এবার বিশ্বকাপের খলনায়ক বৃষ্টি৷ হানা দিতে পারে আজকের ম্যাচেও৷ যদিও নটিংহাম থেকে সুখবর পাওয়া গেছে৷ ট্রেন্ট ব্রিজে সকালের সূর্যটা দেখাচ্ছে উজ্জ্বল দিনের সম্ভাবনা৷
বিজ্ঞাপন
টস হয়েছে৷ টস জিতে ব্যাট করছে অস্ট্রেলিয়া৷
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া খেলা শুরু হতেও দেরির কোনো কারণ আপাতত নেই৷ নটিংহ্যামের সকালটা অন্তত বৃষ্টিমুক্ত থাকবে বলছে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস৷
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নটিংহ্যামের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতে পারে৷ বাংলাদেশ সময় রাত আটটার দিকে হালকা বৃষ্টি নামার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না৷
নটিংহ্যামশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব মাঠের আউটফিল্ড ঢেকে রাখার ব্যবস্থা নেই৷ তাই হালকা বৃষ্টি হলেও ভোগান্তিতে পড়তে হবে৷ কারণ, বৃষ্টি থেমে গেলে মাঠ খেলার উপযোগী করতে গ্রাউন্ড স্টাফদের ভালোই বেগ পেতে হয় এই মাঠে৷
গেল সপ্তাহে এই মাঠে ভারত নিউজিল্যান্ডের ম্যাচ পুরোটাই বৃষ্টিতে ভেসে গেছে৷ মাঠে গড়ায়নি একটি বল৷
ট্রেন্ট ব্রিজের মাঠটিকে ঐতিহাসিক বললে ভুল হবে না৷ যাত্রা শুরু হয় ১৮৪১ সালে৷ ১৯৭৪ সালে মাঠটিতে প্রথম ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়৷ ১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৮৩ এবং ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে এই মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ৷ চলতি বিশ্বকাপেও, আজকের ম্যাচসহ মোট পাঁচটি খেলা হচ্ছে এই ভেন্যুতে৷
ট্রেন্ট ব্রিজের আবহাওয়া
01:10
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, বাংলাদেশের পরিসংখ্যান খুব একটা সুখকর নয়৷ যদিও বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, নিজেদের দিনে যেকোনো প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেয়ার সামর্থ্য রাখে৷ তবে সবশেষ দুটি আইসিসি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ছিল ছোবল হানে বৃষ্টি৷ ওই দুই ম্যাচে পয়েন্ট ভাগ হওয়ায় একটি করে পয়েন্ট যোগ হয়, বাংলাদেশের হিসেবে৷ ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল আর ২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমি-ফাইনালে খেলার পেছনে, তা ছিল মহা মূল্যবান।
আজ যদি পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়, তাতে বাংলাদেশের খুব একটা অখুশি হওয়ার কথা না৷ পয়েন্ট টেবিলের দিকে তাকালে অবশ্য জয়ের বিকল্প নেই৷
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন থেকে ১২৮ মাইল উত্তরে অবস্থিত নটিংহ্যাম শহর৷ শহরজুড়ে প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার মানুষের বসতি৷ তবে, বাঙালির আনাগোণা এই শহরে কিছুটা কম৷
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের যত জয়
১৯৯৯ সাল থেকে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত মোট পাঁচটি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে৷ তার মধ্যে ১২টি ম্যাচে জিতেছে টাইগাররা৷ হেরেছে ২১টি৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. Kington
নিরানব্বইর চমক
১৯৯৯ সালে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশ অংশ নেয় ক্রিকেট বিশ্বকাপে৷ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যাত্রাটি শুরু হয় ছয় উইকেটের হার দিয়ে৷ বাংলাদেশ প্রথম জয় তুলে নেয় তৃতীয় ম্যাচে, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে৷ তবে টাইগাররা চমক দেখায় গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে৷ ১৯৯২ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ৬২ রানে হারিয়ে দেন আকরাম খানরা৷ এটি এখনো বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্যতম সুখস্মৃতি৷
ছবি: Getty Images/Graham Chadwick/ALLSPORT
২০০৩-এর হতাশা
টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ২০০৩ সালের বিশ্বকাপটি ভালো যায়নি বাংলাদেশের জন্যে৷ গ্রুপ পর্বের ৫ টি ম্যাচের হার আর ১ টি পরিত্যক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে গ্রুপের তলানিতে জায়গা হয়েছিল সেবার খালেদ মাসুদদের৷ আফ্রিকায় সেবার নবীন ক্যানাডার কাছে হেরে যাওয়ার মতো হতাশাজনক ঘটনাও ঘটেছে৷
ছবি: Getty Images/Touchline Photo
প্রোটিয়া ও ভারতবধ
আগের বিশ্বকাপের দুঃস্বপ্নকে পেছনে রেখে অভিজ্ঞ আর নবীনদের সমন্বয়ে গড়া ভারসাম্যপূর্ণ দল নিয়ে বাংলাদেশ যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজে৷ ২০০৭ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই ভারতকে ধরাশায়ী করেন মাশরাফি, রফিক, রাজ্জাকরা৷ শ্রীলংকার কাছে হারলেও বারমুডাকে হারিয়ে বাংলাদেশ জায়গা করে নেয় শেষ আটে৷ সেখানে প্রথম ম্যাচেই প্রোটিয়াদের বধ করে টাইগাররা৷
ছবি: Getty Images/Gallo Images/D. du Toit
ধরাশায়ী ইংলিশরা
২০১১-র বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হারতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে৷ চট্টগ্রামে আগে ব্যাট করতে নেমে ২২৫ রানে অল আউট হয়ে যায় স্ট্রসদের দল৷ জবাবে ১৬৯ রানে টাইগারদের আট উইকেট পড়ে গেলেও শাসরুদ্ধকর সেই ম্যাচে জয় ছিনিয়ে আনেন মাহমুদুল্লাহ ও সাইফুল ইসলাম৷ পরের ম্যাচে সহজ জয় আসে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. Mukherjee
আবারও ইংল্যান্ড
সবশেষ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল নবীন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১০৫ রানের বিশাল জয় দিয়ে৷ স্কটল্যান্ডের ৩১৮ রান তাড়া করেও জিতেছিল সেবার মাশরাফি-বাহিনী৷ আর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে মাহমুদুল্লাহর সেঞ্চুরির বদৌলতে আবারও ধরাশায়ী হয় ইংলিশরা৷ প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্বকাপে টাইগাররা জায়গা করে নেয় কোয়ার্টার ফাইনালে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Khan
আবারো প্রোটিয়া বধ
সাউথ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়ে নিজেদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে বাংলাদেশ৷ শুরুতে ব্যাট করে, টপ অর্ডারের দৃঢ়তায় ৩৩০ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ৷ জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে সাউথ আফ্রিকা করে ৩০৯ রান৷ দেখার পালা, কতদূর যেতে পারে টাইগাররা!