নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া'র আরো পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব৷ এই সদস্যরা বান্দরবানের পাহাড়ের গহীনে সশস্ত্র দল ‘কেএনএফ' বা ‘বম পার্টি'র আস্তানায় প্রশিক্ষণ নেন৷
বিজ্ঞাপন
রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার গভীর অরণ্যে অভিযান চালিয়ে পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এলিট বাহিনী র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন৷
গ্রেপ্তার চার জঙ্গি হলেন-নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি থানার মুকিল্লা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে নিজামুদ্দিন হিরণ ওরফে ইউসুফ (৩০), সিলেটের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাদিকুর রহমান সুমন ওরফে ফারকুন (৩০) এবং কুমিল্লার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সালেহ আহমেদ ওরফে সাইহা (২৭), মৃত শফিকুল ইসলামের ছেলে বায়েজিদ ইসলাম ওরফে মুয়াছ ওরফে বাইরু (২১)৷ এবং বাকি একজন কুমিল্লার কিশোর (১৭)৷
বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান জেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সালেহ আহমেদ, সাদিকুর রহমান ও কুমিল্লার এক কিশোরকে থানচি এবং বায়েজিদ ও নিজামুদ্দিন হিরণকে রোয়াংছড়ি উপজেলার দুর্গম এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তবে তাদের কাছে কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে র্যাব৷
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, গ্রেপ্তার কিশোর (১৭) কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ আটজনের মধ্যে একজন৷ সাদিকুর সিলেট থেকে নিখোঁজ হওয়া চার তরুণের মধ্যে একজন৷ গ্রেপ্তার সবার নাম ‘হিজরতের উদ্দেশ্যে' নিখোঁজ হওয়া ৫৫ জনের তালিকায় রয়েছে৷
পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলায় কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন অর্থের বিনিময়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া'র সদস্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলে অক্টোবরে সংবাদ সম্মেলন করে জানান র্যাব৷
অক্টোবর মাস থেকে জঙ্গি ও কেএনএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় যৌথ অভিযান চালাচ্ছে র্যাব ও সেনা সদস্যরা৷ পরবর্তী সময়ে এ অভিযান চালানো হয় থানচি উপজেলাতেও৷ যৌথ বাহিনীর এ অভিযানে এ পর্যন্ত নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া'র ১২ জন সদস্য এবং কেএনএফের পাহাড়ে যারা ‘বম পার্টি' নামে পরিচিত তাদের ১৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
গ্রেপ্তার সদস্যদের বরাতে র্যাব ২১ অক্টোবর জানিয়েছিল, কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ এর প্রতিষ্ঠাতা নাথান বমের সাথে ২০২১ সালে জামাতুল আনসারের আমিরের সমঝোতা হয়৷ পার্বত্য অঞ্চলে কেএনএফ'র ছত্রছায়ায় জামাতুল আনসার সদস্যদের ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তাদের মধ্যে চুক্তিও হয়৷ সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে তিন লাখ টাকা দেওয়ার পাশাপাশি কেএনএফ সদস্যদের খাবার খরচ বহন করে জামাতুল আনসার৷
বুধবার যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারাও এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই সেখানে প্রশিক্ষণে গিয়েছিলেন৷ কেউ কেউ প্রশিক্ষণ শেষ করে বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান করছিলেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন৷
তিনি জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া'র কাঠামো সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানান, সংগঠনটির ছয়জন শুরা সদস্য রয়েছে৷ তার মধ্যে আব্দুলাহ মাইমুন দাওয়াতি শাখার প্রধান, মাসকুর রহমান সামরিক শাখার প্রধান, মারুফ আহমেদ সামরিক শাখার দ্বিতীয় প্রধান, মোশারফ হোসেন রাকিব অর্থ ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান৷
এ ছাড়া সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা শামীম মাহফুজ প্রশিক্ষণের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক করতেন এবং ভোলার শায়েখ আলেম বিভাগের প্রধান৷
অপরদিকে ভাংচুংলিয়াম বম, লালজং মুই ও লালমুনঠিয়ালের তত্ত্বাবধানে কেএনএফ গহীন পাহাড়ে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়৷
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক তাঁর লিখিত বক্তব্যে গ্রেপ্তার পাঁচজনের পরিচয় ও জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিবরণও তুলে ধরেন৷
নিজামুদ্দিন হিরণ ওরফে ইউসুফ: নোয়াখালীর এই যুবক ২০১৯ সালে ওমান থেকে দেশে ফিরে এসে ব্যবসার সুবাদে জহির নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে জঙ্গিবাদের উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করেন৷ ২০২১ সালে তিনি ‘হিজরতের' প্রস্তুতি গ্রহণ করে৷ এরপর ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে যান৷
সালেহ আহমেদ ওরফে সাইহা: কুমিল্লার একটি নূরানী মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন৷ পাহাড়ে অবস্থানরত অপর এক জঙ্গি নেতা মো. দিদার হোসেন ওরফে চম্পাইয়ের মাধ্যমে এই জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত হন৷ ২০২১ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে তিনিসহ আরও সাতজন সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য কেএনএফ ক্যাম্পে যান৷
সাদিকুর রহমান সুমন ওরফে ফারকুন: সিলেটের একটি জিমনেসিয়ামে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন৷ জঙ্গি সংগঠনের সামরিক শাখার সদস্য রনবীরের মাধ্যমে তিনি এই সংগঠনে যোগদান করেন৷ সিলেট থেকে যে চারজন তরুণ স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হয়ে জঙ্গিবাদের জড়ান, তিনি তার মধ্যে একজন৷ ফারকুন জঙ্গি সংগঠনের দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণার্থী৷ তিনি ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য বান্দরবানে আসেন৷ সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান করছিলেন৷
বায়েজিদ ইসলাম ওরফে মুয়াছ ওরফে বাইরু: সংগঠনটির আমির আনিছ মাহমুদের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন৷ ২০২১ সালের নভেম্বরে সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য তিনি বান্দরবানে আসেন৷
১৭ বছর বয়সি কিশোর: কুমিল্লা থেকে ‘হিজরতের উদ্দেশ্যে' যে আটজন নিখোঁজ হয় তার মধ্যে সে একজন৷ কুমিল্লা থেকে বেরিয়ে সে নারায়ণগঞ্জে আব্দুল্লাহ নাফিজ নামে একজনের তত্ত্বাবধানে ছিলেন৷ ২০২২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সে বান্দরবানে আসে৷ তারপর থেকে সেখানেই ছিল৷
কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া আটজনের মধ্যে চারজনকে এরই মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং একজনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে৷
বাকি তিনজনকে খুঁজে বের করতে অভিযান চলমান রয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
জঙ্গি ছিনতাইয়ের পর বদলে যাওয়া আদালতপাড়া
২০ নভেম্বর ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে থেকে দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার পর আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে৷ আদালতপাড়ার হঠাৎ বদলে যাওয়ার চিত্র দেখুন ছবিঘরে....
ছবি: Mortuza Rashed/DW
৯ বছর পর আবার
২০১৪ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশালে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনার ৯ বছর পর গত ২০ নভেম্বর ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকের সামনে থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম (সাবেক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম)-এর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ও মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামিরকে ছিনিয়ে নেয় তাদের সহযোগীরা৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
প্রধান ফটকে জিজ্ঞাসাবাদ
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের প্রধান ফটকের সামনে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে আসা এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ৷ এছাড়া কারো গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে আদালতপাড়ায় আসার কারণসহ বিস্তারিত জানতে চাওয়া হচ্ছে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
পাহারায় পুলিশ
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কিছু দূর পরপর পুলিশের ৩-৪ জনের একটি দল পাহারা দিচ্ছে৷ কবে থেকে এখানে দায়িত্ব পালন করছেন জানতে চাইলে তারা জানান, ২০ তারিখের পর থেকে নিয়মিত তারা এখানে দায়িত্ব পালন করছেন৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
রেড অ্যালার্ট ও পুরস্কার ঘোষণা
প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার পর বেনাপোল স্থলবন্দরসহ দেশজুড়ে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে৷ তাদের ধরিয়ে দিলে পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান৷ তিনি বলেন, দুই জঙ্গিকে ধরতে ১০ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
আড্ডায় আলোচনার বিষয়বস্তু জঙ্গি ছিনতাই
সিএমএম আদালতের আশেপাশে চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায় সেখানে মানুষ জঙ্গি ছিনতাই নিয়ে আলোচনা করছেন৷ ব্যবসায়ী রহমত আলী বলেন, ‘‘শুনেছি পুরো সিনেমার স্টাইলে এখান থেকে জঙ্গি নিয়ে গেছে৷ এর আগেও এখানে আসছি, তবে এত পুলিশ আগে দেখিনি৷’’
ছবি: Mortuza Rashed/DW
পুলিশের সংখ্যা এবং নজরদারি বৃদ্ধি
সিএমএম আদালতপ্রাঙ্গণে প্রধান ফটকে সকাল থেকেই পুলিশের কড়াকড়ি দেখা যায়৷ বুধবার সকাল ১০টা বাজতেই সেখানে অবস্থান নেন ১২-১৩ জনের দুটি নিরাপত্তা দল৷ এছাড়া সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিও ছিল চোখে পড়ার মতো৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
সব আসামির হাতে এখন হাতকড়া
আদালতে নিয়মিত আসা আইনজীবী, সাক্ষী এবং হাজতিদের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনার আগে আসামিদের হাতকড়া বা দড়ির ব্যবহার খুব একটা না থাকলেও এখন প্রত্যেককে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে আনা-নেওয়া হচ্ছে৷ এছাড়া আদালতপ্রাঙ্গণে আগে কখনো এত পুলিশ সদস্য দেখেননি বলেও জানান তারা৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
সব সাময়িক?
পুরান ঢাকার সিএমএম, সিজেএম কোর্ট এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতে একাধিক ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী, আইনজীবী এবং সাধারণ মানুষের কাছে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা পুরো বিষয়টিকে ‘অবিশ্বাস্য’ বলে মন্তব্য করেন৷ বর্তমানে নেয়া কড়াকড়ি ব্যবস্থাকে ‘সাময়িক’ মনে করছেন তারা৷ আগামী কিছুদিনের মধ্যেই আরেকটি বড় ঘটনা ঘটলে এই ঘটনা ধামাচাপা পড়ে পরিস্থিতি আগের রূপেই ফিরে যাবে বলে বিশ্বাস তাদের৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
অস্থায়ী হাজতখানায় এখনো শৈথিল্য!
সিএমএম আদালতের পাশে অস্থায়ী হাজতখানায় বিভিন্ন মামলার আসামিদের জেলখানা থেকে এনে আদালতে হাজিরা দেওয়ানোর আগে কয়েক ঘণ্টার জন্য রাখা হয়৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়া সেখানে কারো প্রবেশের অনুমতি না থাকলেও বুধবার হাজতিদের আত্মীয়-স্বজনদের সেখানে প্রবেশ করতে দেখা গেছে৷ তবে সাংবাদিকের উপস্থিতি দেখে সেখানে বহিরাগতদের প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
শুধু গরিবদের জন্য?
২০১৪ সাল থেকে রাজনৈতিক মামলায় সাত মাস জেল খেটেছেন ব্যবসায়ী মো. শামীম মোল্লা৷ তিনি মনে করেন, ‘‘এইসব আইন-কানুন আর কড়াকড়ি শুধু যাদের টাকা নাই, তাদের জন্য৷ এই যে পাশেই হাজতখানা, এখানে পাঁচশ-হাজার টাকার বিনিময়ে আত্মীয়-স্বজনেরা হাজতিদের খাবারদাবার থেকে শুরু করে ইয়াবা-ডাইলও হাতে দিতে পারে৷’’
ছবি: Mortuza Rashed/DW
অনেক অনিয়ম
ঢাকার নিম্ন আদালতের আইনজীবী মোঃ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘‘দুর্ধর্ষ এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গিদের এভাবে ডান্ডাবেড়ি ছাড়া শুধু হাতকড়া পরিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে একই পথে আদালতে নেওয়া হবে কেন? জঙ্গিদের নিরাপত্তায় পুলিশের সংখ্যাও ছিল অপর্যাপ্ত৷’’
ছবি: Mortuza Rashed/DW
বঙ্গবন্ধু চত্বর দোকানপাটমুক্ত
পুরান ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সংলগ্ন জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু চত্বরের চায়ের ১০-১২টি দোকান, ফলমূল বিক্রির ভ্রাম্যমাণ দোকান, ঝালমুড়ি-বাদাম বিক্রির দোকানসহ প্রায় ৩০টি দোকান তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়৷ এছাড়া আরো দুইটি আদালত প্রাঙ্গণও জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনার পর থেকে ভ্রাম্যমাণ দোকানমুক্ত করা হয়েছে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
পুলিশ বরখাস্ত
জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে৷ সাময়িক বরখাস্তরা হলেন- সিএমএম হাজতখানার কোর্ট ইন্সপেক্টর মতিউর রহমান, হাজতখানার ইনচার্জ এসআই নাহিদুর রহমান, আসামিদের আদালতে নেওয়ার দায়িত্বে থাকা পুলিশের এটিএসআই মহিউদ্দিন, কনস্টেবল শরিফুল হাসান ও কনস্টেবল আব্দুস সাত্তার৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে উচ্চ আদালতেও
ঢাকার নিম্ন আদালতে নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি উচ্চ আদালত তথা সুপ্রিম কোর্টেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন৷ পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি নিরাপত্তা গেট বা আর্চওয়ে দিয়ে সবাইকে তল্লাশি করার পর বিভিন্ন ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
শুধু সাইনবোর্ডেই সীমাবদ্ধ
সিএমএম আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় দেখা যায় জিআর শাখার প্রধান ফটকে ‘প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত’ সাইনবোর্ড ঝুলানো৷ তবে সেখানে সাধারণ মানুষের অবাধ যাতায়াত দেখা যায়৷ এমনকি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোনো নিরাপত্তারক্ষীকে ফটকে দেখা যায়নি৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
আদালতে স্বজনদের সাক্ষাত
ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সংলগ্ন মহানগর দায়রা জজ আদালতের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পুলিশ প্রহরায় হাজিরা দিতে আসা হাতকড়া পরা আসামিদের সাথে তাদের পরিবারের সদস্যরা কথা বলছেন, খাবারদাবার, পরনের কাপড়চোপড় দিচ্ছেন এবং সন্তানকেও কোলে দিচ্ছেন৷ তবে এসব কাজ সম্পূর্ণ অবৈধ বলে জানান নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা৷