ছবি: Mandel Ngan/AFP
ব্যাংক বন্ধ
গত শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ায় এসভিবি ও রোববার নিউ ইয়র্কে সিগনেচার ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এসভিবির যে সম্পদ আছে তা দিয়ে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেয়া সম্ভব হবে৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও অ্যামেরিকায় এই ব্যাংকের গ্রাহকেরা আতঙ্কে ভুগছেন। হঠাৎ পরপর দুইটি ব্যাংক বন্ধ হওয়ায় তারা অশনি সংকেত দেখছেন।
ছবি: Noah Berger/AFP/Getty Images
বাইডেনকে প্রশ্ন
বাইডেন যখন প্রশ্ন না নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে চলে যাচ্ছেন তখন এক সাংবাদিক চিৎকার করে বলেন, আপনি এখন ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে কী জানেন, কেন এই ঘটনা ঘটলো? আপনি কি অ্যামেরিকাকে আস্বস্ত করতে পারেন যে, এর প্রতিক্রিয়া খুব বেশি হবে না? আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আপনি কি প্রত্যাশা করেন যে, আর কোনো ব্যাংক বন্ধ হবে না?
ছবি: Saul Loeb/AFP
আগেও করেছেন
বাইডেন এভাবে আগেও মাঝপথে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে চলে গেছেন। কোনো গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ইভেন্ট বা যেখানে অস্বস্তিকর প্রশ্ন আসতে পারে, সেখানে তিনি কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে অতীতেও চলে গেছেন।
ছবি: Mandel Ngan/AFP
সমালোচনার ঝড়
বাইডেন যেভাবে প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়েছেন, তা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে, বিশেষ করে টুইটারে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে, এতবড় ব্যাংক ফেল করা নিয়ে বাইডেন পাঁচ মিনিট ভাষণ দেবেন, তারপর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চলে যাবেন? এজন্য কি তিনি ভোট পেয়েছিলেন? একজন বলেছেন, মার্কিন ইতিহাসে দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় ব্যাংক ফেলের ঘটনা ঘটেছে, অথচ বাইডেন প্রশ্নের জবাব দেবেন না?
ছবি: Diptendu Dutta/AFP
সাফল্যের দাবি
সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে যাওয়ার আগে বাইডেন আর্থিক ক্ষেত্রে সাফল্যের কথা বলেন। তিনি জানান, গত দুই বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার বেড়েছে। এক কোটি ২০ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। গত ১৪ মাস ধরে বেকারত্বের হার চার শতাংশের কম আছে। এভাবেই ব্যাংক ফেল হওয়ার ঘটনাকে অতটা গুরুত্ব না দিয়ে বাইডেন বোঝাবার চেষ্টা করেছেন, এখনও মার্কিন অর্থব্যবস্থা যথেষ্ট শক্তিশালী।
ছবি: Justin Sullivan/Getty Images
6 ছবি1 | 6
ঘোষণাপত্র
বাইডেন ও সুনাক অ্যাটলান্টিক ঘোষণাপত্রের কথা বলেছেন। মূলত চীনের প্রভাব কমাতে দুই দেশ প্রতিরক্ষা ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করবে। ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, রাশিয়া ও চীনের মতো দেশের জন্য আন্তর্জাতিক স্থায়িত্ব বিপদের মুখে পড়েছে।
ঘোষণাপত্রে আরো বলা হয়েছে, অ্যামেরিকা ও যুক্তরাজ্য একে অন্যের দেশে বিনিয়োগ করবে। সুনাক জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে আর্থিক সম্পর্ক এত শক্তিশালী আগে কখনো ছিল না।
সুনাক মার্কিন শিল্পপতিদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। তারপর তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন শিল্পপতিরা যুক্তরাজ্যে এক হাজার সাতশ কোটি ডলারের বিনিয়োগ করবে।