1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাধা পেরিয়ে শ্যুটিং শুরু করতে চায় টলিউড

পায়েল সামন্ত কলকাতা
৪ জুন ২০২০

লকডাউনের পর টলিপাড়ায় শ্যুটিং শুরুর উদ্যোগ৷ করোনা বিধি মেনে কাজ হবে বাংলা ধারাবাহিকের৷ তবু থেকে যাচ্ছে ছোটখাটো আপত্তি৷

টলিপাড়ায় শ্যুটিং শুরুর উদ্যোগ
ছবি: DW/P. Samanta

করোনা সংক্রমণ রুখতে দীর্ঘ লকডাউন পার করে ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ৷ ধীরে ধীরে চালু হচ্ছে গণপরিবহণ৷ খুলে যাচ্ছে অফিস৷ চা বাগিচা থেকে চটকলে কাজ শুরু হয়েছে৷ তৎপরতা শুরু হয়েছে টালিগঞ্জের চলচ্চিত্র শিল্পেও৷ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বাংলা ধারাবাহিকের কাজ শুরুর লক্ষ্যে আলোচনা চলছে৷ প্রাথমিক পর্বের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মাত্র ৬ জনকে নিয়ে আপাতত শ্যুটিং হবে৷ মেকআপ রুম জীবাণুমুক্ত করা হবে নিয়মিত৷ ফ্লোরে উপস্থিত প্রত্যেকের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হবে যথাযথভাবে৷ প্রবীণ ও শিশু শিল্পীদের সেটে আনা হবে কি না, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি৷

লকডাউনের ফলে বহু কলাকুশলী আর্থিক সংকটে পড়েছেন৷ তাঁদের জন্য তহবিল তৈরি হয়েছে৷ তাই শ্যুটিং শুরুর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অভিনেতা ও পরিচালক সুদেষ্ণা রায়৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘একটা সময় কাজ শুরু করতে হবেই৷ সেটা সাবধানতা অবলম্বন করেই৷’’ একই সুরে লেখিকা ও চিত্রনাট্যকার লীনা গঙ্গোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘চিরকাল ঘরের দরজা বন্ধ করে থাকা যাবে না৷ কাজ করতে হবে৷ যে শিল্পী বা টেকনিশিয়ানরা সেটে থাকবেন, তাঁরা বাজারহাট করছেন, তাঁদের বাড়িতে পরিচারিকা এসে কাজ করছেন৷ এসব ক্ষেত্রে যে সাবধানতা নিচ্ছেন, শ্যুটিংয়ের সময়ও নিতে হবে৷’’

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে যে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করতে বলা হচ্ছে, তার অন্যতম মাস্ক পরা৷ এর সঙ্গে রয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ৷ এই দুটি বিষয়ই একজন অভিনেতার অভিনয় করার ক্ষেত্রে অন্তরায়৷ অভিনেতা অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘মাস্ক পরে অভিনয় করা যায় না৷ আর চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে অভিনেতাদের কাছাকাছি আসতেই হয়৷ টেকনিশিয়ানদের ক্ষেত্রে সমস্যা নেই৷ তবে অভিনয়ের ক্ষেত্রে তা কীভাবে সম্ভব, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷’’

অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়

This browser does not support the audio element.

এই সমস্যার একটা সহজ সমাধান উঠে আসছে আলোচনায়৷ শ্যুটিংয়ে করোনা বিধি অনুসরণ করা যায়, এমন চিত্রনাট্য তৈরি করতে হবে৷ অর্থাৎ, বাংলা ধারাবাহিকের কাহিনী এমন হবে যেখানে দুই অভিনেতার কাছাকাছি আসার প্রয়োজন থাকবে না, ঘনিষ্ঠ দৃশ্য বাদ পড়বে৷ আলিঙ্গন বা চুম্বন দূরের কথা৷ যদিও বাংলা ধারাবাহিকে খুব একটা ‘সাহসী' দৃশ্য থাকে না৷ তবু করোনার প্রকোপে বাঙালির বিনোদন যে অনেকটাই প্রেমহীন হতে চলেছে, তার অনুমান করা যাচ্ছে৷ অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘বিধি যাতে মানা যায়, সেটা মাথায় রেখে চিত্রনাট্য তৈরি করতে হবে৷ এতে গল্পের ধারা অনেকটাই বদলে যাবে৷ এখন আর প্রেমে ঘনিষ্ঠতা দেখানো যাবে না৷ শুধু চোখে চোখে প্রেম চলতে পারে৷’’ অর্থাৎ, একুশ শতকের বিনোদন কিছুটা হলেও প্লেটোনিক হতে চলেছে করোনার কোপে৷

তা সত্ত্বেও অবশ্য অভিনেতাদের একাংশ এখনই শ্যুটিংয়ে ফিরতে রাজি নন৷ জয়বাবা লোকনাথ-এর সৌমিলী ঘোষ, ইরাবতীর চুপকথা-র মনামি ঘোষ-সহ টোটা রায়চৌধুরী, দেবযানী চট্টোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতারা চিন্তিত স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে৷ তবুও প্রযোজনা সংস্থা ‘ম্যাজিক মোমেন্টস'-এর অন্যতম কর্ণধার লীনা গঙ্গোপাধ্যায় হতাশ হতে রাজি নন৷ তিনি বলেন, ‘‘ঘনিষ্ঠতা দেখানো যাবে না মানে দুটো মানুষ ক্যামেরার সামনে একে অপরের হাত ধরতেও পারবে না, তা নয়৷ ঠিকভাবে স্যানিটাইজ করে হাত ধরা যেতে পারে ক্যামেরার সামনে৷ অবশ্যই চিত্রনাট্যে পরিবর্তন করা হবে৷ করোনা থেকে প্রেম, সবকিছুই আসতে পারে গল্পে৷’’ চিত্রনাট্য প্রেমহীন হয়ে পড়লে দর্শকের আগ্রহ কি কমবে? অরিন্দম বলেন, ‘‘বাংলা ধারাবাহিক মূলত সংলাপনির্ভর৷ এখানে গল্পটাই আসল৷ জমজমাট কাহিনী থাকলে দর্শক দেখবেনই৷’’

আপাতত ইন্ডোরে শ্যুটিং চলবে৷ আউটডোরের ভাবনা আরো পরে৷ ধারাবাহিকের শ্যুটিংয়ের ক্ষেত্রে যে সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে, সিনেমার ক্ষেত্রেও তা অনুসরণ করা হতে পারে৷ সকলেই আশাবাদী, অল্প সংখ্যক অভিনেতা ও টেকনিশিয়ান নিয়ে নিরাপদে শ্যুটিং সম্ভব৷ মেকআপ কিট প্রত্যেক অভিনেতার জন্য বদল করতে হবে৷ মেকআপ শিল্পীরও থার্মাল স্ক্রিনিং করতে হবে৷ শ্যুটিংয়ের পদ্ধতি নিয়ে অধিকাংশ বিষয় ঐকমত্য হয়েছে৷ ছোটখাটো বিষয়গুলি চূড়ান্ত হওয়ার পর শ্যুটিং শুরু হবে৷ তবে তাতেও আরো দিন দশেক সময় লেগে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ