1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাচ্চা তোলা থাকবে ডিপ ফ্রিজে?

সংবাদভাষ্য: নাওমি কনরাড/এসি১৭ অক্টোবর ২০১৪

একটু বুঝিয়ে বলা যাক: মার্কিন মুলুকে ফেসবুক কিংবা অ্যাপল-এর মতো বড় বড় কোম্পানি তাদের মহিলা-কর্মীদের নিজেদের ডিম্বাণু জমিয়ে রাখার জন্য টাকা দিচ্ছে, যা-তে তারা পরে মা হতে পারেন৷ আগে কেরিয়ার, পরে বাচ্চা৷

Facebook und Apple: Einfrieren von Eizellen
ছবি: picture-alliance/dpa

প্রথমে প্রস্তাবটা বেশ যুক্তিযুক্ত, এমনকি ফ্যাশানদুরস্ত মনে হতে পারে: এমন এক মহিলা-কর্মী, যার প্রশিক্ষণে কোম্পানি বেশ কিছু অর্থ বিনিয়োগ করেছে, তিনি সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়লে বেশ কিছুদিন কাজে আসতে পারবেন না৷ জন্মানোর পরেও সেই শিশুর কারণে মহিলার পক্ষে ওভারটাইম করা, বিজনেস ট্রিপ কিংবা ককটেল পার্টিতে যাওয়া, এ সব মুশকিল হয়ে পড়বে৷ অর্থাৎ মহিলার কেরিয়ারে একটা বিরতি, অন্তত বিঘ্ন ঘটবে, কম করে হলেও ঢেঁড়া পড়বে৷ অন্যদিকে কোম্পানিও মহিলার কাছ থেকে যে পরিমাণ কাজ ও প্রেরণা পেতে পারতো, তার সবটা পাবে না৷

কেরিয়ার আগে, সন্তান পরে

সেই কারণেই অনেক মার্কিন কোম্পানি উচ্চ যোগ্যতা সম্পন্ন, তরুণ মহিলাদের তাঁদের মা হবার ইচ্ছা ভাঁড়ারে তুলে রাখতে সাহায্য করতে চায়৷ ফেসবুক ইতিমধ্যেই যা করছে এবং অ্যাপল আগামী বছর থেকে যা করতে চায়, তা হলো: মহিলা-কর্মীরা যদি তাঁদের ডিম্বাণু হিমায়িত করে রাখতে চান, তবে কোম্পানি তার খরচ দেবে৷ দু'টি সংস্থাই নাকি ডিম্বাণু বের করে তা জমিয়ে রাখার জন্য কর্মী প্রতি ২০ হাজার ডলার পর্যন্ত ব্যয় করতে প্রস্তুত৷

কোম্পানির যুক্তি হলো: মহিলারা কোম্পানির ‘হায়ারার্কি' বা ক্রমাধিপত্যের পর্যায়ক্রমে একটি আকর্ষণীয় ও স্থায়ী অবস্থান নিশ্চিত করে ফেলার পরেই তাঁদের সন্তানধারণের কথা ভাবা উচিত৷ ডিম্বাণু হিমায়িত করার কারণ হলো, ত্রিশের মাঝামাঝি থেকে মহিলাদের সুস্থ ডিম্বাণু উৎপাদনের ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পায়৷ তরুণ বয়সে ডিম্বাণু জমিয়ে রাখলে, পরেও সন্তানের জন্ম দেওয়া যায়৷ এটা কি বাস্তবিক একটা ভালো পরিকল্পনা? দেরিতে সন্তানধারণ করলেও, বিজনেস ট্রিপ, ওভারটাইম, সন্ধ্যায় নানা বিজনেস অ্যাপয়েন্টমেন্ট – এ সবের সঙ্গে যে সন্তান প্রতিপালনের সংঘাত দেখা দেবে না, তার কি কোনো গ্যারান্টি আছে? ডিম্বাণু হিমায়িত করার অর্থ কি শুধু সমস্যাটাকে জমিয়ে রাখা নয়? তার পরিবর্তে সমস্যার তাৎক্ষণিক ও বুনিয়াদি সমাধানই কি কাম্য নয়? সে সমাধান হলো: কি করে মহিলারা সন্তান এবং কেরিয়ার, দু'টোই রাখতে পারেন, যা-তে তাদের দু'টির মধ্যে একটিকে বেছে নিতে, কিংবা একটির ক্ষতি করতে বাধ্য না হতে হয়৷

নাওমি কনরাডছবি: DW/S. Eichberg

‘পেরেন্টাল লিভ' ও ‘মেটারনিটি রাইটস'

প্রথমটি বলতে বোঝায়, শিশুর জন্মের পর প্রথম কিছুদিন তার দেখাশোনার জন্য মা কিংবা বাবাকে যে ছুটি দেওয়া হয়; দ্বিতীয়টির অর্থ, মা হওয়ার আগে ও পরে কিছুদিন একজন মহিলা কর্মীকে বরখাস্ত করা চলে না৷ অ্যাপল এবং ফেসবুক চার মাসের ‘পেরেন্টাল লিভ' দিয়ে থাকে৷ পরে ছোট ছেলে-মেয়েদের দেখাশোনার জন্য কোম্পানির নিজের কিন্ডারগার্টেন আছে৷ কিন্তু অ্যামেরিকার অন্যত্র পরিস্থিতি আরো অনেক খারাপ – কেননা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘পেরেন্টাল লিভ' কিংবা ‘মেটারনিটি রাইটস' সংক্রান্ত কোনো আইনগত অধিকার নেই৷ সেখানে পুরুষ অধ্যুষিত ‘আইটি' শিল্প যে ডিম্বাণু হিমায়িত করার প্রস্তাব দিয়ে মহিলাদের আকর্ষণ করতে চাইছে, তাকে প্রগতিশীল বলতে হয় বৈকি...৷

মুশকিল হলো এই যে, প্রস্তাবের ভিত্তিটাই ভ্রান্ত: সন্তান এবং কেরিয়ার, দু'টোই রাখার অর্থ এ হতে পারে না যে, নিজের পরিবার পরিকল্পনাকে শিকেয় তুলে রাখতে হবে! বরং সন্তান ও কেরিয়ার, উভয়কে রাখতে হলে চাই এমন কাজের চুক্তি ও শর্তাবলী, যার বলে মহিলা কর্মীরা নিজেদের জীবন নিশ্চিন্ত এবং সঠিকভাবে পরিকল্পনা করতে পারবেন৷ জার্মানিতে – এবং অন্যত্র – তরুণ কর্মীদের – যেমন পুরুষ, তেমনি মহিলাকর্মীদের এক অথবা দু'বছরের বেশি ‘কনট্র্যাক্ট' দেওয়া হয় না: যার ফলে এই তরুণ প্রজন্মের নবাগত শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মসংস্থানের কোনো নিরাপত্তা থাকে না, যার অর্থ, তাঁরা এই অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে সন্তানের দায়িত্ব নিতে দ্বিধা বোধ করেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ