সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি একথা বলেন বলে জানায় ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম৷
লি বলেন, ‘‘আমার পরামর্শ তাদেরকে যেন এখনই ফিরিয়ে আনা না হয়, কারণ, তাতে এই দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকে যায়৷''
ঝুঁকির বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জাপানে ট্যাক্সি চালকের সংস্পর্শে এসে বেশ কয়েকজনের সংক্রমিত হওয়ার কথা জানান৷
নভেল করোনা ভাইরাসে চীনে ১ হাজার ৭৭৫ জনের মৃত্যু এবং ৭০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন৷ সেখানে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা দেশে ফিরতে উদগ্রীব৷ গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ চীনের উহান থেকে ৩১২ জনকে ফিরিয়েও আনে৷ কিন্তু এখন বিমানের ওই ক্রুদের অন্যদেশে ঢুকতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকার৷
করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে চীন সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে৷ বিশ্বের অন্যান্য দেশও চীনাদের ভিসা বাতিলসহ নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে৷
চীনে আটকে পড়া ১৭১ বাংলাদেশিকে ফেরানোর বিষয়ে একদিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, হুবেই প্রদেশে আটকে পড়াদের দেশে ফেরানোর কাজ চলছে৷ তবে কবে নাগাদ তারা ফিরতে পারে সেটা চীন সরকারের অনুমোদনের উপর নির্ভর করছে৷
সোমবার চীনা রাষ্ট্রদূতকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ফেরানোর প্রস্তুতি নিলে চীনের অনুমতি পাওয়া যাবে৷
‘‘হুবেই থেকে এখন কোনো বিমান নেই৷ বাংলাদেশের বিমান গেলে সেটির পাইলট ও ক্রুরা অন্য দেশে ঢুকতে পারছে না৷ এটা বড় ধরনের জটিলতা৷ আমরা বিকল্প খুঁজছি৷ অনুমতি কোনো সমস্যা না, সমস্যা হলো কারিগরি বিষয়গুলো৷''
এসএনএল/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
চীনের উহান থেকে ফিরেছেন ৩১২ জন বাংলাদেশি৷ তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আশকোনো হজ ক্যাম্পে৷ এর মধ্যে আটজনকে দুইটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে৷
ছবি: A. Goniশনিবার বেলা ১১টা ৫৩ মিনিটে ৩১২ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌছায়৷ তাদের নিরাপত্তায় নেয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা৷
ছবি: A. Goniবিমান বন্দরে সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা৷
ছবি: A. Goniসরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট- আইইডিসিআর- করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করছে৷
ছবি: A. Goniশুধু যাত্রী নয় কোয়ারেন্টাইন প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত ছিলেন তাদের প্রত্যেকেরই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা৷
ছবি: A. Goniদেশে ফেরার পর বিমানবন্দরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাত্রীদের সবাইকে পরীক্ষা করা হয়৷ সিভিল এভিয়েশনের বিশেষ ব্যবস্থায় বিমানবন্দরের কার্গো টার্মিনালের গেট দিয়ে তাদেরকে নিয়ে আসা হয়৷
ছবি: A. Goniউহান ফেরতদের পরিবহনে বিআরটিসির আটটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস এবং কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স এনে রাখা হয়৷ যাত্রীদের মালামাল নেওয়ার জন্য আনা হয় চারটি ট্রাক৷
ছবি: A. Goniবিআরটিসির বাসে করেই আশকোনায় ‘কোয়ারেন্টাইনে’ নিয়ে যাওয়া হয় তাদের৷
ছবি: A. Goniউহান থেকে ফেরত ৩১২ জনের মধ্যে মধ্যে ২৯৭ জন পূর্ণবয়স্ক, ১২ জনের বয়স এক বছরের ওপরে ৷ তিনজনের বয়স এক বছরের নীচে৷
ছবি: A. Goniস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.আবুল কালাম আজাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, প্রথমে ৩৬১ জনের আসার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ৩১৬ আসবে বলে ঠিক হয়৷ এরা বিমানবন্দরে আসার পর চারজন আসে নাই৷ সেখানে থার্মাল স্ক্যানারের ভেতর দিয়ে যখন এসেছে তখন তাদের গায়ে জ্বর আছে বলে জানা গেছে৷ অবজারভেশনের জন্য তাদের বলা হয়েছে এই ফ্লাইটে অন্য যাত্রীদের সঙ্গে যাওয়া ঠিক হবে না৷’’
ছবি: A. Goniবিমানবন্দর থেকে আটজনকে দুটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷ ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘‘তাদের মধ্যে তিনজনের ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মতো জ্বর আছে৷ বাকিদের শরীরেও জ্বর থাকায় তাদের এখানে না এনে সরাসরি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ তবে তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে এখনই সন্দেহ করা হচ্ছে না৷’’ অসুস্থদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে সামরিক হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল৷
ছবি: A. Goniআশকোনা হাজী ক্যাম্পের পরিচালক সাইফুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তিন তলার ৪টি ডরমেটরিতে ৩৬১ জনকে রাখা হবে৷ প্রতিটি ডরমেটরিতে ১০০ জনের থাকার ব্যবস্থা করা হবে৷ সেখানে বিছানা, চাদর, বালিশ, মশারি, মেডিসিন, পানি, লাইট, টয়লেট থাকবে৷ সকাল ও বিকেলের নাস্তাসহ ৫ বেলা খাবারের ব্যবস্থা থাকবে৷ শিশু ও নারীদের জন্যও থাকবে আলাদা খাবার ও থাকার ব্যবস্থা৷’’
ছবি: A. Goni