করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছেন বৃহৎ শিল্প উদ্যোক্তারা৷ কিন্তু বিপাকে এখনও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সিএসএমই উদ্যোক্তারা৷ অর্থনীতিবিদরা মনে করেন আসছে বাজেটে তাদের প্রতি বাড়তি মনযোগ প্রয়োজন সরকারের৷
বিজ্ঞাপন
গত এক বছরে কয়েক দফা দোকান বন্ধ রেখেছেন ঢাকার ব্যবসায়ী শাহ আলম৷ বিভিন্ন শপিং মলে তিনটি দোকানের মালিক তিনি৷ স্বাভাবিক সময়ে বছরে এক একটিতে গড়ে বিক্রি ৬০ লাখ টাকা৷ তার অর্ধেকটাও হয়নি ২০২০-২১ সালে৷ ‘‘গত বছরের মার্চের পর থেকে এখন পর্যন্ত আমরা বেচাবিক্রিতে মাইনাসে আছি৷ সামনে কেমন যাবে জানি না৷ মুনাফাতো নাই-ই৷ ১০ লাখ টাকা খরচ হলে ছয় লাখ টাকার ব্যবসা হয়, চার লাখ টাকাই নিজের পুঁজি থেকে যায়,’’ বলেন শাহ আলম৷
তার মতো ৫৩ লাখের বেশি ব্যবসায়ী আছেন বাংলাদেশে৷ করোনার কারণে তাদের বিক্রিতে যে ভাটা নেমেছে তার প্রভাব পড়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উদ্যোক্তাদের উপরে৷ তাদেরই একজন রংপুরের শামছিয়ারা জামান৷ তিনি ‘সূচীশৈলী হ্যান্ডিক্রাফটস’ নামের একটি কুটির শিল্পের উদ্যোক্তা৷ রংপুরে তার প্রতিষ্ঠানে করোনার আগে ৩০ জন কর্মী কাজ করতেন৷ এখন করছেন পাঁচজন৷ ‘‘যখন নিয়মিত চালু ছিল তখন কারখানায় ১৫ জন আর বাইরে কাজ করত ১৫ জন৷ প্রতিদিন কখনও ১৫ হাজার, ৩০ হাজার টাকা এমনকি কখনও এক লাখ টাকার পণ্যও বিক্রি হয়েছে৷ করোনার পর এখন দৈনিক গড়ে এক হাজার টাকাও হচ্ছে না,’’ বলেন এই নারী উদ্যোক্তা৷
ফাহমিদা খাতুন
অবশ্য এই পরিস্থিতি অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন রপ্তানিমুখী বৃহৎ শিল্পের উদ্যোক্তারা৷ ক্রেতাদের কাছ থেকে তারা কার্যাদেশ ফিরে পেতে শুরু করেছেন৷ তাতে গত বছরের ধাক্কা অনেকটা কাটিয়ে উঠেছেন৷ যেমন, রাইজিং গ্রুপ ঢাকা নামের একটি পোশাক শিল্প রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা মাহমুদ হাসান খান৷ ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তিনি পোশাক রপ্তানি করেন৷ মাহমুদ বলেন, ‘‘কোভিডের পরে আমরা ওভেন পোশাক উৎপাদন কমিয়ে দেই, নিট বাড়াই৷ কারণ এতে লিড টাইম কমছে, অন্যদিকে মানুষ এখন বাসা থেকে কাজ করায় নিট পোশাকের চাহিদা বেড়েছে৷... গত বছরের যে মাইনাস ছিল তার অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছি আমরা৷’’
স্বস্তিতে বড়রা, বিপদে ছোটরা
গত বছর শুধু তৈরি পোশাক খাতের জন্য আলাদা করে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ঋণ প্রণোদনা দিয়েছিল সরকার৷ বৃহৎ শিল্পের জন্য মোট ঋণের পরিমান ছিল ৪০ হাজার কোটি টাকার৷ সরকারের প্রণোদনা আর রপ্তানিতে গতি ফেরায় স্বস্তিতে তাই মাহমুদ হাসানরা৷
কিন্তু এই স্বস্তি এখনও আসেনি শাহ আলমের মতো দোকান মালিক বা শামছিয়ারার মতো ক্ষুদ্র শিল্পের উদ্যোক্তাদের৷ তাদের ব্যবসায় গতি ফেরেনি৷ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা করোনাকালীন প্রণোদনার তালিকায় নেই৷ কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প খাতের (সিএসএমই) জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও শামছিয়া তার নাগাল পাননি৷ তিনি বলেন, ‘‘ব্যাংকে খোঁজ নেয়ার পর প্রণোদনার ঋণ পেতে আমাকে যতরকম কারিকুলাম দেখালো তাতে আমি কেন, আমাদের যারা আছেন তারা কেউই আসলে পাননি৷’’
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘‘বেশিরভাগ কুটির শিল্পের উদ্যোগ অনানুষ্ঠানিক৷ লাইসেন্স, কর শনাক্তকরণ নম্বর নেই, ঋণের জন্য যে বন্ধক দরকার হয় সেটিও থাকে না৷ আবার যাদের আছে তারাও ব্যাংকে গেলেও যে সহজেই পেয়ে যাচ্ছে তা নয়৷ যে কারণেই তাদের জন্য যে ২০ হাজার কোটি টাকার ব্যাংকের তারল্য রাখা হয়েছিল তার ছাড় অনেক কম হয়ছে৷’’ বাজেটে তাদের চাওয়া
মাহমুদুর রহমান মনে করেন, তৈরি পোশাক খাতের জন্য প্রণোদনা নয় বেশি প্রয়োজন নীতিগত সহায়তা৷ যে ধরনের ব্যবসা নীতিই নেয়া হোক তার ধারাবাহিকতা দেখতে চান তিনি৷ পাশাপাশি গ্যাস, বিদ্যুতের মতো শিল্পের অবকাঠামোগত সহায়তাগুলো যেন বজায় থাকে৷ ‘‘তা নিশ্চিত না হলে প্রণোদনা দিয়ে শিল্প বেশিদিন টেকানো সম্ভব হবে না,’’ বলেন এই রপ্তানিকারক৷
শাহ আলম বাজেটে আলাদা কিছু প্রত্যাশা করেন না৷ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সরকার কোন প্রণোদনা দিবে তেমন সম্ভাবনা নাই, তার অবকাঠামোও নেই; এমন বাস্তবতা মেনে নিচ্ছেন তিনি৷ নতুন করে কোন করের বোঝা যাতে না চাপে সেটিই তার আশা৷
অন্যদিকে শামছিয়ারার চাওয়া প্রণোদনা না হোক তার পুরনো ঋণের সুদ যেন মওকুফ হয়৷ টাকা পরিশোধের বেশি সময় যাতে পাওয়া যায়৷
বৃহৎ, মাঝারি বা ক্ষুদ্র; নতুন বাজেটে কোন ধরনের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের প্রতি বেশি মনযোগ প্রয়োজন? অর্থনীতিবিদ ফাহমিদা খাতুন মনে করেন বাজেটে তাদের জন্যই বেশি মনযোগ থাকা উচিত যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত৷ ‘‘ব্যবসার দিক থেকে দেখতে গেলে যারা বেশি ক্ষুদ্র তাদের প্রতি মনযোগ দিতে হবে৷ তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়েছে, ছাঁটাই করতে হয়েছে কর্মীদেরকে, ব্যবসার আকার ছোট করতে হয়েছে৷ সুতরাং সেইদিকেই মনযোগটা দেয়া উচিত৷’’
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হয়েছে বলেই তাদের অবদান কম এমনটা মনে করার কারণ নেই৷ পরিসংখ্যান অনুযায়ীও, অর্থনীতিতে সিএসএমই খাতের ২৫ শতাংশ অবদান, নির্ভরশীল তিন কোটি মানুষ৷ দেশের অর্থনীতির চাকা সচল করার জন্যই বাজেটে তাদের সহযোগিতা দিতে হবে৷
তার মতে আগামী বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জই হচ্ছে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ফেরানো৷ সেটি করতে হবে সরকারের ব্যয় বাড়িয়ে চাহিদা তৈরি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে৷ ভোক্তাদের হাতে টাকা গেলে উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরাও তাদের পণ্য ও সেবা বিক্রি করতে পারবেন৷ তাই গোটা এই চক্রটিতেই সরকারের মনোযোগ দেয়া উচিত৷
মাহমুদুর রহমান
মোবাইল খরচ বাড়ছে, কমতে পারে সোনার দাম
নতুন বাজেটে স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন পণ্যের উপর শুল্ক ও কর কমানোর পাশাপাশি সরকারি আয় বাড়াতে মোবাইল ব্যবহারে ব্যয় বৃদ্ধিসহ বিলাস পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. K. Godhuly
মোবাইল ব্যবহারে খরচ বাড়ছে
মোবাইল সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের করে সেবা গ্রহণের বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ ফলে মোবাইল ফোনে কথা বলা, বার্তা পাঠানো এবং ডেটা ব্যবহারের খরচ বেড়ে যাবে।
ছবি: Reuters/D. Balibouse
সিগারেট-বিড়ির খরচ আরো বাড়ছে
সিগারেটের চারটি স্তরের মধ্যে তিনটি স্তরের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, একটি স্তরের দাম অপরিবর্তিত থাকছে৷ ফলে বেশিরভাগ সিগারেটের দাম বাড়বে। এছাড়া হাতে তৈরি ফিল্টারবিহীন ও ফিল্টারযুক্ত বিড়ির সব স্তরের দাম বাড়ানো হয়েছে।
ছবি: picture-alliance/AP Photo/T. Talbot
পেঁয়াজ-লবণ আমদানিতে শুল্কারোপের প্রস্তাব
নতুন বাজেটে পেঁয়াজ এবং শিল্পের জন্য লবণ আমদানিতে শুল্কারোপের যে প্রস্তাব রাখা হয়েছে তাতে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
বিলাস পরিবহণ খরচ বাড়ছে
চার্টাড বিমান ও হেলিকপ্টার ভাড়ার উপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে৷ কার ও এসইউভির নিবন্ধন খরচও বাড়ছে, দ্বিগুণ হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লঞ্চ সার্ভিসের মূসক৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
প্রসাধন সামগ্রীর দাম আরো বাড়বে
সব প্রসাধন সামগ্রীর ওপর সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাবে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যাবে।
ছবি: Colourbox
সোনার দাম কমতে পারে
স্বর্ণ আমদানির ওপর বিদ্যমান ১৫ শতাংশ ভ্যাট মওকুফের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে কমতে পারে সোনার দাম।
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Adhikary
কৃষি যন্ত্রের দাম কমবে
পাওয়ার রিপার,পাওয়ার টিলার, অপারেটেড সিডার, কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার, রোটারি টিলারের মত কৃষিযন্ত্রের ব্যবসায়িক পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি দেওয়ায় প্রস্তাব করায় এসব পণ্যের দাম কমতে পারে।
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/A. Widak
স্থানীয় পণ্যের দাম কমতে পারে
মহামারিতে স্থবির হয়ে পড়া অর্থনীতি সচল করতে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২-এর কয়েকটি ধারায় পরিবর্তন আনা প্রস্তাব করা হয়েছে। যার অংশ হিসেবে স্থানীয় উৎপাদনমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ওপর আগাম কর ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ করা হয়েছে।
ছবি: Prokritee
কিট, পিপিই ও মাস্কের দাম কমানোর উদ্যোগ
কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিটের আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবসা এবং পিপিই ও সব ধরনের মাস্ক উৎপাদন ও ব্যবসা পর্যায়ে মূসক অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে কমছে এসব পণ্যের দাম।
ছবি: CARE Bangladesh/Md. Rajoan Talukder
টেক্সটাইল শিল্প বিকাশে উদ্যোগ
দেশের টেক্সটাইল শিল্পের বিকাশের জন্য পলিয়েস্টার, রেয়ন ও অন্যান্য সব সিনথেটিক সুতার ওপর মূসক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে প্রতি কেজিতে দাম ৬ টাকা সুর্নিদিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে৷ সব ধরনের কটন সুতার ওপর কর প্রতি কেজিতে ৪ টাকা থেকে কমিয়ে ৩ টাকা করা হয়েছে।
ছবি: AP
10 ছবি1 | 10
কেমন আছেন পোশাক শ্রমিকরা
করোনার কারণে গত বছর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের আয়ে ধস নামে৷ বিপর্যয় নেমে আসে শ্রমিকদের জীবনেও৷ তবে সেই ধাক্কা ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছেন তারা৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
চাকরির খোঁজে
কে এ ডাব্লিউ গার্মেন্টসে প্রধান ফটকের বাইরে ফারজানা আক্তার দাঁড়িয়ে কথা বলছেন নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে৷ করোনায় স্বামী মারা যাওয়ার পর সংসারের খরচ সামলাতে তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে৷ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে এসেছেন তিনি চাকরির খোঁজে৷ কারখানার নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে পরে আসতে বলে বিদায় দিলেন৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
বেতন তুলতে পারেননি
আশিকুর রহমান পড়াশোনার পাশাপাশি রাজধানীর কচুক্ষেতের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করেন৷ লকডাউনের সময় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের একটি নির্দিষ্ট দিনে ৬০ ভাগ বেতন দেওয়া হয়েছিল৷ সেদিন উপস্থিত হতে পারেননি তিনি৷ পরে আর বেতনই পাননি৷ ‘‘নিজের ঘাম ঝরানো পারিশ্রমিক কেন দেওয়া হবে না’’, এমন প্রশ্ন তার৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
ওভারটাইম কমপক্ষে ৪০ ঘন্টা
মিরপুর ১৩ নম্বরের জকি গার্মেন্টস লিমিটেডের মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক রাসেল আহমেদ জানান, প্রতিটি তৈরি পোশাক কারখানাতেই নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টার পাশাপাশি অতিরিক্ত সময় কাজের ব্যবস্থা আছে৷ এক্ষেত্রে মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষই লাভবান হন৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
দাবি আদায়ে আন্দোলন
এটি ২০২০ সালের জুনের ছবি৷ মিরপুর ১২-র ‘জয়েনটেক্স নিট ওয়্যারস লিমিটেড’ এ করোনাকালীন সময়ে প্রায় ৫০০ শ্রমিককে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয় এবং বেতন-বকেয়া আদায়ের দাবিতে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকেরা সেসময় আন্দোলন করেন৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
চাকরি গেছে পরিচিতদের
ডায়নামিক্স সোয়েটার ফ্যাক্টরি লিমিটেডে সুইং অপারেটর পদে কাজ করা মো. জসিম উদ্দিন জানান, লকডাউন চলাকালে তিনি নিজে চাকরিচ্যুত না হলেও পরিচিত বেশ কয়েকজনের চাকরি গেছে৷ তবে তার মতে কাজ জানা থাকলে এ শিল্পে বেশিদিন বেকার থাকতে হয় না৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
জমানো টাকা খরচ
লকডাউনের সময় পোশাকশ্রমিক রুবিনা আক্তার এবং তার স্বামী দুই মাস বেকার ছিলেন৷ প্রণোদনার ৬০% বেতন পেলেও তা দিয়ে ঢাকার ব্যয়বহুল জীবন চালানো কঠিন হয়ে পড়ায় সমিতিতে জমানো টাকা খরচ করতে হয়েছে তাকে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
পরিবারকে পাঠিয়েছেন গ্রামে
একাধিক পোশাকশ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনার আগে পরিবারে আয়ের একাধিক সদস্য থাকলেও এখন আর তা নেই৷ পারিবারিক খরচ সামলাতে এখন যিনি কাজ করছেন, শুধু তিনি ছাড়া বাকি সদস্যদের গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
ঋণ শোধের সময় বৃদ্ধি
করোনার আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং পোশাকশ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য গত বছর উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দিয়েছিল সরকার৷ সেটি পরিশোধের সময় বাড়ানো হয়েছে৷ অপরিশোধিত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে আগামী মার্চ থেকে ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ড পাবেন উদ্যোক্তারা৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
দুই মাস বেতন পাননি
এসনেহার আক্তার কাজ করেন মিরপুরের ভাই-বন্ধু ডিজাইন হাউজ নামের এক পোশাক কারখানাতে৷ তিনি জানান, লকডাউনের দুই মাস তাঁদের কোনো বেতন দেওয়া হয়নি, বরং বেতন চাইলে চাকরিচ্যুত করার ভয় দেখানো হয়েছে৷ প্রতিবেশীদের সহযোগিতা না পেলে না খেয়ে মরতে হতো বলেও জানান তিনি৷