রাশিয়ার অসরকারি সেনা ভাগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন জানিয়েছেন, বাখমুত ছেড়ে পালিয়েছে রুশ সেনা।
বিজ্ঞাপন
বাখমুতে ভাগনার বাহিনী অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছে। প্রিগোজিন জানিয়েছেন, ''রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি বাহিনী শহরের একটা প্রান্ত থেকে পালিয়েছে। ফলে সেদিকটা অরক্ষিত হয়ে গেছে।''
প্রিগোজিনকে পুটিনের শেফ বলা হয়, কারণ, তিনি আগে ক্রেমলিনের ক্যাটারিং কন্ট্রাক্ট পেয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ''রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যুদ্ধ করার চাইতে চেঁচামিচি বেশি করছে।''
রাশিয়ার সেনা এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ছেড়ে কেন পালালো তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রিগোজিন। তিনি বলেছেন, ''রাশিয়ার কম্যান্ডাররা বোকার মতো নির্দেশ দিচ্ছে। তাদের এই সব ক্রিমিনাল নির্দেশের জন্যই সেনা পালিয়েছে। বোকার মতো নির্দেশের জন্য সেনা মারা যাবে তা হয় না।''
বিধ্বস্ত ইউক্রেনে যেমন কাটছে জীবন
কবে, কিভাবে শেষ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জানা নেই কারো৷ অনেকেই আক্রান্ত এলাকা থেকে সরে গিয়েছেন৷ অনেকে ছেড়েছেন ইউক্রেন৷ কিন্তু অনেকেই বিধ্বস্ত ইউক্রেনেই মৃত্যুর আশঙ্কা মাথায় নিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন৷ ছবিঘরে থাকছে তাদের কথা৷
ছবি: VIOLETA SANTOS MOURA/REUTERS
ধ্বংসপ্রাপ্ত দালান
গালিনা স্লেপকোর বয়স ৬৪ বছর৷ এই বয়সে ভিটেমাটি ছেড়ে কোথাও গিয়ে নতুন জীবন শুরু করাটাও তার পক্ষে প্রায় অসম্ভব৷ রাশিয়ার দখল করে নেয়া দনেৎস্ক অঞ্চলে তার এই বাড়িটির এক পাশের দেয়াল রাশিয়ার মর্টার শেলের আঘাতে ধসে গেছে৷ এই অবস্থাতেই তাকে কাটাতে হয়েছে শীতকাল৷
ছবি: Alexander Ermochenko/REUTERS
যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনে
পুরো ইউক্রেন যুদ্ধটাই যেন থেমে আছে বাখমুতে৷ কৌশলগতভাবে তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হলেও মর্যাদার লড়াইয়ের কারণে এই এলাকা দখলে নিতে চায় দুই পক্ষই৷ বাখমুতের চাসিভ ইয়ার গ্রামে এখনও হাতেগোণা কয়েকজন বাসিন্দা রয়ে গেছেন জীবনের ঝুঁকির তোয়াক্কা না করেই৷ তাদের একজনকে দেখা যাচ্ছে ছবিতে৷
ছবি: Kai Pfaffenbach/REUTERS
মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণ
যেকোনো সময় পালটে যেতে পারে পরিস্থিতি৷ দোনেৎস্ক অঞ্চলের বাখমুতে এখন চলছে চূড়ান্ত লড়াই৷ দুই পক্ষের সেনারাই দখল-পুনর্দখলের চেষ্টায় রত৷ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলের সুপারমার্কেটে এসে পড়েছে একটি মর্টার শেল৷ আগে এক হামলায় আহত এক নারীকে দেখা যাচ্ছে কান্না করতে৷ বাখমুতে এখন প্রতিটি মুহূর্তই জীবন-মরণের লড়াই৷
ছবি: ALEXANDER ERMOCHENKO/REUTERS
সরবরাহ সংকট
যুদ্ধের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সংকট দেখা দিয়েছে৷ স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুৎ ও জলের মতো অতিপ্রয়োজনীয় সেবাও এখন বিলাসিতা৷ হাতের কাছে যা পাওয়া যায়, তা দিয়েই প্রয়োজন মিটিয়ে কোনোরকমে টিকে থাকার লড়াই করছেন বাসিন্দারা৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি বিধ্বস্ত সামরিক বিমান থেকে ধাতব দ্রব্য নিয়ে যাচ্ছেন দুজন৷ সেটিকেই কোনো কাজে লাগানোর চিন্তা রয়েছে তাদের৷
ছবি: OLEKSANDR KLYMENKO/REUTERS
একটি রক্তাক্ত চশমা
এই ছবিটিই অনেক কথা বলে দেয়৷ কস্তিয়ানতিনিভকা নামের একটি আবাসিক এলাকায় ভয়াবহ বোমা হামলায় মারা যান অনেকেই৷ কেউ ছিলেন বাসায়, কেউ বাজারে, কেউ রাস্তায়৷ হয়তো একজন বাসিন্দার রক্তমাখা চশমা এখনও পড়ে রয়েছে মাঠের পাশে৷ পৃথিবীকে আর দেখা হবে না তার৷
ছবি: VIOLETA SANTOS MOURA/REUTERS
জ্বালানি সংকট
ঠিক পেছনেই একটি গাড়ি বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে৷ এখন বাখমুতের রাস্তায় গাড়ি চালানো অনেক কারণেই আঁতকে ওঠার কারণ৷ একে তো জ্বালানি জোগাড় করাই কষ্ট ও ব্যয়সাধ্য৷ অন্যদিকে, যেকোনো সময় হতে পারে মর্টার বা বিমান হামলা৷ ফলে রাস্তায় বের হয়ে কেউই নিশ্চিত টার্গেটে পরিণত হতে চান না৷ ফলে দোকানে যেতেও বেশিরভাগের ভরসাই নিজের পা, বড়জোর বাইসাইকেল৷
ছবি: KAI PFAFFENBACH/REUTERS
ত্রাণ সহায়তা
প্রায় পুরো অঞ্চলই ধ্বংসপ্রায়৷ ফলে বাখমুতের সকল অফিস-আদালত, দোকানপাট প্রায় বন্ধ৷ যেসব গুটিকয়েক দোকান খোলা রয়েছে, অনেকেই সেখান থেকে জিনিস কেনার সামর্থ্য নেই৷ ফলে যেসব বাসিন্দা এখনও বাখমুতে রয়ে গেছেন তাদের অনেকের নির্ভর করতে হচ্ছে ত্রাণের ওপর৷ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা ঝুঁকি নিয়েই যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনে ত্রাণ সরবরাহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷
ছবি: KAI PFAFFENBACH/REUTERS
জীবন-মৃত্যুর দোলাচল
এই ছবিটি খারকিভের৷ রাশিয়া দখলে নেয়ার পর ইউক্রেনের সেনারা আবার এই এলাকা পুনর্দখলে নিয়েছে৷ কিন্তু কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলটি দখলে মরিয়া রুশবাহিনী৷ ফলে এখনও প্রায়ই বোমাবর্ষণ চলছে এখানে৷ রুশ মিসাইলে ধ্বংস হওয়া একটি বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এক নারী৷ মনে ভয়, যেকোনো মুহূর্তে আবারও হতে পারে নির্বিচার হামলা৷
ছবি: Sofiia Gatilova/REUTERS
প্রিয়জন হারানোর বেদনা
একসঙ্গেই থাকা, একসঙ্গেই কাজ৷ কদিন আগেও বন্ধুর চেয়েও বেশি ছিলেন ইভান সোরোকিনের সহকর্মী৷ কর্মরত অবস্থাতেই বিমান হামলায় মারা যান এই গাড়ি মেরামতকর্মী৷ বন্ধুকে শেষ বিদায় জানানোর আগে তার মরদেহ আনা হয়েছে তার কাজের জায়গাতেই৷
ছবি: ALEXANDER ERMOCHENKO/REUTERS
9 ছবি1 | 9
বাখমুত অধিকারের জন্য ভাগনারের উপরই নির্ভর করছে রাশিয়া। তারাই সেখানে রুশ আক্রমণের পুরোভাগে আছে। গত কয়েকমাস ধরে লড়াই করেও বাখমুতে ইউক্রেনের সেনাকে পুরোপুরি সরানো যায়নি। কিছুদিন আগে ভাগনার জানিয়েছিল, তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ না দিলে তারা বাখমুত ছেড়ে চলে আসবেন। তারপর রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ দেয়ার কথা জানায়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া ৯ মে বিজয় দিবসের আগে বাখমুত অধিকার করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা পারেনি।
এএফপি সাংবাদিকের মৃত্যু
বাখমুতের কাছেই ইউক্রেনের সেনার সঙ্গে ছিলেন এএফপির ভিডিও কোঅর্ডিনেটর আরমান সলডিন। ইউক্রেনের সেনার উপর রকেট হামলা করে রাশিয়ার বাহিনী। তাতেই ৩২ বছর বয়সি ফরাসি নাগরিক সলডিনের মৃত্যু হয়। এএফপি চেয়ারম্যান বলেছেন, সংবাদসংস্তা তার মৃত্যুতে বিপর্যস্ত বোধ করছে।
ইউক্রেনে নতুন কৌশলে আক্রমণ রাশিয়ার
ইউক্রেনের বাখমুত ঘিরে তুমুল লড়াই হচ্ছে। রাশিয়া এবার এই লড়াইয়ে নতুন কৌশল নিয়েছে।
ছবি: Genya Savilov/AFP
কী কৌশল রাশিয়ার?
এই কৌশলের নাম 'স্করচড আর্থ ট্যাকটিক্স'। সংক্ষেপে বলতে গেলে এই কৌশল হলো, রাশিয়ার সেনাবাহিনী সমানে গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে। আর যুদ্ধবিমানগুলি একের পর এক বোমা ফেলছে। আক্রমণ করছে।
ছবি: Genya Savilov/AFP
পরিস্থিতি কঠিন
ইউক্রেনের সেনাকর্তারা স্বীকার করছেন, পরিস্থিতি কঠিন, তবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। ইউক্রেনের সেনাও মাটি কামড়ে থেকে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া এর আগে সিরিয়ায় এই কৌশলে আক্রমণ শানিয়েছিল।
ছবি: Oleksandr Klymenko/REUTERS
বাখমুতে লড়াই চলছে
বাখমুতে রাশিয়ার এই ভয়ংকর আক্রমণ সত্ত্বেও লড়াই করে যাচ্ছে ইউক্রেনের সেনা। তারা এখনো রাশিয়ার সেনাকে শহরের দখল নিতে দেয়নি।
ছবি: Oleksandr Klymenko/REUTERS
পশ্চিম বাখমুতে আক্রমণ
ইউক্রেন জানিয়েছে, রাশিয়ার সেনা পশ্চিম বাখমুতে সমানে আক্রমণ করে যাচ্ছে। মস্কো এখানে বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করেছে। তারা ওয়াগনার বাহিনীকে একটু বিশ্রাম দিতে চায়।
ছবি: Muhammed Enes Yildirim/AA/picture alliance
রাশিয়ার দাবি
দনেৎস্কে রাশিয়ার নিয়োগ করা প্রশাসনিক প্রধান সোমবার একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, রাশিয়া দনেৎস্কে অনেকখানি এগিয়েছে। রাশিয়াও দাবি করছে, বাখমুতে তারা এগোতে পেরেছে। কিন্তু ইউক্রেন এই দাবি মানতে রাজি নয়। উপরের ছবিতে বাখমুতে ইউক্রেনের সেনা।
ছবি: Muhammed Enes Yildirim/AA/picture alliance
বাখমুত প্রায় ধ্বংসস্তূপ
বাখমুতে রাশিয়ার আক্রমণে একের পর এক বাড়ি ভেঙে পড়েছে। শহর প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। উপরের ছবিতে বাখমুতে ইউক্রেনের সেনা রাশিয়ার সেনাকে লক্ষ্য করে গোলা ছুঁড়ছে।
ছবি: Muhammed Enes Yildirim/AA/picture alliance
বন্দিবিনিময়
ইউক্রেন ও রাশিয়া বন্দিবিনিময় করেছে। ইউক্রেন রাশিয়ার ১০৬ জন সেনাকে মুক্তি দিয়েছে। বিনিময়ে রাশিয়াও ইউক্রেনের একশ সেনাকে মুক্তি দিয়েছে। ছবিতে গত মার্চে ইউক্রেনের মুক্ত সেনারা।
ছবি: UKRAINIAN ARMED FORCES/REUTERS
7 ছবি1 | 7
বেয়ারবক-গ্যাং বৈঠক
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংয়ের সঙ্গে বৈঠক করলেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারা চান, রাশিয়ার সেনা যেন তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস অন্য দেশ থেকে না পায়।
চিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, কোনো দেশ যদি একতরফা চীন বা সেদেশের সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে তাহলে তারা তার প্রবল বিরোধিতা করবেন।
ইইউ এখন রাশিয়ার অস্ত্র কারখানাগুলিকে সাহায্য করার জন্য কয়েকটি চীনা সংস্থার বিরুদ্ধে নিযেধাজ্ঞা জারির কথা ভাবছে।