1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শুভ নববর্ষ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৪ এপ্রিল ২০১৪

১লা বৈশাখে ভোরের আলো ফোটার সঙ্গেই শুরু হয়েছে বাংলা বর্ষবরণ৷ রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে৷ শহর থেকে গ্রামে৷ লোকালয় থেকে নিভৃত পল্লিতে৷ মঙ্গল শোভা যাত্রায়৷ বৈশাখী মেলায়৷ বাঁশি, ঢোল আর খোলে৷

‘‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো'' গেয়ে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানানো হয়েছেছবি: DW/M. Mamun

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের – ‘‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর!/তোরা সব জয়ধ্বনি কর!/ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল-বোশেখীর ঝড়/তোরা সব জয়ধ্বনি কর...৷ – এই দৃপ্তকণ্ঠ উচ্চারণের মধ্য দিয়েই সোমবার বাংলা ১৪২১ সালের প্রথম দিবসের সূচনা করেছে বাঙালিরা৷ একই সঙ্গে বিশ্বকবির – ‘‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো'' গেয়ে তাঁরা স্বাগত জানিয়েছে নতুন বছরকে৷ রমনা বটমূলে নতুন বছরের সূর্য উঁকি দিতেই সমবেত কণ্ঠে নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছে বাঙালি৷ পুরনো বছরের জরা, দুঃখ, পাপ, তাপকে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে শপথ নিয়েছে তারা৷

ছবি: DW/M. Mamun

মঙ্গল শোভাযাত্রার ‘‘জাগ্রত করো উদ্যত করো নির্ভয় করো হে'' – এই বাণী সব প্রাণের ভয় দূর করে বাঙালির চিত্তকে যেন করেছে ভয়শূণ্য৷ এ উত্‍সবে মিলেছে সব প্রাণ, সব ধর্ম, সব বর্ণ৷ তাই এবারের শোভাযাত্রায় স্থান পেয়েছে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের দুঃসময়ের কাণ্ডারির প্রতীক হিসেবে ‘গাজী ও বাঘ'; সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে লক্ষ্মী পেঁচা, শিশু হরিণ, মা ও শিশু, হাঁস এবং মাছের ঝাঁক; লোক ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে বিড়ালের মুখে চিংড়ি, শখের হাঁড়িসহ মোট ১৩টি বড় ভাস্কর্য৷ এছাড়াও ময়ূর, বাঘের দুইটি বড় মুখোশ, ১০টা ছোট পাখি, প্রায় এক হাজার কাগজে কাটা ছোট মুখোশ, ১০০টি বড় মুখোশ ৷

বৈশাখ উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন বলেন, ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রার ২৬ বছরে পদার্পণ ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এবারের আয়োজন অন্যবারের চেয়ে দ্বিগুণ৷''

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলা নববর্ষ বাঙালির সার্বজনীন উত্‍সব৷ এই উত্‍সবে এক হয়ে যান সবাই৷ ধর্ম, বর্ণ বা গোত্রের কোনো ভেদাভেদ থাকে না৷ বাঙালির আবহমান সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য মিশে আসে এই বাংলা বর্ষবরণের সঙ্গে৷ এই উত্‍সব বাঙালিকে তার আত্ম পরিচয়ের সন্ধান দেয়৷ আর এ কারণেই এই বাংলা বর্ষবরণ উত্‍সব সবাইকে এক করে৷ এক জায়গায় নিয়ে আসে৷ শক্তি যোগায়৷'' তিনি বলেন, এই উত্‍সবের রঙ পবিত্র৷ এই উত্‍সব বাঙালিকে পরিশুদ্ধ করে৷ করে জরামুক্ত৷ এছাড়া বাংলা নববর্ষ অশুভকে বিদায় দিয়ে শুভ এবং কল্যাণের দিকে আহ্বান জানায়৷''

এদিকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বিশেষ বাণীতে বলেছেন, ‘‘অতীতের সব গ্লানি ও বিভেদ ভুলে বাংলা নববর্ষ জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে আমাদের ঐক্য আরও সুদৃঢ় করবে এবং বয়ে আনবে অফুরন্ত আনন্দের বার্তা৷'' তিনি বলেন, বাঙালির জীবনে বাংলা নববর্ষের আবেদন চিরন্তন ও সার্বজনীন৷

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেছেন, ‘‘নববর্ষ সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা ও দেশবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তি যোগাবে৷'' তিনি আশা করেন, ‘‘জরা ও গ্লানি মুছে দিয়ে বাঙালির জীবনে ১৪২১ সাল সুখ, সমৃদ্ধি ও অনাবিল আনন্দ বয়ে আনবে৷''

তিনি বলেন, ‘‘বাঙালির সার্বজনীন উত্‍সব – বাংলা নববর্ষ৷ আমরা নববর্ষকে আবাহন করি প্রাণের স্পন্দনে, গানে-কবিতায়, আবেগের উত্তাপে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ