1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাঘ-সিংহ যখন পুষ্যি!

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়১৯ আগস্ট ২০১৩

অনেক দিনের ইচ্ছে একটা কেঁদো বাঘ পুষবেন৷ অসুবিধে কোথায়! সোজা চলে যান কলকাতা চিড়িয়াখানায়৷

Title: Alipore Zoological Gardens The Alipore Zoological Gardens (also informally called the Calcutta Zoo) is India's oldest formally stated zoological park (as opposed to royal and British menageries) and a big tourist attraction in Kolkata, West Bengal. Keywords: : Alipore Zoological Gardens, Calcutta Zoo, West Bengal Photo copyright: Sirsho Bandopadhyay, DW Correspondent, India Zulieferer: Arafatul Islam But the animals also seem healthier and more well kept than before.
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

এবারের মতো কলকাতা চিড়িয়াখানার বাঘেদের বিলি বন্দোবস্ত কিন্তু হয়ে গিয়েছে৷ একটা বাঘ পুষেছেন ইমামি শিল্পগোষ্ঠীর আর এস আগরওয়াল৷ আর একটা সাদা বাঘ দত্তক নিয়েছেন বেঙ্গল অম্বুজা শিল্পগোষ্ঠীর হর্ষ নেওটিয়া৷ আরও অনেক আবেদনপত্র জমা পড়েছে, যেগুলো এখন খুঁটিয়ে দেখছেন চিড়িয়াখানার কর্তারা৷ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার যেমন আছে, তেমন অনেকগুলো লেপার্ড আছে, ব্রাজিলিয়ান পুমা আছে, সিংহ আছে বেশ কয়েকটা – একটা না একটা আপনার জন্যে পাওয়া যাবেই! আর যদি নেহাত সব বেহাত হয়ে যায়, তা হলে পরের বছর আগে থেকে দরখাস্ত দিয়ে রাখুন৷ কারণ কলকাতা চিড়িয়াখানার জীব-জন্তুদের পুষ্যি নেওয়ার এই বন্দোবস্ত এক বছর মেয়াদের৷ তার পরে আবার নতুন করে দরখাস্ত, নতুন করে টাকা জমা নেওয়া হবে৷ কে বলতে পারে, পরের বছর হয়তো আপনিই হবেন একটা ডোরাকাটা বাঘ, কেশর ফোলানো সিংহ অথবা শুঁড় দোলানো হাতির গর্বিত মালিক৷

তবে কেউ মালিক হতে পারবেন না কোনও জীব-জন্তুরছবি: DW/S. Bandopadhyay

না ভুল হলো৷ কেউ মালিক হতে পারবেন না কোনও জীব-জন্তুর৷ ধরা যাক আপনি একটা হাতি পোষ্য নিয়েছেন৷ এবার আপনার বাড়িতে কোনও বড় সামাজিক অনুষ্ঠান আছে৷ জাঁক দেখাতে আপনি চাইলেন আপনার পোষা হাতিটাকে এক বেলার জন্য চিড়িয়াখানা থেকে বাড়ি নিয়ে আসবেন৷ পারবেন না৷ আপনার পোষ্য হলেও তাকে খাঁচার বাইরে বের করার কোনও প্রশ্নই নেই৷ অথবা চাইলেন তার গলা জড়িয়ে ছবি তুলতে, অথবা মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে, তা-ও পারবেন না৷ ‘‘আসলে এই জীবজন্তু পোষ্য নেওয়ার ধারণাটা পুরোটাই এই উদ্দেশ্যে যে বন্যপ্রাণ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা উৎসাহ, একটা সচেতনতা তৈরি করা৷ কারণ সবাই যে পশু-পাখির অধিকার সম্পর্কে সচেতন, তা তো নয়৷ ফলে চিড়িয়াখানায় এলে তাদেরকে বিরক্ত করা, বা নিষেধ থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে ছোলা থেকে স্যান্ডউইচের আধখাওয়া টুকরো খাওয়ানোর প্রবণতা দেখা যায়'', বললেন কলকাতা চিড়িয়াখানার সদ্য নিযুক্ত অধিকর্তা এস কে ঘোষ৷

চিড়িয়াখানার প্রাণীদের এই পোষ্য নেওয়ার কর্মসূচির সূত্রে ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের তরফ থেকে বিশেষ উৎসাহ দেখানো হয়েছিল কলকাতা চিড়িয়াখানার জিরাফদের কে বা কারা পোষ্য নিলেন, সেই সম্পর্কে৷ কারণ একটা সময় জার্মানির কোলোন চিড়িয়াখানা থেকে জিরাফ নিয়ে আসা হয়েছিল এই চিড়িয়াখানায়৷ এক বার নয়, দু-তিন দফায় বেশ কয়েকটি জিরাফ এসেছিল কোলন থেকে৷ যদিও তারা কেউই এখন আর জীবিত নেই৷ কোলন থেকে শেষ জিরাফটি মারা গিয়েছে বছরখানেক আগে৷ ‘‘এখন যে কটা জিরাফ দেখা যায় কলকাতায়, তারা কোলোনের ওই জিরাফদের নাতি পুতি হবে, যাদের সবারই জন্ম হয়েছে কলকাতায়'', হাসতে হাসতে বললেন চিড়িয়াখানার অধিকর্তা৷ এই জিরাফ দত্তক নেওয়ার জন্যও বেশ কিছু আবেদনপত্র জমা পড়েছে৷ আপাতত সেগুলো খুঁটিয়ে দেখে, কোন কোন পশু দত্তক নেওয়ার উপযুক্ত, তার একটা তালিকা দেওয়া হবে ওই আগ্রহীদের কাছে৷ দুপক্ষ সহমত হলে সমঝোতাপত্র সই হবে এবং এক বছরের আর্থিক দায়িত্ব নেবেন পালক পিতা বা মাতারা৷

এক বার নয়, দু-তিন দফায় বেশ কয়েকটি জিরাফ এসেছিল কোলন থেকেছবি: DW/S. Bandopadhyay

চিড়িয়াখানার অধিকর্তা জানাচ্ছেন, যে প্রাণীগুলো দত্তক নেওয়া হবে, তাদের খাঁচার সামনে একটা বোর্ডে লেখা থাকবে পালক পিতা-মাতার নাম এবং পোষ্যের নাম৷ প্রাণিটির এক বছরের খাওয়া-দাওয়া ও চিকিৎসার খরচ হবে ওই পালক পিতা-মাতার দেওয়া ভরণপোষণের অর্থ থেকেই৷ অন্য দিকে যাঁরা দত্তক নেবেন, তাদের পরিবারের চার জন সদস্যকে বছরে একবার নিখরচায় আসতে দেওয়া হবে চিড়িয়াখানায়৷ এছাড়া দত্তক নেওয়া প্রাণিটি সম্পর্কে নির্দিষ্ট কিছু জানতে চাইলে, তা-ও জানানো হবে পালক পরিবারকে৷ এর বেশি কোনও অধিকার পোষ্য প্রাণিটির উপর থাকবে না৷

চিড়িয়াখানার জন্য তহবিল জোগাড় করতেই এমন একটা উদ্যোগ নেওয়া হল, এমন কথা মানতে রাজি হলেন না কলকাতা চিড়িয়াখানার নবনিযুক্ত অধিকর্তা৷ যদিও সাধারণের থেকে অর্থ সংগ্রহ করে চিড়িয়াখানা চালানোয় কোনও দোষ আছে বলে তিনি মনে করেন না৷ তবে হুটোপাটি করে কিছু করার বিপক্ষে তিনি৷ বরং তাঁর মতে, যদি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ মনে করে, তা হলে এমন একটা উদ্যোগ সবদিক বিবেচনা করে, সুপরিকল্পিতভাবে নেওয়া যেতেই পারে৷ পৃথিবীতে একাধিক চিড়িয়াখানা এভাবে চলছে এবং সফলভাবেই চলছে৷ হাতের কাছে দার্জিলিং চিড়িয়াখানাতেই এই মডেল মেনে চলে সুফল পাওয়া গিয়েছে৷

কলকাতা চিড়িয়াখানার বাঘেদের বিলি বন্দোবস্ত কিন্তু হয়ে গিয়েছেছবি: DW/S. Bandopadhyay

তবে সে সবই ভবিষ্যতের ব্যাপার৷ আপাতত নিজের পোষ্য হাতি বা বাঘের ছবি বাড়ির বসার ঘরে টাঙিয়ে রাখা এবং মন কেমন করলে মাঝে মাঝে চিড়িয়াখানায় গিয়ে তাকে একবার দেখে আসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে শহুরে মানুষের পশুপ্রেম!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ