পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে বলে দাবি পাকিস্তান পুলিশের।
বিজ্ঞাপন
লাহোরে ইমরানের বাড়িতে রোববার পুলিশ পৌঁছায়। পুলিশের দাবি, তাদের সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। পরোয়ানা নিয়ে তারা ইমরানের বাড়িতে ঢুকলেও তাকে পাওয়া যায়নি বলে পুলিশের অভিযোগ। যদিও পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডনের দাবি, ওই সময় ইমরান বাড়ি থেকে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সম্মেলন করছিলেন। পুলিশ কেন তাকে বাড়িতে পেল না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
পুলিশ ইমরানের বাড়ি যাওয়ার সময় একটি টুইট করে। তাতে বলা হয়, আদালতের নির্দেশ মেনে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে ইমরান খানের বাড়ি যাওয়া হচ্ছে।
ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির সহ সভাপতি শাহ মেহমুদ কুরেশি জানিয়েছেন, পুলিশ ইমরানের বাড়ি গেছিল, কিন্তু তাদের কাছে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল না। তিনি বলেছেন, ''ইসলামাবাদ পুলিশের কাছ থেকে আমরা একটি নোটিস পেয়েছি। কিন্তু সেখানে গ্রেপ্তারের কথা লেখা নেই।''
ইমরান খান: জানা-অজানা কিছু তথ্য
ইমরান খান পাকিস্তানের জাতীয় ক্রিকেট দলের একসময়ের অধিনায়ক আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী৷ ছবিঘরে থাকছে তাঁর সম্পর্কে কিছু জানা-অজানা তথ্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Rousseau
পুরো নাম
ইমরান খান নামেই সবার কাছে পরিচিত তিনি৷ কিন্তু তাঁর পুরো নাম কি জানেন? আহমেদ খান নিয়াজী ইমরান হচ্ছে তাঁর পারিবারিক নাম৷
ছবি: Reuters/C. Firouz
খেলা শুরু
১৯৫২ সালের ৫ অক্টোবর লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন ইমরান খান৷ ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট ছিলেন ইমরান৷ ১৯৬৮ সালে ষোল বছর বয়সে লাহোরের হয়ে সারগোরার বিরুদ্ধে প্রথম ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/Dinodia Photo Library
জাতীয় দলে ডাক
ক্রিকেটের প্রতি ইমরান খানের আগ্রহ এবং লেগে থাকাই তাঁকে দ্রুত স্থান করে দেয় পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলে৷ ১৯৭০ সালে যখন দলে ডাক পান, তখনও তাঁর পড়াশোনাই শেষ হয়নি৷
ছবি: Getty Images
পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়
বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারদের একজন বলা হয় তাঁকে৷ তাঁর অধিনায়কত্বে পাকিস্তান ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ জয় করে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Holland
রাজনীতি
১৯৯৬ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন ইমরান৷ গঠন করেন তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি৷ গত নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও এবার অন্যদের পেছনে ফেলে তাঁর দল উঠে এসেছে শীর্ষে৷
ছবি: Aamir QureshiAFP/Getty Images
ব্যক্তিগত জীবন
শুধু খেলা বা রাজনীতি নয়, ব্যক্তি জীবনের নানা খবর দিয়েও বরাবরই সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ইমরান খান৷ ৬৫ বছর বয়সে তৃতীয়বার বিয়ে করেন ইমরান৷ ভবিষ্যতবক্তা বুসরা মানেকার আগে ব্রিটিশ সেলিব্রেটি জেমিমা গোল্ডস্মিথ এবং পাকিস্তানি টিভি অ্যাংকর রেহাম খান ইমরানের স্ত্রী ছিলেন৷
ছবি: PIT
অভিযোগের পাহাড়
নির্বাচনের ঠিক আগে আগে ইমরানের দ্বিতীয় স্ত্রী রেহাম খান তাঁর আত্মজীবনীতে ইমরানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ আনেন৷ রেহামের অভিযোগ, ইমরানের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়ালেই কেবল নারীরা দলে বড় পদ পেতে পারেন৷
ছবি: Facebook/Imran Khan Official
পাকিস্তানের ট্রাম্প!
ইমরান খানকে অনেকেই পপুলিস্ট বলে আখ্যা দিয়ে থাকেন৷ জঙ্গিবাদের প্রতি তাঁর উদার দৃষ্টিভঙ্গীরও সমালোচনা করেন অনেকে৷ ধারণা করা হয় তালেবানের মতো বেশকিছু উগ্রপন্থি দলের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলেন ইমরান৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B.K. Bangash
অ্যামেরিকার সমালোচক
সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে অ্যামেরিকার ভূমিকা এবং তাতে পাকিস্তানের অংশগ্রহণের বড় সমালোচক ইমরান৷ পাকিস্তানের অনেক সমস্যার পেছনে দেশটির অ্যামেরিকাপ্রীতিই বড় কারণ বলে একাধিক বক্তব্যে বলেছেন তিনি৷
ছবি: YouTube/PTI Scotland
দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান
দুর্নীতির বিরুদ্ধে বরাবরই সরব ইমরান খান৷ বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ছিলেন তাঁর আক্রমণের মূল লক্ষ্য৷ লন্ডনে বাড়ি ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার সাজায় নওয়াজ শরীফ ও তাঁর মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ এখন পাকিস্তানের কারাগারে আছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Mughal
তরুণদের মন জয়
পাকিস্তানের তরুণদের মন দ্রুতই জয় করে নিয়েছেন ইমরান খান৷ তাঁর ‘নতুন পাকিস্তান’ স্লোগান তরুণ প্রজন্মের মুখে মুখে৷ ২০১২ সালে এশিয়া সোসাইটির জরিপে ‘এশিয়া’স পারসন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হন ইমরান৷
ছবি: AP
11 ছবি1 | 11
গত বছর পাকিস্তান পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে গদিচ্যূত হন ইমরান। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। বিরোধীদের বক্তব্য, শাসনকালে ইমরান বিদেশ থেকে উপহার নিয়েছেন, কিন্তু তা হলফনামায় দেখাননি। এই নিয়েই তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলার সূত্রেই তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ইমরানকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইমরান যাননি। তার পরেই আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বলে পুলিশের দাবি। ইমরানের বক্তব্য, তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে। এবং সে কারণেই তিনি সারেন্ডার করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তার দল আইনি পরামর্শ নিচ্ছে বলে কুরেশি জানিয়েছেন।
কিছুদিন আগে একটি সভার শেষে ইমরানের কনভয়ে গুলি চলেছিল। অল্পের জন্য বেঁচেছিলেন ইমরান। সামান্য আহত হয়েছিলেন।
ইমরান এখন কোথায় আছেন, তা নিয়ে পাকিস্তানে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।