1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাবা-মা যখন শিশুর হত্যাকারী

১৯ জানুয়ারি ২০১৭

বাংলাদেশে শিশুর প্রতি সহিংসতা কমছে না৷ গত বছর সারাদেশে ২৬৫ জন শিশু হত্যার শিকার হয়৷ এদের মধ্যে ৬৪ জন নিহত হয় নিজ বাবা-মায়ের হাতে৷ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার ও শিশু অধিকার বিশেষজ্ঞরা৷

প্রতীকী ছবি
ছবি: picture alliance/dpa/P. Pleul

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়৷ মঙ্গলবার প্রকাশিত ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৮৯টি শিশু সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে৷ তাদের মধ্যে ১ হাজার ৪৪১টি শিশু অপমৃত্যু এবং ৬৮৬টি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে৷

প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, আগের বছর, অর্থাৎ ২০১৫ সালে ৫ হাজার ২১২টি শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল৷ ২০১৬ সালে সংখ্যার দিক দিয়ে শিশু নির্যাতন কমেছে শকতরা ৩১ দশমিক ১৪ শতাংশ৷

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর ৩৬টি শিশু হত্যার মামলার রায়, ২৫টি শিশু ধর্ষণ মামলার রায়, তিনটি শিশু অপহরণ মামলার রায় এবং একটি শিশুর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ ঘটনার রায় হয়েছে৷ এ সব সহিংসতার দু-তিনটি ছাড়া বাকি সব ঘটনা ঘটেছিল ২০১০-২০১৪ সালে অথবা তারও আগে৷

এমরানুল হক

This browser does not support the audio element.

মঙ্গলবার প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান রিয়াজুল হক বাবা-মায়ের হাতে সন্তান নিহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘দেশে ২০১৫ সালের চেয়ে ২০১৬ সালে শিশু হত্যা কমেছে৷ অথচ বাবা-মায়ের হাতে শিশু নিহতের ঘটনা বেড়েছে৷ এটা আশঙ্কাজনক৷''

তিনি বলেন, ‘‘মানবাধিকার কমিশন শিশু নির্যাতন কমাতে সভা-সেমিনারের আয়োজন করে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছে৷ সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলতে গণমাধ্যমের ভূমিকা রয়েছে৷''

শিশু অধিকার ফোরামের চেয়ারম্যান এমরানুল হক চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাবা-মায়ের হাতে নিজেদের শিশু সন্তান হত্যার প্রধান কারণ পারিবারিক কলহ, অর্থনেতিক দুরবস্থা এবং অনৈতিক সম্পর্ক৷ আমাদের সমাজ ব্যবস্থার নেতিবাচক দিক এখানে প্রভাব ফেলছে৷ শিশু হত্যাকে বাবা-মা প্রতিশোধের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিচ্ছে কখনো৷ আবার কখনো মনে করছে নিজে কষ্ট পাবে না, আবার সন্তনকেও কষ্ট থেকে মুক্তি দেবে৷ তাই তাদের হত্যা করে পরে নিজেরা আত্মহত্যা করে৷ এই ভয়ংকর মানসিক অবস্থা শিশুদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে৷''

তিনি জানান, ‘‘পরিবারের বাইরে শিশু হত্যার কারণ জমিজমা নিয়ে বিরোধ, শত্রুতা, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, বিকৃত মানসিকতা, ধর্ষণ প্রভৃতি৷''

মায়ের হাতে সন্তান হত্যার উদাহরণ হিসেবে গত ১১ জানুয়ারি রাজধানীর দিয়াবাড়িতে মা তার এক সন্তানকে পাশে বসিয়ে রেখে অন্য সন্তানকে হত্যা করে৷ পরে নিজেও আত্মহত্যা করে সেই মা৷ এক্ষেত্রে দারিদ্র্যকে দায়ী করে এমরানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘‘শিশু হত্যার পেছনে দারিদ্র্য অনেকখানি দায়ী৷ আমাদের তাই সবার আগে দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে হবে, শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন করতে হবে৷''

তিনি বলেন, ‘‘শিশুরা সবচেয়ে দুর্বল, তাই তারাই সবার আগে সহিংসতার শিকার হয়৷ আমাদের সমাজ ও মানসিকতা শিশুবান্ধব নয়৷ আইন আছে, কিন্তু তার কার্যকর প্রয়োগ নেই৷ তাই ব্যাপক গণসচেতনতা ও মানসিকতার পরিবর্তন আনা না গেলে শিশুর প্রতি সহিংসতা কমবে না৷''

এছাড়া শিশুর প্রতি সহিংসতার তেমন বিচার হয় না৷ এখানে বিচারহীনতার এক স্থায়ী সংস্কৃতি লক্ষ্য করা যায়৷ পরিসংখ্যান বলছে, শিশুর প্রতি এক বছরে সহিংসতার যে ঘটনা ঘটে তার শতকরা পাঁচ ভাগেরও বিচার হয় না৷ তাই এমরানুল হক চৌধুরীর কথায়, ‘‘এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করতে হবে৷''

বন্পধু, আপনার কি কিছু বলার আছে? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ