জার্মানির বন শহরে বাচ্চাদের সার্কাস শেখানোর একটি স্কুল রয়েছে৷ অনেক বাচ্চাই সেখানে ভর্তি হতে চায়৷ ইয়র্গ নিচ ২৩ বছর আগে ডন মেলোনি-স নামের এই সার্কাস স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন৷
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘‘বাচ্চারা যখন প্রথম এখানে আসে তখন বড় হলরুম আর শক্ত করে বাঁধা দড়ি দেখে আশ্চর্য হয়৷ তারা বলে যে, এই কাজ তারা কখনোই করতে পারবে না৷ এরপর যখন তারা প্রথমবারের মতো দড়ি অতিক্রম করতে সক্ষম হয় তখন তাদের বাবা-মারা বেশ গর্ব অনুভব করে৷ অন্যগুলোর ব্যাপারেও একই ঘটনা ঘটে৷ একে একে তারা বলের ওপর হাঁটতে ও ডিগবাজি দিতে শেখে এবং একটা দণ্ডের ওপর ঝুলতে পারে৷''
শিশুর ক্যামেরায় নিজের জগত
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউনের কাইয়েলিচা এলাকার শিশুরা তাদের কাছে যা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় সেসবের ছবি তোলে৷ ক্যামেরা হাতে আশেপাশের ছবি তুলে বেড়ায় ওরা৷ কাইয়েলিচায় প্রায় ১২ লাখ মানুষের বাস, তাঁদের প্রায় সবাই খুব গরিব৷
ছবি: Elethu/Karin Banduhn
একদিনের রিপোর্টার
‘‘জীবনে সত্যি যা ভালোবাসো তা দেখাও’’ – ঠিক এই কথাটাই বলে দেয়া হয়েছে স্থানীয় একটি স্কুলের ছয় বছর বয়সি এই শিশুদের৷ এই প্রথম ক্যামেরা হাতে নিয়েছে ওরা৷ কয়েক ঘণ্টা ক্যামেরা চালানো শেখার পর নেমে পড়েছে সেরা ছবি তোলার কাজে৷
ছবি: Karin Banduhn
‘নতুন বাড়ি’
কোসা ভাষায় কাইয়েলিচা মানে ‘নতুন বাড়ি’৷ সরকার চায় এলাকায় নতুন ঘর-বাড়ি হোক৷ কিন্তু লিখতার পরিবারের মতো অনেকেরই কাঠের বাড়ি ছেড়ে নতুন বাড়িতে ওঠার সাধ্য নেই৷
ছবি: Liktha/Karin Banduhn
ভরপুর বাড়ি
সিফোকাজির পরিবারে এক ছাদের নীচে বাস করে তিন প্রজন্ম৷ কাইয়েলিচার বেশির ভাগ পরিবারের মতো এ পরিবারেরও মূল উপার্জনকারী বাবা, পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে অন্য বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে মা৷ মা-বাবা যখন কাজে ব্যস্ত, তখন বাচ্চাদের দেখাশোনা করেন দাদা-দাদি৷
ছবি: Siphokazi/Karin Banduhn
অমূল্য সম্পদ
খেলনা খুব প্রিয় মাহলের৷ বেশিরভাগ খেলনাই তার স্কুলে আসে জার্মানির হামবুর্গ শহরের শুলকাম্প প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে৷ কাইয়েলিচা সংস্থা ওদের স্কুলের পাশে আছে সবসময়৷
ছবি: Mahle/Karin Banduhn
ছেলেদের খেলনা
মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের পাশাপাশি একটা গাড়ি থাকলে কার না ভালো লাগে! জায়গা নেই বলে কাইয়েলিচার বাচ্চারা বাড়িতে খুব একটা খেলতে পারে না৷ খুদে ফটোগ্রাফার ইভিভসে তাই খালি ক্যান দিয়েই বানিয়ে নিয়েছে রেস ট্র্যাক৷
ছবি: Ivivse/Karin Banduhn
ক্ষুধা নিবারণ
লুলুথো স্কুল থেকে ফেরে ভীষণ ক্ষুধা নিয়ে৷ ঘরে সবসময় খাওয়ার মতো কিছু না কিছু থাকে বলে রক্ষা৷ কাইয়েলিচার অধিকাংশ পরিবার খাবারের পেছনে প্রতিদিন খরচ করে ২২ রান্ড, অর্থাৎ ১.৭০ ইউরোর মতো৷
ছবি: Lulutho/Karin Banduhn
ঐতিহ্য আর দৈনন্দিন জীবন
স্থানীয়দের অধিকাংশই কোসা জনগোষ্ঠীর৷ নেলসন ম্যান্ডেলা আর তাঁদের ভাষা এক৷ তাঁদের কাছে ঐতিহ্য খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ সাধারণত মেয়েরা রান্না করে আর ছেলেরা কাজ করতে যায় বাইরে৷
ছবি: Yandise/Karin Banduhn
কাইয়েলিচার শিশুরা
ফটোসাংবাদিক এলেথুর জন্য বন্ধুরা খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ এখানে শিশুরা আত্মবিশ্বাসী এবং সুখি মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠতে পারে৷ এটা দরকারও, কেননা শিশুদের হাতেই তো দেশের ভবিষ্যৎ!
ছবি: Elethu/Karin Banduhn
8 ছবি1 | 8
শিশুরা যত তাড়াতাড়ি শুরু করে, সার্কাস শেখা তাদের জন্য তত সহজ হয়৷ গা গরম করা কিছু অনুশীলন দিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু হয়৷ এরপর প্রশিক্ষক ও স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ইয়র্গ নিচ একসঙ্গে অনেক কাজ করার উপায়টা বলে দেন৷ তিনি জানেন, কেমন করে বাচ্চাদের মানিয়ে নেয়া শেখাতে হয়৷
প্রতি সপ্তাহে অনেক শিশু প্রশিক্ষণ নিতে যায় ঐ স্কুলে৷ ট্রেনিং এর সময় তারা নিজেরাই নিজেদের সীমা অতিক্রম করে – যা তাদের বিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দেয়৷ প্রশিক্ষক স্টেফি শ্রুফ বলেন, ‘‘শিশুরা ট্রেনিং এর সময় বেশ মনোযোগী থাকে৷ শক্ত করে বাঁধা দড়ির ওপর হাঁটতে গিয়ে এবং বলের ওপর ঠিকভাবে দাঁড়াতে গিয়ে তারা ভারসাম্য বজায় রাখা শিখতে পারে৷ জাগলিং এর সময় ডান-বামের সমন্বয় রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ৷''
প্রতিষ্ঠাতা নিচ মনে করেন, তাঁর স্কুলে যেসব বাচ্চারা আসে তারা অন্যদের চেয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে বেশি সুস্থ৷