পোল ভল্টে বর্তমান সময়ের সেরা তারা৷ টোকিও অলিম্পিকে তাদের লড়াই দেখতে মুখিয়ে ছিলেন সবাই৷ অলিম্পিক হচ্ছে না এ বছর৷ তবে রোববার তাদের লড়াইটা দেখা হয়ে গেছে৷
বিজ্ঞাপন
করোনা ভাইরাসের কারণে টোকিও অলিম্পিক এক বছর পিছিয়েছে৷ কবে সবাই ট্র্যাকে ফিরতে পারবেন তার ঠিক নেই৷ তাই বলে ঘরে বসে বসে হতাশায় পোড়ার কোনো মানে হয়?
২০১২ সালের অলিম্পিকে পুরুষদের পোল ভল্টে সোনা জেতা রেনোঁ লফিলেনি তাই আরমন্ড ডুপ্ল্যান্টিস আর স্যাম কেন্ড্রিক্সকে বললেন, ‘‘চলো, আমরা বাড়ির উঠোনেই একটা প্রতিযোগিতায় নামি!’’
ফ্রান্সের লফিলেনির বিশ্ব রেকর্ড ভাঙা সুইডেনের পোল ভল্টার ডুপ্ল্যান্টিস লুফে নিলেন সেই প্রস্তাব৷ অ্যাথলেটিক্স বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতা কেন্ড্রিক্সও ঘরে বসে এমন একটা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার সুযোগ ছাড়তে চাননি৷ ফলে রোববার পোলভল্টের তিন চ্যাম্পিয়নের বাড়ির উঠোনেই হয়ে গেল জমজমাট এক লড়াই৷
তিন জনের বাড়িতে তো আর বিচারক বা অ্যাথলেটিক্সের বিশ্ব সংস্থার কর্মকর্তাদের পাঠানো সম্ভব নয়, তাই বারবার ‘বার’ উঁচু করাও অসম্ভব৷ সবাই ঠিক করলেন, চার দশমিক নয় মিটার, অর্থাৎ ১৬ ফুট উঁচুতে বার স্থির রেখেই চলবে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই৷ ৩০ মিনিটে যে যত বেশি বার ওই উচ্চতা অতিক্রম করতে পারবেন, তিনিই সেরা, তাকেই দেয়া হবে স্বর্ণপদক জয়ের স্বীকৃতি৷
৩০ মিনিটে লফিলেনি আর ডুপ্ল্যান্টিস ওই উচ্চতা পেরোলেন ৩৬ বার করে! কেন্ড্রিক্স পার হলেন ২৬ বার৷ ব্রোঞ্জ তো কেন্ড্রিক্স পাবেন৷ কিন্তু স্বর্ণপদক কাকে দেয়া যায়?
২০ বছর বয়সি ডুপ্ল্যান্টিস তিন মিনিটের একটা প্লে-অফ চেয়েছিলেন৷ কিন্তু ৩৩ বছর বয়সি লফিলেনি ততক্ষণে এত ক্লান্ত যে তাতে সায় দিতে পারেননি৷ অগত্যা একটু কম সময়ে ৩৬ বার ১৬ ফুট পার করা লফিলেনির সঙ্গে স্বর্ণপদকটা ভাগাভাগি করতেই হলো ডুপ্ল্যান্টিসকে৷
বাড়ির উঠোনে হলেও তিন তারকার মিছেমিছি স্বর্ণপদকের এর লড়াই কিন্তু মোটেই হেলাফেলার ছিল না৷ অ্যাথলেটিক্সের বিশ্বসংস্থা ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্স-এর সামাজিক যোগাযোগের সব প্ল্যাটফর্মে সরাসরি দেখানো হয়েছে শ্বাসরুদ্ধকর এ লড়াই৷ ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্স-এর সভাপতি সেবাস্টিয়ান কো প্রতিযোগিতা দেখে বলেছেন, ‘‘চমৎকার এক উদ্যোগ৷ দারুণ মজা হয়েছে৷ আশা করি লকডাউনে এমন উদ্যোগ চলতে থাকবে৷’’
এসিবি/কেএম (রয়টার্স)
২ এপ্রিলের ছবিঘরটি দেখুন...
‘এফসি করোনা’র বিরুদ্ধে ফুটবল ম্যাচ!
করোনার কারণে খেলা বন্ধ থাকায় জার্মানির নীচু সারির ফুটবল ক্লাবগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে। এই অবস্থায় টিকে থাকতে অনেকে দারুন কিছু আইডিয়া বের করেছে।
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Settnik
এক ইউরোর টিকিট
চতুর্থ বিভাগের দল লোকোমোটিভ লাইপশিস ১৯৮৭ সালে ফ্রান্সের বুর্দো দলের বিরুদ্ধে ইউরোপিয়ান কাপ উইনার্স কাপের সেমিফাইনাল খেলেছিল। ঐ ম্য়াচে লোকোমোটিভের মাঠে অনানুষ্ঠানিক হিসেবে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার দর্শক উপস্থিত হয়েছিল। সেই রেকর্ড ভাঙতে এবার সমর্থকদের এক ইউরো দিয়ে একটি ম্য়াচের টিকিট কাটতে অনুরোধ করা হয়েছে। 'একটি অপরাজেয় প্রতিপক্ষের' বিরুদ্ধে ম্য়াচটি অনুষ্ঠিত হবে।
ছবি: picture-alliance/Fotostand/Weiland
প্য়াকেজ বিক্রি
লাইপশিস শহরের আরেক দল 'শেমি লাইপশিস'ও চতুর্থ বিভাগে খেলে থাকে। অর্থ জোগাড় করতে তারা সার্টিফিকেট, স্কার্ফ, স্টেডিয়ান টুর প্য়াকেজ ইত্য়াদি বিক্রি করছে। ৩০ মার্চ পর্যন্ত তারা প্রায় সোয়া এক লাখ ইউরো সংগ্রহ করতে পেরেছে।
ছবি: picture-alliance/Eibner-Pressefoto
প্রতিপক্ষ 'এফসি করোনা'!
১৯৫৫ সালে জার্মান চ্য়াম্পিয়ন হয়েছিল রট-ভাইস এসেন বা আরডাব্লিউই। তারা অবশ্য় এখন খেলছে চতুর্থ বিভাগে। 'এফসি করোনা'র বিরুদ্ধে ম্য়াচের টিকিট বিক্রি, বিয়ার ও হটডগ বেচে ইতিমধ্য়ে তারা এক লাখের বেশি ইউরো আয় করেছে।
ছবি: picture-alliance/MaBoSport
গোল্ডেন টিকিট
চতুর্থ বিভাগের আরেক দল আলেমানিয়া আখেন দশ ইউরো করে গোল্ডেন টিকিট বিক্রি করছে। যখন আবার খেলা শুরু হবে তখন হোম ম্য়াচের সময় এই টিকিটধারীরা বিনামূল্য়ে একটি পানীয় বা স্ন্য়াকস পাবেন।
ছবি: picture-alliance/Eibner-Pressefoto
'হামস্টেরিং ফর হানজা'
প্য়ানিক বায়িং-এর জার্মান হচ্ছে 'হামস্টেরিং'। সরকার যখন এই সময়ে সবাইকে হামস্টেরিং থেকে বিরত থাকতে বলছে তখন তৃতীয় বিভাগের দল 'হানজা রস্টক'এর কট্টর সমর্থকরা এখন সাধারণ সমর্থকদের ক্লাবের দোকান থেকে বেশি কেনাকাটার আহ্বান জানিয়েছেন।
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Wüstneck
'অ্য়ান্টিবডি' বিক্রি
করোনার সময়ে টিকে থাকতে 'রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে' চাইছে চতুর্থ বিভাগের দল এনার্গি কোটবুস। তাই 'ইচ্ছাশক্তি, সমর্থন, সংহতি' ইত্য়াদি নামক ওষুধ বিক্রি শুরু করেছে তারা। একেকটির দাম ১৯.৬৬ ইউরো। কারণ ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৬৬ সালে। ইতিমধ্য়ে কয়েকশ ওষুধ বিক্রিও হয়েছে।