1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঘরে গরুর মাংস রাখার কারণে মৃত্যু

১ অক্টোবর ২০১৫

ঘটনাটা ঘটেছে গত সোমবার রাত্রে, ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের দাদরি এলাকার একটি গ্রামে৷ বাড়িতে বিফ রাখার সন্দেহে একজন মুসলিমকে পিটিয়ে মারে প্রায় দু'শো মানুষের এক হিন্দু জনতা৷

Verwandte von Mohammad Akhlaq, der von einem Mob gelyncht wurde
ছবি: Reuters/Stringer

৫০-বছর-বয়সি অখলাক পেশায় কামার৷ তাঁকে ও তাঁর ২২ বছর বয়সের ছেলে দানিশ-কে বাড়ি থেকে টেনে বার করে মারধোর শুরু করে ক্ষিপ্ত জনতা৷ সেই গণপিটুনিতে অখলাক প্রাণ হারান তাঁর কন্যা সাজিদা-র চোখের সামনে; দানিশকে গুরুতরভাবে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷

ইতিপূর্বে নাকি স্থানীয় একটি মন্দির থেকে গুজব ছড়িয়েছিল যে, গাঁয়ে গোহত্যা করা হয়েছে এবং অখলাক-দের বাড়ির ফ্রিজে গোমাংস রাখা আছে৷ অখলাকের পরিবারের সদস্যরা বলেছেন যে, ফ্রিজে মাংস রাখা ছিল বটে, কিন্তু তা পাঁঠার মাংস৷ পুলিশ নাকি পরে সেই মাংস ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দেখেছে যে, তা সত্যিই পাঁঠার মাংস৷

সরকারি প্রতিক্রিয়া

ভারতের পিটিআই সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী দশজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অখলাক-এর পরিবারের উপর হামলা চালানোর অভিযোগে এফআইআর দাখিল করা হয়েছে৷ ছ'জনকে গ্রেপ্তারের খবরও পাওয়া গিয়েছে৷ উত্তর প্রদেশ সরকারের তরফ থেকে ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব নিহতের পরিবারের জন্য দশ লাখ ভারতীয় রুপি এক্স-গ্রাশিয়া পেমেন্ট ঘোষণা করেছেন৷ তিনি নয়ডা-র ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট-কে নিহতের পরিবারের পূর্ণ সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে বলেছেন৷ নয়ডা-র চিফ মেডিক্যাল অফিসার-কে ব্যক্তিগতভাবে আহত দানিশ-এর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে৷

উত্তর প্রদেশে গোহত্যা নিষিদ্ধ কিন্তু গোমাংস ভক্ষণ নয়৷ অখলাক যে গ্রামের বাসিন্দা, তার প্রায় ৪০ শতাংশ বাসিন্দা মুসলিম৷ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধতে পারে, এই আশঙ্কায় গাজিয়াবাদ, বুলন্দশহর ও হাপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে৷

দিল্লির রাস্তায় এভাবেই চড়ে বেড়ায় গরু...ছবি: AP

পটভূমি

ভারত বিশ্বের বৃহত্তম বিফ রপ্তানিকারক দেশ এবং পঞ্চম বৃহত্তম গ্রাহক৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-র সরকার সারা দেশে বিফ ব্যান চালু করতে চান - অর্থাৎ গোহত্যা এবং গরুর মাংস বেচা কিংবা খাওয়া নিষিদ্ধ করতে চান৷ বাংলাদেশে গরু পাচারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ যে দু'টি রাজ্যে মোদী-র ভারতীয় জনতা পার্টি ক্ষমতায় আছে, সেখানে গরুদের সুরক্ষার জন্য আইন আরো কড়া করা হয়েছে৷

নিহত অখলাক-এর কন্যা সাজিদা সাইফি প্রশ্ন তুলেছেন: ‘‘আমি আমার বাবা-কে মরতে দেখেছি - তাঁকে বাঁচানোর জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি৷ মাংস বা বিফ খাওয়া কি এতো বড় অপরাধ হতে পারে?''

সোশ্যাল মিডিয়ায়

বুধবার ভারত থেকে আনওয়ার তারিখ টুইট করেন, ‘এটা অনেক পুরনো রোগ৷ এই গুণ্ডারা রাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রশ্রয় পাচ্ছে৷'

রামকৃষ্ণ টুইট করেন, ‘যারা আমাদের শিখিয়েছে যে গরু দেবতা, তারাই আবার অস্পৃশ্যতায় বিশ্বাস করে৷ এই সব অন্ধ বিশ্বাস বাতিল করার সময় এসেছে৷' রাহুল ঈশ্বর যা রি-টুইট করার সময় লিখেছেন, ‘গরু আমাদের কাছে ভগবান হতে পারে৷ কিন্তু মনে রাখবেন, ঈশ্বর সবচেয়ে বেশি বার মানুষের অবতার নিয়েই পৃথিবীতে এসেছেন৷'

পার্থ এমএন টুইট করেছেন, ‘মাংস নয়, যে ক্ষিপ্ত জনতা অখলাক-কে মেরেছে, তাদেরই ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো উচিত এটা দেখার জন্য যে, তারা সত্যিই মানুষ কিনা৷'

এসি/এসবি (রয়টার্স, এপি, পিটিআই)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ