বাগান মানেই যে ফুলে ফুলে ভরা বিশাল কোনো জায়গা হবে তা নয়৷ প্রকৃতিকে ভালোবাসলে যে কেউ ছোট্ট বাড়ি বা ফ্ল্যাটে থেকেও বাগানের সাধ মেটাতে পারেন৷ জার্মানদের নানাভাবে করা শখের বাগান সে কথাই জানিয়ে দেয়৷
বিজ্ঞাপন
শহরের কোলাহল থেকে একটু দূরে, নিরিবিলি পরিবেশে ছোট্ট একটি বাগানের শখ বা প্রকৃতির সাথে খানিকটা বন্ধুত্ব গড়তে কার না মন চায়! তবে জার্মানির মতো শীতপ্রধান দেশে বাগান করার সময়কাল মাত্র কয়েক মাস৷ তাই বাগানটি ফুলে ফুলে ভরে তুলতে বসন্ত আসার সাথে সাথেই বাগানের কাজ শুরু করে দেয় জার্মানরা৷ যেন গ্রীষ্মকালের সুন্দর আবহাওয়ায় বাগানে বসে সকালের নাস্তা করা, বন্ধুবান্ধদের নিয়ে বার্বিকিউ করা, রোদ পোহানো বা বাগানের সৌন্দর্য পুরোপুরি উপভোগ করতে পারে৷
বাগানে যেসবের দেখা মেলে
বাড়ির সামনের জায়গাটুকুতে সাধারণত নানা রঙের চোখ জুড়ানো ফুল আর ভেতর বা পেছনের বাগানে অনেকে আপেল, আঙুর, চেরি বা অন্যান্য ফলের গাছও লাগায়৷ আর প্রায় প্রতিটি বাগানের এক কোণায় থাকে কিচেন গার্ডেন, অর্থাৎ টমেটো, ধনেপাতা, পেঁয়াজকলি, মরিচ, পুদিনা পাতার মতো রান্নায় প্রয়োজনীয় নানা ভেষজ পাতা৷
যাঁদের বাগান নেই তাঁরা এ সব লতাপাতা বাড়ির বারান্দা বা রান্নাঘরের রেলিংয়ের টবেই লাগিয়ে ফেলেন অনেক যত্নে, যা কিনা সালাদ বা রান্নার স্বাদ বাড়াতে চট করেই তুলে নেওয়া যায়৷ স্বাস্থ্য সচেতন অনেক জার্মান গৃহিনী আবার কিচেন গার্ডেনে সারের পরিবর্তে চায়ের পাতা, ডিমের খোসা, আলুর খোসা, কিংবা চাল ধোয়া পানি দিয়ে থাকেন৷
জার্মানির বাগানে বাংলাদেশের গাছ
১৯৮০ সালে ‘ফ্রিডেন্সভাল্ড’ বা শান্তির বাগানটি তৈরি করা হয়েছে, যেখানে বিশ্বের ১৪২টি দেশের গাছ লাগানো হয়েছে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে৷ এখানে এতগুলো দেশের গাছ পাশাপাশি থাকবে, বেড়ে উঠবে, সহাবস্থান করবে৷
ছবি: imago/Photoshot/Balance
লাল সবুজ পতাকা
জার্মানির কোলন শহরের অভিজাত এলাকা রোডেনকির্শেন৷ সেই এলাকারই এক কোণে তৈরি করা হয়েছে ২৬ হেক্টর জমি জুড়ে সুন্দর একটি বাগান৷ এই বাগানে আছে বাংলাদেশের একটি গাছ৷
ছবি: Mohammad Zahidul Haque
শান্তির বাগানে সহাবস্থান
১৯৮০ সালে ‘ফ্রিডেন্সভাল্ড’ বা শান্তির বাগানটি তৈরি করা হয়েছে, যেখানে বিশ্বের ১৪২টি দেশের গাছ লাগানো হয়েছে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে৷ এখানে এতগুলো দেশের গাছ পাশাপাশি থাকবে, বেড়ে উঠবে, সহাবস্থান করবে৷ গাছ লাগানোর মধ্য দিয়ে জার্মানির সাথে এই দেশগুলোর কূটনৈতিক সম্পর্ক গাঢ় হবে – এমন ভাবনা থেকেই কিন্তু এই উদ্যোগ৷
ছবি: DW/N. Sattar
সারা বছরই মানুষের ভিড়
যে কোনো ঋতুতেই এখানে প্রচুর লোকজন আসেন বেড়াতে, হাঁটতে বা জগিং করতে৷ গাছগুলো এমনভাবে সাড়ি বেঁধে লাগানো যেন ভেতর দিয়ে হেঁটে যাওয়া যায়৷ বাংলাদেশ, ভারত, অ্যামেরিকা, আফ্রিকা যে কোনো দেশের গাছেই সে দেশের পতাকা লাগানো আছে৷ কোনো কোনো দেশের আবার একটি নয়, অনেকগুলো গাছ রয়েছে শান্তির প্রতীক হিসেবে৷
ছবি: DW/N. Sattar
বসন্ত
বসন্ত যে এসে গেছে, সেটা বাগানের গাছটিই বলে দিচ্ছে৷ ভাবতে এখন হয়ত অবাকই লাগবে যে গাছটি শীতকালে একেবারেই ন্যাড়া ছিল৷ আসলে জার্মানিতে কখন কোন ঋতু চলে তা গাছের দিকে তাকালেই বোঝা যায়৷ যদিও এখন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তা অনেকটাই বদলে গেছে৷
ছবি: DW/N. Sattar
মুক্ত হাওয়া
গ্রীষ্মের মিষ্টি সকালে এমনি করেই শান্তির বাগানে এসে মুক্ত হাওয়া সেবন করে নেয় মেয়েটি৷ এতে তার মনে হয়, সে যেন সারাদিন শান্তিতে থাকতে পারে৷ আজকের এই যান্ত্রিক জীবনে এটা খুবই প্রয়োজন, তাই নয় কী?
ছবি: Fotolia/Fotowerk
ভালোবাসার ফুল
শান্তির বাগানে এসে সুন্দর একটি জায়গা খুঁজে নিয়ে প্রেমিকাকে ফুল উপহার দিচ্ছেন, যেন তাকে সারা জীবন শান্তিতে রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে৷
ছবি: Fotolia/TeresaYehPhotography
সাদা বালির লেক
শান্তির বাগানে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে সবই পরিবর্তন হয়৷ তবে এই সাদা বালির অংশটুকুর কোনো পরিবর্তন হয় না, সব সময় সাদাই থাকে৷ এখানে বাচ্চারা খেলতে খুবই ভালোবাসে৷ বছরের যে কোনো সময়ই তাই দেখা যায় তাদের৷
ছবি: DW/N. Sattar
মিনি পাহাড়
বালির লেকের একটু ওপরেই খানিকটা জায়গা পাহাড়ের মতো উঁচু-নীচু৷ যেখানে শীতকালে বাচ্চারা বরফ দিয়ে খেলতে ভালোবাসে৷ মাঝে মধ্যে বড়রাও কিন্তু সঙ্গ দেন এই অপার আনন্দে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
একটুখানি বিশ্রাম
বাগানের শুরুতেই ১৪২টি দেশের গাছ লাগানো হয়েছে আর ভেতরে দিকে করা হয়েছে একটি বোটানিক্যাল গার্ডেন৷ পুরো গার্ডেন হেঁটে ক্লান্ত? তাহলে তো চাই একটুখানি বিশ্রাম! তবে হঠাৎ যদি বৃষ্টি আসে তাহলে ছাতাটি কিন্তু বড় কাজে দেয়৷
ছবি: DW/N. Sattar
রডোডেনড্রন
শান্তির বাগানের একটা বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে নানা রং-এর রডোডেনড্রন ফুলের গাছ৷ এ বছর অবশ্য এখনো সব গাছে ফুল ফোটেনি৷
ছবি: DW/N. Sattar
বেড়ানোর মধ্যেই কাজ
অনেকক্ষণ খোঁজার পর ছাত্রীরা পেয়ে গেছে শিক্ষকের নাম বলে দেওয়া গাছটি, যে গাছ সম্পর্কে গত সপ্তাহেই ক্লাসে আলোচনা করা হয়েছে৷ স্বাভাবিকভাবেই, এখন তারা মহা খুশি৷
ছবি: DW / Gaby Reucher
অসুস্থ গাছ
গাছটা কি সত্যি অসুস্থ? পরীক্ষা করে দেখছে৷ এভাবেই কিন্তু নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা হয় বিশাল বাগানের প্রতিটি গাছ৷
ছবি: picture alliance/empics
পুরো পরিবার
সপ্তাহান্তেই কেবল পুরো পরিবারের একসাথে হওয়ার সুযোগ৷ তাই সবাই মিলে শান্তির বাগানে এসেছে৷ উদ্দেশ্য ছোটবেলা থেকেই যেন বাচ্চাদের সাথে প্রকৃতির সম্পর্ক গড়ে উঠে৷ এই বাগানে এই একই লক্ষ্য নিয়ে ছোট্ট একটি কিন্ডারগার্টেনও করা হয়েছে৷
ছবি: Bilderbox
গাছ কাটা
গাছের যত্নের কোনো ত্রুটি নেই৷ অসুস্থ গাছকে সময় মতো কেটে ফেলা হয়৷ তবে একটা গাছ কাটা মানেই কিন্তু আর একটা গাছ লাগানো৷ বলা যায় একেবারে সঙ্গে সঙ্গেই!
ছবি: imago/Photoshot/Balance
14 ছবি1 | 14
জার্মানরা মনে করেন, জানালা-দরজা হচ্ছে বাড়ির ‘ভিজিটিং কার্ড'৷ তাই ঝকঝকে তকতকে জানালা দরজার কাঁচ বা পর্দাই শুধু নয়, তাঁরা জানালার রেলিংয়ে রাখেন নয়ন জুড়ানো ফুল৷ আর গরমকালে ব্যালকনিতে লাগাতে দেখা যায় টমেটো, স্ট্রবেরির মতো ছোট ছোট ফল বা সবজি আর ফুল – যা খুব সহজেই ফ্ল্যাটের ব্যালকনিকে করে তোলে আকর্ষণীয়৷
শৌখিনদের জন্য শ্রেবারগার্টেন
ফ্ল্যাটবাসীদের মধ্যে যাঁদের ব্যালকনির বাগানে মন ভরে না, তাঁদের জন্য রয়েছে ‘শ্রেবারগার্টেন'৷ ১০০ বছরেরও আগে শুরু হয়েছিল এই শ্রেবারগার্টেন বা শখের বাগানের চল৷ শহরের কোলাহলে থেকে খানিকটা দূরে ছোট ছোট বাগান, সাথে ছোট্ট একটি কাঠের ঘর, যেগুলো অল্প দামে কেনা বা ভাড়া নেওয়া যায়৷ তবে যাঁরা অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করেন তাঁদের মূল্যের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়৷ জার্মানিতে ১৫ হাজারেরও বেশি এ রকম বাগান রয়েছে৷
শ্রেবারগার্টেন বা সখের বাগানের ভেতরের ছোট ছোট রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে দেখা যায় বাগানপ্রেমীরা কী যত্ন, ভালোবাসা দিয়ে, মনের মাধুরী মিশিয়ে বাগানে করেন৷
বহুবছর হয়ে গেল আমি বাংলাদেশ ছেড়ে জার্মানিতে এসেছি৷ দেশে সবুজ পরিবেশে বেড়ে ওঠার কারণেই কিনা জানি না, প্রবাস জীবনের শুরু থেকেই এই শখের গোছানো বাগান আমাকে প্রচণ্ড টানে৷ এখনো মাঝে মাঝে সখের বাগান বা স্বপ্নের নন্দন কাননের সরু রাস্তা দিয়ে যখন হেঁটে বেড়াই আর মুগ্ধ হই এই দেখে যে, এই অল্প জায়গায় কী সুন্দর প্ল্যান করে ছোট্ট ছোট্ট গাছে তাজা টকটকে আপেল, আঙুর, চেরিফলের মতো লোভনীয় ফল, ফুল আর সবজি জন্মানো সম্ভব৷
জার্মানিতে শেষ ঠিকানা- হৃদয়ের বাগান
কবরস্থান শুনলেই কেমন যেন ভয়ে আঁতকে উঠি সবাই৷ তবে জার্মানির কোনো কবরস্থানে ঘুরে এলে ভয় খানিকটা কেটে যায় বৈকি! প্রতিটি কবর সুন্দর করে বাঁধানো এবং সুন্দর করে সাজানো এক একটি বাগান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে
কবিগুরু যেমন লিখেছিলেন, ‘‘মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে, মানুষের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই’’– এ কথা যে আমাদের সবারই৷ কিন্তু উপায় নেই, এক সময় এই সুন্দর ভুবন ছেড়ে আমাদের সবাইকেই চলে যেতে হবে৷ তবে কার শেষ ঠিকানা কোথায়, কেউ কি জানে?
ছবি: DW/A. Termeche
কবরস্থান মানেই ভয় নয়
কবরস্থান শুনলেই কেমন যেন ভয়ে আঁতকে উঠি সবাই৷ তবে জার্মানির কোনো কবরস্থানে ঘুরে এলে ভয় খানিকটা কেটে যায় বৈকি! প্রতিটি কবর সুন্দর করে বাঁধানো এবং সুন্দর করে সাজানো এক একটি বাগান৷
ছবি: DW
দেখতে ঠিক যেন পার্কের মতো
বিশাল এলাকা জুড়ে এক একটি কবরস্থান, ঢোকার সময় প্রথমেই মনে হবে চারিদিকে সবুজে ঘেরা কোনো পার্কে ঢুকছি৷ খানিকটা ভেতরে গেলে মনে হয় বিশাল পার্কে ছোট ছোট অনেক বাগান৷ একটি কবরস্থানে বড়দের এবং বাচ্চাদের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে৷
ছবি: DW/A. Termeche
নাম ফলক
প্রতিটি কবরেই পাশেই নানা রংয়ের পাথরের ওপর প্রয়াতদের নাম, জন্ম এবং মৃত্যুর তারিখ লেখা থাকে৷ অনেক সময় দেখা যায় কোনো কবরে একটি নামফলক৷ শায়িত আছেন একজনই কিন্তু জায়গাটি বেশ বড় করে বাঁধানো৷ অর্থাৎ সেখানে স্বামী বা স্ত্রীর জন্য জায়গা রাখা হয়েছে৷ তবে যিনি বেঁচে আছেন, তিনি তার পরিচর্যা করেন৷
ছবি: DW/A. Termeche
ফুলের বাগান
কবরস্থানে যে কেউ ঢুকে পুরোটাই ঘুরে বেড়াতে পারে৷ এতে কোনো বাধানিষেধ নেই৷ ছোট ছোট জায়গা ভাগ করা আছে, তবে ভেতর দিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা আছে৷ অনেকে শুধু হাঁটাহাঁটি করার জন্যও কবরস্থানে যায়, অত্যন্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জায়গা৷ গ্রীষ্মে কোনো কবরস্থানকে ফুলের বাগান বললে ভুল হবেনা৷ প্রায় প্রতিটি কবরস্থানের কাছেই একটি করে ফুলের দোকান থাকে৷
ছবি: DW
পরিবার বা প্রিয়জনদের পরিচর্যা
জার্মানরা অনেকেই নিয়মিত কবরস্থানে যান তাদের প্রিয়জনের সমাধিতে ফুল দিতে৷ জ্বালিয়ে রাখেন মোমবাতি আর ছোট্ট বাগানটুকু করেন পরিষ্কার৷ তবে পুরো কবরস্থান পরিচর্যার জন্য থাকে বেতনভোগী আলাদা লোক৷
ছবি: Fotolia/forelle66
মুসলমানদের কবরস্থান
জার্মানিতে প্রথম মুসলমানদের কবরস্থান তৈরি করা হবে, আর তার আইন পাসও হয়ে গেছে৷ তৈরি হবে ভুপার্টাল শহরে৷ একই জায়গায় খ্রিষ্টান, ইহুদি এবং মুসলিম – এই তিন ধর্মের মানুষকে কবর দেওয়া হবে এবং একই গেট দিয়ে তিন কবরস্থানেই যাওয়া যাবে৷
ছবি: DW/C. Ignatzi
তাজা ফুল
জার্মানিতে পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বেশিদিন বাঁচেন৷ আর তা কোনো কবরস্থানে গেলেও কারো দৃষ্টি এড়ায় না৷ অনেক বৃদ্ধাকেই দেখা যায় প্রতি সপ্তাহেই স্বামীর কবরে তাজা ফুল দিতে৷ শীত গ্রীষ্ম কখনো তার ব্যতিক্রম হয়না৷ এতো যত্ন করে কবরস্থানে ফুল দিতে দেখলে কবি জসীমউদ্দিনের ... ‘‘এইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে, তিরিশ বছর ভিজিয়ে রেখেছি দু’নয়নের জলে’’-র কথাই মনে করিয়ে দেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
8 ছবি1 | 8
আমাদের বাঙালিদেরও কেউ কেউ কিন্তু বাংলাদেশ থেকে বীজ এনে পরম মমতা আর যত্নে বিদেশের মাটিতেও ফলান লাউ, সীমের মতো দেশি সবজি৷ সেসব শুধু লাউ, কুমড়ো নয়, যেন দেশের প্রতি জমে থাকা টুকরো টুকরো ভালোবাসা, যা তাঁরা অন্যান্য বাঙালি বন্ধুদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে খান৷
উপহার হিসেবে গাছ
হ্যাঁ প্রকৃতিপ্রেমী জার্মানদের কিন্তু প্রতিবেশীদের মধ্যে গাছ উপহার দেয়ার রীতি রয়েছে, যাতে দুই পরিবারের সম্পর্ক গাছের মতোই ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে আর বন্ধুত্ব হয় প্রকৃতির মতোই সুন্দর৷ আমার বাগানের বেশ কয়েকটি সুন্দর গাছ জার্মান প্রতিবেশীদেরই দেওয়া৷ শুধু তাই নয়, তাঁরা আগে থেকে আমার পছন্দের গাছের নামও জেনে নিয়েছিলেন৷ গাছগুলো আজ অনেক বড় হয়ে বাগানের শোভা তো বাড়াচ্ছেই, তাঁদের সাথে সম্পর্কও হয়েছে মধুর৷
গাছ শুধু লাগালেই হয় না, যত্ন করতে হয়, গাছের সাথে কথা বলতে হয়, তবেই না ফুলে-ফলে-পল্লবে ভরে ওঠে উদ্ভিদগুলো! তখন খুব ভালোবাবেই বোঝা যায় যে, গাছেরও প্রাণ আছে৷ বাগানের কাজের জন্য কে কতটা সময় দেয় বা ভালোবাসে তা যে কোনো বাগান দেখলেই নিঃসন্দেহে বোঝা যায়৷ শুধু কী তাই, আজকাল তো আবার অনেকে শখের বাগানকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে নানা আকারের আর বাহারি রঙের ‘সোলার লাইট' লাগিয়ে গ্রীষ্মের সন্ধ্যাগুলোও করে তোলে রোম্যান্টিক৷
বাগান মানসিক চাপ কমায়
বাগানের কাজ বা সবুজ প্রকৃতির কাছাকাছি থাকলে মানুষের স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমে৷ বিভিন্ন সমীক্ষার অভিজ্ঞতা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই এ তথ্য জানান৷ এক্ষেত্রে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আমার বলতে ইচ্ছে করছে, আজকের এই যান্ত্রিক জীবনে শরীর আর মনকে ফিট রাখতে প্রকৃতির কোনো বিকল্প নেই৷ ফোর্বস ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেলও নাকি সময় পেলে স্ট্রেস দূর করতে বাগান করেন, প্রকৃতির সংস্পর্শে যান৷ তাই সুযোগ থাকলে শুরু করুন আপনিও!
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷